What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আমার জীবন খাতার প্রতি পাতায় - পায়েল (2 Viewers)

Black Knight

Not Writer or Creator, Only Collector
Staff member
Supporter
Joined
Mar 6, 2018
Threads
265
Messages
25,763
Credits
560,024
Purse
Birthday Cake
Billed Cap
Rocket
Pizza
Mosque
আমার জীবন খাতার প্রতি পাতায় - পায়েল
লেখক-sbsb


ভদ্রলোকের নাম বিনয় মল্লিক। ব্যাংকের ম্যানেজার। প্রায় ২৫ বছর ব্যাঙ্কে কাজ করছেন। গ্র্যাজুয়েট হয়ে ব্যাঙ্কে ঢুকেছিলেন। ধীরে ধীরে পদন্নোতি হয়ে এখন ম্যানেজার। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে কাস্টমারদের লকারের গোপনীয়তা রক্ষা করা তার একটা কাজের মধ্যে পড়ে। অনেকের লকার আছে। কেউ লকার ব্যবহার করতে এলে তাঁকেও সঙ্গে যেতে হয় দ্বিতীয় চাবি নিয়ে। লকার খুলে উনি আবার নিজের চেয়ারে এসে বসে কাজ করতে থাকেন। লকারের কাজ হয়ে গেলে আবার তাকে উঠে যেতে হয় দ্বিতীয় চাবি দিয়ে লকার বন্ধ করে দিতে।
পায়েলকে তিনি অনেকবার দেখেছেন ব্যাঙ্কে আসতে। আসল নাম পায়েল ব্যানার্জি। মধ্য বয়স্কা। প্রায় ৩৫ হবে। সুন্দর সাস্থ্য, লম্বা ভালোই। চলাফেরার মধ্যে একটা আভিজাত্য বজায় রাখেন। দেখতে খুব ভালোই, গায়ের রঙ ফর্সা। সাধারনতঃ উনি শাড়ি পরেই আসেন। টাইট করে শাড়ি পড়েন। সুডৌল পাছার অবয়ব দেখে বিনয় ঘেমে ওঠেন। শাড়ীর আঁচল বুকের উপর দিয়ে এমন ভাবে দেওয়া থাকে যাতে ভরাট বুকের কিছু অংশ বাইরে বেড়িয়ে থাকে। সেই বুকের আভাস দেখলেই বিনয়ের মনে কোন এক অজানা গান গুনগুনিয়ে ওঠে। টিকালো নাকের উপর ঢাউস একটা মানানসই গগলস দিয়ে চোখ ঢাকা থাকে। এতদিন যে পায়েল ব্যাঙ্কে এসেছেন একবারের জন্যে হলেও বিনয় ওর চোখ দেখতে পান নি।
হয়তো বিনয় মন দিয়ে টেবিলের উপর মুখ গুঁজে কোন কাজ করছেন, নাকে অদ্ভুত একটা অনির্বচনীয় গন্ধ আসতেই উনি বুঝতে পেরে জান যে পায়েল এসেছেন। মুখ তুলে তাকিয়ে দেখেন পায়েল গগলসের মধ্যে দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছেন। বিনয়ের হাত আস্তে করে চলে যায় ব্যাঙ্ক রেজিস্টারে। টেনে বার করে আনেন, খুঁজে পায়েলের নাম বার করেন। সাইন করান। তারপর ড্রয়ার খুলে একটা চাবি বার করে টেবিলের উপর রেখে দেন।
পায়লের সাথে দুটো কাজ বিনয় কোনদিন করেন নি। এক হোল ব্যাঙ্কের ওনার সাইন মেলানো আরেকটা হোল পায়েলের হাতে হাতে চাবি দেওয়া। উনি করতে চেয়েছিলেন কিন্তু পায়েলের কথায় উনি সেটা করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। প্রথমবার যখন পায়েলের সাইন মেলাতে গিয়েছিলেন তখন চমকে উঠেছিলেন ওনার কথা শুনে।
পায়েল বলেছিলেন, ‘সাইন মেলানোটা বোধহয় তাদের জন্য হয় যাদের উপর ভরসা রাখা যায় না। আমাকে দেখে কি আপনার তাই মনে হচ্ছে?’
বিনয় সঙ্গে সঙ্গে ড্রয়ার বন্ধ করে দিয়েছিলেন সাইন না মিলিয়ে। আমতা আমতা করে কোনরকমে বলতে পেরেছিলেন, ‘না ঠিক তা না। আসলে ব্যাঙ্কের নিয়মের মধ্যে পড়ে কিনা তাই? সরি আপনাকে যদি অফেন্ড করে থাকি।‘ পায়েলের কণ্ঠস্বর তাঁর কানে তখনো রিনরিন করে বাজছে। ওনার বাঁকা ঠোঁটের হাসি ওর হৃদয়ে ব্রাজিলের সাম্বা নাচ শুরু করিয়েছে।
বিনয় সম্মোহিতের মত লকারের একটা চাবি পায়েলের হাতে তুলে দিতে গিয়ে দেখলেন ওনার হাত ঠকঠক করে কাঁপছে। বিনয় অবশ হয়ে আবার চাবিটা নামিয়ে রাখলেন টেবিলের উপর। কোনমতে বললেন, ‘এই যে চাবি। আপনি একটা নিন। আর চলুন আমার সাথে।‘
বিনয় যেন মন্ত্রমুগ্ধের মত উঠে দাঁড়ালেন চেয়ার ছেড়ে। দ্বিতীয় চাবি নিয়ে পায়েলকে লকারের দিকে যেতে নির্দেশ দিলেন, নিজেও এগিয়ে গেলেন আগে। পায়েল পিছনে আসছেন এটা বুঝতে পেরে হাঁটার সময় বিনয় বুঝতে পারছিলেন তিনি পায়ে পা লাগিয়ে ফেলছেন হাঁটতে গিয়ে। একটা সুন্দরী মহিলার উপস্থিতি তাঁকে এমন বেবশ করে দেবে সেটা নিজেও বিনয় ভাবতে পারেন নি। লকার রুমের ভারী লোহার দরজা খুলে সরে দাঁড়ালেন পায়েলের জন্য, বললেন, ‘আসুন ভিতরে।‘
পায়েল বিনয়ের গা ঘেঁসে এগিয়ে গেলেন তাঁর সুডৌল পাছায় দুলুনি তুলে, যে দুলুনি সংক্রমণ করে দিলেন বিনয়ের হৃদয়ে। বিনয় নাকে অনুভব করতে লাগলেন মহিলার পারফিউমের গন্ধ। এই পারফিউম বিনয় নিউ মার্কেটে অনেক খুঁজেছেন, কিন্তু হদিশ করতে পারেন নি। পারফিউমের গন্ধে বিভোর হয়ে ভাবলেন যদি কোনদিন সম্ভব হয় তাহলে জিজ্ঞেস করবেন কোথা থেকে এই পারফিউম কিনেছিলেন পায়েল?
পায়েল যখন লকার বক্সে চাবি ঢোকাচ্ছিলেন, বিনয় লক্ষ্য করছিলেন ওনার পা। পায়েল একটা পাতলা চটি পরেছেন পায়ে, আঙ্গুলগুলোতে লাল নেল পালিশ লাগানো। ফর্সা পায়ে লাল নেল পালিশ এতো খোলতাই হয়েছে মনে হচ্ছে পাগুলো যেন টিউব লাইটের আলোয় চমকাচ্ছে। ঠিক পায়ের পাতার উপর সরু একটা রুপোর পায়েল। দু হাতে দু গাছা সোনার চুরি। ফর্সা হাতে সোনা যেন আরও খোলতাই হয়েছে। পায়েল চাবি ঘুরিয়ে ওয়েট করছে বিনয়ের জন্য। বিনয় এগিয়ে গিয়ে তাঁর চাবিটা দিয়ে লকার খুলে চলে এলেন দরজার বাইরে।
বিনয়কে একা দেখে তাঁর এক সাথী মন্তব্য করলেন, ‘উফফ, কি মাল মাইরি। হাত মাত লাগালে নাকি সুযোগ পেয়ে?’
বিনয় লজ্জায় মুখ লাল করে বললেন, ‘কি আজে বাজে কথা বলছেন। কাজ করুন আপনার।‘
নিজের টেবিলে এসে গজগজ করতে লাগলেন। ওই কথাটা খুব বাজে লেগেছে তাঁর। কি করে বলতে পারে? যাইহোক, এইভাবে চলছিল বিনয়ের পায়েলের সাথে সঙ্গত। পায়েল আসে মনটা খুশিতে ভরে ওঠে। আবার পায়েল চলে যায় বিনয় ফিরে যায় তাঁর কাজের জগতে।
একদিন পায়েল লকারের চাবি বিনয়কে ফেরত দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকদিন আর আসবো না ব্যাঙ্কে। বিশেষ কাজে আমাকে যেতে হচ্ছে বাইরে। আমাকে কি এই চাবি আপনাদের কাছে ফেরত দিতে হবে? আর আমি কি আশা করতে পারি যা রেখে গেলাম তা বহাল তবিয়তে থাকবে লকারে?”
বিনয় উত্তর করলেন, ‘কি বলছেন আপনি? এটা ব্যাঙ্ক আর আমরা কাস্টমারের ভালর জন্য এখানে বসে আছি। আপনি নিশ্চিন্তে জান, কোন চিন্তা করবেন না। আপনার জন্য আমরা আছি ব্যাঙ্কের সুরক্ষা আপনার জন্য। আর আপনাকে এই চাবি ফেরত দেবার কোন প্রয়োজন নেই যতদিন লকার আপনার নামে আছে। ‘
পায়েল একটা সুন্দর দাঁতের সাজানো মুখে হালকা হাসি ফুটিয়ে হাতের ব্যাগ খুলে সযত্নে চাবিটি রেখে ঘুরে হাঁটতে লাগলেন ব্যাঙ্কের বাইরে বেড়িয়ে যেতে। পায়েলের গলায় একটা ধবধবে সাদা মুক্তোর হার, একটা লকেট ঝুলছে, হার্ট সেপের। বিনয় ভাবতে থাকলেন এই লকেটটার মানে কি? কার প্রতি এই ভালোবাসা? কাকে উনি ভালবাসেন? না অন্য কারো ভালবাসার প্রকাশ এটা? বিনয় বসে বসে ওর দোদুল্যমান পাছার ওঠানামা দেখতে দেখতে ভাবলেন কদিন আর এই সুন্দরীর পদার্পণ ঘটবে না এই ব্যাঙ্কে।
পায়েল ব্যাঙ্কের দরজার বাইরে চলে যেতেই বিনয় উঠে দাঁড়ালেন চেয়ার ছেড়ে। একবার দেখে আসা দরকার লকারটাকে। ভদ্রমহিলা একটু সন্দেহ ঢুকিয়ে গেলেন মনের মধ্যে।
লকারের দরজা খুলে ভিতরে গিয়ে বন্ধ লকারের দিকে তাকালেন, তারপর নিজের চাবি ঢুকিয়ে ঘুরিয়ে দেখলেন খোলে কিনা। লকার খুলল না দেখে জিভ দিয়ে একটা আলটাগড়ায় শব্দ তুলে নিশ্চিন্ত হলেন লকার সম্বন্ধে। খুশি হয়ে ফেরত আসতে গিয়ে থমকে গেলেন লকারের উপর চোখ পরায়। একটা মোটা ডায়েরি পড়ে রয়েছে। এটা আবার কি ভেবে ডায়েরি খুলে প্রথম পাতায় চোখ পরতেই চমকে উঠলেন বিনয়। পায়েল ব্যানার্জি জ্বলজ্বল করছে ডায়েরির প্রথম পাতায়। ডায়েরিটা বন্ধ করে বিনয় হুড়হুড় করে বেড়িয়ে এলেন লকার রুমের বাইরে। কোনরকমে দরজা বন্ধ করে ছুটে বেড়িয়ে এলেন ব্যাঙ্কের বাইরে। চারিদিকে চোখ রেখে খোঁজার চেষ্টা করতে লাগলেন পায়েলকে। কোথাও দেখতে পেলেন না ওনাকে।
ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফেরত আসতে আসতে দেখলেন ব্যাঙ্কের সমস্ত কর্মচারী ওনার দিকে তাকিয়ে আছেন অবাক চোখে। উনি লজ্জায় মাথা নিচু করে ফিরে এলেন নিজের চেয়ারে। বসে ভাবতে লাগলেন এবারে এই ডায়েরি নিয়ে কি করা উচিত। চাবি নেই যে উনি লকার খুলে ঢুকিয়ে দেবেন। আবার চাবি থাকলেও যে উনি লকার খুলতে পারতেন তাও নয়। ব্যাঙ্কের সুরক্ষা। কি করেন কি করেন ভাবতে ভাবতে এটাই ঠিক করলেন যে ডায়েরিটা নিয়ে যাবেন সাথে করে। ঘরে রেখে দেবেন আর যেদিন পায়েল ফিরে আসবেন সেদিন আবার ফেরত দিয়ে দেবেন ওনাকে তাঁর সম্পত্তি।
সবার চোখ এড়িয়ে বিনয় ডায়েরি খুলে প্রথম পাতা উল্টে পড়তে লাগলেন। পায়েলের হাতের লেখা। খুব সুন্দর আর গোটা অক্ষরে লেখা। লেখার শুরু এইভাবে, ‘আমি পায়েল ব্যানার্জি। আমার জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছু প্রকাশ এই ডায়েরিতে লিখে রাখলাম।‘


বিনয় আবার চারিদিকে তাকিয়ে দেখল কেউ লক্ষ্য করছে কিনা। নাহ্*, সেরক্ম কেউ ওনার দিকে তাকিয়ে দেখছে না। উনি ডায়েরি বন্ধ করে ড্রয়ারের মধ্যে চালান করে দিলেন। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলেন আরও তিন ঘণ্টা বাকি ছুটি হতে। অনেক কাজ বাকি পরে আছে। পায়েলের চিন্তায় সে কাজগুলো করা হয়ে ওঠে নি। পায়েল আর ওনার ফেলে রাখা ডায়েরির চিন্তা মাথা থেকে দূরে সরিয়ে বিনয় কাজে মত্ত হয়ে গেলেন।
কখন তিন ঘণ্টা কেটে গেছে ওনার খেয়াল নেই। চৈতন্য যখন হোল তখন অন্যেরা অফিসের বাইরে যেতে শুরু করেছেন। বিনয় ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলেন পাঁচটা বেজে পাঁচ মিনিট। উঠতে হবে। কাগজ ফাইল সব গুছিয়ে বিনয় উঠে দাঁড়ালেন। বাথরুম থেকে মুখ ধুয়ে ড্রয়ার খুলে চাবি নিতে গিয়ে আবার চোখে পরে গেল ডায়েরিটা। কিছুক্ষন ভাবলেন কি করবেন ওটা নিয়ে। ফেলে রেখে গেলে কি হতে পারে? কিছুই না। কিন্তু কোন কারনে উনি যদি আসতে না পারেন তাহলে এই টেবিলে অন্য কেউ বসে কাজ করতে পারে আর যথারীতি আরেকটা চাবি যেটা অফিসে থাকে সেটা নিয়ে কেউ খুলে ফেলতে পারে। নিরাপদ জায়গা নয় ডায়েরিটার জন্য এই ড্রয়ার। বিনয় আর কিছু চিন্তা না করে ডায়েরিটা তুলে নিজের ব্যাগে ঢুকিয়ে দিলেন। পরে দেখা যাবে কি করা যায় ওটা নিয়ে।
বিনয় রাস্তায় বেড়িয়ে একটা ট্যাক্সিতে উঠে বসলেন। গাড়ী চলতে থাকল। বিনয় জানলা দিয়ে বাইরের শোভা দেখতে দেখতে যেতে লাগলেন বাড়ীর উদ্দেশ্যে।
বিনয় একটা মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। বাবাও ব্যাঙ্কে কাজ করতেন তবে বিনয়ের মত ম্যানেজার হয়ে নয়। তিনি ছিলেন করনিক। খাতাই বেশি লিখতেন। উনি রিটায়ার্ড হবার পর বিনয় চাকরিতে ঢোকেন। মা বাবা আর বিনয় এই ছিল সংসার। বাবার আয়ে বেশ চলে যেত ওদের। যেহেতু একটাই ছেলে তাই ভালো করে পড়াশোনা করিয়েছেন বিনয়ের বাবা। সংসার তিনজনের বলে অভাব বলে শব্দটা ছিল না যদিও, কিন্তু লাক্সারি ব্যাপারটাও ছিল না ওই সংসারে। যতটুকু না হলে নয় ততটুকুই থাকতো। টিভি ছিল যদিও কিন্তু বিনয় কোনদিন গান শোনে নি ক্যাসেট হোক বা সিডি হোক। ওটা চরম লাক্সারি ছিল তখন তাদের।
বিনয়ের এখনো ব্যাপারটা ধন্দের মধ্যে যে বাবা টিভি কেন কিনে এনেছিলেন। রেডিওতে খবর শুনতেন ওর বাবা। হঠাৎ একদিন বিনয় আর ওর মা অবাক হয়ে দেখেন বিনয়ের বাবা একটা টিভি নিয়ে ঘরে ঢুকছেন। পরে বিনয় মায়ের কাছ থেকে শুনেছিলেন বিনয়ের বাবা নাকি ওনার কোন বন্ধুর বাড়ীতে মাঝে মাঝে যেতেন টিভি দেখতে। একদিন নাকি ওনাকে অপমান হতে হয়েছিল ওই টিভি দেখার জন্য। তাই রাগে নিজে ঘরে টিভি কিনে এনেছিলেন।
বাবাকে বিনয় যতটুকু চিনে ছিলেন তাতে তাঁর মনে হয়েছিল বাবার অহঙ্কার ছিল। উনি নিজেকে খুব স্বাধীনচেতা মনে করতেন। এটার কারন ছিল বাবা ছোটবেলা থেকে যতটুকু বড় হয়েছেন নিজের ক্ষমতার উপর। বিনয়ের দাদু আর দিদা বিনয়ের বাবার খুব ছোটবেলাতে মারা জান। তারপর থেকে ওনার বাবা একলাই মানুষ। কাকা চেয়েছিলেন তাঁর কাছে থেকে বিনয়ের বাবা লেখাপড়া করুক কিন্তু উনি তা চান নি। নিজের ছোট বাড়ীতে টিউশন করে নিজের লেখাপড়া শিখেছিলেন এবং পাশ করেছিলেন ভালোভাবে। ব্যাঙ্কে ঢুকেছিলেন পরীক্ষা দিয়ে। কাজের একমাসের মধ্যে বিয়ে করেছিলেন আর তাঁর দু বছর পর বিনয়ের জন্ম।
বিনয় ছোটবেলা থেকে ভালো ছিলেন পড়াশোনায়। মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করে গ্র্যাজুয়েশন করেন আর বছর ঘুরতে না ঘুরতে বাবা রিটায়ার্ড হয়ে যান আর সেই সুত্রে বিনয়ের চাকরি ব্যাঙ্কে। চাকরি করতে করতে বাবা আর মা একটা মেয়ে দেখে বিয়ে দিয়ে দেন বিনয়ের। বিনয়ের বৌ খুব সাধারন ঘরের তবে কাজে খুব পারদর্শী। ঘরের কাজ, রান্না, মা বাবার দেখা শোনা, বিনয়কে কোনদিন মা বা বাবার কাছ থেকে কোন অভিযোগ শুনতে হয় নি বউয়ের জন্য। মা ছিলেন বৌ অন্ত প্রান। বাবা বিনয়ের থেকে বউমাকে ভালবাসতেন খুব। কিন্তু বউয়ের সুখ বেশিদিন সইতে হয় নি তাদের। এক বছরের মধ্যে বিনয় তাঁর মা আর বাবাকে হারায়। প্রথমে মা যান তাঁর দুঃখে প্রায় আট মাস পরে বাবা। রেখে যান বিনয় আর তাঁর অন্তঃসত্ত্বা বউকে।
বিনয়ের এক ছেলে। এখন পরে ক্লাস এইটে। মেধাবী, কম কথা বলে। বাড়ীতে মাস্টার রাখা আছে। ছেলে শুধু স্কুল আর ঘর করে। বাইরে বেরোনোর নামগন্ধ নেই। মা অন্ত প্রান। বাবার থেকে মা ঘেঁষা বেশি। তাতে বিনয়ের খুব খারাপ কিছু লাগে না। বাবা মা মারা যাবার পর ধীরে ধীরে বাড়ীটাকে সারিয়ে বেশ ঝকঝকে করে তুলেছেন। লোকেরা এক কোথায় মল্লিক বাড়ী চিনিয়ে দেয় সবাইকে। প্রত্যেকটা ঘর টাইলস দিয়ে মোড়া, কালার খুব বড় টিভি। একটা পেল্লায় সাউন্ড সিস্টেম। গাঁক গাঁক করে আওয়াজ করে চলে। গেটটা একটা বেশ সুন্দর গ্রিল দিয়ে দরজা। বেশ কিছুটা এসে ঘরে ঢুকতে হয়। ঢোকার রাস্তার দুপাশে দেবদারুর গাছ সারি দিয়ে লাগানো। পথটা নুড়ি পাথরে বেছানো। দেখলে মনে হয় হ্যাঁ একটা বাড়ী দেখলাম বটে।
ছোটবেলা থেকে যেভাবে বিনয় মানুষ হয়েছিলেন এখন বিনয় ঠিক তাঁর উল্টো। গায়ের প্যান্ট শার্টের তো কথাই নেই। সব ব্রান্ডেড। জুতো দেখলে মনে হবে এইমাত্র শো রুম থেকে কেনা হয়েছে। বিনয় এখন লাক্সারির শেষ কথা। তবে বিনয়ের একটাই কমজোরি, সেটা হোল ও মেয়েদের থেকে খুব মুখচোরা। মেয়ে দেখলেই বিনয়ের মুখে কুলুপ।
বিনয় দেখতে শুনতে খুবই সুন্দর। টানা টানা চোখ নাক। পেটানো চেহারা। মাথায় কোঁকড়ান ঘন কালো চুল, উল্টে আঁচড়ানো। চোখে একটা রিমলেস চশমা। ঠোঁটের উপর সরু একটা গোঁফ মুখের পরিচয় আরও গম্ভির করে তুলেছে। এককথায় বলা যেতে পারে বেশ স্মার্ট। কিন্তু সেই স্মার্টনেস কেলিয়ে যায় কোন মেয়ের সামনে পরলে।
বিনয়ের ওই চেহারা ছোটবেলা থেকেই মেয়েদের কাছে খুব জনপ্রিয় ছিল। ইয়ত্তা নেই কত মেয়ে ওর সাথে বন্ধুত্ব করতে চেয়েছে। বিনয়ের ঠিক মনে পরে না কত মেয়ে ওকে প্রেমপত্র দিয়েছে। কিন্তু বিনয় সাহস করে উঠতে পারে নি তাদের সাথে কথা বলতে বা প্রেমপত্রের উত্তর দিতে।
বিনয়ের মনে পরে ওনার একটা মেয়েকে ভালো লেগেছিল উনি যখন কলেজে পড়তেন। পাশের পাড়ায় থাকতো। মেয়েটার কি নাম ছিল ওনার এখন মনে নেই। তবে মেয়েটা খুব সুন্দর দেখতে ছিল। ডানপিটে টাইপের। ছেলেদের সাথে কথা বলা ওর কাছে কোন ব্যাপারই ছিল না। আর ওটাই বিনয়ের কাল হয়েছিল। উনি শত চেষ্টা করেও সাহস কুলিয়ে উঠতে পারেন নি মেয়েটার সাথে কথা বলতে। আস্তে আস্তে মেয়েটা হারিয়ে গেছিল একদিন মানে মেয়েটার পরিবার চলে গেছিল পাড়া ছেড়ে অন্য পাড়ায়।
বিনয়ের সেক্স লাইফ ছিল সাধারন। এটা এই জন্য যে বিনয়ের বৌ খুব সাদামাটা। সেক্স ব্যাপারটা নিয়ে কোন উত্তেজনা ছিল না বিনয়ের বউয়ের। এমন ভাব ছিল হলে হয় না হলেও হয়। যাইহোক কোনরকমে একটা ছেলে হয়েছিল বিনয়ের। কিন্তু তা বলে বিনয়ের মনে কোন দুঃখ ছিল না। বিনয় যতটুকু পেয়েছিলেন তাতেই সন্তুষ্ট ছিলেন। কোনদিন বৌ ছাড়া অন্য মেয়ের কথা ভাবতে পারেন নি। এটা নয় ওনার সাথে কোন মেয়ের দেখা হয় নি। বিনয়ের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ওনার সৌন্দর্য বাড়ছিল। অতি সহজেই মেয়েরা ওনার সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে যেত। কিন্তু বিনয়ের উদাসীনতায় ঘাটাতে সাহস পেত না বিনয়কে মেয়েগুলো। সবাই বলাবলি করতো সুন্দর বলে গর্বে মাটিতে যেন পা পরে না।
বিনয় ভাবত ওদের আর দোষ কি। উনি সাহস পেতেন না বলেই কিনা কথা বলতে পারতেন না? নাহলে কে না চায় সুন্দরী সব মহিলাদের সাথে কথা বলতে? কেনই বা পায়েল এলে বিনয়ের বুকের মধ্যে খুশির তুফান বাঁধ ভাঙ্গা হতো। কেনই বা পায়েল ব্যাঙ্কে এলে বিনয়ের বুকে মাদলের দ্রিম দ্রিম আওয়াজ হতে থাকতো। বিনয়ের ইচ্ছে ছিল, কিন্তু সাহস ছিল না।৩।
সম্বিত ফিরে এলো বিনয়ের। চকিত হয়ে দেখল বিনয় ঘর এসে গেছে। ভাড়া মিটিয়ে ড্রাইভারকে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বিনয় এগিয়ে গেল ঘরের গেটের দিকে। গ্রিল দিয়ে বিনয়ের নিজের কালো চকচকে আম্বাসাডারটা দেখা যাচ্ছে। দুদিন ধরে বিনয় গাড়ীতে যাচ্ছেন না। ইচ্ছে করেই। ড্রাইভ করতে ইচ্ছে করছিলো না বলে। দেখা যাক কাল ইচ্ছে হলে নিয়ে যাবে। গ্রিল নিজেই খুলে ভিতরে ঢুকে নুড়ি বেছানো রাস্তায় পা রাখলেন। জুতোর তলা থেকে নুড়ি মাড়ানোর কড়মড় শব্দ উঠে এলো কানে।


বিনয়ের এই আওয়াজ খুব ভালো লাগে। কেমন নিজের মনে হয়, মনে হয় এই রাস্তায় হাঁটার অধিকার তাঁর একার আছে। কড়মড় শব্দ করতে করতে তিনি চলে এলেন সদর দরজায়। দাঁড়িয়ে বেল বাজালেন আর অপেক্ষা করতে লাগলেন। উনি জানেন বীথি আসবেন দরজা খুলতে। ঠিক তাই।

ভিতর থেকে দরজা খোলার শব্দ এলো আর একটু ফাঁক হয়ে খুলে গেল দরজা। বীথি দারজার সামনে দাঁড়িয়ে একটা সিল্কের নাইটি পরে। বীথিকে দেখে একটু হাসলেন, মনে করলেন সেই দিনের কথা যেদিন বীথি শুধু কটন সাধারন নাইটি পরে থাকতো। আজ ওই সাধারন নাইটির আর জায়গা নেই বিনয়ের এই বাড়ীতে।

বিনয়ের পিছন পিছন বীথিও চলে এলো, কারন বিনয়ের হাত থেকে ব্যাগ, মানি ব্যাগ, রুমাল, কোমরের বেল্ট, জুতো, মোজা এইসব বিনয় একেক করে তাঁর হাতে দেবেন আর বীথি একেক করে নিতে থাকবেন। এটা ডেলি রুটিন। এখনো পর্যন্ত কেউ ভোলেন নি। বিনয় তাই করতে করতে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সমর কই? পড়ছে?’

বীথি একেক করে ছাড়া জিনিস নিতে নিতে বললেন, ‘হ্যাঁ ওর ঘরে পড়াশোনা করছেন। মাস্টার আসবেন আর কিছুক্ষন পর।‘

বিনয় সব জিনিস বীথির হাতে দিয়ে তারপর ব্যাগটা উঠিয়ে নিলেন নিজের হাতে। সাধারনত এটা বীথিই করে, কিন্তু আজ এটাতে একটা বিশেষ সম্পত্তি আছে। আজ এটা ওঁর হাতে দেওয়া যাবে না। বীথি ব্যাপারটা লক্ষ্য করলেও কিছু বললেন না। উনি বিনয়ের কোন ব্যাপারেই কিছু বলেন না। কোনদিন বলেনও নি। কারন, ওনার ধারনা বিনয় যেটা করেন সেটা কোন কারন আছে বলেই করেন। আজও বীথি তাই মনে করলেন আর বেড়িয়ে গেলেন ঘর থেকে। এখন বিনয় বাথরুমে গিয়ে ফ্রেস হবেন, টিভির ঘরে এসে বসবেন। হাতে গরম কফির কাপ দিতে হবে সঙ্গে কিছু নাস্তা। তাই করতে চলে গেলেন বীথি রান্নাঘরে।

বিনয় ব্যাগ তুলে নিজের জামাকাপরের আলমারিতে রেখে দিলেন সব। এই ঘরটা বিনয়ের। এখানে বীথির কোন জিনিস থাকে না। বিনয়ের নিজস্ব আলমারি আছে, কাগজ ফাইল রাখার তাক আছে আর আছে মিউজিক সিস্টেম, যখন মন চায় তখন বিনয় এই ঘরে এসে চুপ করে গান বা বাজনা শোনেন। এই রকম ঘর একটা বীথির জন্যও আছে। সেটাতে বিনয় পারতপক্ষে পা দেন না। অবশ্য কোন নিয়ম নেই পা না দেবার। তবে এনারা চেষ্টা করেন নিজেদের গোপনীয়তা নিজেদের মধ্যে রেখে দেবার। অজান্তে একটা অলিখিত নিয়ম তৈরি হয়ে গেছে।

বিনয় গা হাত পা ধুয়ে ফ্রেস হয়ে টিভির সামনে এসে বসলেন। কিছুক্ষন টিভি দেখবেন, বীথির সাথে সংসারের প্রয়োজনীয় দু চারটে কথা বলবেন তারপর যদি মন যায় তো উঠে এসে নিজের ঘরে গান শুনতে আসবেন। ততক্ষন বীথির কাজ আছে বিনয়ের সাথে।

টিভিতে নিউজ দেখে কফি আর নাস্তা করে বিনয় উঠে এলেন নিজের ঘরে। উনি সিরিয়াল টিরিয়াল দেখেন না। ওগুলো মনে করেন মেয়েদের ব্যাপার। নিজের ঘরে কম্পিউটার খুলে কিছুক্ষন এধার ওধার হয়তো করবেন। টিভিতে আজ ভালো নিউজ নেই। তবে এখন টিভিতে রাজনীতির খেয়োখেয়ি ছাড়া আর কিছু থাকেও না। তাই বিনয় উঠে চলে এলেন নিজের ঘরে। বীথি চ্যানেল চেঞ্জ করে সিরিয়াল দেখতে শুরু করে দিলেন।

কম্পিউটার খুলে বিনয় দেখতে লাগলেন ব্যবসার সব কিছু। ভালো লাগলো না। মন পরে আছে ওই ডায়েরির উপর। পরের জিনিসের উপর একটা অদম্য ইচ্ছে সবার থাকে। বিনয় তার ব্যতিক্রম নয়। বারবারই মন চলে যাচ্ছিল ওই ডায়েরিতে। কি লেখা আছে? উনি ভাবতে লাগলেন ডায়েরি ব্যাগ থেকে বার করে একান্তই দেখা যায় কিনা। পায়েলের ডায়েরি। কি লেখা আছে কে জানে। কি জানতে কি জেনে ফেলবেন। নানা চিন্তা মাথার মধ্যে ভিড় করতে লাগলো বিনয়ের। কিন্তু একটা অভিলাষ, সেটা থেকে তো তিনি মুক্ত নন। এই পৃথিবীতে সেই রকম হয়তো কেউ নেই যিনি কৌতূহল জয় করেছেন।

বিনয় ডায়েরি নিয়ে নিজের চেয়ারে এসে বসলেন। রিমোট দিয়ে গান আস্তে করে চালিয়ে দিয়ে ডায়েরির শক্ত মলাট উল্টোলেন। প্রথম পাতায় আবার সেই হাতের লেখা, ‘আমি পায়েল ব্যানার্জি। আমার জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছু প্রকাশ এই ডায়েরিতে লিখে রাখলাম।‘

হাতের লেখা গোটা গোটা, অক্ষরগুলো ছোট ছোট। খুব পরিস্কার আর পোক্ত হাতের। বিনয় ভাবলেন ভদ্রমহিলাকে দেখতে যেমন সুন্দর হাতের লেখাও তেমনি সুন্দর ওনার। বিনয় বেশ কতগুলো পাতা উল্টে পাল্টে দেখলেন, প্রত্যেক পাতাই সুন্দর হরফে লেখা, মানে পায়েল মহিলাটি বেশ সময় নিয়ে যত্ন সহকারে লিখেছেন।
আবার প্রথম পাতায় এসে বিনয় কোন তারিখ লেখা আছে কিনা খুঁজে দেখলেন। হতাশ হলেন দেখতে পেলেন না বলে। অন্তত জানা যেত কবে থেকে উনি লেখা শুরু করেছেন। তবে উনি যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে এই রোজনামচা লিখেছেন প্রথম কথাতেই সেটা স্পষ্ট। “............ আমার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছু প্রকাশ এই ডায়েরিতে লিখে রাখলাম।“ এই উক্তি বুঝিয়ে দেয় যে উনি পরের জীবনে লিখেছেন।


বিনয়ের মনে ডায়েরি পড়ার খুব ইচ্ছা জাগলেও উনি ওটাকে ধরে রাখলেন জোর করে। কাল একবার ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখে নেবেন পায়েল মহিলাটি ফিরে আসেন কিনা। যদি না আসেন তাহলে বুঝে নেবেন যে উনি ওনার কথা অনুযায়ী এখন আর ফিরবেন না, তাহলে বিনয় নিশ্চিন্ত মনে ওনার ডায়েরি পড়তে পারেন। বিনয়ের বিবেক অবশ্য এই মতের বিরোধী। সব সময় ভিতরের মন বলে চলেছে না জানিয়ে কারো কোন কিছু ধরা বা পড়া উচিত নয়। কিন্তু ওই যে, কৌতূহল শব্দটা। মনকে তখন থেকে দংশন করে চলেছে।

বিনয় উঠে গিয়ে আবার ডায়েরিটা ব্যাগে ভরে রেখে দিলেন, পাছে সকাল বেলা ভুলে জান ব্যাগে ভরতে। খেয়ে দেয়ে একটু আবার টিভি দেখে চলে এলেন ঘরে ঘুমাতে। বীথির কাজ বাকি। ছেলের ঘরের বিছানা করা, রান্নাঘরে সব কিছু গুছিয়ে রেখে আসা আর সকালবেলা টিফিনের কাজ এগিয়ে রাখা। এটা করতে করতে উনি যখন বিনয়ের কাছে শুতে যাবেন, তখন বিনয়ের মধ্য রাত।

সকাল বেলা বিনয় ঘুম থেকে ওঠার আগে বীথি উঠে পরেন। ছেলেকে ঘুম থেকে তোলা, স্বামীর চা তৈরি করে রাখা, টিফিন বানানো, স্বামীর অন্যঘরে গিয়ে ওনার অফিসের জামাকাপর গুছিয়ে রাখা এইসব করে আবার যখন ফেরেন তখন বিনয় উঠে দাঁত ব্রাশ করে মুখ ধুয়ে বীথির জন্য অপেক্ষা করেন একসাথে চা খাবার জন্য। এই সময় ওনাদের দুজনের মধ্যে ভালমন্দ কিছু আলোচনা হয়। বীথি খবর দেয় পাড়ায় কে কি করলো, কার কি হোল, বিনয় জানায় পরের মাসে উনি ঘরের জন্য কি কি করতে পারেন।

একসময় সব আলোচনা শেষ করে বিনয় উঠে যান চান করতে, অফিসের জন্য তৈরি হতে। ঠিক ৯/৩০ মিনিটে ঘরের থেকে বেড়িয়ে পরেন অফিসের উদ্দেশ্যে। যদি ট্যাক্সি ধরে অফিস যান তাহলে ৯/৩০ আর যদি নিজের গাড়ী ড্রাইভ করে যান তাহলে ৯/৪৫। আজ উনি নিজের গাড়ী বার করেছেন। বেড়িয়ে পরলেন অফিসের জন্য। গাড়ী উনি ভালোই চালান, বিশেষ করে কোলকাতার মত ব্যস্তসমস্ত রাস্তায়। আজ পর্যন্ত উনি কোন কেস খান নি পুলিশের কাছ থেকে না কোন ধাক্কা মেরেছেন বা খেয়েছেন।

অফিস যখন পৌঁছুলেন ঘড়িতে পাক্কা ১০ টা। উনি এরকমই পারফেক্ট অফিসে আসার জন্য।
 
Last edited:
অফিসে পৌঁছে চেয়ারে বসে বিনয় টেবিলের উপর রাখা এক গ্লাস জল ঢকঢক করে খেয়ে ফেললেন। ফাইল খুলে মনোনিবেশ করলেন কাজে। সবাই ওনাকে দেখে এটাই শেখে যে কাজের প্রতি নিষ্ঠা কিভাবে দেখানো যায়। এর জন্য ওনাকে কম ব্যঙ্গ শুনতে হয় নি কিন্তু উনি একদম কর্ণপাত করেননি তাতে। পরে সেই আক্রমণ ধীরে ধীরে কমে আসে এবং উনি নিষ্ঠার একজন মূর্তি হিসাবে উদাহরন হয়ে যান।

মুখ গুঁজে কাজ করতে করতে টেবিলের উপর ফোন বাজতেই ওনার মুখ ওঠে ফোন ধরতে। ওপাশ থেকে ভেসে আসে এক পুরুষ কণ্ঠস্বর। ‘হ্যালো, অ্যাই ওয়ান্ট টু টক টু মিস্টার মল্লিক।‘

বিনয় এপ্রান্ত থেকে জবাব দেন, ‘ইয়েস, মল্লিক স্পিকিং। মে অ্যাই নো হু ইস অন দা আদার এন্ড?’

অপ্রান্ত থেকে জবাব আসে, ‘মজুমদার হেয়ার। অমিয় মজুমদার। জেনারেল ম্যানেজার, ইস্ট জোন।‘

বিনয় সন্ত্রস্ত হয়ে ওঠেন, ‘ইয়েস স্যার। বলুন স্যার।‘

মজুমদার উত্তর দেন, ‘মিস্টার মল্লিক। একটা কাজ আপনাকে দেবো ইউ হ্যাভ টু ডু ইট।‘

বিনয় বলেন, ‘কাইন্ডলি টেল মি স্যার। অ্যাই উড ডেফিনিটলি ডু ইট স্যার।‘

মজুমদার বললেন, ‘মল্লিক বাবু, আপনাকে একটা অডিটে যেতে হবে অ্যান্ড ইটস আর্জেন্ট। কালই আপনাকে রওনা হতে হবে।‘

বিনয়ের ভ্রু কুঁচকে যায়। রওনা হতে হবে মানে বাইরে যেতে হবে। উফফ, আবার। তবু বলেন, ‘বলুন স্যার কোথায় যেতে হবে?’

মজুমদার জবাব দেন, ‘ওয়েল, আপনাকে রায়পুর যেতে হবে। তিনদিন হয়তো থাকতে হতে পারে ব্রাঞ্চে। আপনি দেখবেন ইফ ইউ কমপ্লিট দা ওয়ার্ক ইন টু ডেজ ইউ ক্যান কাম ব্যাক। আপনার স্পিডের উপর নির্ভর করছে আপনার থাকা।‘

বিনয় জবাব দেন, ‘ওকে স্যার, আমি দেখব।‘

মজুমদারের গলা ভেসে আসে, ‘ওয়েল, আপনার টিকিট আপনি কালেক্ট করে নেবেন অনিলের কাছ থেকে। ওঁর কাছে টিকিট থাকবে। ওখানে পৌঁছে আপনি আমাকে ফোন করে জানিয়ে দেবেন প্লিস।‘

বিনয় বললেন, ‘হ্যাঁ স্যার, ওকে স্যার।‘ রিসিভার নামিয়ে চেয়ে দেখলেন অনিল কোথায় আছেন। খুঁজে পেলেন, কার সাথে যেন গল্প করছেন। বেয়ারা ডেকে আনল তাকে। অনিল যেন জানতেনই কিসের জন্য বিনয় ওঁকে ডেকেছেন। হাতে টিকিট নিয়ে অনিল ওনার সামনে এসে দাঁড়ালেন, এক গাল হেসে বললেন, ‘স্যার আপনি টিকিটের জন্য ডেকেছিলেন তো? এই যে আপনার টিকিট।‘ বলে টিকিট শুদ্ধু হাত বাড়িয়ে দিলেন।

বিনয় ওনার হাত থেকে টিকিট নিয়ে বললেন, ‘থ্যাঙ্ক ইউ। হ্যাঁ আমি এই জন্যই আপনাকে ডেকেছিলাম।‘

অনিল ফিরে যেতে বিনয় টিকিটটা দেখলেন। সব ঠিক আছে। তড়িঘড়ি হাতের ফেলে রাখা কাজ শেষ করে উঠলেন। মনটা যদিও খারাপ লাগছিল যে বাইরে যেতে হবে, একা একা থাকতে হবে কিন্তু মনটা খুশি খুশিও লাগছিল যে পায়েলের ডায়েরিটা একান্ত ভাবে পড়তে পারবেন। বিনয় যে বাইরে যান না তা নয়। বছরে একবার না একবার অডিটের জন্য যেতেই হয়। আর ওই সময়টা বিনয়ের খুব বাজে লাগে। সন্ধ্যার পর নিজের ঘর না হলে বিনয়ের দিন সম্পূর্ণ হয় না। তবে এবারের ব্যাপার একটু আলাদা। যেহেতু হাতে পায়েলের ডায়েরি আছে। সারাদিনে পায়েল আর আসে নি। তারমানে উনি সত্যি বাইরে গেছেন।

বিনয়ের সেই রাতেই ট্রেন। বাড়ীতে গিয়ে তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে নিলেন। বীথিকে বললেন, ‘শোন, অফিসের কাজে তিনদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছি। একটু কষ্ট করে বাজার করে নিও। আর কারনে অকারনে ঘরের দরজা খুলো না।‘

এমনিতে ভয়ের কিছু নেই। পাড়ার লোকের যথেষ্ট উপকারী, একে অপরকে দেখে। সেই হিসেবে বিনয়ের মনে কোন চিন্তা নেই বীথি আর সমরের জন্য। তবু বলতে হয় তাই বললেন। যথা সময়ে বিনয় ব্যাগ নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে এলেন। ট্যাক্সি ধরে সোজা হাওড়া স্টেশন। বোম্বে মেল প্ল্যাটফর্মে লেগেছিল। চড়ে বসলেন তাতে। সেকেন্ড এসি। লোওার বার্থ। কিছুক্ষন পর ট্রেন ছাড়বে। বিনয় বেড রোল খুলে বিছানা করে নিলেন। বোতল থেকে ঢকঢক করে কিছুটা জল খেয়ে শুয়ে পরলেন। আজ
আর তো কিছু করার নেই। তাড়াতাড়ি শোওয়াই ভালো।

ট্রেন ছাড়ার আগেই ঘুম এসে গেছিল বিনয়ের। সকালে যখন উঠলেন তখন ট্রেন ঝারসুগুদা ছেড়ে বিলাসপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। আর আড়াই থেকে তিনঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যাবে ট্রেন রায়পুর। বিনয় উঠে দাঁত মেজে মুখ ধুয়ে এক কাপ কফি নিয়ে বসলেন। একসময় ট্রেন রায়পুর পৌঁছুল। ব্যাগ হাতে স্টেশনে নামতেই সামনে থেকে একজন এগিয়ে এসে নমস্কার করে বলল, ‘বিনয় স্যার?’

বিনয় ওর দিকে তাকালেন। দোহারা চেহারা। উনি জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ আমি বিনয় মল্লিক। আপনি?’

ছেলেটি হেসে জবাব দিল, ‘স্যার আমি অসীম। ব্যাঙ্কেই কাজ করি। বড়সাহেব বললেন আপনাকে স্টেশনে রিসিভ করতে। তাই।‘ বলে ঝুঁকে বিনয়ের হাত থেকে ব্যাগটা নেবার চেষ্টা করল।

বিনয় দু পা পিছিয়ে বলে উঠলেন, ‘আরে ঠিক আছে। এটা আমি নিতে পারবো। আপনি আগে চলুন।‘

ওনারা পৌঁছে গেলেন ব্যাঙ্কের গেস্ট হাউসে। অসীম জিজ্ঞেস করলো, ‘আপনি কি স্যার এখনি বেরবেন?’

বিনয় ঘরে ঢুকতে ঢুকতে জবাব দিলেন, ‘আপনি কি আমাকে নিয়ে যাবেন?’

অসীম উত্তর দিল, ‘সেই রকমই বলেছিলেন বড়সাহেব আপনাকে ব্যাঙ্কে নিয়ে আসতে।‘

বিনয় বলল, ‘তাহলে আপনি ওয়েট করুন। আমি আধ ঘণ্টার মধ্যে তৈরি হয়ে নিচ্ছি।‘

অসীম উত্তর করলো, ‘আপনি সময় নিন। আমি বাইরে ওয়েট করছি। আর স্যার, আমাকে আপনি তুমি বলবেন। আমার বয়স এখন ২৮।‘

অসীম বেড়িয়ে যেতেই বিনয় তাড়াহুড়ো করে নিজেকে তৈরি করতে লাগলেন। দাঁড়ি কামিয়ে, স্নান করে বেড়িয়ে এলেন বাথরুম থেকে। ব্যাগ খুলে জামা কাপড় বের করতে গিয়ে দেখলেন পায়েলের ডায়েরি উপরে রাখা। ডায়েরিতে একটু হাত বুলিয়ে উনি ব্যাগের একপাশে রেখে দিলেন আর জামা প্যান্ট বার করে পরে নিলেন। আবার ডায়েরি ব্যাগের ভিতরে রেখে বন্ধ করে দিলেন ব্যাগ। ঘড়িতে দেখলেন ঠিক আধ ঘণ্টা লেগেছে তাঁর তৈরি হতে। মনে মনে হাসলেন তিনি। সময়ানুবর্তীটা এখনো রয়েছে তাঁর মধ্যে।

বেড়িয়ে এসে অসীমকে দেখতে পেলেন না বিনয়। এধার ওধার তাকিয়ে খোঁজার চেষ্টা করলেন ওকে কিন্তু দেখতে পেলেন না কোথাও। গেছে হয়তো আশেপাশে। ও হয়তো জানে না আমি ঠিক আধঘণ্টার মধ্যে তৈরি হতে পারবো। রিসেপশোনে বসে ইংলিশ পেপার তুলে খবরের হেড লাইনের উপর চোখ বোলাতে লাগলেন।
চমকে উঠলেন অসীমের গলা শুনে। একদম পিছনে এসে অসীম বলল, ‘আরে স্যার, আপনি যে এতো তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে যাবেন ভাবতেই পারি নি। রিয়েলি ফাস্ট।‘

বিনয় হাসলেন শুধু তারপর এগিয়ে গেলেন গেটের দিকে। অসীম এসে বলল, ‘আসুন স্যার, এইদিকে গাড়ী দাঁড় করানো আছে।‘ বলে এগিয়ে গেল একদিকে। বিনয় ওর পিছন পিছন গিয়ে একসময় গাড়ীতে গিয়ে বসলেন। অফিস পৌঁছানোর সাথে সাথে কাজে লেগে পরলেন।

একটা সময় কাজ শেষ হয়ে গেল।। এবারে ফেরার সময় আর অসীম আসে নি। বিনয় ওই একি গাড়ীতে ফিরে এলেন গেস্ট হাউসে। জামাকাপর ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে বসে সামনের ঘরে রাখা টিভি চালাতে গিয়ে ওনার মনে পড়লো পায়েলের ডায়েরির কথা। উনি আবার উঠে ব্যাগ খুলে ডায়েরিটা বার করে আনলেন আর এসে বসলেন আবার টিভির সামনে।

এখন আর কেউ আসবে না। উনি নিশ্চিন্ত মনে পড়তে পারবেন। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলেন প্রায় ৬/৩০টা বাজে। গেস্ট হাউসে রান্না হয়। খাবারের কথা চিন্তা করতে হবে না। ঠিক সময়ে বেয়ারা এসে খবর দেবে খাবার তৈরি। ততক্ষনে উনি চিন্তামুক্ত হয়ে ডায়েরি পড়তে পারবেন।
‘আমি পায়েল ব্যানার্জি। আমার জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছু প্রকাশ এই ডায়েরিতে লিখে রাখলাম।‘ পায়েলের সেই প্রথম কথা ভেসে উঠলো ডায়েরির প্রথম পাতা ওলটাতেই। বিনয় পড়া শুরু করলেন। পায়েল লিখছেনঃ

“আমার জীবনের কিছু গোপন ঘটনা আমি এই ডায়েরিতে নথিভুক্ত করে রাখলাম। উদ্দেশ্য আমার এই নয় যে কেউ একদিন এই ডায়েরিটা পাবে আর আমার গোপনীয়তাকে উন্মুক্ত করবে। উদ্দেশ্য এটাই আমার যে আমার গোপনীয়তা আমার কাছে খুলে রাখলাম। হয়তো কোন একদিন অবসর সময়ে আমি কি ছিলাম সেটা আবার নতুন করে জানতে পারবো।

ছোটবেলায়, হ্যাঁ আমি খুব দুরন্ত আর ডানপিটে ছিলাম। দেখতে আমাকে খুব সুন্দর দেখাত, তাই আমার দুরন্তপনায় কেউ ওত মাথা ঘামাতো না। ছেলেদের সাথে যেমন আমার মেলামেশা ছিল, সমান ছিল মেয়েদের সাথেও মেলামেশা। সুন্দরী হলেও কোন মেয়ের মধ্যে ঈর্ষা ব্যাপারটা ছিল না কারন সবার কাছে আমি খুব প্রিয় ছিলাম বলে। বাড়ীর একমাত্র মেয়ে, একমাত্র বললে ভুল হবে আমিই আমার মা বাবার একমাত্র সন্তান। তাই ভালোবাসাটা মা আর বাবার আমি সমানতালে পেয়েছি।
আমার শরীর অন্যান্য মেয়েদের থেকে একটু বেশি বারন্ত ছিল। ১৮ বছর বয়সেই আমার বুক পাছা সব ভরাট ছিল। আমার পাড়ার ছেলেদের চোখের মণি ছিলাম আর ওরা আমার দেখভাল পর্যন্ত করতো অন্য পাড়া থেকে কোন ছেলের দল এলে। সুতরাং আমি মোটামুটি নিরাপদেই মানুষ হচ্ছিলাম।

অন্যান্য মেয়ে বন্ধুরা ঝাপাঝাপি করার সময় আমার বুক দোলা দেখে খুব হাসি মজা করতো। আমি এতে বেশি লজ্জা পেতাম না। কারন আমি জানতাম আমার বুক বড় অন্যান্যদের থেকে তাই দোলে বেশি। তবে পাড়ার বাইরে বেরোলে ছেলেদের নজর থাকতো আমার উপর বেশি। আমি দেখেছি কলেজে যাবার সময় যদিও আমার সাথে অন্যান্য বন্ধুরা থাকতো কিন্তু মাছির মত আমার চারপাশে লেগে থাকতো ছেলেদের দল। কোন ছুতোয় যদি আমার নিতম্বে, বা খোলে পেটে হাত লাগাতে পারে।
বুকে আমার বইখাতা ধরা থাকতো বলে আমার বুকের আশেপাশে হাতের ঘোরাফেরা কম হতো। আবার বুক বাঁচিয়ে রাখতাম বলে আমার নিতম্ব আর খোলা শাড়ীর নিচে মসৃণ পেটে ঘুরত সব লোভী ছেলেদের হাত। আমার সবচেয়ে অবাক লাগতো যখন এই দলে ৪৫/৫০ বছরের বয়স্করাও ঢুকে পরত।

এইতো সেইদিনের কথা। আমি যাচ্ছি কলেজে। আমার সাথে আরও ৫/৬ জন মেয়ে আছে আমার সাথে বাসে উঠত আর আমারই কলেজে নামত। একটা লোক, কত বয়স হবে, খুব একটা ভুল না হলে মনে হয় ৫৩। এসে দাঁড়ালো ঠিক আমার পিছনটায়। বাস্তায় যে খুব ভিড় ছিল তা নয়, কিন্তু যেই আমাকে দেখেছে পিছনের দরজা দিয়ে একটু একটু করে সরতে সরতে একেবারে আমার পিছনে এসে দাঁড়ালো। লোকটার এগিয়ে আসা, আমার দিকে তাকানো, আমি বুঝতেই পেরেছিলাম ওর উদ্দেশ্য। আমি আমার বই আর খাতা চেপে ধরে রাখলাম আমার বুকে। লোকটা গাড়ীর চলার সাথে সাথে ওর কোমর আমার উত্তুঙ্গ নিতম্বে মাঝে মাঝে ধাক্কা লাগাতে লাগলো। লোকটার দিকে তাকাতে এমন ভাব করতে লাগলো যেন কিছুই হয় নি। এদের এই কামুকতা আমার কেমন আশ্চর্য মনে হত।

এসব কাজ আমার খারাপ লাগতো না। একটু বেশি অ্যাটেনশন পেতাম বলে নিজের কেমন লাগতো, সারা দেহে একটা ভালো লাগা ছড়িয়ে যেত। এবারে আমার ১৯ বছরের জীবনে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা লিখি। যেটা আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মনে থাকবে। কিন্তু ঘটনার প্রবাহ ভুলে যেতে পারি বলেই লেখা।

বাবা মা ডিসেম্বর মাসে বললেন আমরা সব মিলে পুরী ঘুরতে যাবো। বাবার নাকি ওই সময়ে একটা ছুটি থাকবে সাত দিনের। সেটা আমরা পুরীতে গিয়ে কাটাবো। আমার প্রথম ভ্রমন হবে জীবনে। স্বভাবতই আমি একটু উত্তেজিত। সব বন্ধুদের বলে বেড়াচ্ছি, ‘এই জানিস আমি না পুরী ঘুরতে যাচ্ছি।‘ কেউ খুব উৎসাহ দেখাতো আবার কেউ শুধুই শুনত। আমার চোখে কিছু ধরা পরত না, কারন আমার তখন একটা অজানা খুশিতে মন ভরে থাকতো। মায়ের মুখ থেকে পুরীর যতটুকু শুনেছি তাতে তো আমার উত্তেজনা আরও শিখরে। সমুদ্র, ওতে ঢেউ, সমুদ্রে স্নান। যে হোটেলে থাকবো সেই হোটেলের বারান্দা থেকে নাকি সমুদ্র দেখা যায়।

উফফ, আমার রাতে ঘুমই আসতো না। সব সময় যেন সমুদ্র পায়ের নিচে অনুভব করতাম। এই করতে করতে যাবার দিন এসে গেল। হাওড়া তে এসে আমরা ট্রেনে উঠে পরলাম। সারা ট্রেনে রাতভর আমার ঘুম এলো না। শুধু জেগে জেগে জানলা দিয়ে কালো রাত্রির ছুটে যাওয়া দেখতে লাগলাম। একসময় দুরের আকাশে ভোরের উঁকি মারা দেখতে পেলাম। আমি সরে এসে জানলার গা ঘেঁসে বসে দেখতে লাগলাম ভর কেমন সকালে পরিনত হতে লাগলো।

মা বাবার ঘুম ভাঙতেই উঠে ওঁরা দেখতে পেলেন আমাকে জানলা ঘেঁসে বসে থাকতে। বাবা হেসে বললেন, ‘কিরে সারা রাত ঘুমোসনি নাকি?’

আমি বাবার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলাম। মা হেসে বললেন, ‘আরে মেয়ের কি আর ঘুম আসে? ওর ঘুম তো ছুটে গেছে জবে ও শুনেছে পুরী ঘুরতে যাবে।‘

একসময় আমরা পুরী স্টেশনে নামলাম। ব্যাগ হাতে বাবা আর মায়ের পিছন পিছন বেড়িয়ে এলাম স্টেশনের বাইরে। বাবা একটা গাড়ী ভাড়া করে মালপত্তর ওতে তুলে দিলেন। আমি আবার একটা পাশে পসে পরলাম জেদ করেই। এবারে আমি রাস্তা দেখতে দেখতে যাবো। মা আপত্তি করলেন না। বাবা আমার পাশে আর মা আরেকধারে বসতেই গাড়ী এগিয়ে চলল পুরীর রাস্তা ধরে। লোকগুলোকে দেখে কেমন অজানা অজানা লাগলো। মনে মনে ভাবলাম নিশ্চয় বাঙ্গালি না। এরকম আমাদের চেহারা তো হতে পারে না।

আমি মায়েদের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘এখানকার লোকগুলোকে কেমন যেন দেখতে তাই না?’

বাবা আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন, ‘তুই কি ভেবেছিলি আমাদের মত দেখতে হবে। ভারতবর্ষের যত জায়গা আছে সবখানের লোক সবার থেকে আলাদা। কারো সাথে কারো মিল নেই।‘

আমার মনে প্রশ্ন এসেছিল তা কেন হবে। ভারতের লোকেদের আমাদের মত দেখতে হবে। কিন্তু এবারে কিছু মেয়ে দেখে আমি আর প্রশ্ন করলাম না। ওদের দেখতেও আমাদের থেকে আলাদা। তবে কিছু কিছু মেয়ে যারা কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বোধহয় স্কুলে বা কলেজে যাচ্ছে তাদেরকে প্রায় দেখতে আমাদের মত।

কখন হোটেলের সামনে এসে গাড়ী দাঁড়িয়ে গেছে বুঝি নি। পথ দিয়ে আসতে আসতে সমুদ্র দেখতে পেয়ে হাততালি দিয়ে উঠেছিলাম। মা হেসে বলেছিলেন, ‘মেয়ের আনন্দ দেখ। খুশিতে ফেটে পড়ছে একেবারে।‘

বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, ‘এতেই এই। যখন সমুদ্রে চান করবি তখন কি হবে?’

আমি ওদের দিকে তাকিয়ে হেসেছিলাম। গাড়ী হোটেলে থামতেই বাবা বললেন, ‘নে আর বসে থাকতে হবে না। নাম এবার। হোটেল এসে গেছে।‘

আমি নেমে এলাম একদিক দিয়ে। মা অন্যদিক দিয়ে নেমে ঘুরে আমার কাছে এসে দাঁড়ালেন। বাবা মাল নামাচ্ছেন, আমি ঘুরে হোটেলের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, বিশাল বড় হোটেল। মাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মা, কোনটা আমাদের ঘর?’

মা বললেন, ‘আরে এখান থেকে আমি কি করে বলবো অতগুলো ঘরের মধ্যে আমাদের কোনটা? দাঁড়া, বাবা আসুক তারপর ভিতরে গিয়ে দেখব কোনটা আমাদের।‘

আমার যেন আর তর সইছে না। আমি বাবাকে বললাম, ‘বাবা, তাড়াতাড়ি করো। দেরি হয়ে যাচ্ছে যে।‘

বাবা আমার দিকে তাকিয়ে দুটো হাত উল্টে দেখালেন, ভাবটা এই যে এতো হুড়োহুড়ি কিসের। বাবা ভাড়া মিটিয়ে এগিয়ে এলেন আমাদের কাছে। ভিতর থেকে লোক এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের পাশে। মালগুলো সব একেক করে তুলে নিচ্ছে, কোনটা কাঁধে, কোনটা হাতে। একটা সময় আমরা এগিয়ে গেলাম হোটেলে গেটের দিকে।
 
ঘরে ঢুকে বাবা মা কি করলো সেদিকে না তাকিয়ে আমি ছুটে চলে গেলাম বারান্দায়। গেট খুলে বাইরে তাকাতেই মনে হোল সমুদ্র যেন ছুটে এলো আমার কাছে। গোঁ গোঁ গর্জনে সমুদ্র ফেঁপে ফুলে উঠছে। আমি অবাক বিস্ময়ে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রইলাম। খেয়ালই করি নি বাবা আর মা কখন পিছনে এসে দাঁড়িয়েছেন।

বাবা আমার মাথায় হাত রেখে বললেন, ‘কিরে কি দেখছিস এতো অবাক হয়ে?’

আমি ঘুরে বাবার দিকে তাকিয়ে বাবার হাত ধরে বললাম, ‘দেখ বাবা, কি বিশাল সমুদ্র। সমুদ্রের আরেকটা দিক দেখাই যাচ্ছে না। তাই না?’

মা বললেন, ‘যাবি নাকি চান করতে?’

বাবা মাকে ধমক দিয়ে বললেন, ‘ব্যস, তুমিও আর কি। ওর ইচ্ছেটাকে বাড়িয়ে তুলছ। আরে ও বাথরুম, মুখ কিছু ধোয় নি। ওগুলো করুক, টিফিন করুক তবে না। এখনো অনেক সময় পরে আছে। যা মা একটু করে নে। তারপরে একসাথে বেরবো সমুদ্রের কাছে।‘

আমি সমুদ্রের কাছে যাবো বলে তড়িঘড়ি করে বাথরুম, দাঁত মেজে মুখ ধুয়ে তৈরি হয়ে নিলাম। বেড়িয়ে এসে দেখলাম বাবা নেই। মাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মা, বাবা কোথায় গেল? আমাকে ছেড়ে সমুদ্রে চলে গেল?’

