মুসলিম দেশে ফুটবল খেললেই এটা হালাল হয়ে যাবে না, কিংবা শুধু অন্য ধর্মের লোকেরা খেললেই এটা হারাম হয়ে যাবে না। আর সত্যি বলতে ফুটবল খেলা হারাম কিনা সেটাও আমি জানি না। এটা নিয়ে আলেমদের মাঝে ব্যাপক মতানৈক্য আছে। আমার খেলা দেখতে ভালো লাগে, তাই আমি খেলা দেখি। এক্ষেত্রে হালাল-হারামের ধারে কাছেও ঘেঁসতে চাই না। সব থেকে বড় কথা হলো- এটা ইসলামের কোন হুকুমতের আওতায়ই পরে না। এর থেকে অনেক বড় বড় ধর্মীয় বিধান যেখানে অবলীলায় অমান্য করে চলছি দিনের পর দিন সেখানে এই সামান্য একটা বিষয় কি করে ধর্মীয় ঘোমটার আবরনে এনে এটা নিয়ে পরিস্কার পানি ঘোলা করতে যাবো? এটা নিছকই ছেলেমানুষী ছাড়া আর কি হতে পারে?
খেলা দেখার ক্ষেত্রে যেহেতু কোনো একটা দলকে সাপোর্ট করাই লাগবে, না হলে খেলা দেখে কোনো আনন্দ পাওয়া যাবে না-তাই আমি সেই দলকেই সাপোর্ট করবো যেটা আমার মন বলে। এখন সেই বলার পিছনে মনের অনেক কিছু ভাবনা চিন্তা থাকে। সেই চিন্তা-ভাবনার মাঝে খেলার পিছনের অনেক কিছু যেমন থাকে, তেমনি খেলার সামনেরও অনেক বিষয় থাকে। সব কিছু বিবেচনায় আমার মন আমাকে যে দলের সমর্থনে আমাকে উদ্বুদ্ধ করে, আমি তাকেই সমর্থন দিয়ে যাই। সেটা কোন ধর্মের আর কোন গোত্রের সেটা বিবেচনা করি না। কারন মনের আনন্দই যে এখানে মূখ্য বিষয়। এই সমর্থনের জন্য যেহেতু আমি আর্থিক কোনো লাভবান হবো না সেহেতু মনকে কস্ট দেয়ার তো কোনো মানেই হয় না...
সম্ভবত আজকের পর থেকে এবারের বিশ্বকাপে আর কোনো মুসলিম দেশ থাকবেনা। সেক্ষেত্রে আমি কি খেলা দেখা বন্ধ করে দেবো? নিশ্চয়ই না। যারা সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দেয়ার ঘোষনা দিয়েও না ছাড়তে পেরে টয়লেটে বসে হলেও ধুমপান করে, ঠিক তেমনি হলেও আমার মতো কট্টরপন্থীরা বেড়ার ফাঁক দিয়া হলেও বাকি খেলাগুলো দেখা চালিয়ে যাবো। তাহলে কেনো এই ধরনের মনোভাব আমি পুষবো? কেনো আমি ধর্ম আর খেলাকে একসাথে টেনে এনে একটা অবান্তর আলোচনার উদ্রেক ঘটাবো? বিশেষ করে কিছু শব্দ যেটা আমরা সবাই খারাপভাবে দেখে থাকি, সেসব শব্দ ব্যাবহারে এখানের এই মুক্ত আলোচনাকে কুলুষীত করে তুলবো?