হঠাৎ পেটব্যথা হতে পারে নানা কারণেই। শিশু ও তরুণদের তলপেটে ব্যথার অন্যতম কারণ অ্যাপেন্ডিসাইটিস। তবে তলপেটের ডান দিকে ব্যথা হলেই যে তা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা, তা নয়। তাই সাধারণ পেটব্যথার কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে জানা থাকা ভালো। প্রাথমিক লক্ষণ থেকে রোগ সম্পর্কে বেশ খানিকটা ধারণা পাওয়া যায়।
অ্যাপেন্ডিসাইটিস
পরিপাকতন্ত্রের একটি ছোট নলের মতো অংশের নাম অ্যাপেন্ডিক্স, যা থাকে তলপেটের ডান দিকের অংশে। কোনো কারণে এর প্রদাহ হলে বলা হয় অ্যাপেন্ডিসাইটিস। প্রদাহ কেন হয়? অ্যাপেন্ডিক্সের ভেতর মল বা কৃমি আটকে গিয়ে এর মুখ বন্ধ হয়ে প্রদাহ হতে পারে, সংক্রমণের কারণেও হতে পারে প্রদাহ। খাবারের সঙ্গে কোনো বীজজাতীয় শক্ত বস্তু ঢুকলেও এখানে আটকে গিয়ে প্রদাহ হতে পারে। আইবিএস এবং অন্য কিছু কারণও থাকে।
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের সাধারণ লক্ষণ
- তলপেটের ডান দিকে হঠাৎ ব্যথা অনুভূত হওয়া, যা সাধারণত শুরু হয় নাভির চারপাশ থেকে। পরে তলপেটে অনুভূত ও স্থির হয় এই ব্যথা। হাঁটাচলা করলে বা কাশি দিলে ব্যথা বাড়ে। তলপেটের ডান পাশে হাত দিয়ে চাপ দিলেও ব্যথা বাড়ে।
- বমি হওয়া বা বমি ভাব থাকা
- জ্বর থাকা
- কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা পাতলা পায়খানা
- পেট ফেঁপে যাওয়া
এসবের পাশাপাশি ক্ষুধামান্দ্য এবং স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে অনীহা দেখা যায় শিশুদের ক্ষেত্রে। শিশুদের ক্ষেত্রে অভিভাবকেরা লক্ষ করতে পারেন, শোয়ার সময় শিশু ডান পা কোনো নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে, অন্যথায় তার অস্বস্তি হচ্ছে। ডান পায়ের ভঙ্গিটা একটু অস্বাভাবিক মনে হতে পারে। তবে প্রত্যেক রোগীর ক্ষেত্রে সব লক্ষণ না-ও থাকতে পারে।
কী করবেন
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সে অনুযায়ী শুরু করতে হবে চিকিৎসা। সাধারণত শল্যচিকিৎসাই মূল চিকিৎসা। যত দ্রুত অস্ত্রোপচার করে ফেলে দেওয়া যায় এটি, তত এড়ানো যাবে জটিলতা। সহজ হবে সেরে ওঠার পথটা। তা না হলে অ্যাপেন্ডিক্সে পচন ধরা, লাম্প বা চাকা হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। করোনাকালে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ নিয়ে কিছু দ্বিধা কাজ করছে অনেকের মধ্যে। কিন্তু এটি একটি জরুরি শল্যচিকিৎসা। তাই দ্বিধায় ভুগবেন না।
* লেখক: ডা. সাদিয়া আফরিন | সহকারী অধ্যাপক, সার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল