![hWXk9Vo.jpg](https://i.imgur.com/hWXk9Vo.jpg)
নারীদের ঋতুচক্র একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। একে মেনোপজ বলে। এটি সাধারণত ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যেই হয়ে থাকে। মেনোপজ বা ঋতুচক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ার পর একজন নারীর আবারও রক্তক্ষরণ বা ঋতুস্রাব শুরু হলে তাকে বলে পোস্ট–মেনোপজাল ব্লিডিং। একে কিছুতেই অবহেলা করা চলবে না। কারণ, মেনোপজের পর আবারও রক্তক্ষরণ জরায়ু বা সারভিক্স ক্যানসারের অন্যতম উপসর্গ।
পোস্ট–মেনোপজাল ব্লিডিং কেন হতে পারে
● মেনোপজের পর যাঁরা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নিয়ে থাকেন, তাঁদের মাসিকের মতো রক্তক্ষরণ হতে পারে। ইস্ট্রোজেন ট্যাবলেট খেলে মেনোপজের পরও রক্তপাত হয়।
● অ্যাট্রোফিক অ্যান্ডোমেট্রাইটিস ও অ্যাট্রোফিক ভ্যাজাইনাইটিস একটা কারণ। মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ কমে যায়। তাই জরায়ুর বেশ কিছু পরিবর্তন হয়ে থাকে। এর ভেতরের অংশ বা অ্যান্ড্রোমেট্রিয়ামের পর্দা পাতলা হয়ে যায়। এ কারণে রক্তপাতও হতে পারে।
● অ্যান্ডমেট্রিয়াল বা সারভাইক্যাল পলিপ।
● ইস্ট্রোজেন উৎপন্নকারী ডিম্বাশয়ের টিউমার।
● ক্যানসার।
চিকিৎসক রোগের ইতিহাস, আল্ট্রাসনোগ্রামসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা–নিরীক্ষার মাধ্যমে পোস্ট–মেনোপজাল ব্লিডিংয়ের কারণ নির্ণয় করেন।
চিকিৎসা
● পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে জটিল কিছু পাওয়া না গেলে, সাধারণত জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। যেমন অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা ও নিয়মিত ব্যয়াম ইত্যাদি। পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনও জরুরি।
● হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে অন্তত ছয় মাস নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে।
● ক্যানসারজনিত সমস্যায় অস্ত্রোপচার করে জরায়ু ফেলে দিতে হতে পারে। অনেক সময় আবার মাইক্রোসার্জারি করলেও চলে। অস্ত্রোপচারের পর রোগের ধরন বুঝে কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি ও কিছু ক্ষেত্রে দুটির সমন্বয়ে চিকিৎসা দিতে হয়।
প্রতিরোধ
বয়স ৪০ বছরের আগেই জীবনযাপন পদ্ধতি ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। দৈনন্দিন ব্যস্ততার মধ্যেও নিজের জন্য কিছু সময় বের করতে হবে ও শরীরের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। মেনোপজের পর রক্তক্ষরণকে কিছুতেই অবহেলা করা চলবে না। এ ধরনের সমস্যায় যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
* ডা. শামীমা ইয়াসমিন: সহকারী রেজিস্ট্রার, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা