What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review বাণিজ্যিক ছবিতে শিক্ষণীয় বার্তা (1 Viewer)

lA5SRWr.jpg


পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছায়াছবি – বাপের টাকা
পরিচালক – এ জে মিন্টু
অভিনয় – ওমর সানী, মৌসুমী, আলমগীর, আনোয়ার হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, শারমিন, হুমায়ুন ফরীদি, সাইফুদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখযোগ্য গান – তোমাকে পেয়েছি আর কিছু চাই না আমি
মুক্তি – ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৮

একটা সময় ঢালিউডে পরিচালক এ জে মিন্টু মানেই ছিল সব ধরনের দর্শকের উপযোগী দেখার মতো ছবি। তিনি ছবির মেকানিজমকে সেভাবেই সাজাতেন যাতে সব দর্শক রিলেট করতে পারে তাঁর ছবির সাথে। তাঁর বেশিরভাগ ছবিই ছিল শিক্ষণীয়, বক্তব্যধর্মী এবং তিনি এ কাজটা বাণিজ্যিক ছবিতেই করতেন। অনেক দর্শক ভাবে বক্তব্যধর্মী ছবির জন্য অফট্র্যাকের ছবিই বেস্ট কিন্তু না বাণিজ্যিক ছবিতেও শিক্ষণীয় বার্তা দেয়া যায় এ জে মিন্টু সেটা প্রমাণ করেছেন তাঁর সময়ে।

'বাপের টাকা' এ জে মিন্টু পরিচালিত তাঁর পরিচালনা ক্যারিয়ারের শেষের দিকের ছবি। ছবিটি নির্মিত হয়েছে বখে যাওয়া সন্তানকে ঘিরে যার মধ্যে উচ্চবিত্তের বৈশিষ্ট্য আছে। যে টাকাকে দু'হাতে খরচ করে নিজের আধিপত্যপূর্ণ মানসিকতাকে দেখাতে চায়। যার কাছে অঢেল টাকা থাকা মানেই দেদারছে তা খরচ করা ভবিষ্যতের কথা না ভেবেই। এরকম সন্তানের বখে যাওয়ার পেছনে যে পরিবারের সূক্ষ্ম ভুলও থাকে তাকে ঠিকমতো পরিচর্যা না করার সেটাও 'বাপের টাকা' ছবিতে দেখানো হয়েছে। সেই সন্তানের চরিত্রে অভিনয় করেছে ওমর সানী।

আলমগীরের একমাত্র ছেলে ওমর সানী। ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছে বাবার প্রচণ্ড ব্যস্ততা। ছেলে ক্লাস টু-তে পড়লে বাবা আলমগীর নিয়ে আসে ক্লাস ওয়ানের বই এতটাই ব্যস্ততা তার। বাবার সমস্ত পরিশ্রম, সম্পদ ছেলের জন্য কিন্তু ছেলে সানী শুধু বাবার স্নেহ-ভালোবাসার কাঙাল যা সে পায় না। এসবই বড়বেলায় এসে বাবা-ছেলের মাঝে মন-মানসিকতার দ্বন্দ্ব তৈরি করে। সানী হয়ে ওঠে বেপরোয়া, অপচয়কারী। কিন্তু এর শেষ কোথায়?

NzrF7Xq.jpg


ছবি মূলত বাবা-ছেলেকেন্দ্রিক তাই আলমগীর ও ওমর সানীর মধ্যেই সিকোয়েন্স বেশি। ঘটনার ডালপালা মেলে ধরা থেকে ছবির ক্লাইমেক্স পর্যন্ত বাবা-ছেলের স্ক্রিন টাইম বেশি। সানীর সাথে আলমগীরের দূরত্ব তৈরি হলে আলমগীর এক সময় সানীকে বিষয়-সম্পত্তি লিখে দিয়ে বাড়ি ছেড়ে যায় ছেলেকে পরীক্ষা করার জন্য সে তা ধরে রাখতে পারে কিনা বা উন্নতি করতে পারে কিনা। সানী কি পারবে নাকি সব উড়িয়ে দেবে? বাবা কি ফিরবে? এগুলো গল্পের চুম্বকাংশ এবং জানার জন্য দর্শককে ছবিটি দেখতে হবে।

