তালপাতার সেপাই
Member
দেখ্ আমি তোকে উল্টোপাল্টা জ্ঞান দিতে ফোন দেই নাই। মেয়েটা যেই ফাঁদে আটকা সেখান থেকে মানুষ সহজে বের হতে পারে নারে বোকা, স্পেশালি মেয়েরা।
আমি অট্টহাসিতে ফেটে পড়লাম।
তোর এই বেদ বাক্য অন্য কোথাও গিয়ে বলরে তমা। আমাকে নাহ্। ব্লক করতে বাধ্য করিস নাহ্। আজকের পর আর কখনো কল দিস নাহ্।
কলটা কেটেই হাতে ধরা গীটারটাকে দুটো আছাড় দিলাম। এই আছাড় দুটোর উপর দিয়ে নিজের এবং টোটাল পরিস্থিতির উপর যতটা ঘিন্না ছিল উগরে দিলাম অনেকটা।
এক কোনে বসে জয়েন্ট বানাতে বানাতে মাথার উপরে গোল থালার মত চাঁদের সৌন্দর্য দেখতে দেখতেই মনে পড়ে গেলো, প্রিয়ন্তিকে করা প্রথম কিস।
আমার জন্মদিনে এই ছাদে। আমার জন্য শাড়ি পরে এসেছিল ও। ওইতো ওই পানির ট্যাংকিটায় হেলান দিয়ে দাড়িয়েছিলো আমার কোলে মাথা রেখে। আমি ওর চেহেরা দেখতে দেখতে কখন যেন ওকে টেনে কিস করে বসেছিলাম ওর লাল টুকটুকে ঠোঁটে। ও সরে যায় নি। মিশে গিয়েছিল আমার সাথে৷ মিশিয়ে দিয়েছিলো ওর ঠোঁট আমার পোড়া ঠোঁটের সাথে। হাহ্। দিনগুলো আর সোনার খাঁচায় রইল নাহ্।
মাস খানেক পর। ইদানিং প্রিয়ন্তিকে দেখা যায় নাহ্। আমার সাথে না দেখে বন্ধু বান্ধবের প্রশ্নবানে জর্জরিত আমি। ওদের একপেশে একঘেয়ে প্রশ্নে হেসে যাই। দেয়ার মত উত্তর নেইতো আমার কাছে। কী দিব?
এই একমাস আমার কীভাবে গিয়েছে শুধু আমি জানি! চোখের জলে ভিজেছে দু চোখ। দাড়ি গজিয়ে চেহেরাটা হয়ে গেছে বিচ্ছিরি। চোখদুটো কোটরে ঢুকে গেছে।
ভার্সিটিতে প্রথম কয়েকদিন ততটা অসুবিধা হয় নি। কিন্তু দিন ৮ না যেতেই প্রিয়ন্তিকে সেই আগের মতই ভার্সিটিতে দেখা যেতে থাকল। আমাকে দেখলে নিস্পলক তাকিয়ে থাকে। আমি বুঝি কিন্তু তাকাই নাহ্।
সেদিন ৭ তলা থেকে নামার জন্য লিফটের বাটনে চাপ দিয়ে ওয়েট করছি। নয়তলা থেকে লিফট নামছে। ম্যানেজম্যান্ট ৪০৫ এর এসাইনমেন্টটা জমা দিয়ে বাসার দিকে যাওয়ার চিন্তায় উদগ্রীব মন। লিফট থামতেই দেখি ভিতরে প্রিয়ন্তি একা।
খুবই অদ্ভুত পরিস্থিতি। কি বলব না বলব! ঢুকন কি ঢুকব না! অদ্ভুত এক দোটানায় মন!
কোন কথা না বলে ঢুকে পড়লাম। জি তেই প্রেস করা। চুপচাপ এক দেয়ালে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে। ওর পারফিউমের গন্ধে মৌ মৌ করছে লিফট। মাত্রই দিয়েছে! কেন? প্রশ্নটা আসেতও চেপে মেরে ফেললাম। এটা আমার প্রশ্নই নাহ্।
ও অপলক তাকিয়ে আছে। টের পাচ্ছি। ওর চোখের দৃষ্টি আমার মস্তিষ্কে আঘাত করছে। চোখ বন্ধ করে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি তাড়াতাড়ি নিচতলা আসার।
হাতের উপর হটাৎ চাপ। তাকাতেই দেখি ও আমার হাত ধরে নিয়েছে, প্রচন্ড শক্তিতে। আমি স্তব্ধ হয়ে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে ওর দিকে তাকালাম। ও কথা না বলে আমার গায়ে লেপ্টে গেলো।
কোথা থেকে যেন সেই পুরোনো ফিলিংসগুলো, যেগুলো সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে চাপা দিয়ে রেখেছিলাম জাগতে শুরু করল..
আমি ওকে সরলাম নাহ্। নীচতলা আসতেই ও আমার হাত ধরে হাটা শুরু করল। আমি চুপচাপ ওর পিছুপিছু।
ভিতরে রাগ আসতেসে নাহ্। ক্ষোভ! তাও নাহ্। কিছুই নাহ।
আমরা ভার্সিটি থেকে বের হয়ে রিকশা নিলাম। ওর পরনে শার্ট। উপরের তিনটা বোতাম খোলা। না চাইতেও চোখ আঁটকে যাচ্ছে ওর বাদামি বুকের উপরে বসা তিলে বার বার।
দাড়ি কাটো নাহ্ কেন? চোখ দুটোতো একদম ভিতরে বসে গেছে!