মা কাপড় গোছাতে গোছাতে বলল, ‘দূর পাগলী, তোকে ছেড়ে বাবা সমুদ্রে যাবে কেন? এখানে তো আসাই তোর আনন্দের জন্য। আশেপাশেই কোথাও আছে হয়তো।‘

আমি ঘুরে আবার বারান্দার দিকে যেতেই বাবা দরজা ঠেলে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলল, ‘তোমাদের তৈরি হওয়া হোল?’ বলেমেয়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘কিরে তুই তৈরি?’

মা ব্যাগ হাতে তুলে নিয়ে বললেন, ‘তৈরি মানে? বাথরুম থেকে বেড়িয়ে তোমাকে দেখতে না পেয়ে রীতিমতো জবাবদিহি করতে হোল আমায় তুমি গেলে কোথায়। এখন নাও মেয়েকে সামলাও তুমি। আমি তৈরি।‘

বাবা আমার হাত ধরে টেনে বললেন, ‘চল, দেখি কত সমুদ্রে স্নান করতে পারিস।‘

হাসতে হাসতে আমরা সব বেড়িয়ে এলাম। সামনেই সমুদ্র। রাস্তা পার হয়ে বিচে চলে এলাম। বালই ভর্তি তট। এতো বালি এলো কোথা থেকে। দূরে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে আর দেখা যাচ্ছে মানুষের ভিড়, শোনা যাচ্ছে তাদের চিৎকার। যত কাছে যাচ্ছি সমুদ্রে গর্জন ছাপিয়ে মানুষের গলার আওয়াজ বাড়তে শুরু করেছে। একটা সময় সমুদ্রে কাছাকাছি এসে গেলাম। জল গড়িয়ে এসে আবার গড়িয়ে নেমে চলে যাচ্ছে সমুদ্রের ভিতর। আমার খুব আনন্দ হচ্ছে।

বাবা প্রথমে আমাকে আর মাকে রেখে নেমে গেলেন সমুদ্রে। ঢেউয়ের দোলায় নিজেকে ভাসিয়ে দিলেন সমুদ্রে নীল জলের মধ্যে। একেকটা ঢেউ আসে বাবা হারিয়ে যান আবার ঢেউ কমে গেলে বাবা টুপ করে ভেসে ওঠেন। বাবার খুব মজা লাগছে নিশ্চয়।

আমি বালির তীরে মায়ের সাথে বসে সবাইকে দেখতে লাগলাম। সবার মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা। সমুদ্রকে আবিস্কার করার উত্তেজনা। একেক জনের কসরত দেখলে মনে হবে হাসতে হাসতে এই বুঝি পেট ফেটে যাবে। মা আর আমি দুজনে মিলে খুব হাসছি। একটা ছেলে তো এমন ভাবে লাফালো ঢেউ আসাতে, দেখলাম ঢেউয়ের ধাক্কায় ও তলিয়ে গেল তারপর খকখক করে কাশতে কাশতে উঠে দাঁড়িয়ে চারিদিকে দেখতে লাগলো কেউ তাকে দেখেছে কিনা। তাই দেখে আমার পেটে তো খিল ধরে যাবার যোগার।

একসময় লক্ষ্য করলাম বাবা হাত দিয়ে আমাদের ডাকছেন। আমরা উঠে দাঁড়ালাম, ব্যাগ এক জায়গায় রেখে এগোতে লাগলাম বাবার কাছে যাবার জন্য।

মা একবার ব্যাগটা দেখে বললেন, ‘আবার কেউ নিয়ে যাবে নাতো ব্যাগটা?’

আমি চারপাশ লক্ষ্য করে দেখলাম আমাদের মত অনেকেই ব্যাগ তীরে রেখে দিয়েছে। বললাম মাকে, ‘ওই দেখ, কতজনের ব্যাগ পরে আছে। ওদেরগুলো থাকলে আমাদেরটাও থাকবে।‘

সমুদ্রের জলে আমার পা ডুবে গেল। একটা ঠাণ্ডা শিরশিরানি মনে হোল শরীরের মধ্যে দিয়ে চলে গেল। এতক্ষন তীরে বসে ভালোই লাগছিল সমুদ্রকে দেখতে। সমুদ্রের মধ্যে এসে ওর বিশালতাকে দেখে ভয় লাগতে শুরু করে দিলো। সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সমুদ্রের ঢেউ ফুলে উঠে যেন আমার দিকে তেড়ে আসছে। আমি মাকে ছেড়ে দৌড় লাগালাম উল্টো দিকে, তীরের দিকে। কিন্তু আমার কাছে আসার আগেই সেই ঢেউ মিলিয়ে গেল সমুদ্রের জলে।

মা আমার উল্টো দৌড় দেখে হাসতে লেগেছেন। আমি ফিরে তাকাতে মা বলে উঠলেন, ‘কিরে অমন ভাবে দৌড় দিলি কেন?’

আমি কেঁপে উঠে বললাম, ‘তুমি দেখলে না কিভাবে ঢেউ তেড়ে এসেছিল? ভয় পেয়ে গেছিলাম।‘

মা আবার হাসতে হাসতে বললেন, ‘এতই যদি ভয় করে তাহলে হোটেলের ঘর থেকে সমুদ্র সমুদ্র বলে চেঁচাচ্ছিলি কেন? আয় এদিকে আয়। কোন ভয় নেই। তোর বাবা আছে।‘

বাবা ওদিক থেকে চেঁচিয়ে বললেন, ‘আরে তোমরা কি ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে না এখানে আসবে?’

মা জল ভেঙ্গে বাবার দিকে এগোতে এগোতে বললেন, ‘তোমার মেয়ে ভয়েই একশা। ঢেউ দেখে দৌড় লাগিয়েছিল।‘

বাবা আমাকে বললেন, ‘এইদিকে আয় পায়েল। তোকে শেখাব কিভাবে সমুদ্রে চান করতে হয়।‘

আমি মায়ের সালওয়ার কামিজের কোনা ধরে এগোতে এগোতে বললাম, ‘না আমার সাঁতার শিখে লাভ নেই। এই বেশ আছি আমি।‘

পৌঁছে গেছি বাবার কাছে। বাবার একদিকে মা আরেকদিকে আমি দাঁড়িয়ে জল নিয়ে খেলা করছি। বাবা বলে উঠলেন, ‘সাবধান, একটা বড় ঢেউ আসছে।‘

আমি পিছন ফিরে ঢেউ দেখে আঁতকে উঠলাম, বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম। বাবাও আমাকে জড়িয়ে ধরে থাকলেন। ওদিকে মাকে নিয়ে ঢেউ চলে গেল তীরের দিকে, আমাকে জলের ঝাপটা দিয়ে। মায়ের অবস্থা দেখার মত। মাকে দেখতে লাগলাম ঢেউয়ের সাথে গড়াগড়ি মানে উলটপালট খেতে খেতে মা চললেন বহু দূর মানে তীরের কাছে। যখন ঢেউ মাকে ছাড়ল তখন মায়ের অবস্থা দেখার মত। কামিজের একটা অংশ মায়ের কোমর থেকে উঠে মায়ের জলে ভেজা গুরু নিতম্ব প্রকাশ করে দিয়েছে। মায়ের শরীর খুব আঁটসাঁট। চিপকে থাকা সালওয়ারে মায়ের ভেজা নিতম্বের খোলতাই নিশ্চয় অনেকে দেখছে রসিয়ে। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি যা ভেবেছি তাই। অনেক ছেলেই দেখছে এই নয়নাভিরাম দৃশ্য। মা এলে মাকে বলতে হবে।

ওদিকে মা নিজেকে সামলে আবার এগোতে লাগলেন আমাদের দিকে। কাছে আসতেই বাবার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘কি অসভ্য ঢেউ। কিভাবে আমাকে নিয়ে গেল দেখ।‘

বাবার মায়ের ওই অবস্থা দেখে তো বাবা হাসিতে লুটোপুটি। হাসতে হাসতে বললেন, ‘ছেড়ে থাকার পরিণতিটা দেখলে তো?’

মা বাবার কাছ ঘেঁসে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ছেড়ে আবার থাকলাম কোথায়? তুমি তো মেয়ে নিয়ে ব্যস্ত। আমাকে তো তুমিই ছেড়ে দিয়েছিলে।‘

বাবা মায়ের কাঁধ এক হাত দিয়ে ধরে বললেন, ‘নাও আর ছেড়ে থাকবো না তোমাদের দুজনকে। আর ঢেউয়ের সাহস হবে না তোমাদের আমার থেকে আলাদা করতে।‘

ঢেউ আসতে থাকল, বাবা আমাকে আর মাকে এমনভাবে আঁকড়ে রেখেছিলেন যে ঢেউয়ের বাবার সাধ্য ছিল না আমাদের তিনজনকে আলাদা করে দিতে। ধীরে ধীরে আমার সাহস বাড়তে লাগলো। বাবার মত আমিও লাফাতে লাগলাম ঢেউয়ের মাথায় চড়ার জন্য।

এরমধ্যে মাকে বলে দিলাম মায়ের কাপরের অবস্থা কি হয়েছিল যখন আমাদের থেকে বাবা একটু ওই আলাদা হয়েছেন। বাবা আমাদের সাহস বেড়েছে দেখে আমাদের ছেড়ে দিয়েছেন। মা আমার কথা শুনে বললেন, ‘দূর ছাড় তো ওসব। এখানে এলে সবারই ওই অবস্থা হয়। নিজেকে সামলাবো না কাপড় সামলাবো। আর যার দেখার সেতো দেখবেই। কিছু অসভ্য আছে যারা এই কারনেই সমুদ্রে আসে।‘

আমি কি আর অতশত জানি। আমার তো সমুদ্রে আসা এই প্রথম। এরমধ্যে খেয়াল করি নি একটা ঢেউ কখন এসে আমাকে আথালিপাথালি করে চলে গেল। আমাকে টেনে সোজা নিয়ে গেল তীরের দিকে। যখন ঢেউয়ের বুকের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে দাঁড়ালাম খেয়াল করলাম আমার কাপ্রি টাইপের বটম নিচে নেমে গিয়ে আমার প্যান্টি ওপেন করে দিয়েছে। আমি তাড়াতাড়ি বটম টেনে উপরে তুলে দিলাম। মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মা বাবার সাথে দাঁড়িয়ে রয়েছেন আমার দিকে পিছন ফিরে। যাক বাবা, মা দেখেন নি তাহলে ফুট কাটতেন নির্ঘাত।


-৭-
আমরা অনেকক্ষণ ধরে স্নান করার পর বাবা বললেন, ‘নাহ, আর নয়। প্রথম দিনের জন্য যথেষ্ট। আবার কাল আসা যাবে।‘

মাও তাতে সায় দিলেন। আমি সমুদ্রকে ভালবাসতে শুরু করেছি। এতো বিশাল অথচ কত যেন নিজের মনে হতে লাগছিল। আমি একটু দুঃখী মনে উঠে আসলাম। বাবা বোধহয় আমার মুখ দেখে বুঝলেন যে ওনার সিদ্ধান্ত আমার ভালো লাগে নি। আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘আজ এখানে আমাদের প্রথম দিন। থাকবো কতদিন? সাত দিন। কত তুই সমুদ্রে চান করতে পারিস দেখব।‘

সত্যি কথাটা ভেবে দেখালাম, কি বোকা আমি। থাকবো তো সাত দিন। এতোগুলো দিন তো সমুদ্রতেই চান করবো। কেন এতো দুঃখ হচ্ছে আমার? আমার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। বাবাকে জড়িয়ে ধরে সমুদ্র মাড়িয়ে আমি উঠে আসতে লাগলাম মা আর বাবাকে নিয়ে।

হোটেলে এসে মা প্রথমে আমাকে বাথরুমে পাঠিয়ে দিলেন , গা থেকে লেগে থাকা বালি স্নান করে ধুয়ে নিতে। আমি বাথরুমে ঢুকে আস্তে আস্তে আমার টপ, কাপ্রি ছেড়ে দিলাম। মা ধুয়ে দেবেন। সারা গায়ে বালি কিচকিচ করছে। ব্রাটা খুলে নামাতেই দেখলাম ব্রায়ের কাপে বালি ঢুকে জমে আছে। ইসস, কখন ঢুকল কে জানে। বাথরুমে লাগানো আয়নায় নিজের স্তনের দুলুনি দেখতে লাগলাম। আমি এখন ৩২ সাইজ পরি, কিন্তু টাইট লাগে আমার বুকে। মাকে বলাতে মা বলেছিলেন ওই সাইজ ঠিক আছে। বুকের থেকে বড় সাইজ পরলে বুক নাকি ঝুলে যাবে।

প্যান্টি টেনে নামাতে আমি চমকে উঠলাম। বাপরে, কত বালি জমে আছে প্যান্টিতে। কিন্তু ঢুকল কখন? আমি টেনে নামিয়ে খুলে নিলাম প্যান্টি। যোনির চুলে হাত বুলিয়ে দেখলাম হ্যাঁ, চুলের ভিতরেও বালি ঢুকে আছে। গাটা কেমন যেন করতে লাগলো। কল খুলে জলের তলায় প্যান্টি আর ব্রা ধরে ধুয়ে নিলাম ভালো করে তারপর প্যান্ট জামার উপর রেখে দিলাম মায়ের জন্য।

এবার শাওায়ার খুলে তলায় দাঁড়িয়ে পরলাম, জলের ধারায় দেহের বালি ধুয়ে যেতে লাগলো। মাথায় ভালো করে শাম্পু করে, গায়ে সাবান ডলে ভালো করে গা ধুয়ে গা মুছে বেড়িয়ে এলাম বাইরে।

মা বাথরুমের দরজার পাশে রাখা টেবিলের উপর আমার কাপড় জামা বার করে রেখেছেন। ব্রা প্যান্টি, টপ আর একটা প্যান্ট। আমি একেক করে সব পরে নিলাম। মা ঢুকে গেলেন বাথরুমে, বলে গেলেন, ‘বাবা বাইরে আছেন। সাবধানে দরজা খুলিস কিন্তু যদি কেউ আসে।‘

আমি চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। প্রায় দুপুর হয়ে গেছে। সূর্য মাথার উপর থেকে একটু পশ্চিমে ঢলে পরেছে। সূর্যের প্রতিফলন সমুদ্রের জলে চোখে এসে লাগছে, কিন্তু সমুদ্রের তখন এক কি মনোরম চেহারা, অনেকটা শান্ত। মনে হচ্ছে খুব দুষ্টুমি করে ঘরের বাচ্চা চুপ করে শুয়ে আছে।

মা একসময় বেরিয়ে এলেন বাথরুম থেকে। উঁকি মেরে দেখলেন আমি কি করছি। চোখে চোখ পরতেই হেসে আবার ভিতরে চলে গেলেন।

একটু পরে বেল বেজে উঠলো। আমি চলে এলাম ঘরে, মা দরজা খুলে দিয়েছে। দেখলাম বাবা এক ধুতি পরা লোককে নিয়ে ঘরে ঢুকছে। গায়ে ফতুয়া। ও বাবা, ওদের পিছন পিছন আরেকজন ছেলেও আছে আর ওর গায়েও ওই ধুতি আর ফতুয়া। ব্যাপারটা কি?

বাবা মাকে বললেন, ‘জানো এরা মন্দিরের পাণ্ডা। পুরীর মন্দিরে খুব ভিড় হয়। এরা খুব সহজে ভগবানকে দেখাতে পারে। হোটেলের মানেজারের কাছে এসেছিলেন, আমাকে দেখিয়ে দিলেন উনি। ভাবছি কাল এনাদের সাথে চলে যাবো আর ফাঁকায় ফাঁকায় ভগবান দেখে চলে আসবো।‘

মা বললেন, ‘তুমি যেটা ভালো বুঝবে সেটাই করো। ভগবান তো দেখতেই হবে। আর আমি জানি না মন্দিরে কত ভিড় হয়।‘

বাবা বললেন, ‘ আরে মারাত্মক ভিড় হয়। পা ফেলা যায় না এমন ভিড়। তার থেকে একটু বেশি টাকা লাগবে ঠিকই, তবে ভগবান শান্তি মত দেখা যাবে।‘

তারপর বাবা ওদের সাথে কথা বলতে লাগলেন। আমি ছেলেটাকে দেখলাম ও যত না কথা শুনছে তার চেয়ে বেশি আমার দিকে নজর রাখছে। আমি একটু চোখ কুঁচকে ওর দিকে তাকালাম যাতে বুঝতে পারে আমি পছন্দ করছি না। কিন্তু সে কি আর দেখেছে, ওর চোখ ঘুরে ঘুরে আমার দিকেই। আমি আর থাকতে না পেরে আবার বারান্দায় চলে এলাম।

একসময় ওরা কথা বলে চলে গেল। ঘরে ঢুকতেই মা দেখছি বাবাকে বলছেন, ‘তাহলে তো কাল সকালেই বেরতে হবে?’

বাবা বললেন, ‘হ্যাঁ সকাল সকাল বেরতে হবে। এই মেয়ে, কাল ওইরকম বিছানায় গড়াগড়ি খাস না। তাড়াতাড়ি উঠে যাবি। নাহলে তোকে ফেলে চলে যাবো।‘

আমি মুখ ভেঙ্গিয়ে বললাম, ‘হ্যাঁ, অতো সোজা না। আমি ঠিক জেগে যাবো।‘

মা বললেন, ‘স্নান করে বেরতে হবে কিন্তু?’

মায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘সে জানি। কাল স্নান করবো, শাড়ি পরবো।‘

মা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘শাড়ি? তুই শাড়ি নিয়ে এসেছিস নাকি? তোর তো কোন শাড়ি নেই।‘

আমি বললাম, ‘আমার শাড়ীর কথা থোড়ি বললাম? তোমার শাড়ি পরে যাবো।‘

মা হেসে ফেললেন। বাবা বললেন, ‘তোমার কথা বোলো। আমি স্নান করে আসছি।‘ বাবা বাথরুমে চলে গেলেন।

মাকে বললাম, ‘তুমি আমার জন্য একটা শাড়ি বার করে রেখো, সাথে ব্লাউস। আমি শাড়ি পরে যাবো মন্দিরে।‘

মা জবাব দিলেন, ‘ঠিক আছে। সন্ধ্যেবেলা দেখে নিস কোনটা পরবি।‘

আমি রাতে শোবার সময় মনে মনে তিনবার বলে শুয়েছিলাম যে ভোরবেলা ৪টের সময় উঠবোই। ঠিক আমার ৪টের সময় ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে চান টান করে রেডি হয়ে মাকে ডাকলাম। মা আমাকে দেখেই ভুত দেখার মত চমকে উঠলেন, বললেন, ‘মানে? এটা কি? তুই স্নান করে তৈরি?’

আমি হেসে বললাম, ‘হু হু বাবা, ঘুরতে এসেছি। বাড়ীতে থাকতে নয়।‘

বাবা ঘুমের থেকে উঠে বললেন, ‘আমি জানি কেন ও উঠেছে। এই মেয়ে ওঠার মেয়েই নয়। ওই যে বলেছিলাম না যে ফেলে রেখে চলে যাবো, সেই ভয়ে উঠে বসে আছে। উঠে বসে আছে কি। জিজ্ঞেস করো, আমার মনে হয় ও রাতে ঘুমোয় নি। অ্যাই অ্যাম শিওর।‘

আমি ‘বাবা’ বলে ঝাঁপিয়ে পড়লাম বাবার কোলে। বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘নারে মা, আমি ইয়ার্কি করছিলাম। আমি জানি আমার সোনা মেয়ে ঠিক উঠে যাবে।‘

মা বিছানা থেকে নামতে নামতে বললেন, ‘পায়েল যখন তৈরি হয়ে গেছে তাহলে চলো আমারও তৈরি হয়ে নি। নাহলে ফালতু দেরি হয়ে যাবে।‘ বলে মা বাথরুমে চলে গেলেন।

বাবা কোলের থেকে আমাকে সরিয়ে বললেন, ‘তোর মা তো বিনা চা খেয়ে চলে গেল। আমার কি আর তা হবে? সর দেখি চা খেয়ে আসি।‘ বাবা বেড়িয়ে গেলেন চায়ের খোঁজে।

আমি সেই সুযোগে মায়ের শাড়ি পরতে লাগলাম। রাতেই শাড়ি আর শায়া ঠিক করে রেখেছিলাম। প্যান্টির উপর শায়া পরে একটু কোমরে গুঁজে নিলাম যাতে শাড়ীর তলা থেকে শায়া না দেখা যায়। তারপর কোমরে শাড়ি গুঁজতে লাগলাম। আগে সরস্বতী পুজোয় শাড়ি পড়েছিলাম দু চারবার। তাই মনে আছে আর তাছাড়া মা যখন শাড়ি পরতেন তখন আমি দেখতাম কিভাবে মা শাড়ি পরতেন। তাই আমার অসুবিধে হোল না খুব একটা। আটকে গেলাম শাড়ীর ভাঁজ ঠিক করতে। হিমশিম খেয়ে যেতে হোল ওটার জন্য তবু ঠিক করে পরতে পারলাম। শাড়ীর ঝুলটা একটু নিচে হয়ে গেল অবশ্য, মনে মনে বললাম ক্ষতি নেই ওতে। হয়তো রাস্তার নোংরা লাগতে পারে। মা এটুকু মেনে নেবেন নিশ্চয়।

ব্লাউসটা একটু লুস মনে হোল। হাতা গুলো ঢলঢল করছে। বুকের উপর একটু ঢিলে। যাহোক, কে আর দেখছে, এমনিতে তো আঁচলেই ঢাকা থাকবে আমার বুক। শাড়ি টারি পরে আমি চুল আঁচরে ফেললাম। আমার চুল কাঁধের উপর। সুতরাং একটা ক্লিপ দিয়ে আটকাতেই চুলের শৃঙ্গার শেষ। মুখে ক্রিম লাগিয়ে আমি তৈরি হয়ে মায়ের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন মা বাথরুম থেকে বেরোয়।

-৮-
মা বাথরুম থেকে বেড়িয়ে আমাকে দেখে মুখ দিয়ে আওয়াজ বার করলেন, ‘ওমা ওকি, তুই তো দেখছি একদম তৈরি?’

আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে ফিকফিক করে হাসতে লাগলাম। মা কাছে এসে আমাকে খুব ভালো ভাবে দেখে বললেন, ‘সত্যি পায়েল তোকে কি সুন্দর দেখতে লাগছে। তুই তাহলে শাড়ি পরিস না কেন রে? ছেলেদের লাইন পরে যাবে তোর পিছনে দেখবি।‘

আমি জবাব দিলাম, ‘ছেলেদের লাইন পরে আর দরকার নেই। তাছাড়া ছেলেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ড্রেস কি দরকার, নিজের ক্ষমতায় ছেলেরা কাছে আসবে, দেখ।‘

মা আমার গাল টিপে আদর করে বললেন, ‘ও বাবা কি কনফিডেন্স মেয়ের। আমি কোন কাপড়টা পরি বলতো? তোকে এতো ভালো লাগছে, তোর মা হয়ে আমাকেও তো দেখতে ভালো লাগতে হবে?’

আমি মাকে পছন্দ করে দিলাম শাড়ি। একটা সবুজের উপর সম্বলেশ্বরি সিল্ক। এমনিতে তো মাকে দেখতে ভালো, খুব সুন্দরী নন, তবে ফিগার যা আছে এখন ছেলেদের মাথা ঘোরাতে বাধ্য। মা শাড়ি পরতে পরতে বাবা এসে গেলেন। আমাকে দেখে তো বাবার বিশ্বাসই হচ্ছিল না কাকে দেখছেন। বললেন, ‘এটা আবার কে? কাকে নিয়ে এলে গো?’

মা হাসছেন। আমি একটু ন্যাকামো করে বললাম, ‘বাবা, ইয়ার্কি মেরো না। বোলো না কেমন লাগছে?’

বাবা পলকবিহিন আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। কোন কথা না বলে। আমার অস্বস্তি হোল, আবার বললাম, ‘কি হোল, বললে না?’

বাবা দু হাত বাড়িয়ে আমাকে ডাকলেন, বললেন, ‘কাছে আয়, ছুঁয়ে দেখি তুই সত্যি আমার মেয়ে কিনা।‘

বাবার কাছে যেতেই বাবা আমাকে বুকে টেনে ধরলেন, বললেন, ‘তুই জানিস না মা, তোকে কি রকম দেখতে লাগছে। আমার যে কি খুশি লাগছে কি বলব। তোকে পরি বললেও কম বলা হয়।‘

আমি বললাম, ‘সত্যি বলছ?’

বাবা আমার মাথায় চুমু দিয়ে বললেন, ‘সত্যি বলছি মা। আমার আজ যেন চোখ দুটো শান্তিতে ভরে গেল। তোকে এতো সুন্দর আগে কখনো দেখি নি।‘

মা শাড়ীর আঁচল ঠিক করতে করতে বললেন, ‘আগে কি চোখ দিয়ে দেখতে? তোমার মেয়ে আগেও যেমন সুন্দর ছিল আজও আছে। আজ এই শাড়িতে ওকে আরও ভালো লাগছে। নাও আর মেয়ের স্তুতি করতে হবে না। স্নান করে নাও, ওরা এলো বলে।‘

বাবা বাথরুমে ঢুকে গেলেন আবার স্নান করে বেরিয়েও এলেন। মাকে আর আমাকে আবার দেখে বললেন, ‘এই পায়েল আমার ব্যাগ খুলে আমার ড্রেস বার করে দে। তোরা যা দিয়েছিস উল্টো পাল্টা ড্রেস পরলে আমাকে আর কেউ পাত্তা দেবে না। টার চেয়ে তুই বার করে দে, অন্তত ভালোটা দিবি এটা শিওর।‘

আমি বাবার ড্রেস বার করে দিলাম। ফর্মাল। তবে এই ড্রেসটায় বাবাকে কেমন ব্যক্তিত্বময় লাগে। বাবার পারসোনালিটির তো কোন কথাই নেই। রাস্তা দিয়ে চললে মনে হয় আর সব ফিকে। আমরা সব তৈরি হয়ে নিয়েছি, অপেক্ষা করছি কালকের লোক দুটোর জন্য। উপোষ করেছি আমি আর মা। পুজো দিয়ে এসে খাবো। দরজায় আওয়াজ হতে বাবা দরজা খুলে দিলেন। বাবাকে দেখে পাণ্ডাটা বললেন, ‘আপনারা সব তৈরি?’

বাবা জবাব দিলেন, ‘হ্যাঁ, অনেকক্ষণ।‘

পাণ্ডাটা বললেন, ‘আসলে একটু দেরি হয়ে গেল। ছেলেকে মন্দিরে পাঠিয়েছিলাম সব বন্দোবস্ত করে রাখতে যাতে আপনাদের কোন অসুবিধে না হয়। তাই। তাহলে চলুন বেড়িয়ে পরা যাক।‘

খালি হাতেই বেড়িয়ে এলাম। আমার ব্যাগ, মায়ের ব্যাগ সব রুমে রেখে দিলাম। ওখানে কাকে দিতে গিয়ে কাকে দেবো। বেড়িয়ে দেখি সেই আগের ছেলেটা। এটা মনে হয় ওই পাণ্ডারই ছেলে। নাহলে কালও দেখলাম আজও দেখছি। তারপরেই শুনি পাণ্ডা বলছেন, ‘এই যে স্যার ওই গেছিল। কিরে সাহেবদের কোন তকলিফ হবে না তো?’

ছেলেটা ওর বাপের কথা কি শুনবে, ও তো আমাকে দেখতেই ব্যস্ত। ওর চোখের নজরের সামনে আমার খুব অস্বস্তি হচ্ছে। অজান্তে হাত বুকে আঁচলের কাছে চলে গেল। আমি একটু টেনেটুনে দিলাম। বাইরে গাড়ী ছিল। পিছনের সীটে আমি উঠলাম তারপর মা আর শেষে বাবা। সামনের সীটে ড্রাইভারের পাশে প্রথমে ছেলেটা তারপর পাণ্ডা জানলার পাশে। গাড়ী চলতে শুরু করলো।

আমার একটা হাত সামনের সীটের উপর রাখা। হঠাৎ ব্রেক মারলে সামলানোর জন্য। আমি একটু সোজা হয়ে বসে আছি, রাস্তার দিকে তাকিয়ে। মা সীটে হেলান দিয়ে, বাবাও তাই। বাবার গলা শুনলাম, ‘তাহলে পাণ্ডা বাবু, এইটা আপনার ছেলে?’

পাণ্ডা উত্তর করলেন, ‘আজ্ঞে হ্যাঁ স্যার। আমারই সাথে থাকে। পাণ্ডাগিরি করে। আমি চলে গেলে ওকে তো করে খেতে হবে।‘
আড়চোখে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখলাম। মনে মনে ভাবলাম, হু কি যে করে খাবে কে জানে। সারাক্ষন তো শুধু মেয়ে দেখতেই ব্যস্ত। বাবা আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তা বয়স কত?’

