ঢালাওভাবে রাজনীতিবিদদের হয়তো এক্ষেত্রে দোষারোপ করা যাবে না, তবে রাজনীতিবিদদের চারিত্রিক বৈশিস্ট বুঝানোর জন্য যদি কথাটি বলে থাকেন তবে হয়তো ঠিক আছে। সরকারীভাবে এর একটা প্রতিবাদ হওয়া উচিৎ ছিলো। নিদেনপক্ষে পররাস্ট্র বিষয়ক সচিবালয় কিংবা মন্ত্রানালয় থেকে যদি এই ব্যাপারে কোনো আলাপ আলোচনা হতো, তবে এই ঘটনার পরপরই দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের যে মিটিং হয়েছে তাতে এর প্রভাব পড়তো। ঐ মিটিংয়ে যেভাবে একতরফাভাবে বানিজ্য সহ পররাস্ট্র বিষয়ক চুক্তিগুলো হয়েছে তাতে বাংলাদেশ কি পেয়েছে আর কি বিলিয়েছে সে প্রশ্নে জনগণের ক্ষোভ অন্তত কম হতো বলে অনেকেই মনে করেন।
তাছাড়া দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য চুক্তির আওতায় যে সমস্ত পণ্য এক দেশ থেকে অন্য দেশে আমদানী/রপ্তানী হয়ে থাকে তার একটা বিধিমালা বা কৌশল আগে থেকেই নির্দ্ধারন করা থাকে। সে বিধিমালার প্রেক্ষিতেই এই ধরনের পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। সেদিক বিবেচনায় ভারত তাদের আভ্যন্তরীণ বাজার ঠিক রাখার প্রয়োজনে কিংবা দেশের চাহিদার ব্যাপকতা কল্পে অথবা প্রাকৃতিক দূর্যোগে ফসল হানীর কারন উল্লেখ করে যে কাজটি করেছে সেটি কোনো মতেই নিয়মের আওতায় পড়ে না। সেক্ষেত্রে তাদের যেটা উচিৎ ছিলো, নির্দিস্ট একটি সময় বেঁধে দিয়ে তাদের রপ্তানী বন্ধ করে দিতে পারতো কিংবা রপ্তানী হ্রাস করে দিতে পারতো। এমনকি ট্র্যানজিটে থাকা পন্য নির্বিঘ্নে সীমানা পেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি অন্তত তারা দিতে পারতো।
আমার আসলে ওটা নিয়েও তেমন মাথা ব্যাথা নেই। পেঁয়াজ বন্ধ করে দেয়ার প্রেক্ষিতে আমাদের যে সমস্যার সৃস্টি হয়েছে তা সাময়ীক। যদিও এটা একটা ব্যাপক সমস্যা ছিলো। তথাপিও এই উদহারন সামনে আসার প্রেক্ষিতে হয়তো এটা আমাদের জন্য শাপে বর হয়ে দেখা দিতে পারে। যার প্রমান আমরা ইতিমধ্যেই গরু উৎপাদনে দেখিয়ে দিয়েছি। গরুতে স্বনির্ভরতা আনতে পারলে পেঁয়াজেও হয়তো সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে সরকারের ব্যাপক ভুমিকা রাখতে হবে। আমি যেটা আমার কথায় বলতে চেয়েছিলাম সেটা হলো দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির কথা। এই চুক্তিতে সব থেকে বড় যে আশা ছিলো আমাদের সেটা হলো পানি। সেটা তিস্তায় পানি আনার ব্যাপারেই হউক কিংবা অসময়ে ফারাক্কার সব ক'টি স্লুইস গেইট খুলে বেশী দেয়ার ব্যাপারেই হউক। এই ব্যাপারে আমাদের বন্ধুপ্রতীম দাদাদের উৎসাহিত করতে আমরা কি কিছু করতে পেরেছি ? যদি না পেরে থাকি, তবে কি আমরা যে বাঁশটি তাদের দেয়ার কথা ছিলো তার পরিবর্তে তারা লাঠির ডগায় ভাঙ্গা হ্যারিকেন ঝুলিয়ে আমাদের হাতে ধরিয়ে দেয়নি !!
সব শেষে আপনার সাথে আমি একাত্নতা ঘোষনা করছি। ভারত যা করেছে তারা সেটা তাদের দেশের জন্য তথা দেশের জনগণের ক্ল্যানের জন্য করেছে। সেদিক থেকে তারা ঠিক আছে। আর এই ঠিক থাকার পধান কারন হচ্ছে তারা প্রত্যেকেই আসল দেশ প্রেমিক। আমরা কেনো তবে আমাদের দেশটাকে ভালোবাসতে পারি না ? যেভাবে তারা ভালোবাসতে পারার কারনে আমাদেরকে ছোট্ট এক পেঁয়াজ দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে দেশপ্রেম কাকে বলে সেভাবে আমরাও কেনো বলতে পারি না পানি না দিলে কিংবা বেশী পানি দিলে আমরাও তোমাদের ট্র্যানজিট সুবিধা দিবো না। তোমাদের কাছ থেকে আন্তর্যাতিক বাজার মূল্য থেকে অনেক বেশী দিয়ে নিন্ম মানের অস্ত্র কিনবো না। আমেরিকা না হউক অন্তত রাশিয়া কিংবা চিন তো আমাদেরকে তোমাদের চেয়ে কম মূল্যে আরো উন্নত অস্ত্র দিতে চায়। সেক্ষেত্রে তাদের সাথে তো আমাদের পানি নিয়ে কোনো তর্ক নেই। নেই কোনো আঞ্চলিক ঝামেলাও...
ক্রিকেটে যেমন কোনো ভালো বোলারকে ফেস করতে যেয়ে ডিফেন্সিভ খেলতে খেলতে এক সময় ব্যাটসম্যান বকডাউন হয়ে যায়, পরে সাধারন মানের বোলারকেও ফেস করতে পারে না, তেমনি আমরা পররাস্ট্রনীতিতে ছাড় দিতে দিতে এখন আর কোনো কথাই বলতে পারি না !!