আমি উত্তর না দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি। ওর কোলের ভাজের উপর আমার হাত ধরে রেখে দিয়েছে প্রিয়ন্তি।
ঘুমাও ঠিকমত? ঘুমাতে পারো! সেদিন শুনেছি গীটারটা নাকি ভেঙ্গে ফেলেছো?
আমি আবার ওর দিকে চোখ কুঁচকে তাকাই। এ খবর ওর জানার কথা নাহ্।
স্বাধীন বলেছে। তোমার বাসায় না গিয়েছিলো মাঝখানে।
আমি এখনো চুপ। শুধু মুখটা ওর তিলের ওপর থেকে সরিয়ে রাস্তায় ফোকাস করলাম।
বিকেলের শেষভাগ। ও আরেকটু কাছে এসে আমার হাতটাকে ওর পিছনে নিয়ে বুকের মধ্যে সেধিয়ে গেলো। আমার নাকে ভেসে আসল সেই চিরচেনা লরিয়্যাল শ্যাম্পুর গন্ধ। মনটাকে জোর করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। সবকিছু ভুলে এই চুলে নাক ডুবিয়ে গন্ধ নিতে ইচ্ছে করছে!! আহ্! জীবন কতটা কঠিন। দু মাস আগেও যা ছিল, এখন নেই।
রিকশাটা এখন কোলাহল থেকে অনেক দূরে। আমরা সেক্টর ১৬ এর দিকে। এদিকে শুধু খালি জমি৷ মাঝখানে সুন্দর পিচঢালা রাস্তা।
অন্তর। এই অন্তর।
ওর সেই মোলায়েম কন্ঠ। যেটা শুনলে আমি আমার সমস্ত রাগ ভেঙ্গে ওর বুকে সেধিয়ে যেতাম। আজকে পারছি নাহ্। কোন ভাবেই নাহ্।
ও বলেই চলেছে,
অন্তর শোন নাহ্। আমার ভুল হয়ে গেছে লক্ষী।অনেক বড় ভুল। আমি জানি তোমার কাছে কেন, দুনিয়ার কেউ আমাকে ক্ষমা করবে নাহ্ এই কাজের জন্য। অন্তর! তুমি আমার সব অন্তর। কিন্তু আমি মাঝখানে এই কথাটাই ভুলে গিয়েছিলাম টোটালি। সমস্ত কিছু এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেছে এবং আমি এতটাই আটকে গিয়েছিলাম, বুঝতেও পারিনি কি হারিয়ে ফেলছি মাঝখান থেকে। অন্তর! প্লিজ আমাকে একটা সুযোগ দাও।
ওর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। কন্ঠে বোঝা না গেলেও আমার শার্টের পাশটা ভিজে উঠছে বুঝতে পারছি।
আমার ইচ্ছে করছে ওর মাথায় হাত রাখি। একটু বুলিয়ে দেই হাতটা মাথায়। চোখ দুটো মুছিয়ে দিয়ে ওর ঠোঁটে আলতো একটা চুমু দেই। পারছি নাহ্। ওর চেহেরা দেখলেই গ্যালারীর দৃশ্যটা ভেসে ওঠে।
অন্তর! একটুও কথা বলবে নাহ্। আমার মাথায় একটু হাত রাখবে নাহ্। অন্তর সোনা। একটু শোনো নাহ্। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে অন্তর।
গত এক মাসে শুয়েছ উনার সাথে? প্রশ্নটা ঠাস করে বেরিয়ে গেলো! নিজেকে চটকাতে মনে চাচ্ছে ।
প্রিয়ন্তি মাথাটা বুক থেকে উঠিয়ে ওর চোখ মুছে সরাসরি তাকালো আমার চোখে। ওর অবাক দৃষ্টি এতটা প্রখর, আমি অন্যদিক তাকালাম।
প্রশ্নটা করার পর প্রায় দু মিনিট কেটে গেছে এখনো উত্তর আসে নি।
উত্তরটা না আসলেই ভালো হত।
হ্যা। ওইদিন রাতেই শুয়েছি। তমাদের বাসায়। তুমি চলে যাওয়ার পর। এরপর এক সপ্তাহ তো বিছানা থেকেই উঠতে পারিনি ব্যাথায়। এরপর ভার্সিটিতে আবার ক্লাস শুরু করার পর থেকে আরো দু বার। প্রথমবার ভার্সিটির পিছনের পার্কিং এ আর শেষবার গত পরশু শো শেষে গ্যালারীতে।
এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে থামে ও।
আমার কানের পর্দা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। নিজেকে বোকা মনে হচ্ছে। কার সাথে আমি রিকশায়? কে আমাকে মাত্র বলল আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে নাহ্!
আমাকে অনেক ঘিন্না হচ্ছে তাই নাহ্! স্বাভাবিক! আমিতো নিজেও জানতাম নাহ্ আজকে থেকে ১ বছর আগে যে একটা ছোট খেলা আমাকে এতটা পরিবর্তন করবে! অন্তর! জয়নাল কাকার সাথে আমার যেই সম্পর্ক সেখানে আত্মিক ভালোবাসা নেই। শারীরিক একটা ভালোলাগা আছে। আসলে মারাত্মক ভালোলাগা আছে। আমি নেশার মত ডুবে গেছি লোকটার পুরুষত্বের কাছে। কিন্তু উনাকে আমি ভালোবাসি নাহ্। উনি শুধু আমার এই ২২ বছরের যৌবনটাকে চুষে খেতে চায়। আর আমি শুধু উনাকে খেতে দেই অন্তর। উনি যখন আমাকে নেয়, আমি পৃথিবীতে থাকি না অন্তর। আমি জানতাম নাহ্ আমি সেক্স এতটা পছন্দ করি। উনি আমাকে টের পাইয়েছে আমার এই মারকাটারি ফিগারটা থেকে কতটা সুখ পাওয়া সম্ভব। অন্তর, আমি উনার কাছে চরম লেভলের সাবমিসিভ। আমি তোমাকে যেভাবে কন্ট্রোল করে আসছি, উনাকে পারিনি। আমি নিজেই এখন কাকার কন্ট্রোলে। উনি আমাকে ওই ভাবে ভালোবাসেন কি নাহ্, সেটা আমি জানি নাহ্! তবে টের পাই উনারো আমার জন্য ইমোশোন ক্রিয়েট শুরু হয়েছে। অন্তর আজকে তুমি যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাও, যেতে পারো। তবে, আজকে তুমি চলে গেলে আমাকে এই ফাঁদ থেকে কেউ ছাড়াতে পারবে নাহ্। আমি মুক্তি চাই অন্তর। বিশ্বাস কর আমি মুক্তি চাই। আমি শুধু তোমার থাকতে চাই। আমাকে এখান থেকে বাঁচাও প্লিজ। আমাকে এই নোংরা খেলা থেকে উদ্ধার কর।
কথা বলতে বলতে ওর হাতের পাঁচটা আঙ্গুল আমার ডান হাতের আঙ্গুলকে চেপে ধরেছিলো। এখন চাপ ক্রমাগত বাড়ছেই।
ওর কথাগুলো কেমন যেন লাগছে!
মুক্তি চাও মানে? নোংরা খেলা মানে! ব্রেকাপের দিন রাতের বেলাই তুমি নিজেকে ছোটলোকটার কাছ থেকে সরাতে পারো নি। আর তুমি বলছ এখন নোংরা খেলা! লোকটা সেদিন ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছিলো। তুমিতো ৩-৪ ঘন্টাও পার করতে পারোনি। আর তুমি এখন এসে কেনো বলতেসো এসব কথা? তোমার মাথার মধ্যে ছিলো না আগে এই কথা!!! আমাদের প্রেম। আমার সবর। আমার লয়ালিটি। আমার অনেষ্টি৷ ১ বছর ধরে ওই ছোটলোকটার সাথে শুচ্ছ তুমি৷ তোমার বাপের বয়সী, প্রিয়ন্তি!
I know he is kindda old like my dad. But, his stamina is way out of your league.
তীব্র কটাক্ষ নিয়ে কথাগুলো বলল প্রিয়ন্তি।
তোমার রাগ জায়েজ। আমি একবারো বলছি নাহ্ আমি ভুল কিছু করিনি। আমি শুধু তোমাকে সমস্ত শেয়ার করতে চাচ্ছি। চাই তুমি বোঝ। If you hear the whole story, you may understand why I am calling this whole situation a game to me and why I want to be free from this shit. Will you at least hear?
প্রিয়ন্তি, তুমি লোকটাকে ডিফেন্ড করতেসো আমার সামনে। আবার আমাকে বুঝতে বলতসো! আর ওই ছোটলোকটার স্ট্যামিনা নিয়ে যেভাবে কথা বলতেসো মনে হচ্ছে তুমি তুলনা করছ আমাকে তার সাথে!