পাণ্ডা উত্তর দিলেন, ‘আজ্ঞে এই গোটা ছাব্বিস হবে।‘

বাবা শুধু বললেন, ‘ভালো ভালো।‘

হঠাৎ সীটে রাখা হাতে কিসের ছোঁওয়া পেলাম। তাকিয়ে উঠে দেখি কখন ছেলেটা সামনের সীটের পিছনে হাত মেলে দিয়েছে আর ওর হাতের তালু আমার হাতের উপরে। আমি হাত সরিয়ে নিলাম তক্ষুনি। কি ছেলেরে বাবা, ছোঁওয়া লাগতেও হাত সরিয়ে নিলো না? সাংঘাতিক তো? আমি একটু চোখ কুঁচকে ওর দিকে তাকালাম। তাকালে হবে কি, ও দেখলে তো। ভেজা মাছটি উল্টে খেতে জানে না এমন মুখের ভাব করে সামনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

তারপরে একটা আশ্চর্য জিনিস লক্ষ্য করলাম। দেখলাম ওর হাত কি যেন খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমার মনে হোল ও আমার হাত খুঁজছে। কি সাহস দেখ, জানে না পিছনে বাবা মা বসে রয়েছে। হঠাৎ গাড়ী ব্রেক করতেই আমি ভর সামলাতে সীটের উপর হাত দেওয়াতেই ও আবার ওর হাত দিয়ে আমার হাত ধরে ফেলল। আমি চমকে উঠে হাত সরিয়ে নিয়ে পিছনে হেলান দিয়ে বসলাম, আর দরজার হাতল ধরে রাখলাম যাতে আর সামনের সীটে হাত না দিতে হয়।

মাকে বলবো কিনা ভাবছি, কিন্তু মা শুনে নির্ঘাত বলবেন ওটা আমার মনের ভুল। হতেই পারে না। তাই চেপে গেলাম। নিজেকে সাবধান করতে ক্ষতি কি।
একটা সময় মন্দির এসে গেল। গাড়ী থেকে নেমে আমরা মেন দরজার দিকে এগোলাম। বাইরে জুতো রেখে কুপন নিতে হয়। ছেলেটা বাবার মায়ের জুতো নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে এলো। আমার যদিও চটি কিন্তু স্ট্র্যাপ লাগানো। আমি একটু ঝুঁকে ফিতে খোলার চেষ্টা করছি দেখি ছেলেটা এসে বলল, ‘দাঁড়ান দিদিমনি, আমি খুলে দিচ্ছি।‘ বলতে না বলতে ও ঝুঁকে আমার পায়ে হাত দিয়ে ফিতে খুলতে লাগলো।

আমি ‘একি একি এমা না’ বলতে বলতে পাটা সরিয়ে নেবার চেষ্টা করলাম কিন্তু ও এক হাতে আমার পা ধরে আরেক হাত দিয়ে চটি খুলতে লাগলো। ওর হাত আমার পায়ে লাগতেই সারা শরীর কেমন যেন সিরসির করে উঠলো।

আমি মায়ের দিকে তাকাতে মা এগিয়ে এলেন তারপর যা বললেন তাতে আমি স্তম্ভিত। মা বললেন, ‘দেখেছিস পায়েল কত ভালবাসে এরা মানুষকে। আমাদের চেনে না জানে না দেখ কিভাবে জুতোগুলো হাতে তুলে নিলো আর ওই দ্যাখ তোর পা থেকে কেমন করে চটি খুলে নিচ্ছে।‘

তারমানে, মা তো ছেলেটার প্রশংসা করছে। অথচ আমি জানি ছেলেটা বদবুদ্ধি নিয়েই আমার পা থেকে চটি খুলছে যাতে ও আমার পা ধরতে পারে। ছেলেটার দিকে তাকাতে ও এক গাল হেসে আমাদের সবার চটি জুতো নিয়ে রাখতে গেল। আর আমি ওখানে দাঁড়িয়ে ফুঁসতে লাগলাম রাগে। এই অন্যায়কে মা কিভাবে প্রশংসা করলেন আমি কোন কূলকিনারা করতে পারলাম না।
 

৯।
ছেলেটা জুতো রেখে এসে আমাদের বলল, ‘চলুন মাসিমা, এগোই।‘ বাবা পাণ্ডার সাথে আগে চলেছেন কথা বলতে বলতে আর ছেলেটা আমাদেরকে নিয়ে চলেছে। আমরা ছেলেটার পিছন পিছন যেতে যেতে মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘বাবা, তোমার নাম কি?’

ছেলেটা ঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে উত্তর করলো, ‘আজ্ঞে আমার নাম উত্তম জানা।‘

মা আবার প্রশ্ন করলেন, ‘তোমরা তো বাঙ্গালি নও মনে হচ্ছে।‘

ছেলেটি গলায় অমায়িকতা ছড়িয়ে দিয়ে বলল, ‘না মা আমরা বাঙ্গালি নই। উড়িষ্যায় আমাদের ঘর বাড়ী সব। প্রায় ৭৫ বছর ধরে এই পুরীতে আছি আর এই পাণ্ডার কাজ করে যাচ্ছি।‘ বলে আবার আমার দিকে তাকাল।

আরে ভারী অসভ্য তো ছেলেটা। ওর কি লজ্জা করছে না এমন বারবার আমার দিকে তাকাতে? আমি মুখ নিচু করে চলেছি। মন্দিরের সামনে দিয়ে যেতেই উত্তম আমাদের দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলল, ‘জানেন মা, এইখানে সন্ধ্যের সময় ভীষণ ভিড় হয়। কেন বলুন তো?’

আমার ইচ্ছে ছিল জিজ্ঞেস করার কিন্তু ভয়ে বললাম না। যদি আবার ছেলেটা এটাকে ইঙ্গিত ভেবে নেয়। মাই প্রশ্ন করলেন, ‘কেন বাবা?’

ছেলেটা মন্দিরের মাথায় তোলা উরন্ত পতাকাগুলো দেখিয়ে বলল, ‘রোজ একটা ছেলে এই মন্দিরের গা বেয়ে উপরে উঠে পতাকা বদলে আসে। আর সেটা দেখতেই খুব ভিড় হয়। আপনারাও দেখে যাবেন। দেখা আপনাদের সার্থক হয়ে যাবে। হ্যাঁ দিদিমনি?’

আমাকে বলাতে আমি বাধ্য হলাম ওর চোখে চোখ রাখতে। উফফ, কি দৃষ্টি। যেন আঁচল ভেদ করে আমার স্তন দেখতে চাইছে অসভ্যটা। আমি চোখ নামিয়ে নিলাম। এবারে বাবা আমাদের হাঁক দিলেন, ‘আরে তোমরা আসবে কি না? এখনি কত ভিড় হয়ে গেছে দেখ।‘

মা পায়েলকে তাড়া লাগালেন, ‘এই ওই দেখ বাবা ডাকছে, দেরি করিস না চল চল।‘

পায়েল যেতে যেতে বলল, ‘আমি আবার কোথায় দেরি করলাম, তুমিই তো ওর সাথে কথা বলছিলে।‘

ওরা সবাই মিলে একজায়গায় মিলিত হোল। পাণ্ডা বললেন, ‘আপনারা আমার সাথে আসুন। উত্তম, আমি সাহেব আর ম্যাডামকে সাথে নিচ্ছি। তুই এক কাজ কর, দিদিমনির সাথে থাক ওনাকে নিয়ে আয়।‘

অ্যা, বলে কি? আর সাথে আমাকে যেতে হবে? পায়েল ঘেমে উঠলো। না না, তার চেয়ে বরং মায়েদের সাথে যাওয়াই ভালো। মাকে চেঁচিয়ে বলল, ‘মা আমি তোমাদের সাথে যাবো।‘

পাণ্ডা ঘুরে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘না দিদিমনি জেদ করে না। দেখছ তো কত ভিড়। তোমার মা বাবাকে আমি সামলাতে পারবো। কিন্তু তোমাকে দেখভাল করা তখন আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। তুমি উত্তমের সাথে এসো। এখানে বাজে লোকের অনেক ভিড়। ওদের থেকে ও তোমাকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসবে।‘

বাবা বললেন, ‘আরে পায়েল কেন জিদ করছিস? উনি তো ঠিকই বলছেন। তুই শান্তিভাবে উত্তমের সাথে আসতে পারবি।‘

কেন বাবারা বুঝতে পারছেন না উত্তমের চোখে যে ধরনের চাউনি আমি দেখেছি ওটা ভালো নয়। কিন্তু বাবাকে বা মাকে তো বলতে পারবো না। যেতেই হবে এই মর্কটটার সাথে। আমি একবার কড়া চোখে ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম যাতে ও বুঝতে পারে আমি ওর সাথে যেতে বাধ্য হচ্ছি, ও যেন সাবধানে থাকে আমার সাথে। কিন্তু উত্তমের মুখে শুধু আমি হাসিই দেখলাম। ও যেন হেসে বোঝাতে চাইছে যেতে তোমাকে আমার সাথেই হবে।

আমাদের হাতে ফুল আর পুজোর ডালি ধরিয়ে দিল পাণ্ডা। একহাতে পুজার ডালি আরেকহাতে ফুল, মালা আর নারকোলের ডালি। দুহাত ডালি ধরে তুলে এগোতে থাকলাম আমরা ভিড় ঠেলে। কোথায় এরা বলল ফাঁকা ফাঁকা দেখাবে। এতো ভিড়ই। আমার পাশে উত্তম, প্রায় গা ঘেঁসে চলেছে আমার সাথে। আমার ইচ্ছে থাকলেও সরে যাবার উপায় নেই। একে তো সামনে লোক তার উপর আবার হারিয়ে যাবার ভয়। বাধ্য হচ্ছি ওর গায়ের সাথে গা লাগিয়ে চলতে।

উত্তম বলল, ‘আরেকটু এগোলেই আমরা একটা গলির সামনে এসে যাবো। ওইদিক দিয়েই আমরা ভগবানের কাছে চলে যাবো। ফাঁকায়।‘

কখন আসবে কে জানে। পা দেখলাম হঠাৎ জলের উপর পড়লো, মানে শাড়িটার নিচে ভিজল। মুখ দিয়ে বেড়িয়ে এলো, ‘ইসস, শাড়ীটা ভিজে গেল। জল এইখানে আবার কি করে এলো?’ আমার একরাশ বিরক্তি বেড়িয়ে এলো মুখ থেকে।

উত্তম পাশের থেকে বলল, ‘আপনি শাড়ীটা একটু উঠিয়ে পরতে পারতেন। এখানে অনেক জায়গায়তেই জল আরও কিসব পরে থাকবে।‘

আমি চমকে উঠলাম ওর কথা শুনে। কি বলছে ও? আমি আস্তে করে জিজ্ঞেস করলাম, ‘পরে থাকবে? কি পরে থাকবে?’

উত্তম বলল, ‘লোকেদের থুতু, কফ, ইঁদুরের বিস্টা অনেক কিছু।‘

আমি শিউরে উঠলাম, এমা এইসব আমার শাড়িতে লাগবে। মা তো খেয়ে ফেলবে। এটা মায়ের একটা দামী শাড়ি। কি করি এখন? উত্তমকে আমি তুমি বলবো না আপনি বলবো ঠিক করে উঠতে পারছি না। আমার থেকে তো বয়সে বড়, আপনি বলাই উচিত হবে।

বললাম ওকে, ‘আপনি একটু এই ডালিগুলো ধরবেন। আমি তাহলে শাড়ীটা একটু উঠিয়ে নিতে পারি। নাহলে তলাটা একদম যাচ্ছেতাইভাবে নষ্ট হয়ে যাবে।‘
উত্তম কোন সাহায্য করতে পারলো না এই বলে, ‘না দিদিমনি। আপনার ডালি আপনাকেই নিতে হবে। একবার আপনার নামে হয়ে গেলে ওটা আর হাত পরিবর্তন করা যায় না। এখানে এটা নিয়ম।‘

ধুত্তোর, নিয়মের নিকুচি করেছে। কিন্তু কি করা যায়, ও নেবে না। অন্য কাউকে দিতেও পারবো না। তাহলে? এদিকে জলের পর জল পার হয়ে যেতে হচ্ছে। উত্তম আরও ভয় দেখাল, ‘দিদিমনি আরেকটু পথ বাকি আছে। কিন্তু এগোলে আরও বেশি জল পাবেন আপনি।‘

এ আবার কি কথা। এখানে লোকের পুজো দিতে আসে না জল ফেলতে আসে। আমার শাড়ি তো বাঁচাতেই হবে। সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মা বাবাকে। কাউকে দেখা যাচ্ছে না। ওরা বোধহয় আরও বেশি এগিয়ে গেছেন। কি করি বাধ্য হলাম ওর হেল্প নিতে।

উত্তমকে প্রায় ফিসফিস করে বললাম যাতে আশেপাশের লোকে না শুনতে পারে, ‘আপনি একটা কাজ করবেন? শাড়ীটা একটু তুলে আমার কোমরে গুঁজে দেবেন। আপাতত বাঁচা তো যাবে ময়লা হবার হাত থেকে?’

উত্তম যেন অপেক্ষা করছিলো এটা শোনবার জন্য। ও চট করে আমার পিছন ঘেঁসে দাঁড়ালো। আমি পরিস্কার আমার গায়ে ওর গা ঘষা অনুভব করলাম। গাটা শিউরে উঠলো। এই প্রথম কোন পুরুষের দেহ আমার দেহ স্পর্শ করলো। আমি গা সিটকে দাঁড়িয়ে পড়লাম। উত্তম বলে উঠলো, ‘উহু, দাঁড়াবেন না দিদিমনি।
পিছন থেকে ধাক্কা খেতে হবে।‘

আমি আবার চলতে শুরু করলাম। উত্তম পাশের থেকে দুহাত দিয়ে শাড়ীটা তুলে ধরল, তারপর গোছ করে আমার কোমরে ঢোকাতে লাগলো। ওর হাত নাভির নিচ দিয়ে কোমরে বাঁধা শায়ার দড়ির নিচে নেমে যেতে থাকল আমার সারা দেহে আতঙ্ক ছড়িয়ে। বলতে চাইলাম, ‘আরে ব্যস ওইখানেই গুঁজে দিন।‘ কিন্তু ভয়ে
মুখ দিয়ে কোন কথা বেরোল না। পাছে আশেপাশের লোক শুনে ফেলে।

উত্তমের হাত এবারে মোক্ষম বিপদজ্জনক জায়গায়। আমার প্যান্টির ইলাস্টিক স্পর্শ করেছে। কিন্তু এটা কি করছে ও? ওর তো এখন ওখান থেকে ফিরে আসা উচিত। ওর আঙ্গুল বিস্তার হতে শুরু করেছে আমার প্যান্টির ইলাস্টিকের নিচ। আমার কি মনে হোল ওর আঙ্গুল আমার যোনির চুলগুলো স্পর্শ করলো? আমি ওর দিকে তাকাবার আগেই ও হাত বার করে নিয়ে বলল, ‘এবারে ঠিক আছে মনে হয়। আর আপনার শাড়িতে জল লাগবে না।‘

আমার চোখে প্রায় জল এসে যাবার যোগার। কি বিপদেই না আমি পড়েছি। আমার গা হাতপা সব কাঁপছে উত্তমের এই ব্যবহারে। কিন্তু আমি নিরুপায়। আমার কিছুই যে বলবার নেই। আমি মুখ বুজে হাঁটতে লাগলাম।

একটা গলি দেখতে পেলাম আর সাথে সাথে উত্তমের হাত আমার নগ্ন কোমরে অনুভব করলাম। চমকে উঠতেই উত্তম বলল, ‘ওইদিকে, ওই গলির দিকে চলুন। আমাদের জায়গায় এসে গেছি।‘ উত্তম আমার পেটের কিছুটা অংশে হাত বুলিয়ে আমাকে ঠেলে দিল গলির দিকে। আমি দুই হাতে ডালি নিয়ে চললাম গলির দিকে। পিছনে উত্তম।


১০।
গলিটা একটু সঙ্কীর্ণ হলেও একটু যেন আলো আছে। এইখানে উত্তম হয়তো সাহস পাবে না। আমি চলতে লাগলাম, ও আমার একটু পিছনে। ভালোই হয়েছে। লোকের ভিড় নেই, উত্তমও বিরক্ত করতে পারবে না। বেশ কিছুক্ষন চলার পর গর্ভগৃহের কাছাকাছি পৌঁছুতেই আবার ভিড়। গিজগিজ করছে লোকে। আমি একটু ভয় পেলাম। এই ভিড়ের মধ্যে মা বাবাকে তো দেখতে পাচ্ছি না। কোথায় গেলেন ওনারা? উত্তম আবার সেই গা ঘেঁসে দাঁড়িয়ে পরেছে। আমার ওর গা ঘেঁষা মনে হয় সয়ে গেছে। আর এতো ভিড়ে ও কাছে থাকেলই ভালো। নাহলে ওর বদলে অন্য কেউ সুযোগ নিতে পারে।

আমি উত্তমকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কি হোল, এতো ভিড়? অথচ আপনারা বলেছিলেন ফাঁকায় ফাঁকায় দেখাবেন?’

উত্তম উত্তর করলো, ‘যে লাইনে আমরা আসছিলাম সেই লাইন দিয়ে যদি আসতাম তাহলে এখন ১৫ থেকে ২০ মিনিট লেগে যেত এইখানে পৌঁছাতে।‘

আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কিন্তু মা বাবাদের তো দেখতে পাচ্ছি না। কোথায় গেলেন ওনারা, আপনার বাবা?’

উত্তম উত্তর দিলো, ‘হবে আশেপাশে কোথাও। আপনি চিন্তা করবেন না দিদিমনি। আমি আছি হারাবার ভয় নেই আপনার।‘

সে ভয় তো নেই। কিন্তু মা বাবাকে না খুঁজে পাবার একটা অস্বস্তি রয়ে গেছে মনে। গর্ভগৃহ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু অনেক লোকের ভিড় ঠেলে এগোতে হবে। একটা শিউরে ওঠা ফিলিংস এলো মনে। একি করছে উত্তম? এটা উত্তমই তো?

পুজার ডালি দুটো লোকের ধাক্কায় যাতে না পরে যায় তারজন্য দুটো হাতই আমার একটু উঁচুতে করে রাখা। সেই সুযোগ নিয়ে উত্তম আমাকে প্রায় জড়িয়ে ধরার মত করে ওর হাত দুটো আমার বগলের পাশ দিয়ে ঢুকিয়ে সোজা স্তনের উপর রেখেছে। আর শুধু রাখাই না, টিপতেও লেগেছে ধীরে ধীরে। যেহেতু একটাই লাইন, পাশে কোন লোক নেই ও নির্বিকার। সামনের লোক সামনের দিকে তাকিয়ে আর পিছনের লোকেরা তো আমাদের পিছনে। কে দেখবে কি করছে।

আমার চোয়াল শক্ত হয়ে উঠলো। আমি তো কিছু করতেই পারছি না, কিছু যে বলব ভয়ে গলা দিয়ে কোন স্বর বেরোচ্ছে না। কোন রকমে উচ্চারন করতে পারলাম, ‘আপনি একটু পিছনের দিকে সরে দাঁড়ান।‘

উত্তমের সেদিকে কোন খেয়াল নেই, বলল, ‘আজ্ঞে দিদিমনি, পিছনের থেকে লোকে ঠেলা মারছে। সরবো কোথায়?’

ব্লাউসটাও আমি ঢিলে পড়েছি। পেটের কাছে ওটা লুস হয়ে ঝুলছে। উত্তমের দুটো হাতই ওই লুস ব্লাউসের ভিতর দিয়ে ঢুকে ব্রা স্পর্শ করে ফেলেছে। ইসস, আমি যে কি করি। ওমা একি ও যে দুটো হুক খুলেও দিয়েছে ব্লাউসের। তারমানে ও কি করতে চায়? লোকের কাছে যাবো কি করে? গর্ভগৃহ জানি না ভিড় থাকবে কি লাইট থাকবে। শাড়ীর আঁচল যদি সরে যায় তাহলে তো সবাই দেখবে আমার ব্লাউসের অবস্থা। আমি আমার শরীরে দুলুনি দিলাম যাতে ও বোঝে আমি অসন্তুষ্ট।

কিন্তু আশ্চর্য ছেলে বটে এই উত্তম। ও বলল, ‘দিদিমনি সোজা দাঁড়াও। নাহলে হাতের ডালি পরে যেতে পারে।‘

কি সাহস দেখ। উত্তমের হাত আমার ব্রা টেনে উপরে করে দিয়েছে। ঠাণ্ডা হাওয়া শাড়ীর ফাঁক দিয়ে আমার উন্মুক্ত স্তনে এসে ঠেকছে। উত্তমের হাত দুটো আমার বর্তুলাকার স্তন দু মুঠোয় নিয়ে টিপতে লাগলো। আঙ্গুল দিয়ে আমার শক্ত হয়ে ওঠা স্তনাগ্রে ঘোরাতে লাগলো। এই প্রথম কোন পুরুষের হাত আমার ভীষণ নিজের জায়গাতে স্পর্শ করেছে। আমার সারা শরীরে কেমন একটা কম্পন তৈরি হয়েছে। ভালো লাগা না ঘেন্না জানি না। আমি চোখ বুঝে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি যাতে অন্য কেউ না দেখতে পারে। ভীষণ অপদস্ত হয়ে যাবো। মা বাবা তোমরা কোথায়, আমি এখানে ভীষণ বিপদে।

উত্তম স্তনাগ্র নিয়ে খেলতে খেলতে আমাকে ঠেলে এগিয়ে নিয়ে যেতে লাগলো। স্তন টেপার ধরনও ওর আলাদা। কখনো দুহাতের চেটো দিয়ে স্তনগুলোকে মালিশ করে আবার কখনো আঙ্গুল দিয়ে স্তনাগ্রগুলোকে টেনে টেনে ধরে। হঠাৎ ও ব্রা আর ব্লাউস দুটোই একসাথে টেনে নামিয়ে দিল নিচে আর হাত টেনে বার করে আমার কাঁধের উপর রাখল।

আমি চোখ খুলে দেখলাম গর্ভগৃহে পৌঁছে গেছি। ভগবান তোমাকে অশেষ ধন্যবাদ। পুজা ভালভাবেই দিলাম। উত্তম হেল্প করলো অনেক। মাথায় মূর্তির সিন্দুর নিয়ে আমার কপালে টিকাও দিয়ে দিল। তারপর আবার আমাকে ধরে বাইরে বার করে নিয়ে এসে বলল, ‘আসুন দিদিমনি, এবারে পরিক্রমা করি মূর্তিকে।‘

বাধ্য হলাম ওর সাথে বেড়িয়ে আসতে পরিক্রমা করতে। আর পরিক্রমা? তাতেও এতো ভিড় ইচ্ছে করছিল না। কিন্তু বাধ্য হলাম উত্তমের সাথে চলতে। পায়ে পা লেগে যায় এমন ভিড়। উত্তমের দেহ আমার সাথে চিপকে আছে। আমার এতো অস্বস্তি হচ্ছে, কিন্তু বলবো টা কি আর কাকেই বা বলবো। সব মূর্তি পরিক্রমায় ব্যস্ত। যেন ভগবান চলে যাবেন না করলে।

চমকে উঠতে হোল পিছনে উত্তম যা করতে শুরু করলো। আমার নিতম্বে অনুভব করলাম উত্তমের দুটো হাত থমকে দাঁড়ালো। শরীর আমার একদম শক্ত হয়ে গেল। উত্তম আমার নিতম্বে হাত দিয়ে চাপ দিয়ে ফিসফিস করে বলল, ‘চলতে থাকুন দিদিমনি, নাহলে ভিড়ে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।‘

চলছি তো ঠিকই তারসাথে উত্তমের হাতও ঘুরে বেড়াতে লাগলো আমার নিতম্বে। কখনো টেপে, কখনো হাত বুলায়। আমি লোকের কান বাঁচিয়ে বললাম, ‘আপনি আরেকটু পিছনে থাকুন না। আমার খুব অসুবিধে হচ্ছে।‘

উত্তমের হাত আমার খালি পেটে থেমে গেল এসে। বলল, ‘কি করবো বলুন দিদিমনি। আমি কি আর সাধ করে এইভাবে আছি। যা ভিড় তাতে এইভাবেই আমাকে থাকতে হবে যতক্ষণ না বেড়িয়ে যাই।‘

উত্তম আরও জোর করে আমাকে যেন জাপটে ধরল। পেটের উপর হাত ঘোরাতে ঘোরাতে অনুভব করলাম ওর একটা হাত আমার কোমরে আটকে থাকা শাড়ীর ভিতর ঢুকছে। খুব গরম লাগছে আমার। আমি মুখ চেপে ধরলাম একহাত দিয়ে আর আরেক হাত দিয়ে ওর হাত চেপে ধরে বার করে নিতে চেষ্টা করলাম
আমার কোমরের ভিতর থেকে।

উত্তম কানের পাশে ফিসফিস করে বলল, ‘বেশি নড়াচড়া করার চেষ্টা করবেন না। আশেপাশের লোকের সন্দেহ হতে পারে। ওরা দেখলে আপনাকেই বাজে বলবে।‘

আমি বাধ্য হয়ে ওর হাতের উপর আমার হাত রেখে দিলাম আর জোর করলাম না। সেই সুযোগে আমার পেট বেয়ে উত্তমের হাত নেমে গেল একদম নিচে। পেট আমার পাতলা। ভয়ে শায়ার দড়ি খুব একটা টাইট বাঁধা নেই। ওর পক্ষে অসুবিদে হোল না হাত নিচে নিয়ে যেতে। আবার আমার নিঃশ্বাস আটকে গেল যখন ওর হাত আমার প্যান্টির ইলাস্টিকের নিচে ঢুকতে শুরু করলো।

আমি ভয়ে ঘামতে থাকলাম, ও কি করতে চায়। বুঝলাম একটু পরেই যখন ওর হাত আমার লোমভর্তি যোনির উপর পুরো চেপে ধরল। আমি জানি যতই হোক এই স্পর্শে আমার ওখানটা ভেজা রয়েছে। লজ্জা করতে লাগলো এই ভেবে যদি উত্তম টের পেয়ে যায় আমার ওখানটা ভেজা।

উত্তমের আঙ্গুল ঘোরাঘুরি করতে লাগলো আমার লোমে ঢাকা যোনির উপর। লোমগুলো নিয়ে ও খেলতে শুরু করলো। তারপর আমার মুখ দিয়ে ‘ইসসস’ বেড়িয়ে আসতে চাইল যখন উত্তমের আঙ্গুল আমার ভগাঙ্কুরকে ছুলো। ও লোম ফাঁক করে আমার যোনির চেরায় আঙ্গুল দিয়ে ভগাঙ্কুরের উপর আঙ্গুল রেখেছে। অনেক কষ্ট করে আমি মুখ দিয়ে চিৎকার বন্ধ করে দমবন্ধ অবস্থায় নিজেকে ধরে রাখলাম।

উত্তমের হাত কিছুক্ষন আমার কুমারী পাপড়ি আর ভগাঙ্কুর নিয়ে খেলা করার পর ধীরে ধীরে হাত টেনে উপরে ওঠাতে শুরু করলো আর আমি আমার পেটের তলায় আমার রসে ওর ভেজা আঙ্গুলের স্পর্শ পেতে থাকলাম। একটা সময় স্বস্তি ফিরে এলো যখন উত্তম পুরো ওর হাত বাইরে এনে ফেলল।

সামনের দিকে তাকিয়ে দেখি দরজা দিয়ে ভিড় বেড়িয়ে চলেছে। তারমানে আমাদের পরিক্রমা শেষ।

বাইরে বেড়িয়ে মা আর বাবাকে সাথে পাণ্ডাটাকে দেখতে পেলাম। মা আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ওই তো পায়েল। তোদের হয়ে গেল?’

আমি কোনরকমে বলতে পারলাম, ‘হ্যাঁ হয়ে গেল।‘

উত্তমকে বলতে শুনলাম, ‘আজ্ঞে দিদিমনিকে একদম ভালভাবে মূর্তি, পুজা আর পরিক্রমা করিয়ে দিয়েছি। তাই না দিদিমনি?’

আমি শুধু মনে মনে ভাবলাম তুমি একটা আসতো শয়তান। তোমাকে একদিন দেখব।
 
১১।
আমরা বেড়িয়ে এলাম ধীরে ধীরে। আমার ঘোর এখনো কাটে নি। স্বস্তি আমার যে শয়তানটার হাত থেকে ছাড়া পেয়েছি। কিন্তু ওই প্রথম কেউ আমার কুমারিত্বকে স্পর্শ করলো। আমি উত্তমের দিকে তাকাতে পর্যন্ত পাচ্ছি না। আমার সারা শরীরে লজ্জা। ভাবতে পাচ্ছি না যে ছেলেটা আমার থেকে একটু দূরে হেঁটে যাচ্ছে সে আমার সব গোপনীয়তাকে স্পর্শ করেছে।

ভাবতেই আমার ব্রায়ের ভিতর স্তনবৃন্ত টানটান হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। আমার ভাবতেই লজ্জা করছে যে উত্তম ছেলেটা আমার ভেজা যোনিতে হাত দিয়েছে, অভ্যন্তরে পর্যন্ত যেতে ছাড়ে নি। ওকি আর বুঝতে পারে নি আমার যোনি ভিজে চপচপ করছিলো। ও হয়তো হেসেছিল আমার ওই অবস্থা দেখে।

এখনো আমি অনুভব করতে পারছি আমার প্যান্টি ড্যাম্প হয়ে রয়েছে। আমি জানি আমার মুখ কান লাল হয়ে রয়েছে লজ্জায়। বাইরে এসে উত্তমই আমাদের চটি জুতো এনে দিল। বাবা খুশি হয়ে পাণ্ডা মশাইকে আর উত্তমকে পুজার খরচ ছাড়াও ৫০০ টাকা করে দিলেন এই খুশিতে যে কোন সমস্যা ছাড়াই ওরা আমাদের মূর্তি দেখিয়েছে, পরিক্রমা করিয়েছে।

উত্তম আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে বলল, ‘দিদিমনি। চটিটা পরিয়ে দেবো?’

আমি ওর দিকে না তাকিয়ে ওর হাত থেকে প্রায় ছিনিয়ে নেবার মত চটি জোড়া নিয়ে নিলাম আর পরে নিলাম যাতে ও কোন সুযোগ না পায়।

আমার দিকে হাত জোর করে উত্তম বলল, ‘আবার সুযোগ এলে আসবেন দিদিমনি। এইভাবেই আবার আপনাকে মন্দির দেখিয়ে দেবো।‘

এইভাবে মানে ও যা যা করেছে সেইগুলো ধরে। শয়তান একটা। যদি আবার এসে আমি ওর দেখা পাই তাহলে আমি ওকে দেখে নেব। শেষবারের মত আমি ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে চলে গেলাম বাবা আর মায়ের কাছে। সেটাই উত্তমের সাথে আমার শেষ দেখা আর উত্তমের হাতে আমার প্রথম অনিচ্ছাকৃত যৌন অভিজ্ঞতা।

পরে আরও দুবার আমি পুরী এসেছি কিন্তু উত্তমের দেখা পাই নি। জানি না দেখা হলে আমি প্রতিশোধ নিতে পারতাম কিনা, তবে আজ জীবনের উত্তরভাগে ওই ঘটনা মনে করলে আজও আমার রোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়। ওই অন্ধকার গলিতে আমার পেটের ভিতর হাত ঢুকিয়ে আমার কুমারী যোনিকে স্পর্শ করা। সাংঘাতিক একটা ব্যাপার ছিল তখন।

ফিরে গিয়ে আমরা সমুদ্রে স্নান করলাম। মন্দিরে ঘোরাঘুরিতে খুব ক্লান্তি লাগছিল। তার উপর স্নানের জামা কাপড় সাথে ছিল না। বাবা বললেন হোটেলে ফিরে গিয়ে লাভ নেই। আবার হোটেল যাও, ড্রেস চেঞ্জ করো, আবার এসে সমুদ্রে স্নান করে আবার হোটেলে যাওয়ার চাইতে একেবারে স্নান করে চলে যাওয়াই ভালো। আমাদেরও আইডিয়া ভালোই লাগলো, স্নান করে আমরা হোটেলে ফিরে গেলাম।

বাথরুমে ঢুকে যথারীতি জামা কাপড় ছেড়ে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই গাটা শিরশির করে উঠলো। নগ্ন শরীর দেখতে দেখতে মনে পরে যেতে লাগলো উত্তমের আমার স্তনে হাত দিয়ে মর্দন করা, স্তনবৃন্ত ধরে টানা, ভাবতে ভাবতে ওখানেই আয়নায় দেখলাম আমার স্তনাগ্র ধীরে ধীরে জাগ্রত হতে লেগেছে। আয়না দিয়ে দেখতে পেলাম বৃত্তের মধ্যে শুয়ে থাকা বৃন্ত দুটো মাথা উঠে দাঁড়াচ্ছে। আমার হাত অজান্তে চলে গেল আমার স্তনে। বাইরে থেকে স্তন দুটোকে চেপে উঠিয়ে আনলাম সামনে। জ্বলজ্বল করছে আমার চোখের সামনে শক্ত স্তনবৃন্ত। আমার কুমারী স্তনে প্রথম পুরুষের হাতের কথা চিন্তা করতেই থরথর করে কেঁপে উঠলো আমার জাঙ্গ দুটো। আমি স্তন ছেড়ে আমার দুপায়ের মাঝে মনোনিবেশ করলাম।

ঘন কোঁকড়ান কালো চুলে ঢাকা আমার কুমারী যোনি আজ আর অছ্যুত নেই। কোন এক অজানা পুরুষের হাত এই যোনির সাথে খেলা করেছে। আমি আমার একটা হাত নিয়ে আমার যৌনকেশে রাখলাম। ভিতরে ভিতরে আমার দেহ কাঁপতে শুরু করলো। আর ধরে রাখতে পারলাম না নিজেকে। দৌড়ে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে তার নিচে দাঁড়িয়ে ঝরঝর জল ধারায় নিজের অশান্ত দেহকে শান্ত করতে লাগলাম। অনেকক্ষণ, অনেকক্ষণ জলের নিচে দাঁড়িয়ে দেহকে ঠাণ্ডা করে বেড়িয়ে এলাম।

হাতে তুলে নিলাম শুকনো ধবধবে টাওয়েল। নিজেকে শুকনো করে টাওয়েল গায়ে জড়িয়ে বেড়িয়ে এলাম বাইরে। আয়নার সামনে দিয়ে আসবার সময় নিজের প্রতিবিম্ব দেখতে চাইলাম না, পাছে আবার আমার কুমারী শরীর অশান্ত হয়ে যায়।

পুরীতে বাকি কটা দিন আনন্দে কাটিয়ে এবারে বাড়ী ফিরে এলাম। আমার জীবনে দুটো প্রথম অভিজ্ঞতা হোল। এক সমুদ্র দেখা আরেক নিজের অজানা শরীরকে চিন্তে পারা। প্রথমটা যেমন মধুর দ্বিতীয়টা তেমনি উত্তেজক। কতদিন তারপরে উত্তমের হাত ভেবে নিজের শরীর নিয়ে খেলা করেছি রাতে ঠিক বলতে পারবো না। এই করে আরেক বছর কেটে গেল আমার।

আমার মাসতুতো দিদি রিনির বিয়ে। রিনি আমার থেকে প্রায় ৬ বছরের বড়। কিন্তু আমার সাথে ওর খুব বন্ধুত্ব। কারন মেসো আর মাসির রিনিই একমাত্র মেয়ে। আবার মা বাবার আমি একমাত্র মেয়ে।

মেসোদের বাড়ী আমাদের বাড়ী থেকে খুব একটা দূরে নয়। বাসে ৫ স্টপেজ আগে। রিনি একা একাই চলে আসে আমাদের বাড়ী। আমি খুব একটা যাই না। যাই না বলতে আমার ইচ্ছে থাকলেও মা ছাড়তেন না। পথেঘাটে আবার কি বিপদ আপদ হয়ে যায় বলে।

রিনি দিদি বলেছিল, ‘ঠিক আছে মাসীমা, পায়েলের আসার দরকার নেই। আমি চলে আসবো। তাছাড়া আমি তো এদিকে পড়তে আসি। আমার এদিকটা ভালোই চেনা, লোকেরাও চেনে। আমার কোন ব্যাপার নয় আসা এখানে।‘

তাই রিনিদিদি মাঝে মাঝেই চলে আসতো বাড়ীতে। আমার বেশ সময় কেটে যেত ওর সাথে। নানান ধরনের গল্প হতো দিদির সাথে, তবে যেটা বেশি হতো কোন ছেলে কখন কোথায় রিনিদিদিকে লাইন মারছে। আজ এই ছেলে তো কাল ওই ছেলে।

আমি মজা করে বলতাম, ‘ওতগুলো ছেলে যদি তোমায় বিয়ে করতো তাহলে কি হতো বলতো দিদি?’

রিনি মজা করেই উত্তর দিত, ‘তাহলে আধুনিক গান্ধারি হতে হতো আমাকে।‘

আমি বোকার মত বলতাম, ‘গান্ধারি মানে কি বোঝাতে চাইছ তুমি?’

রিনিদিদি যেন আকাশ থেকে পরত আমার প্রশ্ন শুনে, বলতো, ‘তুই কি রে? গান্ধারির নাম শুনিস নি। আরে মহাভা......’

আমি রিনিকে থামিয়ে দিয়ে বলতাম, ‘আরে সেতো শুনেছি। কিন্তু তার সাথে তোমার কি সম্বন্ধ?’

রিনি হাত হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়ে বলতো, ‘তুই ঘচু শুনেছিস। বলতো গান্ধারির কতগুলো ছেলেমেয়ে ছিল?’

আমি বিজ্ঞের মত জবাব দিতাম, ‘এ আবার কি কঠিন প্রশ্ন। ১০০টা ছিল।‘

রিনি বলতো, ‘ঠিক, তাই বলছিলাম ওতগুলো ছেলের সাথে বিয়ে হলে আমারও ১০০টা ছেলে হতো, বুঝলি?’ বলে দুষ্টুমি করে আমার গাল টিপে দিত।

রিনিদিদির সাথে আমি খুব ফ্রাঙ্ক ছিলাম আর রিনিও তাই ছিল। যা ইচ্ছে দুজনে আমরা বলতাম দুজনকে। বয়সের ফারাক আছে আমাদের আলোচনা শুনলে কেউ বলতে পারতো না। তাছাড়া আমার বডি একটু ডেভেলপ বেশি। বয়সের ফারাকটা ধরা যেত না এই কারনে যে রিনি আমার থেকে একটু পাতলা ছিল। আমার স্তন, নিতম্ব রিনির থেকে বেশি ভারী মনে হতো।

রিনি ইয়ার্কি করে বলতো, ‘এই তুই আমার হবু বরের কাছে ভুল করেও যাবি না। তোর বডি আর তোকে দেখতে যা সুন্দর তাতে তোর দিকেই ঢলে পরবে।‘ এগুলো শুধুই মজা।

পুরী থেকে ঘুরে আসার পর রিনিদিদি একদিন বাড়িতে এসেছিল। একথায় অকথায় জিজ্ঞেস করলো, ‘পুরীতে কেমন আনন্দ করলি বল? ফটোগুলো কোথায় সব? দেখা, দেখি কেমন লাগছে তোদের? আমার ভাগ্যে তো আর হোল না। বিয়ে হবার পর সাধ মেটাবো।‘

আমি ফটোগুলো দেখাতে লাগলাম। সমুদ্রের, আমাদের স্নানের, মন্দিরের সব ফটো। একেকটা ফটো দেখে আর ওর মুখ দিয়ে বেড়িয়ে আসে, ‘অ্যাই লা, কি সুন্দর রে।‘ কিংবা, ‘ওরে ব্বাস, তোকে তো দারুন লাগছে দেখতে।‘ এইসব আরকি।

সব ফটো দেখা হয়ে গেলে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘আর কি কি করলি পুরীতে? কোন ছেলে লাইন দিয়েছিল তোর পিছনে?’



১২।

ছেলে লাইন দেওয়া তো জানি না তবে আমার সাথে কি হয়েছিল সেটা কি বলা ভালো হবে রিনিকে? কে জানে আবার কি ভাববে। আমি একটু ইতস্তত করছিলাম। আমার মুখের ভাব দেখে রিনি বলল, ‘অ্যাই, পায়েল, তুই কিন্তু লুকচ্ছিস কিছু আমার থেকে। বল কি হয়েছিল?’

আমি আর থাকতে পারলাম না। পেটের ভিতর কবে থেকে এই ঘটনাটা ঘুরঘুর করছে উগলে বেড়িয়ে আসার জন্য। পেটটা যেন ফুলে ঢাক হয়ে রয়েছে। কাউকে না বললেই নয় আর রিনি ছাড়া আমার বিশস্ত আর কে আছে।

আমি রিনিকে বললাম, ‘দেখ তোকে বলছি। কিন্তু কথা দে তুই কাউকে বলবি না?’

রিনি যেন অভিমান বোধে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘এই কি রে, মুখ ঘুরিয়ে নিলি কেন? কি খারাপটা বললাম আমি?’

রিনি আহত স্বরে বলল, ‘তুই এখনো আমাকে বিশ্বাস করতে পারিস না। ছিঃ, আমি ভেবেছিলাম আমি তোর খুম মনের বন্ধু, দিদি হই না কেন।‘

আমি কিছুই বুঝতে না পেরে বললাম, ‘কি ক্ষ্যাপামি করছিস? আমি কি বলেছি তোকে যে তুই এই কথাগুলো বলছিস আমাকে?’

রিনি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুই কেন বললি কথা দে কাউকে বলবি না। এতদিন তোর কোন কথাটা নিয়ে আমাই পাড়া রটিয়ে বেরিয়েছি রে যে এতোবড় কথা বলতে পারলি?’

এমা, দিদি আমার কথাকে এইভাবে নিলো নাকি? আমি দিদিকে জড়িয়ে ধরে বললাম, ‘আরে তুই কি রে? আমি তো শুধু শুধুই বললাম তোকে। অ্যাই নেভার মিন ইট, বিলিভ মি।‘

রিনিও আমাকে জড়িয়ে ধরে বিছানার উপর শুয়ে পড়লো। বালিশে দুজনে মাথা রেখে আমার ঘটনা বলতে শুরু করলাম। আমি বলতে বলতে রিনির দিকে তাকিয়ে দেখলাম বিস্ময়ে ওর চোখ বড় বড় হয়ে উঠেছে। আমি হাসতে শুরু করলাম। রিনি বিব্রত হয়ে বলল, ‘হাসছিস কেন? তারপরে কি হোল বল?’

আমি হাসতে হাসতে বললাম, ‘তোর চোখ এতো বড় বড় হয়ে উঠেছিল ভয় হচ্ছিল বেড়িয়ে না পরে।‘

রিনি বুঝতে পেরে হেসে বলল, ‘ধ্যাত, তুই একটা যা তা। ঘটনা বলছিস না আমাকে দেখছিস। তারপর বল।‘

এবারে আমি যখন পরিক্রমার কথা বলতে শুরু করলাম ব্যস ওর চোয়াল ঝুলে গেল। আমার বলা শেষ হয়ে যাবার পরেও ও হা মুখে আমাকে দেখতেই লাগলো। আমি ওকে ঝাঁকানি দিয়ে বললাম, ‘কিরে, ওইভাবে কি দেখছিস? কিছু তো বল।‘

রিনি সম্বিত ফিরে পেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘ছেলেটা তোর ওখানে হাত দিলো? তুই দিতে দিলি?’

আমি লজ্জা পেয়ে বললাম, ‘দিতে দিলি মানে? তুই থাকলেও দিত। আমাকে তো ও ভয় দেখিয়ে দিয়েছিল যদি আমি কোন শব্দ করি তাহলে লোকে আমাকেই টিটকারি দেবে। কি করতে পারি বলতো ওতগুলো লোকের মধ্যে?’

রিনি বলল, ‘না সেটা ঠিক। তোর কিছু করার ছিল না। কিন্তু আমি ছেলেটার সাহস দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি। কত সাহস থাকলে পেটের ভিতর হাত ঢুকিয়ে তোর যোনিতে হাত দিতে পারে। আর কি বললি তোর যোনিতে চুল আছে? কাটিস নি?’

আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘এমা, কাটে নাকি এগুলো?’

রিনি বলে উঠলো, ‘কাটে মানে। আলবাত কাটে। দেখবি এই দ্যাখ।‘ বলে রিনি বিছানার উপর দাঁড়িয়ে ওর সালোয়ার নামিয়ে প্যান্টিটা সড়াৎ করে নিচে নামিয়ে দিলো। আমি অবাক চোখে দেখলাম ওর ওখানে চুলই নেই। গুড়িগুড়ি লোমের আভাষই শুধু। রিনি একবার ওর যোনিতে হাত বুলিয়ে বলল, ‘দেখলি, কাটে না আবার।‘ বলে আবার প্যান্টি আর সালোয়ার তুলে বেঁধে নিলো কোমরে।

আমি তর্ক করলাম, ‘তুই কাটিস বলে আমাকেও কাটতে হবে নাকি? যাহ্*।‘

রিনি জবাব দিলো, ‘তুইও কাটবি। দেখবি, তোর মাসিক একটু বেশি হোক। যখন ন্যাপির পাশ দিয়ে বেড়িয়ে আসবে তখন মজা দেখিস। যাকগে, যখন উত্তম না কে তোর ওখানে হাত দিল তোর ফিলিংস কিরকম হয়েছিল?’

আমি ভাবতেই গায়ে ঘাম এলো। বললাম, ‘আর বলিস না। ফিলিংস? একে তো কারো দেখে নেবার ভয়। তার উপর উত্তমের হাত আমার লোমে ঘুরছে। আর এই প্রথম আমাকে কেউ ওখানে হাত লাগাল। তুই বিশ্বাস করবি না ওইসবের মধ্যে আমার ওখানটা ভিজে একশা হয়ে গেছিল।‘

রিনি মুখে হাত দিয়ে আঁতকে উঠলো, ‘তুই ভিজে গেছিলি? তারমানে ছেলেটাও বুঝেছিল তুই ভিজেছিস?’

আমি বললাম, ‘বুঝেছিল মানে? আলবাত বুঝেছিল। ও যখন হাত বার করে আনছিল, তখন ওর হাতের ভেজা ভাব আমি পেটে অনুভব করতে পারছিলাম। ছিঃ ছিঃ কি অবস্থা বলতো?’

রিনি বলল, ‘তাতে কি। হাত দিতে পেরেছে আর রস মাখতে পারবে না? খুব ভিজেছিলি নাকি?’

আমি উত্তর দিলাম, ‘ভীষণ। জ্যাব জ্যাব করছিলো আমার প্যান্টি।‘

রিনি বলল, ‘ইসস। তুই খুব লাকি। আমার মত ডেস্পারেট না হয়েও তোর ওখানে তুই না চাইতেও কেউ হাত দিয়েছে। আর শালা আমি চেয়েও পাই নি।‘

আমি অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ভাবলাম এটা আবার মজার জিনিস নাকি? কেউ কি সেধে চায় এসব? আমি বললাম, ‘তুই কি যাতা বলছিস দিদি? এগুলো আবার কেউ চায় নাকি?’

রিনি যেন উদাস হয়ে বলল, ‘চায় রে অনেকেই চায়। তার মধ্যে আমি একজন। তোর দিকে নজর পরেছিল বলেই তো ও তোর ওখানে হাত দিয়েছিল। আমার ওখানে কেউ হাত দেয় নি তার মানে আমার দিকে কেউ নজর দেয় নি।‘

ওর যুক্তি দেখে আমার হাসি এলো। হেসে বললাম, ‘চিন্তা করছিস কেন? তোর তো বিয়ে হবে। তোর বরকে দিয়ে মনের সুখে হাত দেওয়াস।‘

রিনি তখন উদাস। বলল, ‘ধ্যাত, সেতো ও দেবেই। কিন্তু বিয়ের আগে এইসবের অনুভুতি আলাদা রে।‘ কি ভেবে আবার বলল, ‘আচ্ছা তোর বোঁটায় যখন হাত লাগিয়েছিল ওই ছেলেটা, ধুত্তোর নামটাও মনে থাকছে না। কি যেন বলেছিলি নামটা?’

আমি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলাম, ‘কি রে কতবার তো বললাম। উত্তম উত্তম উত্তম। হোল? ভুলে যাচ্ছিস কেন বারবার?’

রিনি বলল, ‘আরে ছেলেটার উপর আমার রাগ হচ্ছে তাই ওর নাম ভুলে যাচ্ছি।‘

এবারে আমার অবাক হবার পালা। করলো উত্তম আমার সাথে, এদিকে রিনি রেগে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘সেকিরে ওত করলো আমার সাথে। তোর ওর উপর রাগ হচ্ছে কেন?’

রিনি মুখে ঝটকা দিয়ে বলল, ‘কেন ব্যাটা আমার সাথে করতে পারলো না?’

এবারে আমার হাসির পালা। রিনি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘আচ্ছা ও তোর যোনির চুলগুলো ধরে টানছিল?’

আমি জবাব দিলাম, ‘হ্যাঁ।‘

রিনি বলল, ‘ধর যদি তোর কামানো থাকতো তখন?’

আমি বললাম, ‘সে কি করে বলবো? আমার তো কামানো ছিলনা, না।‘

রিনি ব্যাপারটাকে বাস্তবের পর্যায়ে নিয়ে গেল। ও বলল, ‘না আমার কি মনে হয় জানিস? আমার মনে হয় যদি তোর কামানো থাকতো তাহলে তোর পাপড়িগুলো
বা ওই তোর বাদামটা নিয়ে আরও খেলতে পারতো।‘


তার মানে রিনিদিদির পাপড়ি আর বাদামগুটির উপর নজর। রিনি বলল, ‘আচ্ছা, তুই তোর কাপ্রিটা খোল তো একবার।‘

আমি চমকে বললাম, ‘ওমা সেকি কেন?’

রিনি জোর করলো, ‘আরে খোল না। লজ্জা পাচ্ছিস কেন? তোর সামনে তো আমি খুলে দেখালাম।‘

সেটা ঠিক। আমি আর বাক্যব্যয় না করে কাপ্রি টেনে খুলে নামিয়ে দিলাম। রিনিই আমার প্যান্টির সামনেটা টেনে নামিয়ে বলে উঠলো, ‘উরি বাবা, তোর তো একদম কালো জঙ্গল। এতো চুল রেখেছিস কি করে? একটু পাছাটা তোল আরেকটু নামাই।‘

আমি পাছাটা তুলে ধরতে রিনি আরেকটু প্যান্টি নামিয়ে আমার যোনি ভালো করে দেখে বলল, ‘হুমমম, এইজন্য ও তোর পাপড়ি আর বাদাম নিয়ে বেশিক্ষন খেলতে পারেনি।‘

আমি না বুঝে বললাম, ‘কেন?’

রিনি আমার যোনি ভালো করে দেখতে দেখতে বলল, ‘সব তো চুলেই ঢাকা। ওগুলো তো হারিয়ে গেছে জঙ্গলে। খুঁজে কেউ পায়? ও পাবে কি করে? তুই চুল কেটে নে।‘

আমি প্যান্টি আর কাপ্রি ঠিক করে পরে নিলাম। বললাম, ‘ওকে, ভেবে দেখব।‘

রিনি বলল, ‘বিয়ের আগে তো তোকে কাটতেই হবে। তোর বর পছন্দ করবে না চুলওয়ালা যোনি। দেখিস?’

আমি বললাম, ‘ঠিক আছে। বিয়ে হতে দে আগে। তার আগে তোর বিয়ের চিন্তা কর।‘
 
১৩।

মেসোর শিলিগুড়িতে আলিপুরদুয়ারের বাড়ীতে বিয়ে হবে, পৈতৃক বাড়ী বলে কথা। রিনিদিদি ছোটবেলা থেকে আমার মা আর বাবার খুব প্রিয় ছিল তাই ওর বিয়ে আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাসিরা বলেই দিয়েছিলেন যে ৫/৬দিন আগে থেকেই যেন আমরা চলে আসি। ঘরের কোন চিন্তা নেই। রিনির বিয়ে মানে মায়ের মেয়েরই বিয়ে তাই যেন মা হেলাফেলা না করেন ব্যাপারটা। যথাসময়ে আমরা চলে গেলাম রিনিদিদির বাড়ী। রিনি তো আমাকে দেখে খুব খুশি।

ও আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে বলল, ‘উফ পায়েল তোকে দেখে আমি যে কি খুশি হয়েছি। আমি বিশ্বাসই করতে পারি নি তুই এতো তাড়াতাড়ি চলে আসবি। জানিস তো সবাই কাজে ব্যস্ত, দুদণ্ড যে কারো সাথে মন খুলে কথা বলবো, কেউ নেই। চল চল আমার ঘরে চল। কি কি বিয়ের জন্য কিনেছে মা বাবা দেখাবো সব।‘

মা আর বাবা যথারীতি কাজে লেগে গেলেন। আত্মীয়দের মধ্যে এই একটা বাড়ী যেখানে আমরা নিজেদের মত চলতে পারি। ওখানে এটা করিস না ওটা করিস না বলবার কেউ নেই।

আমি রিনির সাথে যেতে যেতে বললাম, ‘এতো তাড়াতাড়ি বলছিস? কলেজে বাবাকে যে কি মিথ্যে বলতে হয়েছে এর জন্য সে আমি জানি। বাবা যখন প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলছিলেন বাবার মিথ্যে বলা দেখে আমি তো অবাক। কি সুন্দরভাবে কোন বহিঃপ্রকাশ না রেখেই বাবা অনর্গল মিথ্যে কথা বলে গেলেন। ছুটি মিলে যাবার পর যখন কলেজের বাইরে বেড়িয়ে এলাম বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি ওনার সামনে কি সুন্দরভাবে মিথ্যে কথাগুলো বলে গেলে। ওয়াহ। বাবা কি বলেছিলেন জানিস, বলেছিলেন আমার রিনির বিয়ে আর আমি মিথ্যে বলবো না ওর জন্য। যত পাপই হোক না কেন।‘

রিনি আমার হাত ধরে ওর ঘরের দিকে নিয়ে যেতে যেতে বলল, ‘আরে মেসোর কথাই আলাদা। আমার মন বলছিল মেসো আর মাসি ঠিক অনেক আগেই এসে পরবে। মন যে ভুল বলে নি তোরা তার প্রমান।‘

দিদির ঘরে ঢুকলাম। ঘর মানে এখন এটা দিদির জন্য রাখা হয়েছে। নাহলে এমনিতে ফাঁকাই পরা থাকে। শুধু এটা কেন বাকি ঘরও ফাঁকাই থাকে। কেউ থাকে না এখানে শুধু একটা কেয়ারটেকার ছাড়া। মেসোর ইচ্ছে নেই এটা বিক্রি করার, কারন মেসো মাঝে মাঝে এসে সবাইকে নিয়ে ছুটি কাটিয়ে যান। আমাদেরও অনেকবার বলেছিলেন মেসো গিয়ে যেন কাটিয়ে আসি। বাবা বা মা কেন যান নি তা জানি না।

আমি রিনির ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বললাম, ‘আরে আমি যে চলে এলাম বাবা মা কোথায় রয়ে গেলেন? দেখলাম না তো ওনাদেরকে।‘

রিনি আমাকে ঘরে ঢুকিয়ে বলল, ‘তোকে এখন আর বাবা মার কথা চিন্তা করতে হবে না। তুই এসেছিস তুই এখন আমার সম্পত্তি। তোকে দেখভাল করার ব্যাপার আমার। তুই এখন পায়ের উপর পা তুলে বস।‘

আমি বিছানায় বসতে বসতে বললাম, ‘তুই আমাকে এখন দেখভাল করবি? ভাট। তোকে তো আমাকে দেখতে হবে। আর দুদিন পরে বিয়ে। ও বলে কিনা আমার দেখভাল করবে।‘

দুজনে হাসছি নিজেদের কথায়। রিনি বলল, ‘দাঁড়া তোকে দেখাই কি কি কেনা হয়েছে আমার বিয়ের জন্য। গয়নাগুলো পরে দেখিস, এখানে রাখেন নি মা। লকারে আছে। বিকেলে দেখলেই হবে। এখন শাড়ি, ব্লাউস এইগুলো দেখ।‘ বলে রিনি আলমারি খুলে সব বার করে আনল একেক করে। সে কত ধরনের শাড়ি, বাপরে বাপ। একেকটার দামী মনে হয় অনেক হবে। বেনারসি, বালুচুরি, জামদানী, সম্বলপুরী কটকি সিল্ক কি নেই। একেকটা করে শাড়ীর ভাঁজ ভাঙছে আর নিজের গায়ে মেলে দেখাচ্ছে আমাকে। বলছে, ‘এই দেখ কেমন লাগছে বলতো?’

আমার তো আবার ওই শাড়ি মারি পরার অভ্যেস নেই আর খুব একটা পরিও না। যা পরি গোটা কতক সিল্কের শাড়ি আছে তাই। আর খুব একটা নেশাও নেই আমার শাড়ীর প্রতি। কি যে ওতবড় একটা কাপরকে কায়দা করে পরতে হয়, পরার সময় এমন এলার্জি লাগে যে কি বলবো। কিন্তু রিনিকে তো আর এইসব বলা যাবে না। ভাববে আমার নাক উঁচু। তাই খুব একটা না বুঝলেও মাথা নাড়াতে লাগলাম ভালো ভালো বলে।

সব কিছু দেখানোর পর চটি দেখলাম। এটা আমার পছন্দের। খুব ভালো লাগছিল রিনির ফর্সা পায়ে। আবার পায়ের পাতায় আলতা লাগিয়েছে। দারুন খোলতাই হয়েছে দেখতে। আনন্দে বললাম, ‘দিদি কি দারুন লাগছে তোর পাটা। জামাইবাবু তো একদম চেটে পুটে খাবে তোর পা।‘

রিনি আবার সব গুছিয়ে আলমারিতে তুলতে তুলতে বলল, ‘আমার পা চেটে খাবে কেন? আমার দু পায়ের মাঝখানটা কি করতে আছে?’

আমি লজ্জা পেলাম ওর সোজাসুজি এই কথায়। আমি মাথা নিচু করে বললাম, ‘যাহ্*, তোর লজ্জা করলো না এইভাবে বলতে?’

রিনি কাছে এসে আমার গাল টিপে বলল, ‘ও বাবা কি লজ্জা আমার নেকুর। যেন কোনদিন চাটাবে না ওর বরকে দিয়ে। তখন দেখব কি করিস আর কত লজ্জা পাস। ও হ্যাঁ, লোমগুলো কেটেছিস?’

সেই এক কথা রিনির। আমি বললাম, ‘আরে তোকে তো বলেছি যেদিন ভালো লাগবে না সেদিন কেটে দেবো। এখন কেন চিন্তা করছিস?’
রিনি সব গুছিয়ে চাবি দিয়ে আলমারি বন্ধ করে বিছানায় বসে বলল, ‘তোর আর কি? কেউ আবার ওই জঙ্গলে হাত দেবে তার জন্যই তো তুই কাটছিস না। সত্যি কিনা বল?’

আমি বললাম, ‘যাতো, আমি জানি না।‘

রিনি ফিসফিস করে বলল, ‘তুই আর আমি তো এইঘরে থাকবো, বল তো আমি শেভ করে দিতে পারি। আমার কাছে ইলেকট্রিক রেজার আছে। করবি?’
আমি আপত্তি জানিয়ে বললাম, ‘কোন দরকার নেই। তোর বিয়ে তার চিন্তা কর এখন।‘

আমরা গল্প করতে লাগলাম। এই করে একদিন বিয়ের দিন এসে গেল। সকালবেলা থেকে তোড়জোড় শুরু বিয়ের। দিদি উপোষ করে আছে। শ্বশুরবাড়ি থেকে গায়ে হলুদ আসবে, তত্ত্ব আসবে। আমরা সময় গুনছি কখন আসবে ওইসব। আমি এখন দিদির কাছে নেই। ঘর সাজাচ্ছি, দিদির শ্বশুরবাড়ি থেকে লোকেরা আসবে, তারা থাকবে কোথায়, বসবে কোথায় আমরা সব এইগুলো নিয়ে ব্যস্ত।

একবার ছুটে দিদির কাছে গেলাম। দিদি একটা তাঁতের শাড়ি পরে বসে আছে, গায়ে লাল ব্লাউস। মুখটা উপোষ করার জন্য কেমন যেন শুকিয়ে আছে। দিদি আমাকে দেখে একটু হাসল, বলল, ‘তোরা সব কোথায় রে? সব দেখছি কাজে ভিড়ে আছিস। আমার সাথে কেউ তো একটু কথা বলবে?’

আমি হেসে উত্তর দিলাম, ‘আরে তোর সাথে সারা জীবন যেন কেউ কথা বলে তার জন্যই তো এতো ব্যস্ততা। তুই কি ভাবছিস আমরা সব মজা করছি?’

রিনি মুখ ঝামটা দিয়ে বলল, ‘রাখ তো তোদের ব্যস্ততা। সব জানি। আমাকে ফাঁকি দেবার জন্য তোরা আসছিস না।‘

আমি আরও একটু মজা করলাম, ‘তুই বলতো তোকে একা রেখেছি কেন আমরা?’

রিনি জিজ্ঞেস করলো, ‘কেন?’

আমি বললাম, ‘রাতে বরের সাথে কি কি করবি সেইগুলো একা বসে ভাবতে।‘ বলে আমি দৌড়ে আবার বাইরে চলে গেলাম।

রিনি ডাকতে থাকল, ‘পায়েল, পায়েল। দাঁড়া তোর মজা দেখাচ্ছি।‘

কিন্তু আমাকে আর পায় কে। আমি তো দৌড়ে বেড়িয়ে গেছি। যেতে যেতে শুনলাম উলু ধ্বনি। তারমানে তত্ত্ব এসে গেছে। আমি আবার দৌড়ে রিনির কাছে ফিরে এলাম, বললাম, ‘শোন, তত্ত্ব বোধহয় এসে গেছে। তুই একা বসে থাক আমি দেখে আসছি কি কি এলো। গায়ে হলুদ দিতে হবে না?’

আবার চলে গেলাম বাইরে। রিনির গলা শুনতে পেলাম, ‘ও আসবি না তো? দেখবি তোর বিয়েতে আমি কি করি।‘


১৪।

আমি হাসতে হাসতে গায়ে হলুদের তত্ত্বের জন্য চলে গেলাম। এখন চিৎকার করছে বিয়েতে সব ঠিক হয়ে যাবে। সব ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ উলু দিচ্ছে, কেউ বা শাঁখ বাজাচ্ছে। চিৎকার চেঁচামেচি চারিদিকে। উঁকি মেরে দেখলাম কে কে এসেছে। মাকে দেখালাম হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। মায়ের কাছে যেতেই মা বললেন, ‘কিরে কোথায় ছিলি? সারাক্ষন দেখা নেই তোর।‘

আমি বললাম, ‘আরে আমি তো দিদির কাছে আছি তখন থেকে। ছাড়ে কি আর?’

