আপডেট ১:
মুখ্য চরিত্র : নাগেশ্বর রায়চৌধুরী - ৪৮ বছর, উচ্চতা - ৬' ৪", ছাতি - ৫৪", শক্তিশালী দৈহিক গঠন
অনুপমা সেন : ২১ বছর, উচ্চতা - ৫'4", গঠন - ৩৪/৩০/৩৬, অসাধারণ কামুক গঠন
নাগেশ্বর সচরাচর অনুষ্ঠান বাড়ি এড়িয়েই চলেন। খুব পরিচিত না হলে যোগ দেননা। আজকের বিয়ে বাড়িতে আসার কারণ বাল্যবন্ধু পরিমলের মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে। বহুদিনের পুরানো বন্ধুর আমন্ত্রণ উপেক্ষা করতে পারেননি। সাধারণত তিনি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসলেও উপহার দিয়ে বিদায় নেন। ভীড় তেমন পছন্দ নয় নাগেশ্বরের। নিজেকে বরাবর আর পাঁচজনের থেকে আলাদা রাখতেই বেশি ভালোবাসেন। তাই তিনি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসলেও, হয় একটু তাড়াতাড়ি আসেন নাহলে একটু রাত করে। একনিষ্ঠ নিয়মানুবর্তীতা রক্ষার জন্য বিয়ে বাড়ির খাবারও তিনি বিশেষ গ্রহণ করেন না। কিন্তু আজকের দিনটা ব্যতিক্রম। তাড়াতাড়ি আসলেও শুধু উপহার দিয়ে বিদায় নিতে পারেননি, বন্ধুর পীড়াপীড়িতে। পরিমল কথা আদায় করে নিয়েছে, কন্যাদানের পরে পরিমলের সাথে খেয়ে তবে তিনি বাড়ি যেতে পারবেন। কথা দিলে তিনি কথার খেলাপ করেন না। তাই বিয়ে বাড়ির এককোনে নিজের মনে বসে বিয়ে বাড়ির লোকজনের ওপর নজর রাখছিলেন।
নিজেকে একপাশে রাখলেও বিয়ে বাড়ির সবাই ওনাকে বেশ সমীহের চোখেই দেখছিলো। বিশেষ করে ওনার ঐ ব্যাক্তিত্বময় পৌরষত্বের দিকে অল্পবয়সী থেকে মাঝবয়সী সমস্ত মেয়েদেরই নজর চলে যাচ্ছিলো। নাগেশ্বরের এসব গা সওয়া হয়ে গেছে। দু - একজন আলাপ জমাতে এলেও উনি অল্প কথায় পাশ কাটিয়েছেন। ওনার গাম্ভীর্য্যের জন্য বাকি মেয়ে বউরা আর বেশি এগোয় নি। কিন্তু নজরও সরায়নি।
অবশ্য তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এই বয়সেও দীর্ঘ ঋজু দেহ। সাথে ব্যায়ামের জন্য বেশ শক্তিশালী। সাফারী পরে থাকলেও তার চালচলন বা বসার ভঙ্গিমায় একটা কর্তৃত্ত ভাব আছে। যেটা তাকে মানায়ও।
নাগেশ্বর নিজের মনে নিজের ব্যবসার কথা চিন্তা করতে করতেই হালকা নজর সবার ওপর বোলাচ্ছিলেন। চোখ আটকালো আন্দাজ বছর ২০-২২ এর মেয়ের ওপর। মেয়েটাকে বেশ চোখে ধরলো নাগেশ্বরের। বেশ ভালো করে মেয়েটার ওপর পর্যবেক্ষণ করলেন। দেবুর জন্য বেশ মানাবে মেয়েটাকে। বেশ চটপটে কিন্তু দৃঢ়তা আছে মেয়েটার। এই বয়সী মেয়েদের মধ্যে যেটা দুর্লভ, তার ওপর এমন আগুন রূপ। সচরাচর দেখা যায় না। বেশ আঁটোসাঁটো ময়ূরকন্ঠী নীল রঙের ব্লাউসের ওপর দিয়ে তার দুই উঁচু টলমলে যৌবন, যেকোন পুরুষের মনে নেশা ধরাবে। সাদা ওড়না বাঁ কাঁধে। সাদা লেহেঙ্গা আর ব্লাউসের মাঝে মসৃন পেট উন্মুক্ত। সাথে গভীর নাভীটাও। মনে মনে মেয়েটার ব্যাপারে পরিমলের কাছে খোঁজখবর করবেন ঠিক করে নিলেন।
সন্ধ্যা রাতেই বিয়ের লগ্ন ছিল। তাই বিয়ের ঝামেলা মিটতে মিটতে সোয়া এগারোটা হয়ে গেলো। বিয়ে মিটতেই পরিমল নাগেশ্বরকে খাবারের জন্য আহ্বান করলো। পরিমল নিজের ভারাক্রান্ত মনকে অন্য দিকে ঘোরানোর জন্য নাগেশ্বরের সাথেই এক টেবিলে খেতে বসলো। কথায় কথায় নাগেশ্বর সন্ধ্যেবেলায় দেখা মেয়েটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলো।
- আজ সন্ধ্যায় নীল ব্লাউস আর সাদা ঘাগড়ায় একটা মেয়ে কে লক্ষ্য করলাম। মেয়েটা কে জানিস?
- কে? ও বুঝেছি, তুই অনুপমার কথা বলছিস। ও আমার মেয়ের বন্ধু। কেন বলতো ?
- কেন আবার, বুঝতেই পারছিস, বয়স হচ্ছে, ছেলেটার একটা হিল্লে করতে চাই, তাই। মেয়েটার বাবা কি করে? মেয়েটা কেমন কিছু জানিস?
- কি এমন বুড়ো হয়েছিস। বুড়ো তো আমি হয়েছি, তোকে এখনো পুরো জোয়ান লাগে। স্বাস্থ্য সত্যি তুই মেইনটেইন করেছিস বটে। তবে, তোর পছন্দের তারিফ করতে হয়। ভালো মেয়ে, তবে একটু একরোখা কিন্তু। আর ওর বাবা ব্যাংকে কাজ করে।
- তোর আপত্তি না থাকলে, ওর বাবার সাথে কথা
বলাতে পারবি?
- কেন পারবো না। তবে একটু সময় দে। এদিকটা একটু সামলে নিতে দে। তোর বাড়িতে মেয়েটা বৌ হিসাবে গেলে আমারও ভালো লাগবে। বড় বাড়ির বৌ হবার যোগ্য মেয়ে।
- এরকম ভাবিস না। তোর মেয়েও খুব ভালো, আর তোর জামাই খুব ভালো। শুধু টাকাতে কি মানুষ সুখী হয়। তাহলে তো আমি সুখী হতাম।
- জানি, সরি, আমি ওভাবে বলতে চাইনি।
- আমি কিছু মনে করিনি। তুই একটু সামলে নিয়ে আমার ব্যাপারটা দেখ। সেটাই আমিও চায়।
সেদিন কথাবার্তা ওই পর্যন্তই করে রাখলো নাগেশ্বর।
[HIDE]
আপডেট ২:
আগের পার্টে পাঠক আর পাঠিকারা এটুকু বুঝেছেন, নাগেশ্বর তার ছেলের জন্য পুত্রবধূ খুঁজছে। কিন্তু সেই ঘটনায় যাবার আগে, নাগেশ্বরের ব্যাপারে একটু বিস্তারিত জানায়। নাগেশ্বরের পূর্বপুরুষ দেশ স্বাধীন হবার আগে বড় জমিদার ছিলেন। ইংরেজ আমলে রায়চৌধুরী খেতাবও পেয়েছিল। জমিদারী কোথায় ছিল, সেটা এখন আর কোনো মানে রাখে না। জমিদারী চলে যাবার পরে, নাগেশ্বরের দাদু, ব্যবসা শুরু করেন। জুটমিলের ব্যবসা থেকে হাতেখড়ি করেন। পরে নাগেশ্বরের বাবা সেই জুটমিলের ব্যবসায় আরো বাড়ায়। একটা কারখানা থেকে ৮ খানা কারখানায় নিয়ে যান। তবে নাগেশ্বর অন্য্ ধাতের। তিনি শুধু জুটের ব্যবসায় বাঁধা থাকতে চাননি। নিজের দমে আরো চার-পাঁচ রকমের ব্যবসা শুরু করেন। এককথায় বলা যায়, ছোটোখাটো বিজনেস টাইকুন হয়ে ওঠেন।
