নেতাজির জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য - স্মৃতিকথা

BRICK

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Dec 12, 2019
Messages
10,072
Credits
81,757
Strawberry
Glasses sunglasses
T-Shirt
Calculator
Watermelon
Pistol
❝ কেমন খ্যাপাটে ছিল ও, শােন। আমার ওপর ওর যত জেদ, যত আবদার, যত অভিমান। বলা নেই, কওয়া নেই, সারাদিন কোথায় কোথায় ঘুরত ফিরত। রাত ১১টার পরে দুম করে এসে হাজির আমার কাছে।এসেই হুকুম-“শীগগির খেতে দিন, ভীষণ খিদে পেয়েছে। আমি বলি, 'ওমা, সেকি কথা।খাওয়া-দাওয়া কখন শেষ কাজের লােকেরা সৰ পাট চুকিয়ে বিশ্রাম নিতে চলে গেছে। আমি তােমার জন্য রান্না করতে বসি আর কি। বাবু কি আর সে কথা শােনেন। আবদার ধরে বসেছেন—কেন, ভাতে ভাত খাব।”

তবু বােঝাই, ওরে লক্ষ্মীছাড়া, ওদিকে যে তােমার মা না খেয়ে- দেয়ে খাবার নিয়ে পথ চেয়ে বসে আছে , কিন্তু বৃথা অনুরােধ। শেষ পর্যন্ত ঐ রাত্রে যা হােক দুটো সেদ্ধ করে, আমাদের পূর্ব বাংলায় যাকে বলে ভাতে-ভাত বেঁধে, পেট ঠাণ্ডা করে না দেওয়া পর্যন্ত আমারও রেহাই পাবার কোন উপায় ছিল না। তাই বুঝি ওর মা আমাকে প্রায়ই একথা বলতেন-'ওর আমি জন্মই দিয়েছি— কিন্তু ওর মা তো আপনি।'

এমনিতে সঙ্কল্পে কঠোর হলেও মনের ভেতরে ওর কী আশ্চর্য কোমলতা ছিল তা হয়ত তােমরা অনেকেই জানো না।

সুভাষ কিন্তু খুব ভালো রাঁধতে পারতো, তা জানো? ওর(দেশবন্ধু) জন্য দিনের খাবার তা আমিই তৈরী করে নিয়ে যেভাম-রাত্রে ওর(দেশবন্ধু) রান্না জেলের মধ্যে সুভাষ তৈরী করে দিতাে। আর আমার কাজ কি শুধু রোজ সকালের খাবার বয়ে নিয়ে যাওয়া? রােজই সুভাষের ফর্দ থাকতো-বাজার থেকে এটা আনা চাই, ওটা আনা চাই। আর তার চাই বললেই তাে সে এক প্রচণ্ড দাবি হয়ে দাঁড়ানাে।

অবশ্য মায়ের মতো বলে ছেলের আবদার ছিলো যেমন, তেমনি বন্ধুর মতাে তার মনের গােপন কথাগুলােও আমার কাছেই বলা চাই। ওর দুর্বলতা কোথায়, কতটুকু- তা ও আমার কাছে গােপন
করতে পারতাে না- এই জন্য কতাে সময় কতো যে আমরা হাসি- ঠাট্টাও করেছি।

আজ সে সব দিনগুলো কোথায় হারিয়ে গেছে । ❞

- বাসন্তী দেবী ( দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্ত্রী)

© নেতাজী
 

Users who are viewing this thread

Back
Top