What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ব্যথা উপশমে আকুপ্রেশার (1 Viewer)

ব্যথা কমানোর বিকল্প চিকিৎসাপদ্ধতি আকুপ্রশার। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে করা যেতে পারে দিনে ও রাতে। তাতে সমস্যা সমাধান হবে। উপশম হবে ব্যথার।

AbpHBZ9.jpg


আমাদের সমাজে এখন প্রধান ব্যাধি শরীরজুড়ে ব্যথা; কারও কোমরব্যথা, কারও হাঁটুব্যথা কিংবা ঘাড়, গোড়ালি, পিঠ, পেশির ব্যথা। তার সঙ্গে কমন একটি ব্যথা হচ্ছে মাথাব্যথা। ব্যথা কমানোর জন্য ভূরি ভূরি ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া আর নানা ধরনের প্রলেপ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা নানা নামের মলম। যতক্ষণ ওষুধের কার্যক্ষমতা আছে, ততক্ষণ ভালো। কিন্তু সেটা কমে গেলে ব্যথা আবার ফিরে আসে। মানুষ অধৈর্য হয়ে পড়ে আর ব্যথা বাড়তে থাকে। নানা ধরনের ব্যায়াম করার চেষ্টায়ও কমতি থাকে না। কিন্তু ব্যথা থেকেই যায়।

ব্যথার জন্য প্রচলিত চিকিৎসা ছাড়াও বিকল্প চিকিৎসা আকুপ্রেশার দিয়ে ব্যথা কমানো যায়। এর ভালো দিক হচ্ছে নিজে নিজেই ব্যথা কমানোর আকুপ্রেশার করা যায়। শুধু হাত দিয়ে নিজেই আকুপ্রেশার করে অনেক জটিল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব!

কোমর ব্যথার নানা কারণ

আমরা সাধারণত দেখে থাকি মেরুদণ্ডের মাংসপেশি, লিগামেন্ট মচকানো বা আংশিক ছিঁড়ে যাওয়া, মেরুদণ্ডের মধ্যবর্তী ডিস্ক সমস্যা, ডিস্কের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে কোমরব্যথা হয়ে থাকে। চলাফেরা, খুব বেশি ভারী ওজন তোলা, মেরুদণ্ডের অতিরিক্ত নড়াচড়া, একটানা বসে বা দাঁড়িয়ে কোনো কাজ করা, কম্পিউটার ও মোবাইল অধিক হারে ব্যবহার, মেরুদণ্ডে আঘাত পাওয়া, সর্বোপরি কোমরের অবস্থানগত ভুলের জন্য এ ব্যথা দেখা যায়।

vOfmpE4.jpg


অন্যান্য কারণের মধ্যে আছে বয়সজনিত মেরুদণ্ডের ক্ষয় বা বৃদ্ধি, অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা গেঁটে বাত, অস্টিওপোরেসিস, এনকাইলজিং স্পন্ডেইলাইটিস, মেরুদণ্ডের স্নায়বিক সমস্যা, টিউমার, ক্যানসার, বোন টিবি, কোমরের মাংসে সমস্যা, বিভিন্ন ভিসেরার রোগ বা ইনফেকশন, বিভিন্ন স্ত্রীরোগজনিত সমস্যা, মেরুদণ্ডের রক্তবাহী নালির সমস্যা, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, অতিরিক্ত ওজন প্রভৃতি।

কোমরব্যথার লক্ষণ

কোমরের ব্যথা আস্তে আস্তে বাড়তে পারে বা হঠাৎ প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। নড়াচড়া বা কাজকর্মে ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। ব্যথা কোমরে থাকতে পারে বা কোমর থেকে পায়ের দিকে নামতে পারে অথবা পা থেকে কোমর পর্যন্ত উঠতে পারে। অনেক সময় কোমর থেকে ব্যথা মেরুদণ্ডের পেছন দিক দিয়ে মাথা পর্যন্ত উঠতে পারে। রোগী অনেকক্ষণ বসতে বা দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। ব্যথার সঙ্গে পায়ে শিন-শিন বা ঝিন-ঝিন জাতীয় ব্যথা নামতে বা উঠতে পারে, হাঁটতে গেলে পা খিঁচ ধরে আসে বা কোমর আটকে (লক) যেতে পারে, ব্যথা দুই পায়ে বা যেকোনো এক পায়ে নামতে পারে। অনেক সময় বিছানায় শুয়ে থাকলে ব্যথা কিছুটা কমে আসে। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে রোগীর কোমর ও পায়ের মাংসপেশির ক্ষমতা কমে আসে এবং শুকিয়ে যেতে পারে, সর্বোপরি রোগী চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

মুক্তি দিতে পারে আকুপ্রেশার।


আকুপ্রেশার হচ্ছে শরীরের অভ্যন্তরে প্রবহমান জৈব বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত একটি চিকিৎসাপদ্ধতি; রোগী নিজেই নিজের চিকিৎসা করতে পারবেন শুধু নির্দিষ্ট কিছু পয়েন্টে চাপ দিলেই ঠিক নির্দিষ্ট স্থানের ব্যথা কমে আসে। এখনো এটা নিয়ে বিস্তর ট্রায়াল হয়নি, তবে নানা উপায়ে স্বীকার করা হচ্ছে, আকুপ্রেশার কার্যকর একটি চিকিৎসাপদ্ধতি বিশেষ করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত পেইন ম্যানেজমেন্ট থেরাপি। উন্নত বিশ্বে এখন বিভিন্ন থেরাপি সেন্টারে আকুপ্রেশার স্থান করে নিয়েছে।

কীভাবে আকুপ্রেশার শুরু করব?

oqhisa6.jpg


আপনার শরীরে যে ব্যথাই থাকুক, দুহাতের তালুতে দুই মিনিট ঘষতে হবে যাতে করে হাতের তালু দুটো গরম হয়ে যায়, তারপর গরম হাত দুটো এক হাত অন্য হাতে চাপ দিতে হবে, এতে সময় নেবেন তিন মিনিট। এবার কোমরের ব্যথার জন্য তর্জনী বা ইনডেক্স ফিঙ্গারের উপরিভাগে কবজি থেকে আঙুলের নখ পর্যন্ত আস্তে আস্তে করে চাপ দিতে হবে, বিশেষ করে থাম্ব বা বুড়ো আঙুল আর তর্জনী যেখানটা মিলেছে সেটায় চাপ দিলে ব্যথা অনুভব হবে, যেখানে ব্যথা হবে সেখানে নিয়মিত ১০০ বার চাপ দিতে হবে। একটি চাপের সঙ্গে আরেকটি চাপের মধ্যে দুই সেকেন্ড বিরতি দিয়ে চাপ দিতে হবে। ঠিক ছবিতে দেওয়া চিহ্নে চাপ দিতে হবে। দুই হাতে একই নিয়মে আকুপ্রেশার করতে হবে, সারা দিনে দুবার খালি পেটে নিয়মিত আকুপ্রেশার করলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।

Ru9cOhb.png


যাদের হাঁটুতে ব্যথা আছে তারা কোমরের পয়েন্ট ছাড়াও কড়ে আঙুলের নখের সাইড থেকে কবজির হাড় পর্যন্ত পাশ দিয়ে বৃদ্ধ আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ব্যথা পাওয়া যাবে, যা হাঁটুর পয়েন্ট হিসেবে ধরা হয়, বিশেষ করে কবজির উপরিভাগে এবং ঠিক কড়ে আঙুলের শুরু হয়েছে, এমন স্থানে চাপ দিলে কাঁধে ব্যথা আছে বলে ধরে নেওয়া হয়। ঠিক এই সাইডে ওপর থেকে নিচে প্রতিটি স্থানে চাপ দিয়ে নামতে হবে, এভাবে ১০০ বার করে দুই হাতে চাপ দিলে হাঁটু, হাতের কনুই ও কাঁধের ব্যথা কমে আসবে। এটাও দুই হাতে সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে শোয়ার আগে নিয়মিত আকুপ্রেশার করতে হবে।

আকুপ্রেশার করার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হয়

LQMQHZW.jpg


যেহেতু আক্রান্ত হাতও আপনার, মুক্তির হাতও আপনার, তাই বলে সারা দিন হাত চাপা যাবে না। নিয়মিত ডোজের মতো করে সকালে খালি পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে উত্তম সময়। অফিসে যাওয়া এবং আসার সময় গাড়িতে বসে আকুপ্রেশার করতে পারবেন। দিনে দুবেলার বেশি নয় এবং সপ্তাহে ছয় দিন আকুপ্রেশার করুন এক দিন বিরতি দিন, তাতে উপকার বেশি পাবেন। নিয়মিত আকুপ্রেশার করলে হাত ঝিনঝিন করা, অবশ হয়ে যাওয়া ও স্নায়ুজনিত সমস্যায় অনেক উপকারে আসে।
প্রাকৃতিক নিয়মে ব্যথা কমানোর জন্য আদাজল উত্তম পথ্য
প্রতিদিন দুবেলা খাওয়ার আধঘণ্টা পরে এক কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ আদার রস দিয়ে জ্বাল দিতে হবে, সেই আদাজল চায়ের মতো করে খেলে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, সেই সঙ্গে হজমের সমস্যারও উপকার হয়।
এই আধুনিক যুগেও কোমরব্যথা একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্বাস্থ্য সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।

লেখক: আলমগীর আলম | খাদ্য, পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ।
 
নিজে নিজে আকুপ্রেশার না করাই ভালো।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top