মা বললেন, ‘হুম। এগুলো সব রাখতে হবে না? নে নে সব হাতে হাতে নে।‘

দেখি এক সুন্দরী ভদ্রমহিলা দাঁড়িয়ে আছেন হাতে তত্ত্বের থালা নিয়ে। আমি হাত বাড়িয়ে থালাটা নিতে যেতেই মহিলাটি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন। মাসি এটা লক্ষ্য করে বললেন, ‘আরে এ হচ্ছে পায়েল, রিনির মাসির মেয়ে। রিনির গলার বন্ধু। এ ছাড়া ওর আর কোন বন্ধু নেই।‘

মহিলাটি আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলেন। দারুন হাসি ওনার। উনি বললেন, ‘আর আমি কে জানো? আমি হচ্ছি তোমার দিদির ননদ, উনি হচ্ছেন ননদাই।‘ যে ভদ্রলোকের দিকে দেখালেন সেই লোকটিও খুব অমায়িক। সবার সাথে হেসে কথা বলছেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমি খুব সুন্দর দেখতে কিন্তু।‘

আমি চাপা স্বরে বললাম, ‘থ্যাঙ্ক ইউ।‘

দিদির ভাবি ননদ আমাকে আরেকটা ছেলের দিকে ইশারা করে বললেন, ‘আর ও হচ্ছে অরিন্দম। তোমার দিদির এক দূর সম্পর্কের দেওর। এই নাও এইগুলো ধরো।‘

আমি থালা নিতে নিতে লক্ষ্য করলাম অরিন্দম মানে দিদির ভাবি দেওর আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে মুখে হাসি এনে। আমি হাসি ফেরত দিয়ে থালা নিয়ে আর সবাই যে দিকে যাচ্ছে সেইদিকে চলে গেলাম। ছেলেটার হাসি মাখা মুখ চোখের সামনে ভেসে রইল। ঘরের ভিতর এসে মনে হোল ছেলেটা বেশ স্মার্ট। গায়ে একটা শেরওয়ানী পরা, চুলগুলো উল্টো করে আঁচড়ানো, ঠোঁটের উপর সুন্দর সরু একটা গোঁফ, মুখের শ্রী বৃদ্ধি করেছে যেটা। চোখগুলো যেন কথা বলছে। মনের মধ্যে লেগে রইল ছেলেটা।

বিয়ের সময় ছেলেটাকে আবার ভালো করে দেখলাম। দেখলাম মানে হঠাৎ করে ও সামনে এসে গেল। আমি সেজেগুজে এধার ওধার দৌড়াদৌড়ি করছি। দেখি সামনে ও। এবারে ভালো করে নজর দিলাম। পেটানো চেহারা, দেখেই মনে হয় রেগুলার ব্যায়াম করে। ফর্সা গায়ের রঙ। নাকটা আগে দেখি নি। এখন দেখলাম। টিকালো নাক। মুখের সাথে দারুন মানিয়েছে।

সামনা সামনি পরে যাওয়াতে বাধ্য হয়েই বললাম, ‘কি হোল একা দাঁড়িয়ে? চা বা কফি কিছু নিয়েছেন?’

অরিন্দম ঠোঁট উল্টে জবাব দিলো, ‘ছেলের বাড়ীর থেকে এসেছি। কেউ কি আর পাত্তা দেয়? নাহ্*, জোটে নি ভাগ্যে।‘

আমি কৃত্রিমতা গলায় ফুটিয়ে বললাম, ‘ওমা সেকি কথা। তাই জন্য মুখ এতো শুকনো লাগছে। চলুন দেখি কোথায় পাওয়া যায় কফি। ছেলের বাড়ীর লোক বলে কথা। আবার কি না কি বদনাম দিয়ে দেবেন।‘

অরিন্দম আমার সাথে যেতে যেতে বলল, ‘সেতো দেবই। বদনাম কি আর করবো না?’

আমি অবাক হবার ভান করে বললাম, ‘বাহরে, এইযে কফি খাওয়াতে নিয়ে যাচ্ছি যে?’

ও হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘শুধু কফি খাওয়ালে চলবে? এই যে তখন থেকে একলা একলা ঘুরছি কেউ নেই একটু গল্প করার মত। আর কাঁহাতক একলা একলা ঘোরা যায়?’

আমার মনে হোল অরিন্দম ঠিক কথা বলেছে। আমিও তো ফালতু ঘুরে বেড়াচ্ছি। তার থেকে ওর সাথেই কথা বলে সময় কাটাই না কেন। দিদিকে পার্লার থেকে এসে সাজাচ্ছে। জানি না কতক্ষনে শেষ হবে শৃঙ্গার পর্ব। তারথেকে এই ভালো। ওর সাথে কিছু সময় কাটানো যাবে।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে রীতিমতো চোখে যৌনতা এনে বললাম, ‘যদি আমার সাথে কথা বললে ভালো লাগে তো আমি এখন ফ্রি।‘

এ কথায় ও কথায় ওর সবকিছু জেনে নিলাম। অরিন্দম এরোনোটিক ইঞ্জিনিয়ার। বাড়ীর এক ছেলে। রিনির বরের অনেক দূর সম্পর্কের আত্মীয়। ছুটিতে এসেছিল। কিন্তু কল আসাতে ছুটি তাড়াতাড়ি কান্সেল করে কালই সকালে চলে যাবে। বাগডোগরা থেকে ফ্লাইট ধরে দিল্লী। অরিন্দমের হাইট প্রায় ৬ ফিট। পাইলট একেই মানায়।

আমরা বেশ কিছুক্ষন ধরে গল্প করছি এমন সময় মাসি এসে ডাক দিলেন, ‘এই পায়েল, তুই কোথায়? তোকে রিনি ডাকছে।‘

আমি ফিসফিস করে বললাম, ‘আপনি এখন একটু একা ঘুরুন। আমি আসছি।‘

অরিন্দম দুম করে আমার হাত ধরে বলল, ‘আসবেন তো?’

আমি আস্তে করে আমার হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললাম, ‘শিওর। আপনি থাকবেন তো?’

অরিন্দম হাতটা তুলে বাই করার মত বলল, ‘এখন আমার এইখানে আপনি ছাড়া আর কে পরিচিত আছে। আমি আছি এইখানে।‘

আমি এগিয়ে গেলাম। হারিয়ে যাবার আগে পিছন ফিরে দেখলাম ও এক দৃষ্টিতে আমার যাবার পথের দিকে চেয়ে রয়েছে। কষ্ট হচ্ছিল আমার ওকে একা ছেড়ে আসার।

দিদির কাছে এসে দেখলাম দিদি তৈরি। এতো সুন্দর রিনিদিদিকে আগে কখনো দেখি নি। আমি হা করে তাকিয়ে রইলাম। রিনির আমার দিকে চোখ পরাতে হেসে বলল, ‘কিরে জাম্বুবানের মত হা করে কি দেখছিস? কোনদিন দেখিস নি নাকি?’

আমি হা মুখেই বললাম, ‘দেখেছি তো আগে। কিন্তু এতো সুন্দর তোকে আগে কখনো দেখি নি। কি দারুন তোকে দেখতে লাগছে তুই জানিস না দিদি।‘

দিদি আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তবু তোর ওই চাঁদপনা মুখটার থেকে ভালো নয়।‘

আমি দিদির গলা জড়িয়ে বললাম, ‘তুই আবার একটু বেশি বাড়িয়ে বলছিস। দারুন লাগছে কিন্তু তোকে।‘

রিনি জিজ্ঞেস করলো, ‘কোথায় ছিলি বলতো? অনেকক্ষণ দেখা নেই তোর?’

আমি অরিন্দমের কথা চেপে গিয়ে বললাম, ‘এইতো প্যান্ডেলে দেখভাল করছিলাম। ভালোই সাজিয়েছে প্যান্ডেলটা।‘

রিনি বলল, ‘ইসস, আমার দেখা হোল না।‘

আমি দিদিকে ছেড়ে দিয়ে বললাম, ‘দেখবি দেখবি, পালাচ্ছে না বাবা প্যান্ডেলটা।‘

বিয়ের পর খেতে যখন বসেছি তখন দেখি আমার উল্টো দিকে আমার সামনে অরিন্দম বসে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে,। ইচ্ছে হচ্ছিল ও আমার পাশে এসে বসুক। কিন্তু সবার সামনে তো আর সেটা বলা যায় না। মাঝে একটু কথা হয়েছে ঠিকই কিন্তু আমি বেশি সময় দিদির কাছে ছিলাম। ওত ওর দিকে নজর দেওয়া হয় নি। খেতে খেতেই আমাদের চোখে চোখে অনেক কথা হোল। ও হাসে আমিও হাসি। আবার চারিপাশ দেখে নিই কেউ দেখছে কিনা।

একসাথে এসে সবাই বসলাম একটা ঘরে। গান বাজনার আসর বসেছে। যে যার মত গান গাইছে। কেউ সুরে কেউ বা বেসুরে। অরিন্দমকে সবাই ধরল গান করতে। ও তো কিছুতেই গান করবে না। আমার দিকে চোখ পরাতে আমি চোখে ইশারা করলাম গান করতে। অরিন্দম গলা ঝেরে গান ধরল মান্না দের গান ‘দীপ ছিল শিখা ছিল’। খুব ভালো গলা ওর। গানটা শেশ হতেই আমার হাতে আমারই অজান্তে তালি বেজে উঠলো। মনে পরতে আমি মুখ নিচু করে দিলাম,
ইসস কি লজ্জা। সবাই কি ভাবছে কে জানে।

একটা সময় আমার হাঁটুতে একটা হাতের ছোঁওয়া পেয়ে দেখলাম অরিন্দম পাশে এসে বসেছে আর ওর একটা হাত আমার হাঁটুর উপর। ভালো লাগছিল ওর স্পর্শ। অন্যদিকে তাকিয়ে দেখলাম কেউ ব্যাপারটা লক্ষ্য করছে কিনা। যে যার নিজেদের নিয়ে মত্ত তখন। গান শেষ। চুটকির আসর বসেছে। শ্লীল, অশ্লীল সব ধরনের চুটকি বলা হচ্ছে। মেয়েরা খুব বেশি। আমার কান, গাল সব লাল হয়ে উঠেছে। শুনে নয়। অরিন্দম পাশে বসে আছে তাই।

একসময় অরিন্দম বলল, ‘আপনি বলবেন না?’

আমি এক আঙ্গুলে শাড়ীর আঁচল জড়াতে জড়াতে বললাম, ‘ধ্যাত অসভ্য।‘

অরিন্দম হা হা করে হেসে উঠলো। কি সুন্দর ওর হাসি। একসময় অশান্ত পরিবেশ শান্ত হয়ে আস্তে লাগলো যত রাত বাড়তে লাগলো। দেখলাম গুটি গুটি একেক জন করে সবাই শুয়ে পরেছে। আমি অরিন্দমকে বললাম, ‘আপনি একটু ঘুমিয়ে নিন। সকালে তো আবার বেড়তে হবে।‘

অরিন্দম আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘না বাবা, সকালে যদি উঠতে না পারি?’

আমি ওর চোখে চোখ রেখে বললাম, ‘আমি তো আছি। আমি উঠিয়ে দেবো। আপনি নিশ্চিন্তে ঘুমান।‘

অরিন্দম জবাব দিল, ‘আমি কি পাষণ্ড নাকি? আমি ঘুমাব আর আপনি জেগে থাকবেন। তাই হয় নাকি? আমি এক কাজ করছি। আপনি ততক্ষন একটু গড়িয়ে
নিন, আমি ছাদের থেকে একটা সিগারেট খেয়ে আসি।‘

আমি বললাম, ‘ধুর, আমারও ঘুম আসছে না। চলুন। আমিও যাই আপনার সাথে। আপনার সিগারেট খাওয়াও হবে, আমার সময় কাটানোও হবে।‘

অরিন্দম উঠতে উঠতে বলল, ‘সেই ভাল, চলুন যাওয়া যাক।‘

সকলের ঘুমের চোখকে ফাঁকি দিয়ে আমরা বেড়িয়ে এলাম ঘর থেকে, পা টিপে টিপে ছাদে চলে গেলাম।
 
১৫।
মাসিদের ছাদ পেল্লায় বড়। সামনে প্যান্ডেলের লাইটগুলো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। আমাদের এই ছাদেও ওর রেশ এসে পরেছে। দুজনে পাশাপাশি হাঁটতে লাগলাম। অরিন্দম হাঁটতে হাঁটতে বলল, ‘বেশ লাগছে না? ছাদটা কিন্তু খুব বড়। আপনার মাসিরা খুব বড়োলোক না?’

আমি সেভাবে তো আর বলতে পারবো না তবে রিনিদিদিদের লাইফ স্টাইল বেশ জাঁকজমকের। মেসো ভালো জায়গায় চাকরি করে, ভালো হবে নাতো কি? আমি শুধু আওয়াজ করলাম, ‘হুম।‘

হাঁটতে হাঁটতে একদম একধারের কিনারায় চলে এলাম। নিচে ঝুঁকে দেখলাম। এইদিকটা বাড়ীর সামনের দিক। গেটের আলো তখনো জ্বলে আছে। অরিন্দমের দিকে তির্যক দৃষ্টি দিয়ে দেখলাম। নিচের থেকে লাইট পরে ওর মুখে কেমন একটা আলো আঁধারী ভাব এনেছে। ভালোই লাগছে। তাহলে আমার মুখটাও তাই লাগছে। কে জানে ভালো লাগছে না খারাপ। তবে এখানে দাঁড়ালে চোখে বড় লাইট পড়ছে। বললাম, ‘চলুন, ওইদিকে যাই। এখানে বড় আলো।‘

অরিন্দম হেসে উঠলো, বলল, ‘কেন অন্ধকারকে খুব ভালবাসেন নাকি?’

আমি হাঁটতে শুরু করলাম ওকে ছাড়াই। আস্তে আস্তে বটে। বললাম, ‘তা কেন? অন্ধকারকে সবাই ভয় পায়। শুধু আমি না। এখানে আলোটা খুব চোখে লাগছে
বলে চলে এলাম। আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে দাঁড়ান না।‘

পিছন থেকে ফোঁস করে একটা আওয়াজ এলো। একটু ভয়েই পিছন ফিরে দেখালাম ও একটা দেশলাই জ্বেলেছে সিগারেট ধরাবে বলে। দেখতে থাকলাম, বেশ স্টাইলে সিগারেটটা ধরালো। তারপর একমুখ ধোঁওয়া ছেড়ে বলল, ‘যদি আলাদাই থাকতে হবে তাহলে দুজনে মিলে এলাম কেন ওপরে?’

আমি অন্ধকারের দিকে চলে গিয়ে ছাদের কার্নিশে পিছন ঠ্যাসান দিয়ে বললাম, ‘আপনাকে চালাক ভেবেছিলাম, কিন্তু আপনি তো একটা বোকা দেখছি। আমি চলে এলাম লাইটের জন্য। আর আপনার লাইট ভালো লাগে। তাহলে আলাদা হবো নাতো কি?’

অরিন্দম এসে পাশে গা ঘেঁসে দাঁড়ালো, বলল, ‘আচ্ছা আমি বোকা বোঝা গেল তাহলে। বেশ বুদ্ধি তো আপনার। অথচ একটুও গর্ব নেই আপনার মধ্যে।‘

ওর বলার ধরন দেখে আমি হেসে ফেললাম। ও আমার হাসি দেখে বলল, ‘হাসি নয়। অ্যাই অ্যাম সিরিয়াস। সত্যি বলছি।‘

আমি বললাম, ‘ঠিক আছে মশাই আমরা এখানে নিশ্চয়ই ঝগড়া করতে আসি নি। আসুন দু চারটে কথা বলা যাক। আমরা তো তাই করতে এসেছি। টাইম পাশ করতে।‘

অরিন্দম দূরে তাকিয়ে বলল, ‘দেখুন পাহারের গায়ে বাতিগুলো। টিপটিপ করে কেমন জ্বলছে। ওই দেখুন আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখুন, অন্ধকার মিশমিশে কালো আকাশে চাঁদ কেমন আলো ছড়িয়ে নিজের রাজত্ব পেতে বসেছে।‘

আমি একটু কৌতুকের গলায় বললাম, ‘এই অন্ধকারে কাব্য বেরোচ্ছে নাকি মন থেকে?’

ততক্ষনে অরিন্দম গুনগুন করে গান শুরু করেছে, “ও চাঁদ সামলে রাখো জ্যোৎস্নাকে, কারো নজর লাগতে পারে......’

গান শেশ হবার পর কিছুক্ষন মনে হোল অরিন্দমের গানের রেশ পাহারের গায়ে প্রতিধ্বনি হচ্ছে। খুব ভালো লাগছিল মুহূর্তটাকে। কিছুক্ষন পর আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কার নজর লাগবে শুনি?’

অরিন্দম আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘চাঁদের কার নজর লাগবে জানি না, কিন্তু’ গলাটা প্রায় ফিসফিস করে বলল, ‘আমার নজর লেগে গেছে এক অনন্য সুন্দরীর উপর।‘

আমি জানি ও কি বলতে চাইছে, তবু না বুঝে বললাম, ‘এই অন্ধকারে আবার কোন সুন্দরীকে খুঁজে পেলেন আপনি?’

অরিন্দমের দৃষ্টি আমার কাছ থেকে সরে যায় নি। ও আমার আরও কাছে এসে কাঁধে হাত রেখে বলল, ‘এই সুন্দরীর। এতে আমি বিদ্ধ হয়েছি।‘

আমি কাঁধের থেকে হাত সরিয়ে নেবার জন্য হাত তুলেছি আর বলেছি, ‘আরে বাপরে। আমার মধ্যে আবার সুন্দরের কি দেখলেন শুনি।‘

যেন কিছু ভেঙ্গে পড়লো এমন আওয়াজ কানে এলো। ওমনি চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে গেল। যেন রাজ্যের ভয় আমার শরীর ঘিরে ধরল। আমি হাত ছাড়িয়ে নেবার বদলে অরিন্দমকে প্রানপনে জড়িয়ে ধরলাম, একদম জাপটে। আমার তখন কোন খেয়াল নেই আমি কি করছি। আমার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। কি বিকট আওয়াজ! এখনো কানে বাজছে ওই আওয়াজের রেশ। অরিন্দম ওর এক হাত দিয়ে আমার পিঠে বেড় দিয়ে রয়েছে আর আরেক হাত দিয়ে আমার মাথায় আস্তে আস্তে ঠুকে যাচ্ছে।

আমার শরীরের থরথরানি একটু কম হলে আমি আস্তে করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম। ওর দিকে তাকাতে আমার লজ্জা করছে। কি ভীতু আমি, কি না কি একটা আওয়াজ হোল ব্যস ওকে জাপটে ধরলাম আমি। এখন কি করি?

অরিন্দম ফিসফিস করে আমার কানে বলল, ‘এখন ভয়টা গেছে?’

আমি অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘কি আওয়াজ হোল বলুন তো?’

ও উত্তর দিলো, ‘ছেড়ে দিন। যেটা হয়ে গেছে ওটা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আমি আপনার কাছে একটা কিছু চাইতে পারি? এই বিশেষ মুহূর্তটাকে ভুলে যেতে দিতে মন করছে না যে।‘

আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কি জিনিস?’

অরিন্দম বলল, ‘আপনার সুন্দর ঠোঁটে একটা চুমু খেতে চাই।‘

আমার কানে যেন কেউ গরম জল ঢেলে দিলো ওর অভিব্যক্তিই ছিল ওই রকম। আমি বলে উঠলাম, ‘এমা তা হয় নাকি?’

অরিন্দম বলল, ‘কেন হয় না পায়েল? এই রাতে শুধু তুমি আর আমি। এই রাতকে সাক্ষি রেখে আমি এখান থেকে অমূল্য কিছু স্মৃতি নিয়ে যেতে চাই যে। আমার মন বলছে তাই।‘

অরিন্দম আমার গালদুটো দুহাতে ধরে আমার মুখ ওর দিকে করে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমি চোখে চোখ রাখতে গিয়েও পারছি না যে। আমি দুর্বল হয়ে যাচ্ছি, মনে হচ্ছে ওই নজর আমাকে সম্মোহিত করে দিয়েছে। আমি কোনরকমে ওর চোখে চোখ রেখে বললাম, ‘এটা পাপ হবে না?’

অরিন্দম বলল, এই প্রথম অরিন্দম আমাকে তুমি সম্বোধন করলো, ‘তুমি মেনে নিলে কোন পাপ নেই। আর পাপের আমরা করছিটা কি। দুজন দুজনকে চুমু খাওয়া যদি পাপ হয় তাহলে তোমার সাথে এই ধরনের পাপ আমি অনেকবার করতে রাজি আছি।‘

আমিও অরিন্দমকে তুমি বলে ফেললাম জানি না মন কেন সায় দিলো, বললাম, ‘কিন্তু সবার থেকে আড়ালে এসে আমার কেমন যেন লাগছে অরিন্দম।‘

অরিন্দম ওর ঠোঁট আমার ঠোঁটের সামনে নিয়ে এসে বলল, ‘প্লিস না কর না। এই মুহূর্তটা আমি হারাতে চাই না। জানি হয়তো আর কোনদিন আমার সাথে তোমার দেখা হবে না, কিন্তু এই মুহূর্তটাকে সম্বল করে আমি বাঁচবো অনেকদিন।‘ ওর ঠোঁট এগিয়ে এলো আমার ঠোঁটের দিকে। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি আমার ঠোঁট কাঁপছে। কিন্তু আমার সারা শরীরে একমন একটা নেশা ছড়িয়ে পরেছে। অরিন্দমের নেশা। ওকে কাছে পাবার নেশা। অরিন্দমের ঠোঁট আমার ঠোঁট স্পর্শ করলো। আমার সারা শরীর কেমন আলগা মনে হতে লাগলো। মনে হতে লাগলো অরিন্দম ছেড়ে দিলেই আমি পরে যাবো। ভয়ে আমি ওকে আবার জড়িয়ে ধরলাম ওর পিঠে বেড় দিয়ে দুহাত দিয়ে।

অরিন্দমের ঠোঁট আমার ঠোঁট দুটো গ্রাস করলো। একেই কি চুম্বন বলে? ওর হাত আমার মাথার পিছনে গিয়ে ওর ঠোঁটে আমার ঠোঁট চেপে ধরে আমার উপরের ঠোঁট ওর ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে চুষতে লাগলো। আমার সারা দেহ কেমন পাগলের মত হতে শুরু করলো। কি একটা উত্তেজনা আমার সারা শরীরে পোকার মত কিলবিল করে যাচ্ছে। ওর জিভ আমার মুখের ভিতর ঢুকতেই আমি আর থাকতে পারলাম না। আমার জিভ দিয়ে ওর জিভের সাথে কাটাকুটি খেলতে লাগলাম। দু ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে ওর জিভ চুষতে লাগলাম। আমার চারিপাশ তখন এক অজ্ঞান অন্ধকার। আমি কি করছি আমার খেয়াল নেই। কিন্তু বুঝতে পারছি অরিন্দমের হাত আমার পিঠে খেলে বেড়াচ্ছে। একবার উপরে একবার নিচে।

আমার দুপায়ের মাঝে কেমন একটা অস্বস্তি। আমি প্রানপনে থাইয়ের সাথে থাই চেপে ধরতে বুঝলাম আমি ভিজে এসেছি। আমার হাত চলে গেল অরিন্দমের মাথার পিছনে। ওকে টেনে আরও জোর করে ধরে রাখলাম আমার ঠোঁটের সাথে। ওর মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে আমার জিভ দিয়ে খুঁজতে লাগলাম ওর অতলান্ত। অরিন্দম আমার জিভ নিয়ে খেলতে লাগলো, দাঁতে করে চেপে ধরে রাখল আমার জিভ।



১৬।

নিঃশ্বাস যখন প্রায় বন্ধ হয়ে এসেছে, দুজনে দুজনকে ছাড়িয়ে একে অপরের দিকে তাকিয়ে রইলাম। এক লহমা, তারপরেই শরীর অনুভব করলো আরেকটা শরীরের ছোঁওয়া। ঝাঁপিয়ে পড়লাম ওর উপর আবার চেপে ধরে ওর মুখ টেনে চুমু খেতে লাগলাম পাগলের মত। অরিন্দম আমার কানের লতিতে চুমু খেয়ে আলতো করে কানের লতি মুখে নিয়ে চুষতে লাগলো। আমার সারা শরীরে শত শত পিঁপড়ে যেন ঘুরে বেড়াচ্ছে।

খেয়াল করতে পারি নি ওর হাত কখন আমার স্তনের উপর এসে বসে আছে। ও চুমু খাওয়া শেশ করে বলল, ‘পায়েল, একবার শুধু একবার তোমাকে দেখব।‘

আমি আমার পায়ের আঙ্গুলের উপর দাঁড়িয়ে ওর মাথা আমার গলায় টেনে জিজ্ঞেস করলাম, এইতো দেখছ। আবার কি দেখবে?’

ও ফিসফিস করে নেশা ধরানো গলায় বলল, ‘তোমার স্তন একবার দেখব আমি।‘

আমি না করতে পারলাম না। জানতাম আমি পারবোও না। ও আমাকে সম্মোহিত করে দিয়েছে। আমি বললাম, ‘কেউ এসে পরলে?’

ও আমাকে সাহস দিল, ‘কেউ আসবে না। পৃথিবীর আদিম খেলাকে নষ্ট করতে কেউ আসবে না। আমাদের এই খেলার সাক্ষী শুধু ওই চাঁদ, ওই তারারা আর এই অন্ধকার। প্লিস একটু দেখতে দাও।‘

আমি সমর্পণ করে দিয়েছি ওর কাছে নিজেকে। আর ধরে রাখবো কি করে। আমি বুঝতে পারছি ও আমার ব্লাউসে থেকে আঁচলের পিন খুলে সাবধানে আঁচল নামিয়ে দিল। ব্লাউসের উপর দিয়ে ও ওর মুখ আমার স্তনে কুমারী স্তনে চেপে ধরল। আমি আমার বুক ওর মুখে চেপে ধরে ওর চুল আঁকড়ে ধরলাম। ব্লাউসের উপর দিয়ে ও একবার এই স্তন একবার অন্যটায় মুখ রাখছে। অনুভব করলাম ওর হাত কেমন পারদর্শিতায় আমার ব্লাউসের হুকগুলো খুলতে শুরু করেছে।

আমি ওকে ছেড়ে আমার হাত দিয়ে কার্নিশ ধরে নিজেকে সাপোর্ট দিলাম যাতে পরে না যাই। হাঁটু দুটো কি অস্বাভাবিকভাবে কাঁপছে আমার। ব্লাউসের হুক খুলে ও সরিয়ে দিলো আমার বুকের থেকে। পিছনে হাত নিয়ে গিয়ে আমার ব্রায়ের হুক খুলতে চেষ্টা করতে লাগলো। এই প্রথম ও কারো ব্রায়ের হুক খুলছে। কারন ও ঠিক খুজেই পাচ্ছিল না ব্রায়ের হুক। অনেকক্ষণ পর খুঁজে পেলেও আলগা করতে ওর আরও কিছু সময় লেগে গেল। কিন্তু ওর মুখ সেই সময় ছুঁয়ে যাচ্ছিল কখন আমার চোখ, আমার ঠোঁট, আমার চিবুক, গলা।

একসময় অনুভব করলাম আমার স্তন ঢিলে হয়ে গেল টাইট অবস্থা থেকে। অরিন্দম তাহলে হুক খুলে ফেলেছে। ও নিচের থেকে ব্রা তুলে উপরে উঠিয়ে দিল। আমি নগ্ন স্তন নিয়ে অরিন্দমের সামনে দাঁড়িয়ে। আমার হাত পিছনে কার্নিশের উপর। শরীর প্রায় ধনুকের মত বেঁকে রয়েছে।

অরিন্দমের মুখ দিয়ে একটা গভীর নিঃশ্বাস বেড়িয়ে এলো, বেড়িয়ে এলো সেই সাথে দুটো কথা, ‘হাউ বিউটিফুল। উফফ ভগবান, তুমি আমাকে স্বর্গের দ্বারে পাঠিয়ে দিয়েছ।‘

ওর হাত সাপের মত উঠে আমার দু স্তনের উপর এসে বসল। আস্তে করে চাপ দিয়ে বলল, ‘আমি ভাবতেই পারছি না আমার এই প্রাপ্তিকে। পায়েল তোমার থেকে স্বর্গের অপ্সরীরা সুন্দর হতে পারে না।‘

আমি দাঁতে দাঁত চেপে বললাম, ‘তুমি দেখেছ তাদের?’

অরিন্দম হিসহিস করে বলল, ‘অপ্সরী দেখি নি কিন্তু আজ জীবনের সবচেয়ে সুন্দর নারীকে দেখছি। আজ আমার জীবন সার্থক হয়ে গেল পায়েল।‘ বলে ওর মুখ চেপে ধরল আমার স্তনের খাঁজে। ওর গরম নিঃশ্বাস আমার স্তনের উপর অনুভব করতে করতে ভাবলাম পৃথিবীর সব কিছু কি এতোটাই ভালো?

ওর ঠোঁট আমার একটা স্তনবৃন্ত ভিতরে নিতেই আমি মৃদু একটা শীৎকার দিয়ে আমার স্তন ওর মুখে চেপে ধরলাম। আমার হাত ওর মাথার পিছনে গিয়ে আমার স্তনে চাপ আরও বাড়িয়ে দিলো। ওর জিভ বুঝতে পারলাম আমার বৃন্তের উপর ঘুরছে। একবার এইটা, পরের মুহূর্তে অন্যটায়। আমি সুখের আঘাতে বারবার মূর্ছা যেতে লাগলাম।

একহাত দিয়ে অরিন্দম যখন একটা স্তনকে পীড়ন করছে তখন ওর মুখ আরেকটা স্তনের বৃন্ত চুষে যাচ্ছে। একেকটা মুহূর্ত অবিস্মরণীয় হয়ে পুঞ্জীভূত হচ্ছে আমার দুপায়ের মাঝখানে। এখানে যেন ও হাত না দেয়। আমি এতোটাই ভিজে গেছি, লজ্জায় আমি মরে যাবো ও যদি এটা বুঝতে পারে। ভগবানের কাছে এই প্রার্থনা করে যাচ্ছি আমি অহরহ।

অরিন্দম আরও কিছুক্ষন আমার স্তনের সাথে খেলা করে আমাকে আবার জড়িয়ে ধরল আঁকড়ে। আমার নগ্ন স্তন ওর শেরওয়ানীর উপর চেপে বসে আছে। অনেকক্ষণ আমরা এইভাবে নিজেদেরকে জড়িয়ে থাকলাম। হুশ এলো দূরে কোথাও ঘণ্টা ঘোষণা করছে সকাল পাঁচটার। দুজনেই দুজনের থেকে আলাদা হয়ে গেলাম। দুরের অন্ধকারকে ভাঙতে শুরু করেছে ভোরের প্রকাশ।

অরিন্দমের মাথার চুল ঠিক করে দিতে দিতে বললাম, ‘এই তোমার বেড়তে দেরি হয়ে যাবে। ওই দেখ পাঁচটার ঘণ্টা বাজল।‘

অরিন্দম দূরে তাকিয়ে বলল, ‘ইসস মুহূর্ত যদি এখন নিশ্চল হয়ে যেত কি ভালো হতো।‘

আমি ব্রা টেনে স্তনগুলোকে কাপের মধ্যে ভরে ওর দিকে পিছন ফিরে বললাম, ‘মশাই খুললেন তো ঠিক, এবারে একটু লাগিয়ে দিন।‘

অরিন্দম ব্রায়ের হুক এইবারে একবারে লাগিয়ে দিল। পিছন ফেরা অবস্থায় আমি ব্লাউস ঠিক করে নিলাম হুক লাগিয়ে। আঁচলকে আবার ঠিক জায়গায় রেখে ঘুরে দাঁড়ালাম ওর দিকে মুখ করে। দেখি ও আমার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। আমি হেসে বললাম, ‘কি হোল, বাবুর যাবার ইচ্ছে নেই নাকি?’

