চুলের প্রয়োজনেই চুল অনুযায়ী সঠিক শ্যাম্পু বেছ নিন।
চুল ভালো থাকে যত্ন নেওয়ার ওপর। নিয়ম করে তেল মালিশ ও শ্যাম্পু করার পরেও অনেকের অভিযোগ, চুলের মান ভালো নেই। ব্যবহৃত তেলের মান যেমন ভালো হওয়া দরকার, তেমনি চুল অনুযায়ী সঠিক শ্যাম্পু বেছে নিচ্ছেন কি না, সেটা দেখাও জরুরি। তৈলাক্ত চুলে যদি স্বাভাবিক চুলের শ্যাম্পু ব্যবহার করা হয় দিনের পর দিন, ফলাফল আসবে শূন্য। একইভাবে শুষ্ক চুলে যদি শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার না করেন, তাহলে চুল থাকবে রুক্ষ। রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি জানালেন চুলে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনারের ব্যবহার সম্পর্কে।
শুষ্ক চুলের জন্য
তেল গরম করে চুলে মালিশ করুন, মডেল: লাবণ্য
ময়েশ্চারাইজার নেই—এমন শ্যাম্পু শুষ্ক চুলে ব্যবহার করবেন না। ওমেগা থ্রি আছে—এমন ময়েশ্চারাইজারসমৃদ্ধ শ্যাম্পু বেছে নিন। প্রোটিনযুক্ত শ্যাম্পু রুক্ষ চুলের জন্য ভালো। রুক্ষ চুলের জন্য শ্যাম্পু করার আগে তেল গরম করে মালিশ করুন। এক থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা। এতে শ্যাম্পু করার পর চুল রুক্ষ হয়ে যাবে না। ধোয়ার আগে অনেকেই চুল আঁচড়ে নেন না। এর কারণে শ্যাম্পু করার সময় চুল পড়ে যেতে পারে। চুলে জট ছাড়িয়ে এরপর শ্যাম্পু করুন।
তৈলাক্ত চুলে
এ ধরনের চুলে প্লেন শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। দেখতে স্বচ্ছ হলে বুঝবেন প্লেন শ্যাম্পু। ডিটারজেন্ট আছে—এমন শ্যাম্পু বা ঘন ক্রিমের মতো শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। তৈলাক্ত চুল শ্যাম্পু করার পর নেতিয়ে থাকে। শ্যাম্পুর সঙ্গে সামান্য বেকিং পাউডার মিশিয়ে নিতে পারেন। চুলের গোড়ার অতিরিক্ত তেল চুষে নেবে। চুল যদি তৈলাক্ত হয় বা ধুলোবালু লেগে তেলচিটে হয়ে গেলে শ্যাম্পু করার ধরনও সেই অনুযায়ী হওয়া উচিত। তৈলাক্ত চুলের জন্য ব্যবহার করতে পারেন তেলবিহীন শ্যাম্পু। তবে শ্যাম্পু করার আগে চুল ভালো করে ভিজিয়ে নেওয়া দরকার। শ্যাম্পু করার পর হালকা গরম পানিতে মাথা ধুয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে আবার ঠান্ডা পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে নেওয়া উচিত।
সাধারণত, তৈলাক্ত চুল হলে সপ্তাহে তিন থেকে চারবার শ্যাম্পু করা উচিত। অতিরিক্ত শ্যাম্পু বা রোজ শ্যাম্পু করলে অনেক সময় চুলের স্বাভাবিক তেল নষ্ট হয়ে যায়। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। এ ছাড়া তৈলাক্ত চুলের জন্য ড্রাই শ্যাম্পুও পাওয়া যায়।
শ্যাম্পু করার সময় আলতোভাবে ঘষুন
চুল কোঁকড়া হলে
ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু বেছে নিন। কোঁকড়ানো চুলের জন্য অ্যালকোহল বা এসএলএস–বিহীন শ্যাম্পু বেছে নেওয়া উচিত। এতে চুলের কোঁকড়া ভাব বজায় থাকে। শ্যাম্পু করার সময় চুল দুই বা তিন অংশে ভাগ করে নিন। আঙুলের সাহায্যে প্রথমে চুলের গোড়া থেকে শুরু করে সমগ্র চুলে শ্যাম্পু করে নিন। কন্ডিশনার নির্বাচন সঠিক হওয়া উচিত। চুল যদি কোঁকড়া হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রুক্ষ হয়, তবে কন্ডিশনারের সঙ্গে অল্প দই মিশিয়ে নিলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। যদি অতিরিক্ত ঘন ও কোঁকড়া চুল হয়, তবে সপ্তাহে এক থেকে দুবার শ্যাম্পু করলে ভালো। প্রয়োজন মনে হলে সপ্তাহে তিনবারও শ্যাম্পু করতে পারেন। তবে কন্ডিশনার ব্যবহার জরুরি। সপ্তাহে দুবার জলপাই তেল বা কাস্টার অয়েল লাগান। সকালে শ্যাম্পু করুন। চুলের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।
চুল ধোওয়ার আগে জট ছাড়িয়ে নিন
স্বাভাবিক চুলের জন্য
চুল এ ধরনের হলে মাইল্ড শ্যাম্পু বেছে নিন। এটি চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখবে। মাথার ত্বকে র্যাশ ও চুলকানি হবে না।
পাতলা চুলে
পাতলা চুল সহজে নেতিয়ে যায়। লেবু ও ফলের রসসমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ফলের অ্যাসিড চুলের তেল ও ময়লা পরিষ্কার করে, চুলের ভলিউম বাড়ায়।
বর্ষায় চুল থাকুক ঝলমলে
চুল রঙিন হলে
রং করা চুলের ত্বক পরিষ্কার করার দিকে বিশেষ নজর দিন। এ ধরনের চুলের জন্য আলাদা শ্যাম্পু বাজারে পাওয়া যায়। সেটাই ব্যবহার করুন।