আমরা অনেকটা দূরে। সেক্টর ১৬র এই জায়গাটা নির্জন। এত দূরে কেউ আসেও নাহ্। পড়ন্ত বিকেল৷ সকালের গরম ভাবটা এখন আর নেই। প্রিয়ন্তি রিকশাওয়ালাকে থামতে বলল। আমরা নেমে পড়লাম৷
প্রিয়ন্তির পড়নে শার্ট আর জিন্সের ফুল প্যান্ট। খোলা বোতামের ফাকের জায়গাটুকু ভেদ করে অবাধ্য পর্বত জোড়া বের হয়ে আসতে চাইছে। রিকশাওয়ালার চোখ সরছে নাহ্। সরবে কীভাবে প্রিয়ন্তির ক্লিভেজ জোড়া সফেদ মাখনের তালের মত অনেকটা উঁকি দিচ্ছে। রিকশাওয়ালাকে কী বলব, আমার নিজের নজরইতো সরাতে পারছি নাহ্। টাকা নেওয়ার সময় পর্যন্ত রিকশাওয়ালা প্রানভরে উপভোগ করল।
আমরা রাস্তার ফুটওয়াকে বসলাম। একরাশ বাতাসে চুলগুলো উড়ছে। গভীর কালো চোখজোড়া কাজলের আলতো পরশে এতটা মায়াময় হয়ে উঠেছে, চোখ পড়লে আর ফেরাতে ইচ্ছে করছে নাহ্। ইস্ কত কাছে! এরপরো কোন অধিকার নেই। চাইলেও ছুতে পারব নাহ্।
ও আমার হাত ধরে৷ শক্ত করে। ওর মুঠোয় হারিয়ে যাচ্ছে আমার আঙ্গুলগুলো।
অন্তর! আমার চোখে চোখ রেখে ও আমাকে ডাকে৷
অন্তর। আমার মন এখনো তোমার। শরীরটা নষ্ট হলেও মনটাকে হতে দেই নি অন্তর। এখনো ততটাই ভালেবাসি যতটা প্রথম দিন থেকে বেসেছি। আমি জানি তুমি কতটা কষ্ট পাচ্ছ। তোমার দেবীর গায়ে কলংক লেগে গেছে অন্তর। কিন্তু তোমার দেবীর মন মন্দির এখনো তোমার জন্য কাঁদে অন্তর।
আমি চুপচাপ শুনছি।
অন্তর অনেক কিছু তোমাকে আমি বলব। অনেক কিছু। তোমার অনেক খারাপ লাগবে। তোমার এখান থেকে চলে যেতে মন চাবে। তাই আমরা আজকে একদিনে সব কথা শেষ করব নাহ্। আমি তোমাকে একটু একটু করে বলব আর তুমি একটু একটু করে হজম করবে। তুমি বোঝার চেষ্টা করবে আমি কীভাবে আটকে গেছি একটা প্যাচে পড়ে। সব শুনে তুমি ডিসাইড করবে তুমি তোমার প্রিয়ন্তির জন্য লড়বে নাহ্ জাস্ট ফেলে দিয়ে চলে যাবে।
আমি শুনে দূরে তাকাই। প্রিয়ন্তি ব্যাগ খুলে সিগারেটের একটা প্যাকেট বের করে আমাকে দেয়৷ মালবোরো রেড৷ রেয়ার সিগারেট এখন!
আমি প্যাকেট খুলে একটা সিগারেট ধরাই।
শুরু করে প্রিয়ন্তি।
গত বছরের অক্টোবর। মাত্র শীত পরা শুরু করেছিল। তুমি আবদার করলে শাড়ি পরতে। মনে আছে লাল শাড়িটার কথা। আমরা সন্ধ্যায় তোমার ছাদে গিয়েছিলাম। তুমি পাগল হয়ে গিয়েছিলে প্রথম জয়েন্টটা শেষ করার পর। তোমাকে সেদিন সামলাতে কতটা কষ্ট হয়েছিল!
সেদিনই আসলে আমার সর্বনাশের শুরু হয় অন্তর।
তমাকে তো তুমি আমার থেকেও ভালো চিনো। সেদিন বিকেলবেলা, তোমার তখনো ক্লাস শেষ হয়নি। আমি আর তমা বসে গেজাচ্ছিলাম ক্যান্টিনে। তখন জয়নাল কাকা ক্যান্টিনের মালিকের সাথে কথা বলছিল আমাদের সামনে।
তমা আচমকা একটা জিনিস জিজ্ঞেস করল, এই এখন পর্যন্ত কত বড় নিয়েছিসরে?
আমি একটু থতমত খেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন?
আরে বল নাহ বেটি।
সাড়ে ছয়, আমি লজ্জিত মুখে বললাম..
কার? কার? অন্তরের!
নাহ্। ওর সাথে আমার এখনো কিছু হয় নি কিন্তু ওরটা এর থেকে বড়। আমি ফিক করে হেসে দিলাম।
তাহলে কারটা? কবে?
কেন? তুই জেনে কি করবি?
আরে বলনাহ্।
সেটা বলা যাবে নাহ্।
হুহ্। ইন্সটায়তো অনেক ডিক পিক পাস!
আমি ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকাই,
তমা কি হয়েছে তোর?
আরে দেখা নাহ্৷ আমি তো তোর মত পপুলার নাহ্৷ আমরা তো ডিক পিক পাইও নাহ।
যাতো বালটা..
দেখ নাহ। প্লিজ৷ আমি কাউকে বলব নাহ্৷
ওর বাচ্চামি দেখে আমি হেসে দেই। মোবাইলটা খুলে ইন্সটা চ্যাট বের করি..
আনসিন মেসেজে ঢুকি। হাজার হাজার ডিক পিক৷ আগে দেখতে ভালো লাগলেও প্রেম হওয়ার পর আর দেখি নি।
ওর হাতে দিলাম মোবাইল। ও একের পর এক মেসেজ দেখছে আর আহ্ উহ্ করছে..
আহ্ কি সাইজ..
হা হা.. আমার মনে হয় এডিটেড..
না না দেখ সবই ৬-৭.৫ ইঞ্চি।
হইসে এখন দে..
দাড়া তোকে একটা জিনিস পাঠাই..
তমা ওর ফোন বের করে আমাকে মেসেজ করল..একটা ভিডিও..
কীসের ভিডিও.. কার?
শোন এখন নাহ্। বাসায় গিয়ে দেখিস..
এখন দেখলে কী হবে?
