What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

প্রলেকটিন হরমোন কেন বাড়ে (1 Viewer)

miS6fM1.jpg


কপাল ও চোখের পেছনে আমাদের মস্তিষ্কের ভেতর ছোট্ট একটা গ্রন্থি আছে। নাম পিটুইটারি। আমাদের মাস্টারগ্ল্যান্ড, মানে হরেক রকম হরমোন নিঃসরণের চাবিকাঠি আছে এতে। এই গ্রন্থি থেকে আরও নানা রকম হরমোনের মতো নিঃসৃত হয় প্রলেকটিন হরমোনও, যা সন্তান জন্মের পর বুকের দুধ তৈরি ও নিঃসরণের জন্য দরকার হয়। নতুন মায়েদের রক্তে এই প্রলেকটিন হরমোনের মাত্রা বেশি থাকে। তাই বুকের দুধ পান করানো মায়েদের মাসিক বন্ধ থাকে বেশ কিছুদিন। এটাকে প্রাকৃতিক জন্মনিয়ন্ত্রণও বলে। কারণ, এ সময় মেয়েদের মাসিক হয় না, ডিম্বস্ফুটনও হয় না। ফলে আবার সন্তান ধারণের সম্ভাবনা কম থাকে।

কিন্তু কিছু কারণে বুকের দুধ পান করানো মা ছাড়াও কোনো মেয়ের যদি প্রলেকটিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, তবে দেখা দেয় বিপত্তি। সে ক্ষেত্রে সেই মেয়ের মাসিক বন্ধ বা অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে, ডিম্বস্ফুটন বন্ধ হওয়ার কারণে বন্ধ্যত্ব দেখা দিতে পারে, স্তনে টনটনে ব্যথা হতে পারে, এমনকি নতুন মায়েদের মতো দুধ বা তরল নিঃসৃত হতে পারে।

প্রলেকটিন হরমোন বেড়ে যাওয়ার একটি অন্যতম কারণ হলো নানা ধরনের ওষুধ সেবন। অল্প বয়সী তরুণী–কিশোরীদের যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে তাই যুক্তিযুক্ত কারণ থাকতে হবে। কারণ, সাধারণভাবে ব্যবহৃত অনেক ওষুধই প্রলেকটিন হরমোন বাড়িয়ে দিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে।

সাধারণ গ্যাস্ট্রিক বা বমির ওষুধ ডমপেরিডন থেকে শুরু করে ঘুমের ওষুধ, বিষণ্নতার ওষুধ, মানসিক রোগের বেশ কিছু ওষুধ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ ভেরাপামিল, কখনো কখনো জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়িও প্রলেকটিন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়তে পারে বা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হতে পারে। যদি ওষুধটি বন্ধ বা পরিবর্তন করা সম্ভব না হয় (যেমন অ্যান্টিসাইকোটিক), তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ওষুধ ছাড়া আর যে কারণে প্রলেকটিন হরমোন বাড়ে, তার মধ্যে অন্যতম হলো পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার প্রলেকটিনোমা। পিটুইটারির এমআরআই করে এটি শনাক্ত করা হয়। সাধারণ প্রলেকটিনোমা ওষুধেই চিকিৎসা করা যায়। টিউমার অনেক বড় হয়ে গেলে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে। এ ছাড়া মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ব্যায়াম, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদি কারণেও এই হরমোন বাড়তে পারে।

প্রলেকটিন হরমোনের অসামঞ্জস্য নারীর অনিয়মিত মাসিক ও বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ। অনিয়মিত বা বন্ধ থাকা মাসিকের ক্ষেত্রে আপনি কী কী ওষুধ সেবন করেন, অথবা গত কয়েক মাসে সেবন করেছেন, তা অবশ্যই চিকিৎসককে অবহিত করতে হবে। আমাদের দেশে ডমপেরিডন, এমিট্রিপটাইলিন, কুইটাপিন–জাতীয় ওষুধ অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই দোকান থেকে কিনে না বুঝেই খেতে থাকেন।

পুরুষদের প্রলেকটিন হরমোন বাড়লে বন্ধ্যত্ব, শুক্রাণু গঠনে সমস্যা, যৌন মিলনে অপারগতা, স্তন থেকে তরল নিঃসরণ ইত্যাদি উপসর্গ হতে পারে।

লেখক: ডা. তানজিনা হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top