জমিদারী চলে যাবার পরে নাগেশ্বরের দাদু জমিদারীর বেশির ভাগ জমি বিক্রী করে ব্যবসা শুরু করেন। পুরো পরিবারকে নিয়ে কলকাতায় চলে যান। কিন্তু, বাঁকুড়া শহরের কাছের কিছু জমি বিক্রী করেন নি। নাগেশ্বর ওই জমির ওপরেই নিজের মতো করে এখন একটা বাংলো বানিয়ে থাকেন। কলকাতা শহরের ভিড় আর জমজমাট তার ভালো লাগে না। কারণ, নিজের স্ত্রী মারা যাবার পরে আর কলকাতায় থাকার কোনো ইচ্ছা আর ছিল না। নিজেকে একটু একা করে নিয়েছিলেন। তবে মাসে এক-দুবার কলকাতায় যান ব্যবসার কাজে। বাকি সব গ্রামে থেকেই পরিচালনা করেন। কলকাতার বাড়িতে শুধু দেবরাজ মানে তার ছেলে থাকে।
জমিদারী গেলেও, পরিবারের কিছু রীতিনীতি এখন আছে। তার একটা হলো, ছেলে হলে ২১ এর আগে আর মেয়ে হলে ১৬ র আগে বিয়ে দিতে হবে। নাগেশ্বরের বাবাও, রীতি মেনে নাগেশ্বরের বিয়ে ২১ এই দিয়ে দেন। সুন্দরী বৌয়ের সাথে ন বছর কাটিয়েছিলেন। ভালোবেসে ফেলেছিলেন খুব, নিজের স্ত্রীকে। তাই ক্যান্সারে স্ত্রী বিয়োগ হলে, মনের দুঃখে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। প্রথমে ছেলের সাথে থাকলেও, পড়াশোনার জন্য কলকাতার বাড়িতেই রাখেন। সাথে দেখাশোনা করার জন্য চাকর-বাকরও।
কিছুটা আধুনিক মানসিকতার জন্য পরিবারের রীতি মেনে নিজের ছেলের বিয়ে ২১ এর আগে দিতে চাননি। তবে এখন দেবরাজ বছর ২৬ এর যুবক। এখন তাই চেষ্টা শুরু করেছেন। এর আগেও বেশ কয়েকটা মেয়ে দেখেছেন, কিন্তু নিজের চোখে ধরেনি আর ছেলের কাছ থেকেও তেমন কোন সারা পাননি। কিন্তু অনুপমাকে দেখে বেশ পছন্দ হয় তার। শুধু রূপের জন্য না, অনুপমার মধ্যে একটা স্বাধীনচেতা ভাব দেখেছেন। নিজের ছেলেকে তিনি যেটুকু চিনেছেন, তাতে এখনো মনে হয়, তার মধ্যে আত্মনির্ভরতা এখনো আসেনি। নিজের অবর্তমানে যাতে ব্যবসার হাল কেও ধরতে পারে, যে দেবরাজকে চালনা করতে পারবে সেই রকম একটা মেয়ে সে খুঁজছিল। অনুপমার মধ্যে সেই কিছু করার ভাবটা দেখেছেন। আর যাই হোক, ব্যবসাসূত্রে কম মানুষ তো ঘাটেননি।
এবার আসি, পাঠক/পাঠিকাদের আসল জানার জায়গায়। চরিত্রের দিক থেকে নাগেশ্বরকে চরিত্রহীন বলা যাবে কিনা সেটা আমি পাঠক/পাঠিকাদের হাতেই ছাড়লাম।