সারপ্রাইজ নষ্ট হবে। আর অন্তর কে বলিস নাহ্।
আর আমি যাই ক্লাস আছে।
তমা উঠে চলে যায়।
আমি একাই টেবিলে বসে থাকি হেড ডাউন করে।
জয়নাল কাকা চলে যাচ্ছিল। আমাকে দেখে আমার কাছে এসে দাড়ালো।
মামনী কি অসুস্থ নাকি।
আমি চোখ মেলে উনাকে দেখতেই মাথা তুলি।
না কাকা। কোন ক্লাস নেই। তাই একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছি।
আমি অট্টহাসিতে ফেটে পড়লাম।
তোর এই বেদ বাক্য অন্য কোথাও গিয়ে বলরে তমা। আমাকে নাহ্। ব্লক করতে বাধ্য করিস নাহ্। আজকের পর আর কখনো কল দিস নাহ্।
কলটা কেটেই হাতে ধরা গীটারটাকে দুটো আছাড় দিলাম। এই আছাড় দুটোর উপর দিয়ে নিজের এবং টোটাল পরিস্থিতির উপর যতটা ঘিন্না ছিল উগরে দিলাম অনেকটা।
এক কোনে বসে জয়েন্ট বানাতে বানাতে মাথার উপরে গোল থালার মত চাঁদের সৌন্দর্য দেখতে দেখতেই মনে পড়ে গেলো, প্রিয়ন্তিকে করা প্রথম কিস।
আমার জন্মদিনে এই ছাদে। আমার জন্য শাড়ি পরে এসেছিল ও। ওইতো ওই পানির ট্যাংকিটায় হেলান দিয়ে দাড়িয়েছিলো আমার কোলে মাথা রেখে। আমি ওর চেহেরা দেখতে দেখতে কখন যেন ওকে টেনে কিস করে বসেছিলাম ওর লাল টুকটুকে ঠোঁটে। ও সরে যায় নি। মিশে গিয়েছিল আমার সাথে৷ মিশিয়ে দিয়েছিলো ওর ঠোঁট আমার পোড়া ঠোঁটের সাথে। হাহ্। দিনগুলো আর সোনার খাঁচায় রইল নাহ্।
মাস খানেক পর। ইদানিং প্রিয়ন্তিকে দেখা যায় নাহ্। আমার সাথে না দেখে বন্ধু বান্ধবের প্রশ্নবানে জর্জরিত আমি। ওদের একপেশে একঘেয়ে প্রশ্নে হেসে যাই। দেয়ার মত উত্তর নেইতো আমার কাছে। কী দিব?
এই একমাস আমার কীভাবে গিয়েছে শুধু আমি জানি! চোখের জলে ভিজেছে দু চোখ। দাড়ি গজিয়ে চেহেরাটা হয়ে গেছে বিচ্ছিরি। চোখদুটো কোটরে ঢুকে গেছে।
ভার্সিটিতে প্রথম কয়েকদিন ততটা অসুবিধা হয় নি। কিন্তু দিন ৮ না যেতেই প্রিয়ন্তিকে সেই আগের মতই ভার্সিটিতে দেখা যেতে থাকল। আমাকে দেখলে নিস্পলক তাকিয়ে থাকে। আমি বুঝি কিন্তু তাকাই নাহ্।
সেদিন ৭ তলা থেকে নামার জন্য লিফটের বাটনে চাপ দিয়ে ওয়েট করছি। নয়তলা থেকে লিফট নামছে। ম্যানেজম্যান্ট ৪০৫ এর এসাইনমেন্টটা জমা দিয়ে বাসার দিকে যাওয়ার চিন্তায় উদগ্রীব মন। লিফট থামতেই দেখি ভিতরে প্রিয়ন্তি একা।
খুবই অদ্ভুত পরিস্থিতি। কি বলব না বলব! ঢুকন কি ঢুকব না! অদ্ভুত এক দোটানায় মন!
কোন কথা না বলে ঢুকে পড়লাম। জি তেই প্রেস করা। চুপচাপ এক দেয়ালে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে। ওর পারফিউমের গন্ধে মৌ মৌ করছে লিফট। মাত্রই দিয়েছে! কেন? প্রশ্নটা আসেতও চেপে মেরে ফেললাম। এটা আমার প্রশ্নই নাহ্।
ও অপলক তাকিয়ে আছে। টের পাচ্ছি। ওর চোখের দৃষ্টি আমার মস্তিষ্কে আঘাত করছে। চোখ বন্ধ করে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি তাড়াতাড়ি নিচতলা আসার।
হাতের উপর হটাৎ চাপ। তাকাতেই দেখি ও আমার হাত ধরে নিয়েছে, প্রচন্ড শক্তিতে। আমি স্তব্ধ হয়ে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে ওর দিকে তাকালাম। ও কথা না বলে আমার গায়ে লেপ্টে গেলো।
কোথা থেকে যেন সেই পুরোনো ফিলিংসগুলো, যেগুলো সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে চাপা দিয়ে রেখেছিলাম জাগতে শুরু করল..
আমি ওকে সরলাম নাহ্। নীচতলা আসতেই ও আমার হাত ধরে হাটা শুরু করল। আমি চুপচাপ ওর পিছুপিছু।
ভিতরে রাগ আসতেসে নাহ্। ক্ষোভ! তাও নাহ্। কিছুই নাহ।
আমরা ভার্সিটি থেকে বের হয়ে রিকশা নিলাম। ওর পরনে শার্ট। উপরের তিনটা বোতাম খোলা। না চাইতেও চোখ আঁটকে যাচ্ছে ওর বাদামি বুকের উপরে বসা তিলে বার বার।
দাড়ি কাটো নাহ্ কেন? চোখ দুটোতো একদম ভিতরে বসে গেছে!