অরিন্দম আমার চুল ঠিক করতে করতে বলল, ‘কাশ, অগর তুমহারি বাত সচ হোতি।‘

ফিরে যেতে শুরু করলাম নামার দরজার দিকে। দরজার সামনে এসে অরিন্দম আবার আমাকে জড়িয়ে ধরে গভীর ভাবে আমার ঠোঁটে চুমু খেয়ে বলল, ‘আমি ভুলবো এই রাত। এটা আমার জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ রাত হয়ে থাকবে আমার মনের এক কোনায়।‘

আমি ওর পিঠে ঠেলা দিয়ে বললাম, ‘আরে আবার কাব্যিক হতে হবে না। তোমার দেরি হয়ে যাবে কিন্তু ফ্লাইট ধরতে। তাড়াতাড়ি করো।‘

দুজনে মিলে নিচে নেমে এলাম। সবাই তখন নিদ্রা জগতে। দুটো প্রানি আজ রাতে আদম আর ইভ হয়ে উঠেছিলো সে খবর বোধহয় কেউ জানবে না। শুধু যারা হয়েছিল তারা ছাড়া। ওয়েট করতে লাগলাম অরিন্দম ব্যাগ গুছিয়ে নেবার জন্য। একসময় ওর ব্যাগ গুছানো হয়ে গেলে ব্যাগ নিয়ে ও বেড়িয়ে এলো। আমরা দুজন চলে এলাম গেটের সামনে।

গেট খুলে অরিন্দম এগিয়ে গিয়ে আবার ফিরে এলো। আমার হাত ধরে বলল, ‘ধন্যবাদ পায়েল এক স্মৃতি মুখরিত রাত উপহার দেবার জন্য।‘

আমি হেসে ওর গালে টোকা মেরে বললাম, ‘তোমার কিন্তু দেরি হয়ে যাচ্ছে।‘

ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম যতক্ষণ ওকে দেখা যায়। রাস্তা বেশ কিছুদুরে একটা বাঁক নিয়েছে। সেই বাঁকে অরিন্দম চরিত্র একসময় হারিয়ে গেল। আমি শিশির ভেজা ঘাসে পায়ের পাতা ভেজাতে ভেজাতে আসতে লাগলাম আমাদের ঘরের দিকে। বুকে কি আমার চিনচিন করছে কিছু? নাহ, আমি তো অনুভব করছি না।
 
১৭।
তখন কলেজে আমার ১ম বছর চলছে। সাইন্স নিয়ে পড়ছি, ফিজিক্সে অনার্স। বেশ কেটে যেত কলেজের দিনগুলো বন্ধুবান্ধবের সাথে গেঁজিয়ে, আড্ডা মেরে। সুন্দর তো ছিলামই, তাই সবার চোখের মণি ছিলাম আমি। যেকোনো ব্যাপারে আমাকে না জিজ্ঞেস করে বন্ধুরা কোন ডিসিশন নিতো না। আমিও এই অ্যাটেনশন খুব উপভোগ করতাম। মেয়েরাই ছিল আমার বেশি বন্ধু আর হবারই কথা কারন আমাদের কলেজ ছিল শুধু মেয়েদের।

পথ চলতে চলতে দু একটা যে মন্তব্য শুনতাম না তা নয়। ছুটির সময় কলেজের বাইরে ছেলেরা ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকতো। আমার যেন মনে হতো আমাদের গ্রুপটার দিকেই ওদের নজর ছিল বেশি।

আমরা হি হি হাসি আর অনর্গল কথা বলতে বলতে পথ চলতাম বেশ কিছুটা দূর। তারপর গিয়ে যে যার মত বাস ধরে বাড়ীর দিকে রওনা দিতাম। আমার সাথে তিন চারটে বন্ধু একসাথে বাসে আসতো। ওরা থাকতো আমার পাড়া থেকে একটু দূরে।

একদিন এইভাবে কথা আর হাসতে হাসতে আমরা আসছি। হঠাৎ একটা ছেলের মন্তব্য কানে ভেসে এলো। একগুচ্ছ ছেলে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিল আমাদের যাওয়ার পথে। ওদেরই মধ্যে কেউ একজন কথাটা বলেছিল। বলেছিল আরেকজনকে, ‘হ্যাঁরে বলতে পারিস মেয়েরা এতো বেশি কথা বলে আর হাসে কি করে?’

যে বলেছিল তাকে দেখিনি আর যাকে বলেছিল তাকেও দেখিনি। কিন্তু তার উত্তর কানে এসেছিল। সে উত্তর দিয়েছিল, ‘ এটা জানিস না, ওদের দুটো মুখ আছে বলে ওরা বেশি কথা বলে, বেশি হাসে।‘

আমাদের লজ্জায় মুখ লাল হয়েগেছিল। বুঝেছিলাম দুটো মুখ বলতে ছেলেটা কি বুঝিয়েছিল। কোন উত্তর দেওয়া সম্ভব হয় নি। ছেলেগুলো হাসছিল কেমন উন্মত্তের মত। আমরা কোনরকমে পার হয়ে এসেছিলাম ওদের। অনেকক্ষণ কোন কথা বলতে পারি নি। অনেকটা পথ চলে আসার পর আমি বলেছিলাম, ‘ইসস, দেখলি কি অসভ্য ছেলেগুলো? কি ভাবে বলল কথাটা?’

অনিমা বলে একজন বলল, ‘কিন্তু আমরা কোন উত্তর দিতে পারলাম না। কি কাণ্ড বলতো?’

আমি জবাব দিলাম, ‘পায়েলকে বলেছে। এতো সহজে পার পেয়ে যাবে ভেবেছিস? ঠিক জবাব দেবো।‘

আরেকজন শিল্পা বলল, ‘কিন্তু কি বলবি বল না?’

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘কি বলছিস কি বলবি? বললে তো তখনই বলে দিতে পারতাম। একটু ভাবতে দে।‘

চলে এলাম ঘরে। কিন্তু সারাক্ষন মনটা খুচখুচ করতে লাগলো জবাব দিতে পারি নি বলে। কি বলবো, কি জবাব দেবো এই করতে করতে আবার কলেজে এলাম। সবাই মিলে হা হা করে ঘিরে ধরল কাল যারা যারা ছিল। অনিমা বলল, ‘হ্যাঁরে কিছু জবাব দেবার মত পেয়েছিস?’

আমি না বলতে পারলাম না। ওরা আমাকে ভীষণ বিশ্বাস করে। আমি হেরে যেতে পারি এটা ওরা কোনদিন ভাবতে পারে না। তাই ‘না কোন জবাব খুঁজে পাই নি’ এটা বলতে সঙ্কোচ হোল বলতে। আমি মুখ টিপে একটু হাসলাম। এতেই ওরা খুশি। ওরা জেনে গেল যে জবাব তৈরি।

বিকেলে ক্লাস শেষে আমরা বেড়িয়ে এলাম বাইরে। আমার বুকটা ধুকধুক করছে কি উত্তর করবো ছেলেগুলোকে। শান্ত হলাম যখন দেখলাম ছেলেদের ভিড়টা আজ আর নেই। যাক বাবা, খুব বেঁচে গেছি। ভাগ্যিস ওরা নেই। থাকলে খুব মুশকিলে পরতে হতো।

আমরা হাঁটছি, আজ আর আমাদের মধ্যে ওই হাসি আর গরগর করে কথা নেই। একটু চুপচাপই আমরা। বলা যায় না আবার কি কমেন্ট আসে। যদিও আজ ছেলেদের গ্যাঙটা নেই দাঁড়িয়ে। আমরা চলতে চলতে আমাদের পাশ দিয়ে দুটো ছেলে হনহন করে হেঁটে পার হয়ে যেতেই শিল্পা বলে উঠলো ফিসফিস করে, ‘ওই দ্যাখ ওই দুটো ছেলে যাচ্ছে। ওরাই কাল কমেন্ট দিয়েছিল।‘

আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘আর ইউ শিওর যে ওরাই বলেছিল?’

শিল্পা বলল, ‘হান্ড্রেড পারশেন্ট শিওর ওরাই।‘

আমি বললাম, ‘চল একটু তাড়াতাড়ি হাঁটি।‘ বলে হাঁটতে লাগলাম তাড়াতাড়ি। মেয়েগুলো আমার সাথে জোরে হাঁটতে লাগলো। একটু পরেই ওদের ধরে ফেললাম মানে ছেলেগুলোকে। আমার জবাব পেয়ে গেছি। ওদের ঠিক পিছনে এসে পথচারীদের কান বাঁচিয়ে অথচ ছেলেগুলো শুনতে পায় এমন জোরে বললাম, ‘হ্যাঁরে, তোরা বলতে পারিস ছেলেরা এতো জোরে হাঁটে কি করে?’

অনিমা উত্তর দিল, ‘নারে, কেন বলতো?’

আমি ওদের মানে ছেলেদের শুনিয়ে বললাম, ‘ওদের তিনটে পা আছে বলে।‘

ছেলেগুলো কেটে গেল পাশের একটা গলিতে। শিল্পা উল্লসিত হয়ে আমাকে চকাম করে একটা চুমু খেয়ে বলল, ‘সত্যি গুরু, তোমার জবাব নেই। কি উত্তর।‘ সবাই মিলে হাসতে হাসতে বাস স্ট্যান্ডে এসে দাঁড়ালাম। মনের থেকে একটা বোঝ নেমে গেল যুতসই জবাব দিতে পেরেছি বলে। ছেলেগুলো পরে আর ডিস্টার্ব করতো না।

আমরা সবাই ঠিক করলাম শান্তিনিকেতন ট্যুরে যাবো। প্রায় পঁচিশ জনের মত। প্রফেসরকে বললাম, উনি অনুমতি দিলেন। একজনকে আমাদের তোলা টাকা রাখতে দিলাম। আমি লিডার। এটা বলাবাহুল্য। আমি না হতে চাইলেও কেউ শুনত না। তাই আমার নাম ওঠাতে আর তর্ক করি নি। শান্তিনিকেতনে এসে শুনলাম ডরমিটরিতে মাত্র ২২ জন থাকতে পারবে। বাকি তিনজনকে একটা ৪বেডের রুমে থাকতে হবে।

যেহেতু আমি লিডার সুতরাং বাকি সবাই বলল, ‘পায়েল তুই অনিমা আর শিল্পা ওই রুমে থাক। আমরা সবাই ডরমিটরিতে থাকবো।‘

না না করেও কেউ শুনল না। একসাথে থাকার মজাই আলাদা। হুল্লোড় করে সময় কখন কেটে যাবে কেউ জানতেও পারবো না। সেটা মিস হবে শিওর। আমি অনেক চেষ্টা করলাম অন্য তিনজনকে ওই ঘরে পাঠাবার জন্য। কিন্তু কেউ শুনতেই চাইল না। বাধ্য হয়ে আমি শিল্পা আর অনিমা তিনজনে নিজেদের ব্যাগ ওইঘরে ঢোকাতে বাধ্য হলাম। বিকেলে সবাই মিলে শান্তিনিকেতনের সামনে ঘুরছি। খেয়াল করি নি মাটির উপর করে রাখা একটা গর্তকে। পরবি তো পর আমারই পা ওই গর্তে পরে মচকে গেল। কি দারুন ব্যাথা! সবাই মিলে মালিশ করাতেও ব্যাথা গেল না।

কোনরকমে রাত কাটিয়ে সকালে যখন ঘুম ভাঙল তখন পা নাড়িয়ে বুঝতে পারলাম ব্যাথা তখনো আছে। মাটিতে পা ফেলতে গিয়ে দেখলাম চাপ দিলেই লাগছে। ভয় হতে লাগলো যে সবার সাথে বেড়তে পারবো কিনা। কাউকে কিছু বলি নি। কোনরকমে স্নান সেরে কাপড় জামা পরে নিলাম। মধ্যে শিল্পা একবার জিজ্ঞেস করলো, ‘কিরে পায়ের ব্যাথা কেমন আছে?’

আমি মুখে কনফিডেন্স দেখিয়ে বললাম, ‘না না, আমি ঠিক আছি।‘

ও আবার জিজ্ঞেস করলো, ‘আমাদের সাথে যেতে পারবি তো?’

আমি আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে বললাম, ‘কেন নয়? এই দ্যাখ আমি কেমন ফিট।‘ বলে একটু তাড়াতাড়ি হাঁটতে গিয়ে আবার চোট লাগিয়ে ফেললাম। পাটা ধরে বসে পড়লাম আমি। নাহ্*, পা আমাকে যেতে দেবে না দেখছি।

শিল্পা দৌড়ে এসে আমাকে ধরে বিছানায় বসিয়ে দিল। বলল, ‘তুই কি রে। অনর্থক রিক্স নিচ্ছিলি। যদি বেড়ে যায় তো এখান থেকে যেতেই পারবি না।‘

আমি পায়ে হাত বুলতে বুলতে বললাম, ‘তোরা সব একসাথে আনন্দ করবি আর আমি বসে থাকবো? তা হয় নাকি?’

শিল্পা জবাব দিলো, ‘আরে আজ তুই সুস্থ হয়ে উঠলে কাল আবার বেড়তে পারবি। আর আজ যদি ব্যাথা বেড়ে যায় তাহলে তোর তো ট্যুরের আনন্দই বেকার হয়ে যাবে। একদিনের জন্য নিজেকে সামলাতে পারছিস না? ঠিক আছে তাহলে। তোর সাথে আমিও থেকে যাচ্ছি। তাহলে তো হোল?’

আমি কিছু বলার আগেই সবাই হইহই করে ঘরে চলে এলো। একসাথে সবাই বলতে লাগলো, ‘চল চল, আমরা তৈরি। বেড়িয়ে পরি চল।‘

শিল্পা ধমক দিয়ে বলল, ‘তোরা একটু থামবি, চুপ করবি? পায়েলের পায়ে চোট, তারদিকে তোদের কোন নজর নেই। সবাই আছিস নিজের আনন্দে।‘

সবাই এক লহমায় চুপ করে গেল। অনিমা এগিয়ে এসে বলল, ‘কিরে সকালেই তো তোকে দেখলাম দিব্যি হাঁটছিস। কি হোল আবার?’

শিল্পা জবাব দিলো, ‘ও হাঁটছিল আমাদের দেখানোর জন্য। ওর ব্যথা ওই একইরকম আছে।‘

আমি বললাম, ‘তোরা যা ঘুরে আয়, আনন্দ করে আয়। আমি আজ একটু রেস্ট নিই কাল একসাথে বেরবো।‘

শিল্পা জিদ করতে লাগলো আমার সাথে থাকবার জন্য। ও আমাকে একা ছেড়ে দিতে চায় না। আমি জোর করে ওকে গ্রুপের সাথে পাঠালাম। আমার জন্য একজনের আনন্দ নষ্ট হবে তা কি আমি হতে দিতে পারি।



১৮।

ওখানকার কেয়ারটেকার একজন বয়স্ক মানুষ। সুধীর কাকু। বয়স প্রায় ৫৫/৫৬ হবে। ওনাকে ডেকে অনিমা বলল, ‘কাকু, পায়েলের কাল পা মচকে গেছে। এখনো ব্যথা আছে। আপনি একটু নজর রাখবেন ওর উপর? ওর যাতে কোন অসুবিধে না হয়?’

সুধীর কাকু আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আরে একি কথা মা? আমি নজর রাখবো না তো কে রাখবে? তোমরা নিশ্চিন্তে ঘুরে এসো। আমি খেয়াল রাখবো।‘

সন্তুষ্ট হয়ে সবাই চলে গেল। সারা জায়গাটা কেমন নিশ্তব্দতায় ভরে গেল। হঠাৎ করে পাখির গুঞ্জন থেমে গেলে যেমন হয়। সুধীর কাকু ওদের ছেড়ে এসে আবার আমার ঘরে এলেন। জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি করে হোল মা পায়ে ব্যথা?’

আমি বললাম, ‘কাল গর্তে পা পরে মচকে গেছে। সারেনি ব্যথাটা।‘

কাকু উত্তর দিলেন, ‘দাঁড়াও, এখানে একটা ভালো ডাক্তার আছে। তাকে ডেকে নিয়ে আসি। আজই তোমার ব্যথা সারিয়ে দেবেন। কাল তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যেতে পারবে।‘

প্রায় আধঘণ্টা পরে কাকু একজন ডাক্তার নিয়ে ঢুকলেন। উনি আমার পা টিপে ভালো করে দেখে বললেন, ‘চিন্তার কোন কারন নেই। পেশির ব্যথা। আমি ওষুধ লিখে দিচ্ছি। খাইয়ে দেবেন। আর পারলে একটু রসুন তেল দিয়ে মালিশ করলে আরও তাড়াতাড়ি উপকার পাবে।‘

সুধীর কাকু আমাকে ওষুধ খাইয়ে বললেন, ‘মা, আমি একটু বাইরে যাচ্ছি। ফিরতে প্রায় তিন চার ঘণ্টা লাগবে। বাইরে অনুজ রইল। ওকে বলে দিলাম থেকে থেকে যেন তোমার খোঁজ নেয়। আর তোমার নাস্তা ও এনে দেবে বলে দিয়েছি। পারবে তো মা একটু একা থাকতে?’

আমি বললাম, ‘আপনার কোন চিন্তা নেই কাকু। আপনি নিশ্চিন্তে যান। অনুজ তো রইল। দরকার পরলে আমি ডেকে নেব।‘

কাকু বেড়িয়ে গেলেন। আমি দেখলাম আর শাড়ি পরে রেখে কি হবে। খুলেই নিই। যখন বেরতেই পারবো না। কোনরকমে উঠে দরজা বন্ধ করে শাড়ি শায়া খুলে ভাঁজ করে রেখে দিলাম। গায়ে চরিয়ে নিলাম একটা নাইটি। নিচে ব্রা আর প্যান্টি রইল। আবার এসে শুয়ে পড়লাম দরজাটা খুলে একটু ভেজিয়ে দিয়ে। কি যেন নাম ছেলেটার হ্যাঁ, অনুজ আবার দেখতে আসতে পারে। আমার কপালে ভাঁজ পড়লো, কাল থেকে এই অনুজকে তো দেখি নি। হঠাৎ এ আবার কে উদয় হোল। কাকু বলে গেছে, ওনারই চেনাজানা কেউ হবে হয়তো। নাহলে ওর উপর সমস্ত কিছু ছেড়ে যাবে কেন? কিন্তু দেখলাম না কেন, ছিল না? হয়তো ছিল, কাল সবার সাথে আনন্দ করতে গিয়ে আর খেয়াল করি নি।

পেটটা কেমন খালি খালি লাগছে। খিদে পেয়েছে। সকাল থেকে এক কাপ চা ছাড়া আর কিছু পেটে যায় নি। বাকি সবাই খেয়ে দেয়ে বেড়িয়েছে নিশ্চয়ই। আমি ডাকতে যাবো অনুজকে, দরজায় আওয়াজ পেলাম খটখট। আমি দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলাম একটা ছেলে হাফ প্যান্ট আর গায়ে একটা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে দাঁড়িয়ে আছে।

আমার চোখ ওর দিকে পরতেই ছেলেটা বলল, ‘আসবো দিদিমনি?’

আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। ও চাপা পায়ে ভিতরে ঢুকল। বয়স আমারই মত হবে কিংবা আমার থেকে হয়তো ছোট। সারা মুখটায় একটা সরলতা ছড়িয়ে আছে। গোঁফের রেখা ঠোঁটের উপর খুব মিহি। নেই বললেই চলে। হাত পাগুলো খুব একটা পেশি বহুল নয়। পাতলা বলাই ভালো। সামনে এসে হাত দুটো জড়ো করে দাঁড়িয়ে রইল।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘তুমি কি কিছু বলতে এসেছ?’

অনুজ বলল, ‘হ্যাঁ দিদিমনি। আপনি কি এখন নাস্তা করবেন?’

আবার খিদেটা পেটে যেন ছোবল মারল। আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, খুব খিদে পেয়েছে।‘

ছেলেটা ঘুরে গিয়ে বলল, ‘এক্ষুনি নিয়ে আসছি আমি।‘

আমি ওকে দাঁড় করালাম, বললাম, ‘এই শোন, তোমার নামটা কি বেশ?’

ছেলেটা জড়তার সাথে জবাব দিলো, ‘আজ্ঞে, অনুজ। সবাই আমাকে অনুজ বলে।‘

আমি আর কিছু না বলে বললাম, ‘ঠিক আছে, নিয়ে এসো নাস্তা। কি আছে নাস্তায়?’

ছেলেটা হাত কচলিয়ে বলল, ‘আজ্ঞে দিদিমনি, আলুর পরোটা আর সাথে আঁচার আর দই। খাবেন তো?’

মুখের ভিতর জিভটা আলুর পরোটার নাম শুনেই সিক্ত হয়ে উঠলো। বলে ফেললাম, ‘যাও, প্লিস তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো।‘

কিছুক্ষন পর অনুজ নাস্তা নিয়ে এলো। এধার ওধার দেখতে লাগলো কোথায় রাখবে হাতের সবকিছু। আমি বিছানার উপর দেখিয়ে বললাম, ‘এইখানে দাও। এইখানেই খেয়ে নেব আমি। কোন অসুবিধে নেই তো?’

অনুজ একটু হেসে বলল, ‘না আমার কোন অসুবিধে নেই। আপনি খেতে পারেন বিছানায়।‘ খুব মিষ্টি হাসি অনুজের, আমার ভালো লাগলো।

আমি উঠে বসতে অনুজ আমার কোলের সামনে থালা সাথে আঁচার আর দইয়ের বাটি রাখল। অন্য হাতে ধরা জ্বলে গ্লাস একটু দূরে ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখে দিলো। ও বেড়িয়ে যাচ্ছিল আমি ডাকলাম, ‘এই তুমি কোথায় যাচ্ছ?’

অনুজ আমার দিকে চেয়ে বলল, ‘কোন দরকার আছে দিদিমনি?’

আমি বললাম, ‘না দরকার তো নেই। কিন্তু আমি একা। তুমি বস, তোমার সাথে গল্প করি।‘

অনুজ এধার ওধার চেয়ে বসার কিছু দেখতে না পেয়ে দাঁড়িয়ে রইল আমার সামনে। অনুজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম। পরিস্কার রঙ, গেঞ্জি আর প্যান্ট সব ধোপদুরস্ত। না, অন্যদের মত নয়। আমি ওকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কিগো দাঁড়িয়ে আছো কেন? বস।‘ ওর ইতস্ততা দেখে বললাম, ‘আরে এই বিছানার উপর বস। নাহলে আর বসবে কোথায়?’

অনুজ গরিমসি করে বিছানার একধারে বসল। আমি পরোটার একটুকরো মুখে দিলাম সাথে একটু আঁচার আর দই। আহ, খুব স্বাদিস্ট। মুখে দারুন লাগছে। অনুজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও অন্যদিকে চেয়ে আছে। জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি টিফিন করেছ?’

অনুজ আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ দিদিমনি। সকাল বেলাতেই টিফিন হয়ে গেছে। আমরা সকালবেলাতে টিফিন করে নিই।‘

জিজ্ঞেস করলাম, ‘বাড়ীতে কে কে আছে তোমার?’

অনুজ জবাব দিল, ‘মা আছেন। বাবা ছোটবেলায় মারা গেছেন আর এক দিদি আছেন।‘

আমি দুঃখ প্রকাশ করে বললাম, ‘ইসস, অ্যাই অ্যাম সরি। তো কিভাবে চলে তোমাদের?’

অনুজ উত্তর করলো, ‘এই এইখানে আমি যা পাই আর মা বাড়ী বাড়ী কাজ করেন। আমাদের চলে যায়।‘

নাহ, টপিক অন্যদিকে যাচ্ছে। জিজ্ঞেস করলাম, ‘কবে থেকে আছো এখানে?’

ও বলল, ‘জন্মের পর থেকেই। বাবা এখানেই কাজ করতেন। সুধীর কাকু খুব ভালো। বাবা মারা যাবার সময় নাকি বাবাকে কাকু বলেছিলেন, তুই কোন চিন্তা করিস না। ছেলে বড় হলেই আমার এখানে কাজে নিয়ে নেব। আর ততদিন তোর সংসার আমি দেখব। আমার বয়স ১২ হবার পর থেকে আমি এখানে কাজ করি। কাকু খুব বিশ্বাস করে আমাকে। আমিও কাকুকে খুব ভালোবাসি।‘

সুধীর কাকুর উপর আমার মন ভক্তিতে ভরে উঠলো। এই জগতে এই রকম লোক আর কজন আছে যে এইভাবে হেল্প করতে পারে। সবারই লোভ বেশি, চাহিদা বেশি। এই কাকুদের মত লোকেদের দেখলে মনে হয় এই পৃথিবী এখনো সুন্দর আছে, এখনো এখানে পাখি ডাকে, ফুল ফোটে, সকাল হয় রাত আসে, সূর্য ওঠে দিনে আর রাতে চাঁদ। মনে হয় এখনো এখানে সবুজের রাজত্ব আছে। জানলা দিয়ে বাইরে তাকালেই ঘন সবুজের ছোঁওয়া বোঝা যায়, সবুজের গন্ধ নাকে এসে লাগে। কাকু তোমরা বেঁচে থেকো। তোমরা না থাকলে এই পৃথিবী পুঁতিগন্ধময় হয়ে যাবে। এই সবুজের রঙ তখন লাল দেখাবে, এই সবুজের ঘ্রান তখন কেমন বিষাক্ত মনে হবে। তোমাদের বেঁচে থাকার দরকার আছে।
 
১৯।
আমার সম্বিত ভাঙল অনুজের ডাকে। অনুজকে বলতে শুনলাম, ‘দিদিমনি, কাকু বলে গেছে তোমার পায়ে নাকি তেল মালিশ করে দিতে হবে। যখন দরকার হবে বোলো, আমি মালিশ করে দেবো।‘

আমি খাওয়া শেষ করেছি। থালা বাটি সরিয়ে বাথরুমে গেলাম হাত আর মুখ ধুয়ে নিতে। চলতে গিয়ে দেখলাম ব্যথাটা একটু কমেছে। তাহলে কি মালিশটা করিয়ে নেব? ওষুধের গুনে যদি ব্যথাটা কমে যায় তাহলে হয়তো মালিশ আরও উপকার দিতে পারে। ঘুরতে এসে বিছানায় পরে থাকার কোন অর্থ নেই। আমি ফিরে এসে দেখলাম অনুজ বিছানার চাদর ঝেরে দিচ্ছে। আমি বললাম, ‘অনুজ তোমার যদি কাজ না থাকে তাহলে মালিশ করে দিতে পারো।‘

অনুজ চাদরটা পাট করে পেতে দিয়ে বলল, ‘আমার এখন আর কি কাজ দিদিমনি। কাকু বলে গেছে শুধু তোমার দিকে খেয়াল করতে। ঠিক আছে আমি তেল নিয়ে আসছি।‘

অনুজ বেড়িয়ে গেল। আমি এসে বিছানায় বসলাম। পেটটা ভরতে এখন আরও ভালো লাগছে। জানলা দিয়ে তাকাতে দেখলাম জানলার সামনে একটা গাছের ডালে একটা দোয়েল বসে মিহি সুরে শিস দিয়ে চলেছে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম সবে নটা বাজে। ওরা সব খুব আনন্দ করছে নিশ্চয়। কোথায় যেতে পারে ওরা? বিশ্বভারতী? কে জানে? আসুক ফিরে। জিজ্ঞেস করা যাবে। তবে এটা ঠিক, ওরা যদি বিশ্বভারতী যায় তাহলে আবার যেতে হবে আমার সাথে সবাইকে। ইল্লি নাকি যে ওরা দেখবে আর আমি দেখব না এতো নামকরা একটা জায়গা? বাহ, দোয়েলটা তো বেশ সুন্দর শিস দিচ্ছে। আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতে লাগলাম দোয়েলের শিস। জানি না কখন অনুজ পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে।

হঠাৎ মনে হোল পিছনে কেউ। চমকে তাকিয়ে দেখি অনুজ চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে এক বাটি ভর্তি তেল নিয়ে। বাপরে কত তেল নিয়ে এসেছে ও? পুরো শরীরে লাগাবে নাকি? আমি বললাম, ‘আরে তুমি যে এসেছ বলবে তো? কি ভয় পেয়েছিলাম আমি।‘

অনুজ হেসে ফেলল। বলল, ‘দিদিমনি, এই দিনের বেলা আপনি ভয় পাচ্ছেন? অথচ রোজ রাতে আমাকে ঘন জঙ্গল পেড়িয়ে যেতে হয়।‘

আমি বিছানায় বসে বললাম, ‘ও তোমাদের অভ্যেস হয়ে গেছে। আমি থাকলে আর রোজ তোমার মত গেলে আমারও ভয় লাগতো না।‘

অনুজ আমার সামনে বিছানার উপর তেলের বাটি নিমিয়ে বলল, ‘হ্যাঁ, সেটা আপনি ঠিক বলেছেন। তবে আপনারা তো শহুরে মেয়ে, ভয়টা আপনাদের জন্মগত।‘

আমি আর তর্ক করলাম না এই ব্যাপার নিয়ে। এরা সব গ্রামের ছেলে। শহরের উপর এদের এক জন্মসুত্রে ঈর্ষা আছে। সেটা ভাঙ্গাও যাবে না ভাঙতে দরকারও নেই আমার এই মুহূর্তে। আমি বললাম, ‘কিন্তু তুমি বললে নাতো যে এতো তেল নিয়ে এসেছ কেন? আমার তো শুধু পায়েই মাখাতে হবে।‘

অনুজ এইটুকু শুধু বলল, ‘পরে যদি লাগে। তাই।‘

পরে লাগবে কেন এটা জানতে চাইলাম না আমি। আমি এখন উদগ্রীব ওর মালিশে আমার যাতে পায়ের ব্যথা পুরো সেরে যায়। কাল সবার সাথে বেরতেই হবে আমার।

অনুজ হাতে তেল নিয়ে দুহাতে মাখাতে মাখাতে বলল, ‘দিদিমনি কোন পায়ে ব্যথা আপনার?’