নিজে থেকে কামের তাড়নায় নারীসঙ্গ করে তিনি বেড়াননি। বরং স্ত্রী বিয়োগের পর প্রায় পাঁচ বছর কোনো নারীসঙ্গই তিনি করেননি। তবে, তার পুরুষালী দেহ আর ব্যক্তিত্বের আগুনে অনেক নারী পুড়তে চাইলে, নিজেকে দূরে বেশীদিন সরিয়ে রাখতে পারেননি। এর পিছনে জমিদারী রক্তও কিছুটা দায়ী। তাদের জমিদারিতে বিলাসিতার অভাব ছিল না। কিন্তু তাও অনেক ভেবে চিন্তেই সম্পর্কে জড়াতেন। যাকে তাকে বিছানায় তোলেননি। কিন্তু যে মহিলারা নাগেশ্বরের শয্যাসঙ্গী হয়েছে, তারা বারবার সুযোগ খুঁজেছে, কিন্তু নাগেশ্বর ২-৩ বারের বেশী কাওকে পাত্তা দেয়নি। শুধু দেহের জ্বালা মেটানোর জন্য সেক্স তার কোনোদিন পছন্দ হয়নি। কোথাও হলেও একটা পাপবোধ কাজ করতো। নিজের স্ত্রীকে ঠকানোর পাপ।
বিয়ে বাড়ির ঘটনার পরে একমাস পেরিয়ে গেছে। পরিমল কথা রেখেছে। নাগেশ্বরের সাথে অনুপমার বাবার পরিচয় করে দেয়। ফোনে এক রবিবার দেখে নাগেশ্বর অনুপমাদের বাড়ি যাবে, সেইরকম কথা ঠিক করে। কথামতো পরিমল আর নাগেশ্বর দুই বন্ধু অনুপমাদের বাড়িতে উপস্থিত হয়।
সেখানে নতুন করে অনুপমাকে দেখে নাগেশ্বর মুগ্ধ হলো। না কামের দিক থেকে নয়। মনে মনে খুশিও। এই মেয়ের রূপের সাথে আলাদা একটা তেজ আছে। কোনো কিছু জোর করে এই মেয়েকে দিয়ে করানো যাবে না, কিন্তু নিজে থেকে এই মেয়ে অনেক কিছু করতে পারে।
কথা প্রায় ওই দিনকেই পাকা করলেন, তাও অনুপমাকে ভাবার জন্য সময় দিলেন। নাগেশ্বর চাইছিলো অন্যের চাপে মেয়েটা সিদ্ধান্ত না নিক। নিজে ভালো করে ভেবে চিন্তেই তারপরে ঠিক করুক।
অনুপমা ভেবে জানালো সে সিদ্ধান্ত নেবার আগে একবার দেবরাজের সাথে দেখা করতে চাই। নাগেশ্বর খুশী হলো। এটাই চাইছিলো সে মনে মনে। এটাই তো বুদ্ধিমতীর মতো সিদ্ধান্ত। যার সাথে বাকি জীবনটা কাটাবে, তাকে তো যাচাই করে নিতে হবে। তবে মনে একটা শঙ্কাও ছিল। দেবরাজ লাজুক প্রকৃতির ছেলে। অনুপমার মতো মেয়ের পছন্দ হবে তো আদেও। নিজের ছেলের উপর কোনো জোর করলো না। সব কিছুই ভবিতব্যের হাতে ছেড়ে দিলো।
তবে নাগেশ্বরের আশঙ্কা সত্যি হলো না। অনুপমা দেখা করে দেবরাজের সাথে কথা বলে বিয়ের জন্য মত দিলো। ঠিক হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বিয়ে হবে। অতঃকিম শুভস্য শীঘ্রম। নিজের একমাত্র ছেলের বিয়েতে কার্পণ্য কিছু করেনি নাগেশ্বর। বিয়ে বাদে ছেলের বাড়ির সব অনুঠান সে গ্রামের বাড়ি থেকেই করেছিল। বৌভাত তারপরে রিসেপশন পার্টি , বেশ জাঁকজমক করে করলো। কিন্তু বিপত্তি হলো রিসেপশনের রাতে, মানে ফুলশয্যার রাতে। আর সেখান থেকেই এই গল্পের শুরু।
[/HIDE]
মুখ্য চরিত্র : নাগেশ্বর রায়চৌধুরী - ৪৮ বছর, উচ্চতা - ৬' ৪", ছাতি - ৫৪", শক্তিশালী দৈহিক গঠন
অনুপমা সেন : ২১ বছর, উচ্চতা - ৫'4", গঠন - ৩৪/৩০/৩৬, অসাধারণ কামুক গঠন
নাগেশ্বর সচরাচর অনুষ্ঠান বাড়ি এড়িয়েই চলেন। খুব পরিচিত না হলে যোগ দেননা। আজকের বিয়ে বাড়িতে আসার কারণ বাল্যবন্ধু পরিমলের মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে। বহুদিনের পুরানো বন্ধুর আমন্ত্রণ উপেক্ষা করতে পারেননি। সাধারণত তিনি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসলেও উপহার দিয়ে বিদায় নেন। ভীড় তেমন পছন্দ নয় নাগেশ্বরের। নিজেকে বরাবর আর পাঁচজনের থেকে আলাদা রাখতেই বেশি ভালোবাসেন। তাই তিনি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসলেও, হয় একটু তাড়াতাড়ি আসেন নাহলে একটু রাত করে। একনিষ্ঠ নিয়মানুবর্তীতা রক্ষার জন্য বিয়ে বাড়ির খাবারও তিনি বিশেষ গ্রহণ করেন না। কিন্তু আজকের দিনটা ব্যতিক্রম। তাড়াতাড়ি আসলেও শুধু উপহার দিয়ে বিদায় নিতে পারেননি, বন্ধুর পীড়াপীড়িতে। পরিমল কথা আদায় করে নিয়েছে, কন্যাদানের পরে পরিমলের সাথে খেয়ে তবে তিনি বাড়ি যেতে পারবেন। কথা দিলে তিনি কথার খেলাপ করেন না। তাই বিয়ে বাড়ির এককোনে নিজের মনে বসে বিয়ে বাড়ির লোকজনের ওপর নজর রাখছিলেন।
নিজেকে একপাশে রাখলেও বিয়ে বাড়ির সবাই ওনাকে বেশ সমীহের চোখেই দেখছিলো। বিশেষ করে ওনার ঐ ব্যাক্তিত্বময় পৌরষত্বের দিকে অল্পবয়সী থেকে মাঝবয়সী সমস্ত মেয়েদেরই নজর চলে যাচ্ছিলো। নাগেশ্বরের এসব গা সওয়া হয়ে গেছে। দু - একজন আলাপ জমাতে এলেও উনি অল্প কথায় পাশ কাটিয়েছেন। ওনার গাম্ভীর্য্যের জন্য বাকি মেয়ে বউরা আর বেশি এগোয় নি। কিন্তু নজরও সরায়নি।
অবশ্য তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এই বয়সেও দীর্ঘ ঋজু দেহ। সাথে ব্যায়ামের জন্য বেশ শক্তিশালী। সাফারী পরে থাকলেও তার চালচলন বা বসার ভঙ্গিমায় একটা কর্তৃত্ত ভাব আছে। যেটা তাকে মানায়ও।
নাগেশ্বর নিজের মনে নিজের ব্যবসার কথা চিন্তা করতে করতেই হালকা নজর সবার ওপর বোলাচ্ছিলেন। চোখ আটকালো আন্দাজ বছর ২০-২২ এর মেয়ের ওপর। মেয়েটাকে বেশ চোখে ধরলো নাগেশ্বরের। বেশ ভালো করে মেয়েটার ওপর পর্যবেক্ষণ করলেন। দেবুর জন্য বেশ মানাবে মেয়েটাকে। বেশ চটপটে কিন্তু দৃঢ়তা আছে মেয়েটার। এই বয়সী মেয়েদের মধ্যে যেটা দুর্লভ, তার ওপর এমন আগুন রূপ। সচরাচর দেখা যায় না। বেশ আঁটোসাঁটো ময়ূরকন্ঠী নীল রঙের ব্লাউসের ওপর দিয়ে তার দুই উঁচু টলমলে যৌবন, যেকোন পুরুষের মনে নেশা ধরাবে। সাদা ওড়না বাঁ কাঁধে। সাদা লেহেঙ্গা আর ব্লাউসের মাঝে মসৃন পেট উন্মুক্ত। সাথে গভীর নাভীটাও। মনে মনে মেয়েটার ব্যাপারে পরিমলের কাছে খোঁজখবর করবেন ঠিক করে নিলেন।
