What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

9v9Ee7j.jpg


'বন্ধুরা যখন একসঙ্গে আড্ডা দেয়, আনন্দ করে, বিশ্ববিদ্যালয়জীবন উপভোগ করে; দেখা যায় আমি তখন হয়তো অনুশীলন নিয়ে ব্যস্ত। অনেক সময় মন খারাপ হয়। তবে সব সময় যেহেতু নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার একটা চেষ্টা আমার মধ্যে আছে, তাই মানিয়ে নিই,' বলছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারজান আক্তার। তিনি সাউথ এশিয়ান গেমসের সর্বশেষ আসরে কারাতেতে স্বর্ণপদক পেয়েছেন। স্কুল ও কলেজজীবন থেকেই তাঁর ঝুলিতে জমা হয়েছে বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার। ক্যাম্পাসের গণ্ডি ছাড়িয়ে হয়ে উঠেছেন সারা দেশের মারজান।

চারুকলার এই ছাত্রী অকপটে বলছিলেন, 'খেলাধুলাই আমার প্রথম ফোকাস। নিয়ম করে পড়াশোনা করার সুযোগ হয় না। এই খেলাধুলাই আমাকে ঘুমাতে দেয় না।'

ছেলেবেলায় মার্শাল আর্টের প্রতি ভালো লাগা ছিল। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়তেন। সে সময় স্কুলে কারাতে শেখার সুযোগ ছিল। সেখান থেকেই হাতেখড়ি। ধীরে ধীরে ক্লাব পর্যায় হয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আসরে অংশ নিতে শুরু করেন তিনি।

অর্জন যত

২০১৯ সালে সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে একক কুমি ইভেন্টে সোনা জিতেছেন। দলগত কুমিতেও পেয়েছেন ব্রোঞ্জপদক। ২৪তম জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় মারজানের অর্জন একটি করে রুপা ও ব্রোঞ্জপদক। ২৬তম জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় দুটি ব্রোঞ্জপদক পেয়েছেন, নবম বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসে পেয়েছেন দুটি রুপা। দুবাই, ভারত, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন এই তরুণ কারাতেকা।

yasQT79.jpg


মারজান আক্তার

মারজানের ক্যাম্পাস

সবাই যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, মারজান নিচ্ছিলেন এসএ গেমসের প্রস্তুতি। তবু ছেলেবেলা থেকে যেহেতু ছবি আঁকায় ভালো হাত আছে, তাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে ভর্তির সুযোগ হয়ে গেছে। খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি হননি। পড়ালেখার যোগ্যতাতেই ভর্তি পরীক্ষায় হয়েছেন পঞ্চম।

বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে শিক্ষক ও বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক সহায়তা পেয়েছেন, সে কথা কৃতজ্ঞতাভরে বললেন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে প্রায়ই ক্লাস বা ব্যবহারিক ক্লাসগুলোতে উপস্থিত হতে পারেন না। একটা ক্লাস মিস হলেই পরের ক্লাসের পড়াগুলো বোঝা কঠিন হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষকেরাই তাঁকে সহায়তা করেন। বন্ধুরাও উৎসাহ দেন। সবার সহযোগিতাতেই প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল পেয়েছেন মারজান। মারজান জানালেন, তিনি খেলতে চান। তবে পড়াশোনায় ফাঁকি দিয়ে নয়।

প্রতিবন্ধকতা ছিল, আছে

শুরু থেকেই অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরোতে হয়েছে। আশপাশের মানুষ বলেছেন, মেয়ে হয়ে এই খেলায় কেন? আত্মীয়স্বজনদের অনেকে শুরুতে মারজানের খেলাধুলার কথা জানতেন না। তবে এখন সবাই জানেন। অনেকে বলেন, 'এসব খেলাধুলা করে পরে স্বামী, সন্তান, সংসার সামলাবে কী করে? মেয়ে তো উচ্ছৃঙ্খল হয়ে যাবে।' এত কথার ভিড়েও হাল ছাড়েননি মারজান।

ক্যাম্পাসে কারাতে অনুশীলনের ব্যবস্থা করার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। তবে করোনা সংক্রমণের কারণে তা সম্ভব হয়নি। মারজান মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা পেলে পড়ালেখা আর অনুশীলন—দুটোই সমানতালে চালিয়ে যেতে পারবেন। বলছিলেন, 'আমরা তো সরকারিভাবে তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা পাই না। এসএ গেমসে স্বর্ণপদক পাওয়ার পর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রাইজমানি এখনো আমাদের দেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ গেমসের প্রাইজমানিও দেওয়া হয়নি। অথচ কারাতে অনুশীলন করতে গিয়ে পড়ালেখার সময় পাওয়া যায় না। অনেক সময় পরীক্ষা মিস হয়ে যায়। খেলাধুলার জন্যই উচ্চমাধ্যমিকের ফল খুব একটা ভালো হয়নি। অনেক সময় শিক্ষকদের কাছ থেকে উৎসাহ পাই না। তখন কিছুটা খারাপ লাগে। নিজের সঙ্গে লড়াই করতে হয়।'

লড়াইটা তিনি ভালোই জানেন। তাই ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করেন সব সময়। বলছিলেন, 'অনেকে আগ্রহ নিয়ে আমার কাছে কারাতে সম্পর্কে জানতে চায়। আমার কাছ থেকে শিখতে চায়। এটা খুব ভালো লাগে। আমি আমার সাধ্যমতো পরামর্শ দিই।'

লেখক: আশিকুজ্জামান
 
Bah khub bhalo lekha dada

Darun lekhechen sottii khub bhalo laglo

Bhalo athletes uni sotti
 

Users who are viewing this thread

Back
Top