ছবির ক্লাইমেক্সের কিছু আগে একটা সময় সানী যখন তার পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিক তখনই ছবিতে একটা অসাধারণ ব্যাপার ঘটে যায়। বাবা ছেলেকে কীভাবে প্রোটেক্ট করে বা কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করতে পারে তারই একটা নমুনা দর্শক দেখতে পাবে এবং এমন দৃশ্য দেখার জন্য দর্শক মোটেও প্রস্তুত থাকবে না বিশেষ করে যাদের ছবিটি অদেখা। মূলত এ দৃশ্যটির জন্যই ছবিটি সেসময় আলোচিত ছিল। কারণ এ জে মিন্টু-র ছবি মানেই তখন একটা বড় কিছু ছিল।

ছবিতে প্রেম, বিরহ গল্পের প্রয়োজনে এসেছে। মৌসুমী ছিল সানীর বিপরীতে। মৌসুমীর চরিত্রটিও ছিল সানীর জন্য একটা শিক্ষণীয় চরিত্র কারণ তার জীবনে সবই ছিল হালকাভাবে নেয়া কিন্তু মৌসুমী তাকে ভালোই বেসেছিল তাই অপেক্ষা করে সে সানী যদি নিজেকে শুধরে ফিরে আসে। সানী কি ফিরবে তার জীবনে! তাদের রসায়ন বরাবরের মতোই সুন্দর ছিল যেহেতু প্রতিষ্ঠিত জুটি। কমেডির জায়গাটা ছিল হুমায়ুন ফরীদিকেন্ত্রিক। তাঁর চরিত্রটি মজার। তিনি যে ভয়ঙ্কর খলনায়কই শুধু হতে পারেন তা নয় কমেডিতেও অনন্য এ ছবির চরিত্রটি সেটাই বলে। তার সাথে সাইফুদ্দিনও দারুণ। ছবির গানের মধ্যে জনপ্রিয় গান 'তোমাকে পেয়েছি আর কিছু চাই না আমি।'

UbFZG0Q.jpg


অভিনয়ের কথা বললে আলমগীর ছবির সেরা পারফর্মার তাঁর অভিনয় অনবদ্য ছিল। তাঁর চোখ কথা বলে। কান্নার অভিনয়ে এবং ক্লাইমেক্সে তিনি অনবদ্য। কমেডি বেসিসে হুমায়ুন ফরীদি অসাধারণ। সানী ছবির নায়ক হলেও তার অভিনয় নিয়ে কিছু সমালোচনার জায়গা থেকেই যায়। তার স্লো ডায়লগ ডেলিভারি বিশেষ করে আলমগীরের সাথে সিরিয়াস সিকোয়েন্সগুলোতে দুর্বলতা স্পষ্ট। তারপরেও তার বেস্ট অফ তালিকা করলে এ ছবি থাকবে।

বাণিজ্যিক ছবিতেও সমাজ পরিবর্তনের বার্তা দেয়া যায়। 'বাপের টাকা' ছবিটি সে কাজ করেছে। পরিবারে সন্তানকে মা-বাবারা যেন পরিচর্যা সেইভাবে করেন যাতে সন্তান নিজেকে একা না ভাবে এবং ভবিষ্যতে সেটা যেন নেতিবাচক দিকে না যায়। এ জে মিন্টু বর্তমান বাণিজ্যিক ছবির বাজারে আরেকটা নেই তাই হয়তো আজকের ছবিতে শিক্ষণীয় এবং সর্বসাধারণের বিনোদনের জন্য খুবই কম হয়। 'বাপের টাকা' এক্ষেত্রে স্টাডি পার্ট।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top