আমি উত্তর না দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি। ওর কোলের ভাজের উপর আমার হাত ধরে রেখে দিয়েছে প্রিয়ন্তি।
ঘুমাও ঠিকমত? ঘুমাতে পারো! সেদিন শুনেছি গীটারটা নাকি ভেঙ্গে ফেলেছো?
আমি আবার ওর দিকে চোখ কুঁচকে তাকাই। এ খবর ওর জানার কথা নাহ্।
স্বাধীন বলেছে। তোমার বাসায় না গিয়েছিলো মাঝখানে।
আমি এখনো চুপ। শুধু মুখটা ওর তিলের ওপর থেকে সরিয়ে রাস্তায় ফোকাস করলাম।
বিকেলের শেষভাগ। ও আরেকটু কাছে এসে আমার হাতটাকে ওর পিছনে নিয়ে বুকের মধ্যে সেধিয়ে গেলো। আমার নাকে ভেসে আসল সেই চিরচেনা লরিয়্যাল শ্যাম্পুর গন্ধ। মনটাকে জোর করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। সবকিছু ভুলে এই চুলে নাক ডুবিয়ে গন্ধ নিতে ইচ্ছে করছে!! আহ্! জীবন কতটা কঠিন। দু মাস আগেও যা ছিল, এখন নেই।
রিকশাটা এখন কোলাহল থেকে অনেক দূরে। আমরা সেক্টর ১৬ এর দিকে। এদিকে শুধু খালি জমি৷ মাঝখানে সুন্দর পিচঢালা রাস্তা।
অন্তর। এই অন্তর।
ওর সেই মোলায়েম কন্ঠ। যেটা শুনলে আমি আমার সমস্ত রাগ ভেঙ্গে ওর বুকে সেধিয়ে যেতাম। আজকে পারছি নাহ্। কোন ভাবেই নাহ্।
ও বলেই চলেছে,
অন্তর শোন নাহ্। আমার ভুল হয়ে গেছে লক্ষী।অনেক বড় ভুল। আমি জানি তোমার কাছে কেন, দুনিয়ার কেউ আমাকে ক্ষমা করবে নাহ্ এই কাজের জন্য। অন্তর! তুমি আমার সব অন্তর। কিন্তু আমি মাঝখানে এই কথাটাই ভুলে গিয়েছিলাম টোটালি। সমস্ত কিছু এত তাড়াতাড়ি ঘটে গেছে এবং আমি এতটাই আটকে গিয়েছিলাম, বুঝতেও পারিনি কি হারিয়ে ফেলছি মাঝখান থেকে। অন্তর! প্লিজ আমাকে একটা সুযোগ দাও।
ওর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। কন্ঠে বোঝা না গেলেও আমার শার্টের পাশটা ভিজে উঠছে বুঝতে পারছি।
আমার ইচ্ছে করছে ওর মাথায় হাত রাখি। একটু বুলিয়ে দেই হাতটা মাথায়। চোখ দুটো মুছিয়ে দিয়ে ওর ঠোঁটে আলতো একটা চুমু দেই। পারছি নাহ্। ওর চেহেরা দেখলেই গ্যালারীর দৃশ্যটা ভেসে ওঠে।
অন্তর! একটুও কথা বলবে নাহ্। আমার মাথায় একটু হাত রাখবে নাহ্। অন্তর সোনা। একটু শোনো নাহ্। আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে অন্তর।
গত এক মাসে শুয়েছ উনার সাথে? প্রশ্নটা ঠাস করে বেরিয়ে গেলো! নিজেকে চটকাতে মনে চাচ্ছে ।
প্রিয়ন্তি মাথাটা বুক থেকে উঠিয়ে ওর চোখ মুছে সরাসরি তাকালো আমার চোখে। ওর অবাক দৃষ্টি এতটা প্রখর, আমি অন্যদিক তাকালাম।
প্রশ্নটা করার পর প্রায় দু মিনিট কেটে গেছে এখনো উত্তর আসে নি।
উত্তরটা না আসলেই ভালো হত।
হ্যা। ওইদিন রাতেই শুয়েছি। তমাদের বাসায়। তুমি চলে যাওয়ার পর। এরপর এক সপ্তাহ তো বিছানা থেকেই উঠতে পারিনি ব্যাথায়। এরপর ভার্সিটিতে আবার ক্লাস শুরু করার পর থেকে আরো দু বার। প্রথমবার ভার্সিটির পিছনের পার্কিং এ আর শেষবার গত পরশু শো শেষে গ্যালারীতে।
এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে থামে ও।
আমার কানের পর্দা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে। নিজেকে বোকা মনে হচ্ছে। কার সাথে আমি রিকশায়? কে আমাকে মাত্র বলল আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে নাহ্!