আমি নাইটিটা একটু তুলে বাঁ পা দেখিয়ে বললাম, ‘এইখানে। এইযে দেখ কেমন লাল হয়ে রয়েছে। ডাক্তার ওষুধ দিয়েছেন। তুমি মালিশ করলে হয়তো তাড়াতাড়ি ব্যথা কমে যাবে।‘

অনুজ হাসতে হাসতে বলল, ‘হয়তো না দিদিমনি একদম সেরে যাবে। আমি খুব ভালো মালিশ করতে জানি।‘

আমিও হেসে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কেন তুমি মালিশ শিখেছ নাকি?’

অনুজ আমার পায়ে তেল লাগিয়ে বলল, ‘না মালিশ শিখি নি। তবে এখানে অনেকেই চায় মালিশ করাতে। তাদের করতে করতে শুনতে পাই আমি নাকি ভালো মালিশ করতে জানি। আপনিও হয়তো বলবেন। আপনি এইভাবে বসে থাকলে পুরো পাটা মালিশ করতে পারবো না। আপনি আরাম করে শুয়ে পরুন, ভালভাবে আমি মালিশ করে দিই।‘

আমি টানটান হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। অনুজ আমার পায়ের সামনে বসে পাটাকে ওর থাইয়ের উপর তুলে নিয়ে একটু একটু টিপে মালিশ করতে লাগলো। আমি বুঝতে পারছি আমার ব্যথার জায়গায় ও যখন মালিশ করছে তখন খুব আরাম লাগছে। জানে বটে ও মালিশ করতে। নাহলে আমার আরাম লাগবে কেন?

বেশ কিছুক্ষন ধরে ওই পাটা মালিশ করে ও বিছানার উপর নামিয়ে রাখল পাটাকে। তারপর ডান পা তুলে ওই একইরকম ভাবে মালিশ করতে লাগলো। যেহেতু ওই পায়ে ব্যথা নেই ওর চাপের ওজনটা একটু বেশি ওই পায়ে, কিন্তু আমার খুব আরাম লাগছে। বাঁ পাটা হাঁটুর থেকে মুড়ে ভাঁজ করতে দেখলাম পায়ের কাফে একটু যেন ব্যথা। তারমানে ব্যথাটা উপরে উঠছে। কি করবো, অনুজকে বলবো পাটা মালিশ করতে? ও যদি আবার কিছু মনে করে?

ডান পাও শেষ করে অনুজ নামিয়ে রাখল বিছানায়। তারপরে যেটা জিজ্ঞেস করলো আমায় অনেক সহজ করে দিলো আমার আগের চিন্তাকে। অনুজ বলল, ‘দিদিমনি, আপনার লাগছে না ব্যথাটা উপরের দিকে উঠেছে?’

আমি অবাক হয়ে বললাম, ‘ও বাবা তুমি তো দেখছি আবার ডাক্তারও? কি করে জানলে আমার ব্যথা উপরে উঠেছে?’

অনুজ যেন বিজ্ঞের মত মাথা নাড়িয়ে বলল, ‘সাধারনত ব্যথা এইভাবেই ছড়ায়। আপনার মনে হবে এইখানে ব্যথা লেগেছে, আসলে ব্যথা ছড়িয়ে গেছে অনেকটা বেশি জায়গায়। যদি বলেন তো আমি মালিশ করে দিতে পারি।‘

আমি ভাবতে লাগলাম এতোটা এগোনো ঠিক হবে কিনা। একদম ছোকরা, বয়স কম। আমিও কম বয়সী। হাতের বাইরে চলে গেলে কন্ট্রোল করবো কিভাবে? তবে ছেলেটা কি এতো বাজে হবে? মালিশ করলে ভালোই লাগবে আমি জানি। কিন্তু সাহস পাচ্ছি না। একে তো একা এই বাড়ীটায় আমি আর অনুজ। যদি ও ওকে সামলাতে না পারে? আবার ভাবলাম, এতো নিস্পাপ ও কি আর খারাপ হবে। দোনামোনায় বলেই দিলাম, ‘বলছ যখন দাও।‘ বলতে ইচ্ছে করছিল যতটা আমি বলবো ততটাই মালিশ করো। কিন্তু ফালতু ওর মনে কৌতূহল জাগিয়ে কি লাভ? নিজেকে তো কন্ট্রোল করতে পারবো। ও যদি বেগোড়বাই কিছু করে ধমকে দেবো।

অনুজ নাইটির উপর দিয়ে আমার পা নিচের থেকে টিপে হাঁটু পর্যন্ত এসে আবার টিপতে টিপতে নিচে নামতে লাগলো। হঠাৎ আমার খেয়াল হোল, এই একি ওকি তেল দিয়ে আমার নাইটির উপরেই কি মালিশ করছে? নাইটির তো সত্যনাশ হোল তাহলে। সারা নাইটি তেলে জ্যাবজ্যাবে হয়ে যাবে।

আমি চমকে উঠে পাটা তুলে দিয়ে বললাম, ‘এই তুমি কি আমার নাইটির উপর দিয়ে তেল মালিশ করছ নাকি?’

অনুজ মালিশ থামিয়ে বলল, ‘না দিদিমনি, আমি তো এমনি এমনি টিপছিলাম। নাইটি তুলতে বললে আপনি যদি আবার কিছু মনে করেন।‘

অনুজের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও আমার পায়ের দিকে চেয়ে। হঠাৎ একটা হাওয়া ঘরে বয়ে গেল। আমার ভিতরের থাইয়ে হাওয়ার স্পর্শ পেতে বুঝলাম আমি যে পা তুলে নিয়েছি তাতে আমার নাইটি ফাঁক হয়ে বসে আছে, যার জন্য হাওয়ার স্পর্শ পেলাম আমার ভিতরের থাইয়ে। আর আমি সম্পূর্ণ উন্মুক্ত অনুজের চোখের সামনে। প্যান্টি পরা আছে এটাই যা রক্ষে করেছে আমার।

আমি পা নামিয়ে বললাম, ‘ও আচ্ছা, তুমি তেল লাগাচ্ছ না। ভালো। আমি ভেবেছিলাম বুঝি তোমার তেল হাত।‘

অনুজ আবার মালিশ না করে আমতা আমতা করে বলল, ‘কিন্তু তেল দিয়ে মালিশ করলে আরও ভালো লাগতো আপনার।‘

আমি নাইটিটাকে টেনে হাঁটুর একটু উপরে তুলে দু থাইয়ের মাঝে গুঁজে দিলাম। বললাম, ‘এবারে হোল, নাও এবার মালিশ করো।‘

অনুজ একটু ঝুঁকে হাতে তেল নিয়ে আমার দু পা মালিশ করতে লাগলো। কখনো একটু করে টেপে, কখনো পুরো হাত দিয়ে প্রেস করে। আমার সারা শরীরে ক্লান্তি ছেয়ে আসতে লাগলো। লোকেরা ভুল বলে না। ছেলেটা সত্যি মালিশ ভালো করে। আমি চোখের উপর হাত রেখে আরাম নিতে লাগলাম। জানি না কখন অনুজ আমার থাই মালিশ করতে লেগেছে। যখন বুঝলাম তখন ওকে বারন করার অনেক দেরি হয়ে গেছে।



২০।

আমি কি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম? নিশ্চয় তাই হবে না হলে অনুজ আমার নাইটি তুলে আমার থাইয়ে তেল মাখাচ্ছে সেটা বুঝতে পারলাম না। এমন পরিস্থিতিতে পড়ে গেলাম যে কি করবো বুঝতে পারছি না। নাইটি কতটা তুলেছে সেটা শুয়ে বোঝার উপায় নেই। আমার প্যান্টি দেখা যাচ্ছে কি না তাও বলতে পারছি না।

চোখ পিটপিট করে অনুজকে দেখলাম, ও একমনে আমার থাই ডলে যাচ্ছে। ওর চোখ অন্যত্র ঘুরছে না, ও শুধু ঝুঁকে আমায় মালিশ করতে মগ্ন।

ওর একনিস্টতা দেখে মনে হোল হয়তো ও আমাকে ডাকতে চেয়েছিল আমি ঘুমিয়ে ছিলাম বলে ও আর সময় নষ্ট করে নি। তাহলে ও কি জানতো যে আমি ওকে আমার থাই মালিশ করতে দেবো। বুঝতে পারছি ওর হাত আমার দুই থাইয়ের অনেক উপরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওটাই যদি আমার নাইটির শেষ প্রান্ত হয় তাহলে আরেকটু উঠলে আর রক্ষা নেই। নির্ঘাত আমার প্যান্টি দেখতে পাবে ও।

আমার কি করা উচিত? ওকে বারন করা? নাহ্, ও তাহলে হয়তো দুঃখ পাবে। যে ধরনের মনোনিবেশ ওর দেখছি ও সত্যি আমাকে আরাম দেবার জন্যই মালিশ করছে। এইমুহুর্তে ওকে কিছু বলা মানে ওর মনে দুঃখ পৌঁছানো। এতো যে করছে তাকে কি সেটা করা যায়?

তাহলে? একটাই উপায় আছে। আমার আবার ঘুমিয়ে পড়া মানে ঘুমের ভান করে থাকা। ওর যতটা সাহস সেই নিয়ে ও যতটা পারে মালিশ করুক। নিশ্চয়ই ও অবাধ্য হবে না। আমি তাই করলাম। একটা গভীর নিঃশ্বাস নিলাম অনুজকে বোঝাতে যে আমি গভীর ঘুমে মগ্ন। চোখের পাতার একটু ফাঁক দিয়ে দেখলাম অনুজ থেমে গিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। কিছুক্ষন আমাকে দেখে ও নিশ্চিন্ত হয়ে আবার মালিশ করতে লাগলো।

আরাম আমার মনের পাপবোধের অনেক উপরে এই মুহূর্তে। আমি মনের থেকে সব দ্বিধা সরিয়ে দিয়ে অনুজের হাতের ম্যাজিক স্পর্শের শিহরন উপভোগ করা শুরু করলাম। খেয়াল এলো যদি সুধীর কাকু চলে আসে। এ ক্ষেত্রে আমি আরাম নিতে নিতে মনকে বোঝালাম, এই ব্যাপারে আমার যতটা চিন্তা থাকা দরকার তার থেকে বেশি চিন্তা অনুজের হওয়া উচিত। ওই বুঝবে কাকুর আসার সময় কখন হতে পারে।

অনুজের হাত আমার থাইয়ের উপরের ভাগে ঘোরাফেরা করতে লাগলো। কখনো মাংশ দাবায় কখনো বা চেপে চেপে মালিশ করে। এই মুহূর্তে ও যা যা করছে সবই আমার ভালো লাগছে। আমি চোখ পিটপিট করে দেখে চলেছি অনুজের প্রতিক্রিয়া। একসময় ও থেমে একটা হাত দিয়ে নাইটিটা আমার পেটের উপর প্রায় তুলে দিল। রাজ্যের লজ্জা আমার মুখে। কিন্তু আমি তো ঘুমিয়ে আছি ওর কাছে। আমার তো লজ্জা পাবার কোন উপায় নেই। আমি নিশ্চিত অনুজ আমার লেস দেওয়া গোলাপি প্যান্টি দেখছে।

অনুজের হাত আমার প্যান্টির পাশ দিয়ে ঘুরে গেল। সারা শরীরে আমার অদ্ভুত একটা শিহরন খেলে গেল। একটা সময় অনুজ একটু ঝুঁকে পড়লো আমার প্যান্টির উপর। আমার শরীরে কেমন একটা কম্পন অনুভুত হতে লাগলো। ও কি মুখ লাগাবে নাকি আমার প্যান্টি ঢাকা যোনির উপর? কিন্তু ও জানবে কি করে যে এখানে মুখ দেয়? ও তো গ্রামের ছেলে। ওর তো এসব জ্ঞান থাকতে পারে না। আবার মনে হোল মালিশ করার আগে ও বলেছিল যে ও অনেক মালিশ করেছে। যদি তার মধ্যে মেয়ে থেকে থাকে তাহলে হয়তো......।

বলতে পারছি না কোন কিছু ঠিক করে। আপাতত দেখে যাওয়া ছাড়া আমার কিছু করনীয় নেই। আর সর্বোপরি আমি আরাম পাচ্ছি এটাই বড় কথা।

ওকি আমার যোনির চুলে টান লাগছে কেন? একটু যেন চমকে উঠলাম। চোখ নিচু করে দেখলাম অনুজকে। ওর হাতের অবস্থা দেখে মনে হোল ও আমার যোনির চুলগুলো ধরে আস্তে করে টান দিচ্ছে। তারমানে কি ও প্যান্টি যোনির থেকে সরিয়ে দিয়েছে? না তাহলে তো আমি বুঝতে পারতাম। তারপর মনে এলো, ও হরি আমার চুলের গ্রোথ এতো বেশি যে আমি আয়নায় দেখেছি যে প্যান্টি পরলে প্যান্টির পাশ থেকে কিছু লোম বাইরে বেড়িয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। প্যান্টির পাশ থেকে বেড়িয়ে থাকা চুলগুলো ধরেই ও টানছে।

কিছুক্ষন চুল টানার পর আবার অনুজ সোজা হয়ে বসে মালিশ করতে লাগলো আমার দুই থাইয়ের সন্ধিস্থল। যতবার ওর হাত ওই জায়গা থেকে ঘুরে যায় ততবার আমার মনের প্রত্যাশা বেড়ে যায় এই বুঝি ও যোনি স্পর্শ করলো। যোনির ভিতরে খুব অস্বস্তি ফিল করছি আমি। আমার মনে হচ্ছে যোনি আমার ভিতর থেকে ভিজতে শুরু করেছে। এ আরেক লজ্জা। যদি তাই হয় তাহলে তো আর কিছুক্ষন পর আমার পাতলা প্যান্টির সামনে ভিজে দেখাবে আর অনুজ সেটা দেখতে পাবে। কি একটা লজ্জা আবার আমার সারা শরীরকে ঘিরে ধরল।

আবার অনুজকে থেমে যেতে দেখলাম। অনুজ আমাকে ঘোরাবার চেষ্টা করছে যাতে আমি পাশ ফিরে অথবা বুকের উপর শুই। বোধহয় ও আমার থাইয়ের পিছনের অংশে তেল লাগাবার চেষ্টা করবে বা চাইছে। আরেকবার টানাতে আমি গা আলগা করে দিলাম, ও আমাকে একেবারে ঘুরিয়ে বুকের উপর শুইয়ে দিল।

আমি এইভাবে শুয়ে থেকে আরও বেশি অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম। এবারে আর ওকে দেখতে পাবো না ও কি করছে। ভালো লাগছিল ওর ভিতরের একটা কৌতূহল আমার চোখের সামনে দেখতে পেয়ে। দেখা যাক ও কি করে।

বুঝতে পারলাম ও নাইটিটা পিছন থেকে আমার কোমরের উপর তুলে গুছিয়ে রাখল। আরও কিছুক্ষন পর ওর হাত আমার থাইয়ের পিছনে অনুভব করলাম। ও মালিশ শুরু করেছে। প্রথমে হাঁটুর থেকে উপরে উঠতে উঠতে পাছার শুরু যেখান থেকে সেখানে এসে থেমে গিয়ে আবার নিচে নামতে শুরু করছে। এইভাবে বার পাঁচেক করলো। তারপর আমার প্যান্টির উপরের দিকের ইলাস্টিকের কাছে ওর হাতের স্পর্শ টের পেলাম। আমার শরীর প্রত্যাশায় উন্মুখ হয়ে রইল এবারে কি।

বুঝতে পারলাম অনুজ সাহসী হয়ে উঠছে। ও আমার প্যান্টি উপর থেকে টেনে নিচে নামাতে শুরু করলো। আমি দাঁত কামড়ে পরে রইলাম। বেশ কিছুটা নামানোর পর ওকে থামতে হোল যেহেতু প্যান্টির নিচের দিকে আমার পেটে চাপা রয়েছে। ও আমার পেটের তলায় আলতো করে হাত ঢুকিয়ে এক হাতে আমার পেট তুলে ধরতে চাইল। খুব স্বাভাবিকভাবে আমি আমার পেট তুলে ধরতে গেছিলাম ওর সুবিধের জন্য। পরক্ষনেই মনে হোল আমি তো ঘুমিয়ে রয়েছি। আবার আমি পেট নামিয়ে দিলাম।

কিন্তু যত পাতলা ভেবেছিলাম অনুজকে ও বেশ শক্তিশালী। আমার পেট ও একহাতে তুলে ধরতে পারলো আর আরেক হাতে পেটের থেকে প্যান্টি নিচে নামিয়ে দিয়ে আবার আমাকে পেটের উপর শুইয়ে দিল। এরপর ওর আর কোন বাঁধা রইল না আমার প্যান্টি খুলে নিতে।

আস্তে আস্তে অনুভব করতে লাগলাম আমার প্যান্টি ও টেনে নামিয়ে নিচ্ছে তারপর একটা করে পা তুলে প্যান্টি আলগা করে নিয়ে নিলো অনুজ নিপুন হাতে। কতজন মেয়েকে ও এইভাবে করেছে কে জানে। কিন্তু ওর পারদর্শিতায় মনে হোল ও খুব পাকা খেলোয়াড় এই ব্যাপারে।

ও আমার নিতম্ব মালিশ করতে লাগলো। একেকটা নিতম্ব ধরে ভালো করে চেপে চেপে মালিশ করা শুরু করে দিলো অনুজ। যতই আমার লজ্জা লাগুক আমার ভালো লাগছে এই মালিশ। কেমন একটা নতুন কিছু পাবার আশা আমার মনে সবসময় ঘোরাফেরা করছে। একটা সময় আমার দুই নিতম্বের খাঁজে ওর আঙ্গুল অনুভব করলাম। তেল দিয়ে নিতম্বের খাঁজে ওর আঙ্গুল ওঠানামা করতে লাগলো। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ওর আঙ্গুল আমার যোনির দ্বারের কাছে এসে আবার উল্টো পথে যেতে লাগলো। যতবারই ওর আঙ্গুল আমার যোনির পাশে আসতো ততবারই মনে হতো এইবার হয়তো এইবার ও ছোঁবে আমার যোনিকে। আমার প্রত্যাশা গগনচুম্বী হতে লাগলো। আমার ভিতর থেকে লজ্জা ভয় সব কিছু অন্তরালে চলে গেছে। আমি মনপ্রান দিয়ে চাইছি ও স্পর্শ করুক। আমি কিছু বলবো না। কিন্তু চাতক পাখির মত আমি শুধু আশাই করে যাচ্ছি। অনুজের আঙ্গুল ত্রিসীমানায় আসছে না।
 
২১।

বেশ কিছুক্ষন ধরে আমার নিতম্ব মালিশ করে ও আবার আমাকে ঘোরাবার চেষ্টা করলো যাতে আমি পিঠের উপর থাকি। ও একটু ঠেলাতে আমি নিজেই যেন ঘুরে গেলাম। আমার শরীরের উত্তেজনা তখন চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। লজ্জা, সম্মান সব বিসর্জন দিয়েছি আমি। ওর সামনে আমার উন্মুক্ত লোমশ কালো যোনি, এটা ভাবতেই আমার যোনি যেন রসে ভর্তি হয়ে উঠছে। এই প্রথম, হ্যাঁ এই প্রথম আমি সজ্ঞানে উপলব্ধি করছি যৌনতাকে।

অনুজ আমাকে ওর চোখের সামনে উলঙ্গ দেখে হতবাক। যথারীতি আমার হাত আমার চোখের উপর চলে গেছে ওর নজর থেকে নিজেকে আড়াল করতে। ও মুখ খুলে একমনে আমার যোনির দিকে তাকিয়ে। হয়তো বা এই প্রথম ও কোন সুন্দরী মেয়েকে এইরকম খোলা অবস্থায় দেখছে। বেশ কিছুক্ষন আমাকে পর্যবেক্ষণ করে ও কাঁপা হাত তুলে নিয়ে এলো আমার যোনির কাছে। আমি নিঃশ্বাস বন্ধ করে সেই সন্ধিক্ষনের অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন ও হাত দেবে।

একসময় ও হাত রাখল আমার লোম ভর্তি যোনির উপর। আমার চাপা ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। আমি ঠোঁট কামড়ে ধরলাম। ওকে বুঝতে দেওয়া যাবে না যে আমি জেগে। নাহলে হয়তো ভয়ে ও কিছুই করবে না আর আমি এখন চাই ও কিছু করুক।

আমার নাইটি হাতকাটা। একহাত আমার চোখের উপর থাকাতে আমার পরিস্কার কামানো বাহুমুল অনুজের চোখের সামনে উন্মুক্ত। ও যোনিতে হাত রেখে ওর মুখ এগিয়ে আনল আমার বাহুমুলের কাছে। ওর নাকের স্পর্শ পেলাম আমার ঈষৎ ঘামে ভেজা বাহুমুলের ত্বকে। ওর নিঃশ্বাসের আওয়াজ শুনলাম। ও আমার বাহুমুল ঘ্রান করছে।

ওর হাত আমার যোনির চুল মুঠো করে ধরে আস্তে করে টানছে। আমি জানি আমার লোমের ভিতরের দিক যোনি থেকে নিঃসৃত রসে ভিজে আছে। জানি না তার স্পর্শ ও পাচ্ছে কিনা। অনেকক্ষণ ধরে আমার বাহুমুলের ঘ্রান নিয়ে আর যোনির চুল ধরে খেলা করে অনুজ উঠে দাঁড়ালো। হাতের আড়াল থেকে আমি দেখছি। ও কি করতে চায়?

দেখলাম ওর হাত এগিয়ে গেল ওর প্যান্টের দিকে। প্যান্টের বোতাম খুলে চেন নিচে নামিয়ে ও টেনে নামিয়ে নিলো ওর হাফ প্যান্ট। ওর কঠোর শক্ত লিঙ্গ লাফিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো আর যেন আমাকে ব্যঙ্গ করে থরথর করে কাঁপতে লাগলো। এই প্রথম সজ্ঞানে আমি কোন ছেলের লিঙ্গ দেখছি। আমার ভিতর একটা ব্যকুলতা আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খেয়ে চলেছে। আর কতক্ষন আমি অপেক্ষা করবো? কিন্তু মনকে শুধালাম কিসের অপেক্ষা? কি হতে চলেছে? কি হতে পারে? আমি কি জানি, এই খেলার? বা অনুজই বা কি জানে কি খেলতে হবে? সবকিছু জানার অপেক্ষায় আমি শুয়ে থাকলাম চোখে হাত দিয়ে।

লিঙ্গ নাচাতে নাচাতে অনুজ এগিয়ে এলো আমার দিকে। যত কাছে আসতে লাগলো তত যেন লিঙ্গটা বিশাল মনে হতে লাগলো আমার কাছে। এটা হয়তো আমার যোনির ফাঁকে ঢুকবে। একদম মুখের কাছে চলে এসে অনুজ আস্তে করে আমার হাতটা তুলে একবার চোখ দেখে নিলো আমার। আমি জেগে না ঘুমচ্ছি। অনুজের এই কাজে আমি চোখ বুজে পরে রইলাম যাতে ওর বিশ্বাস আসে যে আমি সত্যি ঘুমিয়ে আছি।

অনুজ বেশ কিছুক্ষন দেখার পর নিশ্চিত হোল যে আমি সত্যি ঘুমিয়ে। ও আস্তে করে আমার নাইটির সামনের বোতাম খুলতে শুরু করলো। একেক করে সবকটা বোতাম খুলে নিচের থেকে নাইটি টেনে মাথা দিয়ে গলিয়ে খুলে নিলো ও আমার নাইটি। হাত থেকে বার করে নিলো একে একে। আমারই পাশে রেখে দিলো দলা করে নাইটিটা।

আমি ওর সামনে পরে রইলাম শুধুমাত্র ব্রা পরে। আমার হাতের ফাঁক দিয়ে দেখলাম ও ঝুঁকে আমাকে একটু ঘুরিয়ে ব্রায়ের হুকটা খুলে দেবার চেষ্টা করতে লাগলো। বারকতক চেষ্টা করার পর হঠাৎ মনে হোল আমার স্তনগুলো যেন আলগা হয়ে গেছে।

ও ব্রাটাও খুলে নিলো আমার গায়ের থেকে। আমার স্তনের উপর ঝুঁকে একটা স্তনাগ্রকে ঠোঁট দিয়ে চুমু খেল অনুজ। আমার সারা শরীরে কম্পন দিয়ে গেল ওর সেই চুমু। ও মুখ নামিয়ে আমার স্তনাগ্র মুখের ভিতর নিয়ে চুষতে লাগলো। ইচ্ছে করছিলো আমার হাত দিয়ে ওর মাথাটা ধরে আমার স্তনে চেপে ধরতে। আমার সারা শরীরে পোকা খেলে বেড়াতে সুরু করেছে। এটাকেই কি যৌন উত্তেজনা বলে? একেক করে দুই স্তনের চুড়া নিয়ে বেশ কিছুক্ষন ঠোঁট দিয়ে খেলে অনুজ আবার নিচের দিকে চলে গেল।

আমার দু পা কে একটু ফাঁক করে বসে পড়ল ওদের মধ্যে। ঝুঁকে এলো আমার শরীরের উপর। কিছুক্ষন পর আমি ওর লিঙ্গের ঘর্ষণ বুঝতে পারলাম আমার যোনির চুলে। তারপরে কেমন যেন ভেজা ভেজা লাগলো আমার পেটে। অনুজ ওর লিঙ্গের দিকে তাকিয়ে। ও একটু নিজেকে সোজা করতে দেখলাম ফোঁটা ফোঁটা সাদা সাদা রস ওর লিঙ্গের মুখ থেকে বেড়িয়ে আসছে। এই রসগুলো কি? আমি আঙ্গুল দিয়ে আমার যোনির রস দেখেছিলাম। কিন্তু মনে হয়েছিল কেমন যেন জলের রঙ। এতো সাদা সাদা?

অনুজের চোয়াল শক্ত। লিঙ্গ থেকে থেকে কেঁপে কেঁপে উঠছে আর যতবার কেঁপে উঠছে ততবার একেক ফোঁটা বেড়িয়ে আসছে ওর লিঙ্গের মুখ থেকে।

অনুজ আবার শুরু করে দিল আমার যোনির চুল নিয়ে খেলতে। আমার একটা পা ওর লিঙ্গের উপর ফেলে রাখা আছে। ওই রেখেছে। আমার থাইয়ের তলায় অনুজের লিঙ্গ আবার শক্ত হয়ে উঠছে বুঝতে পারলাম। আরও কিছুক্ষন যোনির চেরায় আঙ্গুল বুলিয়ে ও আবার নিজেকে বসালো আমার দু পায়ের মাঝখানে।

আমার পা দুটো মুড়ে ও তুলে ধরল উপরে। আমি জানি আমার রসে সিক্ত যোনি ওর চোখের সামনে উন্মুক্ত। আস্তে করে অনুজ নিজেকে এগিয়ে নিয়ে এলো আমার কাছে, একসময় টের পেলাম ওর লিঙ্গ আমার যোনিদ্বার স্পর্শ করেছে। এবারে অতি সাবধানে ও ওর লিঙ্গের মাথা আমার যোনির প্রবেশ পথে ঠেকিয়ে একটু ধাক্কা দিতেই আমার রসসিক্ত যোনির মধ্যে ওর লিঙ্গের মাথাটা ঢুকে গেল। আমার মুখ দিয়ে শত চেষ্টা করা সত্ত্বেও বেড়িয়ে এলো একটা ‘আহ’ আওয়াজ। হাতের আড়াল থেকে অনুজকে দেখতে চাইলাম। আমার আওয়াজের দিকে ওর আর খেয়াল নেই। ও আমার যোনির মধ্যে প্রবেশ করতে ব্যস্ত।

আবার একটু ধাক্কা, আরও কিছুটা ঢোকালো এই করে ও সমূল লিঙ্গ আমার যোনিতে প্রবেশ করিয়ে দিলো। দুটো পা দু হাতে ধরে ও আস্তে আস্তে আগে পিছু করতে লাগলো ওর কোমর। লিঙ্গ যোনিতে একবার প্রবেশ করে একবার বেড়িয়ে আসে। সারা শরীরের চুলকানি যেন আমার যোনিতে একত্রিত হয়েছে। ওর লিঙ্গের ঘর্ষণে আমার যোনির দেওয়ালে কি অদ্ভুত এক আরামের পরশ বয়ে চলেছে। আমি ঠোঁট কামড়ে চুপ করে শুয়ে আছি।

বেশ কিছুক্ষন ধরে কোমর নাচাতে আমি অনুভব করলাম আমার সারা শরীর কাঁপিয়ে প্রলয় যেন আঁচরে পড়লো আমার যোনির মধ্যে। সারা শরীরে এক অনাবিল ভালো লাগা অনুভুতি। আমার সারা শরীরে ক্লান্তি ছড়িয়ে পড়ছে। আমি ভাবতে থাকলাম এইভাবে অনাদিকাল চলতে থাকুক। এর থেকে বড় সুখ আর নেই।

একটা সময় হঠাৎ অনুজ ওর লিঙ্গ টেনে বার করে নিলো, তারপর আমার পেটের কাছে নিয়ে একহাত দিয়ে ওর লিঙ্গকে চাপতে লাগলো আর আগে পিছু করতে লাগলো লিঙ্গের উপর ওর হাত। লিঙ্গের মাথাটা একবার চামড়ায় ঢাকা পরে আবার লাল মুণ্ডুটা ফুটে বেরোয় হাত পিছনে নিয়ে গেলে। তারপর দেখলাম ওর লিঙ্গের মুখ থেকে সেই সাদা রস বেড়িয়ে এলো তীব্র বেগে, কয়েক ফোঁটা এসে পড়লো আমার স্তনে। থকথকে কেমন যেন। হাত দিতে ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু অনুজের ভয়ে দিতে পারলাম না।

একটা সময় অনুজের লিঙ্গ ধীরে ধীরে ছোট আর নরম হয়ে পড়লো। অনুজ বিছানা থেকে নেমে চলে গেল বাথরুমে। একটা গামছা ভিজিয়ে নিয়ে এসে আমার সারা শরীর ওই ভেজা গামছা দিয়ে পরিস্কার করে মুছে দিল। তারপর আবার চলে গেল বাথরুমে। ফিরে এলো কিছু পরে। আমার চোখে ঘুম ঘনিয়ে আসছে। ও আমাকে ওই নগ্ন অবস্থায় একটা চাদর ঢাকা দিয়ে প্যান্ট পরে বেড়িয়ে গেল দরজা বন্ধ করে। আমি ঘুমের অতলে তলিয়ে গেলাম। সত্যি কি অনির্বচনীয় সুখ অনুজ আমাকে দিয়ে গেল। আমি এই ঋন শোধ করবো ওকে কিভাবে আমি জানি না। আমার জানা সম্ভবও ছিল না। কারন আমার কানে তখন বেজে চলেছে ‘ঘুম আয় ঘুম আয়, আয় ঘুম আয়রে।‘
 

Users who are viewing this thread

Back
Top