What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

করোনার টিকা কারা নেবেন, কীভাবে নেবেন (1 Viewer)

5bZOsHX.jpg


চিকিৎসাবিজ্ঞান বলে, কোনো জনগোষ্ঠীর ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষকে নির্দিষ্ট একটি সংক্রামক রোগের টিকা দেওয়া গেলে ওই জনগোষ্ঠীর প্রায় সব সদস্য একই রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা লাভ করে। একে বলা হয় হার্ড ইমিউনিটি বা কমিউনিটি ইমিউনিটি।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া চলছে। সরকার নির্ধারিত শর্ত ও বয়সসীমা মেনে সুরক্ষা
ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের মাধ্যমে সহজেই টিকা গ্রহণ করতে পারছে মানুষ। অন্যদিকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়েও 'স্পট রেজিস্ট্রেশন' কিংবা গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হলে সবার টিকাদান নিশ্চিতকরণে নিঃসন্দেহে সাফল্যের সুবাতাস ছড়াবে।

বাংলাদেশে টিকার প্রাপ্যতা থাকলেও কে কোন টিকা নেবেন, কোন সময় টিকা নিতে পারবেন ও কোন সময় নিতে পারবেন না কিংবা টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার কত দিন পর দ্বিতীয় ডোজ অবশ্যই নিতে হবে অথবা প্রতিবছর টিকার বুস্টার ডোজ নিতে হবে কি না—এসব নিয়ে নানা প্রশ্ন মানুষের মনে। আছে নানা বিভ্রান্তিও। কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে নেওয়া যাক।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে কি টিকা নিতে পারবেন

আক্রান্ত কারও করোনা নেগেটিভ হওয়ার চার সপ্তাহ বা এক মাস পর কোনো ধরনের তীব্র করোনা–পরবর্তী জটিলতা না থাকলে টিকা নিতে পারবেন।

একবার করোনায় আক্রান্ত হলে আর টিকা নিতে হবে না, এই ধারণার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ, করোনা হলে শরীরে প্রাকৃতিক যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা বেশি দিন সুরক্ষা দেয় না। সে জন্য দ্বিতীয়বার, এমনকি তৃতীয়বার করোনা হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই করোনা থেকে সেরে উঠে চার সপ্তাহ পর টিকা নিয়ে নিতে হবে।

ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরা কি টিকা নিতে পারবেন?

যাঁরা দীর্ঘদিন ক্যানসারে ভুগছেন কিংবা ক্যানসারের জন্য চিকিৎসা নিচ্ছেন (কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি ও অন্যান্য), তাঁরা যেকোনো ধরনের করোনা টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। ক্যানসার আক্রান্ত রোগী করোনায় আক্রান্ত হলে অন্যান্য রোগীর তুলনায় মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাঁদের টিকা নেওয়া উচিত।

rusPaBq.jpg


যাঁরা হৃদ্‌রোগে ভুগছেন

যাঁদের হৃৎপিণ্ডে রিং পরানো হয়েছে বা হৃৎপিণ্ডে বাইপাস সার্জারির ইতিহাস রয়েছে কিংবা অন্যান্য হৃদ্‌ জটিলতায় ভুগছেন, তাঁদেরও টিকা গ্রহণে কোনো বাধা নেই। তবে টিকা গ্রহণের আগে হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

দীর্ঘমেয়াদি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন যাঁরা

যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন, যেমন লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যানসার, ফ্যাটি লিভার ইত্যাদি তাঁদের টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। তবে এই মুহূর্তে অ্যাকিউট জন্ডিসে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কিডনি রোগী

যাঁরা বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে ভুগছেন, তাঁদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে কম। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে টিকা দেওয়া অত্যাবশ্যকীয়। কিডনি রোগী, এমনকি ডায়ালাইসিস চলছে, এমন রোগীও টিকা নিতে পারবেন। তবে টিকা গ্রহণের আগে কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা

গর্ভধারণের ১৪ থেকে ৩৩ সপ্তাহের মধ্যে যেকোনো ধরনের কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন (সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে)। তবে গর্ভধারণের সময় অন্তঃসত্ত্বা মায়ের অন্য কোনো রোগ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রেখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টিকা গ্রহণ করা যাবে। অন্তঃসত্ত্বা মা করোনা টিকা গ্রহণ করলে গর্ভের শিশুও সুরক্ষা পাবে।

দুগ্ধদানকারী মা কি টিকা নিতে পারবেন?

অ্যাস্ট্রাজেনকা, ফাইজার, সিনোফার্ম সব ধরনের টিকাই সন্তানকে দুগ্ধদানকারী মায়েদের দেওয়া হচ্ছে অনেক দেশে। এতে কারও কোনো সমস্যা বা ক্ষতি হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি। বরং মায়ের কাছ থেকে বুকের দুধের মাধ্যমে অ্যান্টিবডি শিশুর শরীরে প্রবেশ করে শিশুকেও সুরক্ষা দেবে। পাশাপাশি মায়ের ও শিশুর ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আর সবার মতো টিকার স্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। মেয়েদের পিরিয়ড চলার সময়ে করোনা টিকা নিতেও কোনো বাধা নেই।

অ্যালার্জি আছে যাঁদের

যাঁদের প্রকট অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে ও যাঁদের টিকার কোনো একটি উপাদানে অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে কিংবা আগে কোনো টিকা নিতে গিয়ে অ্যালার্জিজনিত জটিলতায় পড়েছেন, তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে করোনার টিকা নিতে হবে।

ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ

যাঁদের ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাঁরা তা নিয়ন্ত্রণে এনে টিকা গ্রহণ করতে পারবেন। করোনা জটিলতা ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বেশি। তাই এমন রোগীদের দ্রুত রক্তচাপ সুগার নিয়ন্ত্রণে এনে টিকা নিতে হবে।

শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা

অ্যাজমা বা হাঁপানি, সিওপিডি, যক্ষ্মাসহ যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রের জটিলতায় ভুগছেন, তাঁরাও যেকোনো ধরনের করোনা টিকা গ্রহণ করতে পারবেন।

যে ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে

  • টিকা নেওয়ার পর মৃদু বা সামান্য জ্বর হতে পারে। হতে পারে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা বা মাথা ঝিমঝিম করার মতো সমস্যা।
  • টিকা দেওয়ার স্থানে অনেকের ব্যথা হয় বা ফুলে যায়। অনেকের গায়ে ব্যথা হয়, ক্লান্তিবোধও করেন কেউ কেউ। হতে পারে বমি বমি ভাব। অ্যালার্জিজনিত সমস্যার কথাও বলেন অনেকে।
  • এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে ভয় বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ গ্রহণেই দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
  • টিকা নেওয়ার পর টিকাদানের স্থানে ন্যূনতম ৩০ মিনিট সময় অপেক্ষা করতে হবে। কোনো তীব্র জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

জেনে রাখুন

করোনার টিকা নিলেই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকছে না, এমন ধারণা ঠিক নয়। তবে যাঁরা টিকা নিয়েছেন, তাঁদের করোনা জটিলতা অনেক কম, আর তাঁদের মধ্যে তীব্র করোনার হার বা মৃত্যুহার নেই বললেই চলে।

দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও মহামারি অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, মাস্ক পরতে হবে। মনে রাখবেন, দেশের ৮০ শতাংশ জনসংখ্যা টিকা কার্যক্রমের আওতায় না আসা পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নন।

* লেখক: ডা. আরিফ মাহমুদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও লেখক: ডা. সামিউল আউয়াল, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ঢাকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top