আমাকে অনেক ঘিন্না হচ্ছে তাই নাহ্! স্বাভাবিক! আমিতো নিজেও জানতাম নাহ্ আজকে থেকে ১ বছর আগে যে একটা ছোট খেলা আমাকে এতটা পরিবর্তন করবে! অন্তর! জয়নাল কাকার সাথে আমার যেই সম্পর্ক সেখানে আত্মিক ভালোবাসা নেই। শারীরিক একটা ভালোলাগা আছে। আসলে মারাত্মক ভালোলাগা আছে। আমি নেশার মত ডুবে গেছি লোকটার পুরুষত্বের কাছে। কিন্তু উনাকে আমি ভালোবাসি নাহ্। উনি শুধু আমার এই ২২ বছরের যৌবনটাকে চুষে খেতে চায়। আর আমি শুধু উনাকে খেতে দেই অন্তর। উনি যখন আমাকে নেয়, আমি পৃথিবীতে থাকি না অন্তর। আমি জানতাম নাহ্ আমি সেক্স এতটা পছন্দ করি। উনি আমাকে টের পাইয়েছে আমার এই মারকাটারি ফিগারটা থেকে কতটা সুখ পাওয়া সম্ভব। অন্তর, আমি উনার কাছে চরম লেভলের সাবমিসিভ। আমি তোমাকে যেভাবে কন্ট্রোল করে আসছি, উনাকে পারিনি। আমি নিজেই এখন কাকার কন্ট্রোলে। উনি আমাকে ওই ভাবে ভালোবাসেন কি নাহ্, সেটা আমি জানি নাহ্! তবে টের পাই উনারো আমার জন্য ইমোশোন ক্রিয়েট শুরু হয়েছে। অন্তর আজকে তুমি যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাও, যেতে পারো। তবে, আজকে তুমি চলে গেলে আমাকে এই ফাঁদ থেকে কেউ ছাড়াতে পারবে নাহ্। আমি মুক্তি চাই অন্তর। বিশ্বাস কর আমি মুক্তি চাই। আমি শুধু তোমার থাকতে চাই। আমাকে এখান থেকে বাঁচাও প্লিজ। আমাকে এই নোংরা খেলা থেকে উদ্ধার কর।
কথা বলতে বলতে ওর হাতের পাঁচটা আঙ্গুল আমার ডান হাতের আঙ্গুলকে চেপে ধরেছিলো। এখন চাপ ক্রমাগত বাড়ছেই।
ওর কথাগুলো কেমন যেন লাগছে!
মুক্তি চাও মানে? নোংরা খেলা মানে! ব্রেকাপের দিন রাতের বেলাই তুমি নিজেকে ছোটলোকটার কাছ থেকে সরাতে পারো নি। আর তুমি বলছ এখন নোংরা খেলা! লোকটা সেদিন ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছিলো। তুমিতো ৩-৪ ঘন্টাও পার করতে পারোনি। আর তুমি এখন এসে কেনো বলতেসো এসব কথা? তোমার মাথার মধ্যে ছিলো না আগে এই কথা!!! আমাদের প্রেম। আমার সবর। আমার লয়ালিটি। আমার অনেষ্টি৷ ১ বছর ধরে ওই ছোটলোকটার সাথে শুচ্ছ তুমি৷ তোমার বাপের বয়সী, প্রিয়ন্তি!
I know he is kindda old like my dad. But, his stamina is way out of your league.
তীব্র কটাক্ষ নিয়ে কথাগুলো বলল প্রিয়ন্তি।
তোমার রাগ জায়েজ। আমি একবারো বলছি নাহ্ আমি ভুল কিছু করিনি। আমি শুধু তোমাকে সমস্ত শেয়ার করতে চাচ্ছি। চাই তুমি বোঝ। If you hear the whole story, you may understand why I am calling this whole situation a game to me and why I want to be free from this shit. Will you at least hear?
প্রিয়ন্তি, তুমি লোকটাকে ডিফেন্ড করতেসো আমার সামনে। আবার আমাকে বুঝতে বলতসো! আর ওই ছোটলোকটার স্ট্যামিনা নিয়ে যেভাবে কথা বলতেসো মনে হচ্ছে তুমি তুলনা করছ আমাকে তার সাথে!
আমরা অনেকটা দূরে। সেক্টর ১৬র এই জায়গাটা নির্জন। এত দূরে কেউ আসেও নাহ্। পড়ন্ত বিকেল৷ সকালের গরম ভাবটা এখন আর নেই। প্রিয়ন্তি রিকশাওয়ালাকে থামতে বলল। আমরা নেমে পড়লাম৷
প্রিয়ন্তির পড়নে শার্ট আর জিন্সের ফুল প্যান্ট। খোলা বোতামের ফাকের জায়গাটুকু ভেদ করে অবাধ্য পর্বত জোড়া বের হয়ে আসতে চাইছে। রিকশাওয়ালার চোখ সরছে নাহ্। সরবে কীভাবে প্রিয়ন্তির ক্লিভেজ জোড়া সফেদ মাখনের তালের মত অনেকটা উঁকি দিচ্ছে। রিকশাওয়ালাকে কী বলব, আমার নিজের নজরইতো সরাতে পারছি নাহ্। টাকা নেওয়ার সময় পর্যন্ত রিকশাওয়ালা প্রানভরে উপভোগ করল।