সন্ধ্যা রাতেই বিয়ের লগ্ন ছিল। তাই বিয়ের ঝামেলা মিটতে মিটতে সোয়া এগারোটা হয়ে গেলো। বিয়ে মিটতেই পরিমল নাগেশ্বরকে খাবারের জন্য আহ্বান করলো। পরিমল নিজের ভারাক্রান্ত মনকে অন্য দিকে ঘোরানোর জন্য নাগেশ্বরের সাথেই এক টেবিলে খেতে বসলো। কথায় কথায় নাগেশ্বর সন্ধ্যেবেলায় দেখা মেয়েটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলো।
- আজ সন্ধ্যায় নীল ব্লাউস আর সাদা ঘাগড়ায় একটা মেয়ে কে লক্ষ্য করলাম। মেয়েটা কে জানিস?
- কে? ও বুঝেছি, তুই অনুপমার কথা বলছিস। ও আমার মেয়ের বন্ধু। কেন বলতো ?
- কেন আবার, বুঝতেই পারছিস, বয়স হচ্ছে, ছেলেটার একটা হিল্লে করতে চাই, তাই। মেয়েটার বাবা কি করে? মেয়েটা কেমন কিছু জানিস?
- কি এমন বুড়ো হয়েছিস। বুড়ো তো আমি হয়েছি, তোকে এখনো পুরো জোয়ান লাগে। স্বাস্থ্য সত্যি তুই মেইনটেইন করেছিস বটে। তবে, তোর পছন্দের তারিফ করতে হয়। ভালো মেয়ে, তবে একটু একরোখা কিন্তু। আর ওর বাবা ব্যাংকে কাজ করে।
- তোর আপত্তি না থাকলে, ওর বাবার সাথে কথা
বলাতে পারবি?
- কেন পারবো না। তবে একটু সময় দে। এদিকটা একটু সামলে নিতে দে। তোর বাড়িতে মেয়েটা বৌ হিসাবে গেলে আমারও ভালো লাগবে। বড় বাড়ির বৌ হবার যোগ্য মেয়ে।
- এরকম ভাবিস না। তোর মেয়েও খুব ভালো, আর তোর জামাই খুব ভালো। শুধু টাকাতে কি মানুষ সুখী হয়। তাহলে তো আমি সুখী হতাম।
- জানি, সরি, আমি ওভাবে বলতে চাইনি।
- আমি কিছু মনে করিনি। তুই একটু সামলে নিয়ে আমার ব্যাপারটা দেখ। সেটাই আমিও চায়।
সেদিন কথাবার্তা ওই পর্যন্তই করে রাখলো নাগেশ্বর।
[HIDE]
আপডেট ২:
আগের পার্টে পাঠক আর পাঠিকারা এটুকু বুঝেছেন, নাগেশ্বর তার ছেলের জন্য পুত্রবধূ খুঁজছে। কিন্তু সেই ঘটনায় যাবার আগে, নাগেশ্বরের ব্যাপারে একটু বিস্তারিত জানায়। নাগেশ্বরের পূর্বপুরুষ দেশ স্বাধীন হবার আগে বড় জমিদার ছিলেন। ইংরেজ আমলে রায়চৌধুরী খেতাবও পেয়েছিল। জমিদারী কোথায় ছিল, সেটা এখন আর কোনো মানে রাখে না। জমিদারী চলে যাবার পরে, নাগেশ্বরের দাদু, ব্যবসা শুরু করেন। জুটমিলের ব্যবসা থেকে হাতেখড়ি করেন। পরে নাগেশ্বরের বাবা সেই জুটমিলের ব্যবসায় আরো বাড়ায়। একটা কারখানা থেকে ৮ খানা কারখানায় নিয়ে যান। তবে নাগেশ্বর অন্য্ ধাতের। তিনি শুধু জুটের ব্যবসায় বাঁধা থাকতে চাননি। নিজের দমে আরো চার-পাঁচ রকমের ব্যবসা শুরু করেন। এককথায় বলা যায়, ছোটোখাটো বিজনেস টাইকুন হয়ে ওঠেন।
