What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

হাতের লেখা জাতের লেখা (1 Viewer)

f2zZPKY.jpg


এই কৌতুকটা নিশ্চয়ই তোমরা জানো। তবু আরেকবার বলি।

একদিন বাবা ঝন্টুকে বললেন, 'একটা চিঠি লিখে দে তো।'
'পারব না। আমার পায়ে ব্যথা।' মুখ গোমড়া করে ঝন্টুর জবাব।
'লিখবি তো হাত দিয়ে। এর সঙ্গে পায়ের কী সম্পর্ক?'
'আমার হাতের লেখার যে ছিরি, চিঠির সঙ্গে আমাকেও গিয়ে চিঠিটা পড়ে দিয়ে আসতে হবে!'

তোমাদের কারও কারও হয়তো ঝন্টুর মতো দশা। কিশোর আলোতে লেখা পাঠিয়েও সঙ্গে এসে পড়ে দিয়ে যেতে পারছ না বলে লেখা ছাপা হচ্ছে না! কিংবা পরীক্ষার হলে সব ঠিকঠাক লিখেও কেন যেন নম্বরটা কম হয়ে যাচ্ছে। হাতের লেখা সুন্দর হওয়াটা যে কতখানি জরুরি, সেটা বোধ হয় আর বিতং করে বলার প্রয়োজন নেই। তার চেয়ে বরং আমরা জেনে নিই, কীভাবে হাতের লেখাটা সুন্দর করা যায়। এ-সংক্রান্ত কিছু টিপস জানা গেল 'থ্রি ফিঙ্গারস হ্যান্ড রাইটিং ডেভেলপমেন্ট একাডেমি'র অধ্যক্ষ হেমায়েত মোহাম্মদ জারিফের কাছে। এ ছাড়া ইন্টারনেটেও আছে হাতের লেখা নিয়ে নানা পরামর্শ। সব মিলিয়ে হাতের লেখা সুন্দর করতে বাছাইকৃত কিছু টিপস তোমাদের জন্য তুলে দিচ্ছি।

সুন্দর হাতের লেখার প্রথম শর্ত হলো সুন্দর বর্ণ। বর্ণগুলো লেখার সঠিক নিয়মটা না জানলে হাতের লেখা সুন্দর করা কঠিন। যেমন বাংলার ক্ষেত্রে, কোন বর্ণগুলো মাত্রাবিহীন, কোনগুলো পূর্ণ মাত্রার কিংবা অর্ধ মাত্রার, এসব খুঁটিনাটি মনে রাখতে হবে। কোনো বর্ণে মাত্রা নেই, তুমি হয়তো মাত্রা বসিয়ে দিচ্ছ। কিংবা মাত্রা আছে, তুমি দিচ্ছ না। দীর্ঘদিন ধরে ভুল লিখছ বলে ভুলটাই হয়তো তোমার কাছে সঠিক মনে হয়। তাই প্রতিটি বর্ণ লেখার সঠিক নিয়মটা আগে জেনে নাও।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লাইন সোজা রাখা। কারও হয়তো বর্ণগুলো সুন্দর কিন্তু লাইন সোজা থাকে না। লাইন সোজা রাখার উপায় হচ্ছে, দুই পাশের মার্জিনের দিকে লক্ষ রাখা। চাইলে দাগ টানা খাতায় লিখে লিখেও লাইন সোজা রাখার অভ্যাস করতে পারো।

একই লাইনে একটা বর্ণ ছোট, একটা বড়—এমনটা যেন না হয়। প্রতিটি বর্ণ হবে একই আকৃতির। লাইন টানা খাতায় কয়েক দিন লিখলে এই সমস্যা দূর হবে।

KLZE90j.jpg


লেখা সুন্দর করতে এ ধরনের প্রি-রাইটিং প্র্যাকটিস করতে পারো

শব্দগুলোর মাঝখানে দূরত্ব যেন সমান থাকে, সে ব্যাপারে লক্ষ রাখতে হবে। লাইনগুলোও থাকতে হবে সমান দূরত্বে।

ভুল হয়ে গেলে আমরা মাঝে মাঝে ঘিজিঘিজি করে কেটে দিই। দেখলে মনে হয়, লেখার ওপর কেউ একটা বোম ফেলেছে! এমন 'শিল্পকর্ম' করার প্রয়োজন নেই। এক দাগে কিংবা দুই দাগে শব্দটা কেটে দিতে পারো।

অনেক সময় আমরা পরীক্ষার হলে লেখার 'স্টাইল' পরিবর্তন করে ফেলি। শুরুর দিকে লেখা এক রকম, পরে আরেক রকম। দ্রুত লিখতে গিয়ে লেখার 'স্টাইল' পরিবর্তন করে ফেলার দরকার নেই। এ সমস্যা এড়াতে দ্রুত লেখার অভ্যাসটা সব সময়ই করতে হবে।

LAfsOqX.jpg


সবচেয়ে বেশি যা প্রয়োজন, তা হলো মনোযোগ আর ইচ্ছা। লেখার সময় মনোযোগটা যেন লেখার দিকেই থাকে। আবার সুন্দর করে লেখার ইচ্ছাটাও থাকা জরুরি।

বাজে হাতের লেখাকে আমরা অনেক সময় বলি 'কাকের ঠ্যাং বকের ঠ্যাং'। আবার সুন্দর হাতের লেখার উপমা দিতে গিয়ে বলি, 'মুক্তার মতো ঝরঝরে'! তুমি কি কাক-বক নাকি মুক্তার দলে থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত তুমিই নাও। হাতের লেখা সুন্দর করাটা কিন্তু খুব কঠিন নয়, শুধু ইচ্ছেটাই দরকার। রাস্তায় যে লোকেরা ব্যানার লেখেন, তাঁদের লেখা কত্ত সুন্দর! অথচ খোঁজ নিলে জানতে পারবে, তাঁদের অনেকেরই পড়ালেখার দৌড় খুব কম। এমন একজন ব্যানার লেখকের সঙ্গে একবার পরিচয় হয়েছিল, যিনি পড়তে জানেন না! অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, 'আপনি তাহলে লেখেন কীভাবে?' তাঁর জবাব ছিল, 'দেইখা দেইখা আঁইকা ফালাই!'

তাই তো, লেখাও তো এক রকম আঁকা! সুন্দর হোক আমাদের লেখা-আঁকা।

লেখক: মো. সাইফুল্লাহ
 

Users who are viewing this thread

Back
Top