What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

থ্যালাসেমিয়ার উপসর্গ (1 Viewer)

CwzKbMs.jpg


থ্যালাসেমিয়া একধরনের বংশগত রক্তরোগ। এটি জিনবাহিত রোগ, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হয়। রক্তের লোহিত রক্তকণিকায় থাকে হিমোগ্লোবিন, যার কাজ হলো শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করা। এই হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় আলফা চেইন ও বিটা চেইন নামক দুই রকম চেইনের সমন্বয়ে। এর কোনোটায় সমস্যা হলে হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন ব্যাহত হয়। তৈরি হয় ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন। স্বাভাবিক লোহিত কণিকার আয়ুষ্কাল ১২০ দিন। ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিনের কারণে লোহিত কণিকার আয়ুষ্কাল কমে যায় এবং লোহিত কণিকাগুলো সহজেই ভেঙে যায়। ফলে শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

থ্যালাসেমিয়া প্রধানত দুই প্রকার। আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বিটা থ্যালাসেমিয়া।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে আলফা থ্যালাসেমিয়া তীব্র হয় না। অনেক সময় উপসর্গও বোঝা যায় না, রোগী স্বাভাবিক জীবন যাপন করে। তবে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগীই বিটা থ্যালাসেমিয়ায় ভুগে থাকে। এই থ্যালাসেমিয়া আবার দুই রকম হতে পারে। যারা বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনরে আক্রান্ত, তাদের থ্যালাসেমিয়ার ক্যারিয়ার বা বাহক বলা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এদের শরীরে থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় না। অনেকে অজান্তেই সারা জীবন এই রোগ বহন করে চলে। কখনো মৃদু রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। অপরটি হলো থ্যালাসেমিয়া মেজর। মা ও বাবা উভয়ই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হলে শিশুর থ্যালাসেমিয়া মেজরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে শতকরা ২৫ ভাগ। বাহক হওয়ার ঝুঁকি থাকে শতকরা ৫০ ভাগ।

বুঝবেন যেভাবে

থ্যালাসেমিয়ার উপসর্গগুলো মূলত রক্তস্বল্পতাজনিত উপসর্গ। যেমন ক্লান্তি, অবসাদ, শ্বাসকষ্ট, ফ্যাকাশে ত্বক ইত্যাদি। রক্ত অধিক হারে ভেঙে যায় বলে জন্ডিস হয়ে ত্বক হলুদ হয়ে যায়। প্রস্রাবও হলুদ হতে পারে। প্লীহা বড় হয়ে যায়। যকৃৎও বড় হয়ে যেতে পারে। অস্থির ঘনত্ব কমে যেতে পারে। নাকের হাড় দেবে যায়, মুখের গড়নে পরিবর্তন আসে। শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। দিনে দিনে জটিলতা বাড়তে থাকে।

থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসারও আছে প্রতিক্রিয়া। এসব রোগীকে ঘন ঘন রক্ত দিতে হয় বলে শরীরে আয়রনের মাত্রা বাড়তে থাকে। এই বাড়তি আয়রন জমা হয় হৃদ্‌যন্ত্র, যকৃৎ ও অগ্ন্যাশয়ে। অতিরিক্ত আয়রন জমায় অঙ্গগুলো বিকল হতে শুরু করে। তা ছাড়া বারবার রক্ত পরিসঞ্চালনের কারণে রোগীর রক্তবাহিত সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

থ্যালাসেমিয়া শনাক্তে রক্তের হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস পরীক্ষা করা হয়। রক্তের রুটিন পরীক্ষা (সিবিসি) থেকে থ্যালাসেমিয়া সন্দেহ করা যেতে পারে। এ ছাড়া ডিএনএ পরীক্ষা করেও এই রোগ ধরা যায়।

চিকিৎসা

রক্ত পরিসঞ্চালনই থ্যালাসেমিয়ার মূল চিকিৎসা। শরীরে আয়রন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে আয়রন চিলেশনের ওষুধ দিয়ে তা কমাতে হয়। প্লীহা বড় হয়ে গেলে অস্ত্রোপচার করে তা কেটে ফেলতে হয়। এতে রক্ত গ্রহণের হার কিছুটা কমে আসে। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন হলো এ রোগের স্থায়ী চিকিৎসা। জিন থেরাপিও আরেকটি উন্নত চিকিৎসা।

প্রতিরোধে করণীয়

থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা খুব জরুরি। বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করে দুজন বাহকের মধ্যে বিয়ে এড়াতে পারলে থ্যালাসেমিয়ার হার কমানো সম্ভব। আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে নিরুৎসাহিত করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে সন্তান গর্ভে আসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে বিশেষ উপায়ে গর্ভস্থ শিশুর থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা করা যায়।

* ডা. গুলজার হোসেন, রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউট, ও হাসপাতাল, ঢাকা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top