জমিদারী চলে যাবার পরে নাগেশ্বরের দাদু জমিদারীর বেশির ভাগ জমি বিক্রী করে ব্যবসা শুরু করেন। পুরো পরিবারকে নিয়ে কলকাতায় চলে যান। কিন্তু, বাঁকুড়া শহরের কাছের কিছু জমি বিক্রী করেন নি। নাগেশ্বর ওই জমির ওপরেই নিজের মতো করে এখন একটা বাংলো বানিয়ে থাকেন। কলকাতা শহরের ভিড় আর জমজমাট তার ভালো লাগে না। কারণ, নিজের স্ত্রী মারা যাবার পরে আর কলকাতায় থাকার কোনো ইচ্ছা আর ছিল না। নিজেকে একটু একা করে নিয়েছিলেন। তবে মাসে এক-দুবার কলকাতায় যান ব্যবসার কাজে। বাকি সব গ্রামে থেকেই পরিচালনা করেন। কলকাতার বাড়িতে শুধু দেবরাজ মানে তার ছেলে থাকে।
জমিদারী গেলেও, পরিবারের কিছু রীতিনীতি এখন আছে। তার একটা হলো, ছেলে হলে ২১ এর আগে আর মেয়ে হলে ১৬ র আগে বিয়ে দিতে হবে। নাগেশ্বরের বাবাও, রীতি মেনে নাগেশ্বরের বিয়ে ২১ এই দিয়ে দেন। সুন্দরী বৌয়ের সাথে ন বছর কাটিয়েছিলেন। ভালোবেসে ফেলেছিলেন খুব, নিজের স্ত্রীকে। তাই ক্যান্সারে স্ত্রী বিয়োগ হলে, মনের দুঃখে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। প্রথমে ছেলের সাথে থাকলেও, পড়াশোনার জন্য কলকাতার বাড়িতেই রাখেন। সাথে দেখাশোনা করার জন্য চাকর-বাকরও।
কিছুটা আধুনিক মানসিকতার জন্য পরিবারের রীতি মেনে নিজের ছেলের বিয়ে ২১ এর আগে দিতে চাননি। তবে এখন দেবরাজ বছর ২৬ এর যুবক। এখন তাই চেষ্টা শুরু করেছেন। এর আগেও বেশ কয়েকটা মেয়ে দেখেছেন, কিন্তু নিজের চোখে ধরেনি আর ছেলের কাছ থেকেও তেমন কোন সারা পাননি। কিন্তু অনুপমাকে দেখে বেশ পছন্দ হয় তার। শুধু রূপের জন্য না, অনুপমার মধ্যে একটা স্বাধীনচেতা ভাব দেখেছেন। নিজের ছেলেকে তিনি যেটুকু চিনেছেন, তাতে এখনো মনে হয়, তার মধ্যে আত্মনির্ভরতা এখনো আসেনি। নিজের অবর্তমানে যাতে ব্যবসার হাল কেও ধরতে পারে, যে দেবরাজকে চালনা করতে পারবে সেই রকম একটা মেয়ে সে খুঁজছিল। অনুপমার মধ্যে সেই কিছু করার ভাবটা দেখেছেন। আর যাই হোক, ব্যবসাসূত্রে কম মানুষ তো ঘাটেননি।
এবার আসি, পাঠক/পাঠিকাদের আসল জানার জায়গায়। চরিত্রের দিক থেকে নাগেশ্বরকে চরিত্রহীন বলা যাবে কিনা সেটা আমি পাঠক/পাঠিকাদের হাতেই ছাড়লাম।
নিজে থেকে কামের তাড়নায় নারীসঙ্গ করে তিনি বেড়াননি। বরং স্ত্রী বিয়োগের পর প্রায় পাঁচ বছর কোনো নারীসঙ্গই তিনি করেননি। তবে, তার পুরুষালী দেহ আর ব্যক্তিত্বের আগুনে অনেক নারী পুড়তে চাইলে, নিজেকে দূরে বেশীদিন সরিয়ে রাখতে পারেননি। এর পিছনে জমিদারী রক্তও কিছুটা দায়ী। তাদের জমিদারিতে বিলাসিতার অভাব ছিল না। কিন্তু তাও অনেক ভেবে চিন্তেই সম্পর্কে জড়াতেন। যাকে তাকে বিছানায় তোলেননি। কিন্তু যে মহিলারা নাগেশ্বরের শয্যাসঙ্গী হয়েছে, তারা বারবার সুযোগ খুঁজেছে, কিন্তু নাগেশ্বর ২-৩ বারের বেশী কাওকে পাত্তা দেয়নি। শুধু দেহের জ্বালা মেটানোর জন্য সেক্স তার কোনোদিন পছন্দ হয়নি। কোথাও হলেও একটা পাপবোধ কাজ করতো। নিজের স্ত্রীকে ঠকানোর পাপ।
বিয়ে বাড়ির ঘটনার পরে একমাস পেরিয়ে গেছে। পরিমল কথা রেখেছে। নাগেশ্বরের সাথে অনুপমার বাবার পরিচয় করে দেয়। ফোনে এক রবিবার দেখে নাগেশ্বর অনুপমাদের বাড়ি যাবে, সেইরকম কথা ঠিক করে। কথামতো পরিমল আর নাগেশ্বর দুই বন্ধু অনুপমাদের বাড়িতে উপস্থিত হয়।
সেখানে নতুন করে অনুপমাকে দেখে নাগেশ্বর মুগ্ধ হলো। না কামের দিক থেকে নয়। মনে মনে খুশিও। এই মেয়ের রূপের সাথে আলাদা একটা তেজ আছে। কোনো কিছু জোর করে এই মেয়েকে দিয়ে করানো যাবে না, কিন্তু নিজে থেকে এই মেয়ে অনেক কিছু করতে পারে।
কথা প্রায় ওই দিনকেই পাকা করলেন, তাও অনুপমাকে ভাবার জন্য সময় দিলেন। নাগেশ্বর চাইছিলো অন্যের চাপে মেয়েটা সিদ্ধান্ত না নিক। নিজে ভালো করে ভেবে চিন্তেই তারপরে ঠিক করুক।
অনুপমা ভেবে জানালো সে সিদ্ধান্ত নেবার আগে একবার দেবরাজের সাথে দেখা করতে চাই। নাগেশ্বর খুশী হলো। এটাই চাইছিলো সে মনে মনে। এটাই তো বুদ্ধিমতীর মতো সিদ্ধান্ত। যার সাথে বাকি জীবনটা কাটাবে, তাকে তো যাচাই করে নিতে হবে। তবে মনে একটা শঙ্কাও ছিল। দেবরাজ লাজুক প্রকৃতির ছেলে। অনুপমার মতো মেয়ের পছন্দ হবে তো আদেও। নিজের ছেলের উপর কোনো জোর করলো না। সব কিছুই ভবিতব্যের হাতে ছেড়ে দিলো।
তবে নাগেশ্বরের আশঙ্কা সত্যি হলো না। অনুপমা দেখা করে দেবরাজের সাথে কথা বলে বিয়ের জন্য মত দিলো। ঠিক হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই বিয়ে হবে। অতঃকিম শুভস্য শীঘ্রম। নিজের একমাত্র ছেলের বিয়েতে কার্পণ্য কিছু করেনি নাগেশ্বর। বিয়ে বাদে ছেলের বাড়ির সব অনুঠান সে গ্রামের বাড়ি থেকেই করেছিল। বৌভাত তারপরে রিসেপশন পার্টি , বেশ জাঁকজমক করে করলো। কিন্তু বিপত্তি হলো রিসেপশনের রাতে, মানে ফুলশয্যার রাতে। আর সেখান থেকেই এই গল্পের শুরু।
[/HIDE]