আমরা রাস্তার ফুটওয়াকে বসলাম। একরাশ বাতাসে চুলগুলো উড়ছে। গভীর কালো চোখজোড়া কাজলের আলতো পরশে এতটা মায়াময় হয়ে উঠেছে, চোখ পড়লে আর ফেরাতে ইচ্ছে করছে নাহ্। ইস্ কত কাছে! এরপরো কোন অধিকার নেই। চাইলেও ছুতে পারব নাহ্।
ও আমার হাত ধরে৷ শক্ত করে। ওর মুঠোয় হারিয়ে যাচ্ছে আমার আঙ্গুলগুলো।
অন্তর! আমার চোখে চোখ রেখে ও আমাকে ডাকে৷
অন্তর। আমার মন এখনো তোমার। শরীরটা নষ্ট হলেও মনটাকে হতে দেই নি অন্তর। এখনো ততটাই ভালেবাসি যতটা প্রথম দিন থেকে বেসেছি। আমি জানি তুমি কতটা কষ্ট পাচ্ছ। তোমার দেবীর গায়ে কলংক লেগে গেছে অন্তর। কিন্তু তোমার দেবীর মন মন্দির এখনো তোমার জন্য কাঁদে অন্তর।
আমি চুপচাপ শুনছি।
অন্তর অনেক কিছু তোমাকে আমি বলব। অনেক কিছু। তোমার অনেক খারাপ লাগবে। তোমার এখান থেকে চলে যেতে মন চাবে। তাই আমরা আজকে একদিনে সব কথা শেষ করব নাহ্। আমি তোমাকে একটু একটু করে বলব আর তুমি একটু একটু করে হজম করবে। তুমি বোঝার চেষ্টা করবে আমি কীভাবে আটকে গেছি একটা প্যাচে পড়ে। সব শুনে তুমি ডিসাইড করবে তুমি তোমার প্রিয়ন্তির জন্য লড়বে নাহ্ জাস্ট ফেলে দিয়ে চলে যাবে।
আমি শুনে দূরে তাকাই। প্রিয়ন্তি ব্যাগ খুলে সিগারেটের একটা প্যাকেট বের করে আমাকে দেয়৷ মালবোরো রেড৷ রেয়ার সিগারেট এখন!
আমি প্যাকেট খুলে একটা সিগারেট ধরাই।
শুরু করে প্রিয়ন্তি।
গত বছরের অক্টোবর। মাত্র শীত পরা শুরু করেছিল। তুমি আবদার করলে শাড়ি পরতে। মনে আছে লাল শাড়িটার কথা। আমরা সন্ধ্যায় তোমার ছাদে গিয়েছিলাম। তুমি পাগল হয়ে গিয়েছিলে প্রথম জয়েন্টটা শেষ করার পর। তোমাকে সেদিন সামলাতে কতটা কষ্ট হয়েছিল!
সেদিনই আসলে আমার সর্বনাশের শুরু হয় অন্তর।
তমাকে তো তুমি আমার থেকেও ভালো চিনো। সেদিন বিকেলবেলা, তোমার তখনো ক্লাস শেষ হয়নি। আমি আর তমা বসে গেজাচ্ছিলাম ক্যান্টিনে। তখন জয়নাল কাকা ক্যান্টিনের মালিকের সাথে কথা বলছিল আমাদের সামনে।
তমা আচমকা একটা জিনিস জিজ্ঞেস করল, এই এখন পর্যন্ত কত বড় নিয়েছিসরে?
আমি একটু থতমত খেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেন?
আরে বল নাহ বেটি।
সাড়ে ছয়, আমি লজ্জিত মুখে বললাম..
কার? কার? অন্তরের!
নাহ্। ওর সাথে আমার এখনো কিছু হয় নি কিন্তু ওরটা এর থেকে বড়। আমি ফিক করে হেসে দিলাম।
তাহলে কারটা? কবে?
কেন? তুই জেনে কি করবি?
আরে বলনাহ্।
সেটা বলা যাবে নাহ্।
হুহ্। ইন্সটায়তো অনেক ডিক পিক পাস!
আমি ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকাই,
তমা কি হয়েছে তোর?
আরে দেখা নাহ্৷ আমি তো তোর মত পপুলার নাহ্৷ আমরা তো ডিক পিক পাইও নাহ।
যাতো বালটা..
দেখ নাহ। প্লিজ৷ আমি কাউকে বলব নাহ্৷
ওর বাচ্চামি দেখে আমি হেসে দেই। মোবাইলটা খুলে ইন্সটা চ্যাট বের করি..
আনসিন মেসেজে ঢুকি। হাজার হাজার ডিক পিক৷ আগে দেখতে ভালো লাগলেও প্রেম হওয়ার পর আর দেখি নি।
ওর হাতে দিলাম মোবাইল। ও একের পর এক মেসেজ দেখছে আর আহ্ উহ্ করছে..
আহ্ কি সাইজ..
হা হা.. আমার মনে হয় এডিটেড..
না না দেখ সবই ৬-৭.৫ ইঞ্চি।
হইসে এখন দে..
দাড়া তোকে একটা জিনিস পাঠাই..
তমা ওর ফোন বের করে আমাকে মেসেজ করল..একটা ভিডিও..
কীসের ভিডিও.. কার?
শোন এখন নাহ্। বাসায় গিয়ে দেখিস..
এখন দেখলে কী হবে?
সারপ্রাইজ নষ্ট হবে। আর অন্তর কে বলিস নাহ্।
আর আমি যাই ক্লাস আছে।
তমা উঠে চলে যায়।
আমি একাই টেবিলে বসে থাকি হেড ডাউন করে।
জয়নাল কাকা চলে যাচ্ছিল। আমাকে দেখে আমার কাছে এসে দাড়ালো।
মামনী কি অসুস্থ নাকি।
আমি চোখ মেলে উনাকে দেখতেই মাথা তুলি।
না কাকা। কোন ক্লাস নেই। তাই একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছি।