What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পানিতে ডুবে গেলে (1 Viewer)

antiks

Member
Joined
Jan 31, 2019
Threads
27
Messages
101
Credits
4,029
(ডা. হিমেল ঘোষ
চিকিৎসা কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ডুমুরিয়া, খুলনা।)

বাংলাদেশে প্রতিবছর পানিতে ডুবে অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করে। আমাদের দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ হলো পানিতে ডুবে মৃত্যু। পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা বেশির ভাগই ঘটে পুকুর ও খালে, বিশেষত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এবং এক থেকে দুই বছর বয়সী শিশুদের। পানিতে ডুবে মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো ডুবন্ত ব্যক্তির শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া। পানি শ্বাসনালি ও ফুসফুসে ঢুকে যাওয়ার কারণেই মূলত এমনটি হয়ে থাকে। এ ছাড়া স্বরযন্ত্র ও শ্বাসনালির অনৈচ্ছিক পেশি সামান্য পানির সংস্পর্শে আসামাত্র তীব্র সংকোচনের কারণেও শ্বাসনালিতে বায়ু চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এভাবে দুই থেকে তিন মিনিট শ্বাস বন্ধ থাকলে মস্তিষ্কের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যায়। আর চার থেকে ছয় মিনিট যদি শ্বাসক্রিয়া বন্ধ থাকে, তাহলে মৃত্যু ঘটে। পানিতে ডুবে এই মৃত্যু কিন্তু প্রতিরোধযোগ্য। এ ধরনের মৃত্যু ঠেকাতে কিছু বিষয় মেনে চলা উচিত।


prothomalo-bangla%2F2020-10%2F476c3872-ce75-4e40-9fd0-5a573bcb59cf%2Fdepositphotos_1343889_stock_photo_help.jpg



কেউ পানিতে ডুবে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রাখুন। আশপাশের মানুষের সাহায্য চান এবং ডুবন্ত ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব পানি থেকে তুলে নিয়ে আসুন। পানি থেকে ডুবন্ত ব্যক্তিকে তোলার পরই তাঁকে সোজা করে শুইয়ে দিয়ে খেয়াল করতে হবে যে তিনি শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছেন কি না। তাঁর নাম ধরে ডাক দিয়ে দেখা যেতে পারে যে তিনি সাড়া দেন কি না। যদি শ্বাসপ্রশ্বাস না থাকে বা শ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়, তাহলে লক্ষ করতে হবে যে শ্বাসনালির কোথাও কিছু আটকে আছে কি না। এ জন্য আঙুল দিয়ে মুখের মধ্যে কাদা–মাটি বা কোনো অপদ্রব্য থাকলে তা বের করে দিতে হবে। এরপরও শ্বাস না নিলে মাথা টানটান করে ধরে মুখ হা করাতে হবে। এবার উদ্ধারকারী ব্যক্তিকে বুক ভরে শ্বাস নিতে হবে এবং ডুবন্ত ব্যক্তির নাক হাত দিয়ে চেপে মুখের সঙ্গে এমনভাবে মুখ লাগাতে হবে যেন কোনো ফাঁকা না থাকে। শিশু বা কম বয়সী কেউ ডুবে গেলে নাক-মুখ সম্পূর্ণ একসঙ্গে মুখের মধ্যে পুরতে হবে। এ অবস্থায় উদ্ধারকারী জোরে শ্বাস নিয়ে ডুবন্ত ব্যক্তির মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দিতে হবে। দেখতে হবে যে শ্বাস দেওয়ার ফলে ডুবন্ত ব্যক্তির পেট ফুলে যায় কি না। যদি পেট ফুলে যায়, তাহলে কৃত্রিম উপায়ে এভাবে শ্বাস দেওয়া ঠিকমতোই হচ্ছে। ডুবন্ত ব্যক্তি নিজে থেকে শ্বাস না নেওয়া পর্যন্ত এভাবে চালিয়ে যেতে হবে।



কৃত্রিমভাবে এভাবে শ্বাস প্রদানের পাশাপাশি হাত ধরে কিংবা গলার অ্যাডামস অ্যাপেলের এক পাশে হাত দিয়ে দেখতে হবে যে নাড়ির স্পন্দন আছে কি না। যদি না থাকে, তাহলে দ্রুত বুকের মধ্যভাগ থেকে সামান্য বাঁ পাশে হাত রেখে জোরে জোরে চাপ দিতে হবে যেন বুক বেশ খানিকটা দেবে যায়। এক থেকে দুই বছরের শিশু হলে তার বুক দুই হাত দিয়ে ধরে বুড়ো আঙুল দিয়ে চাপ দিতে হবে। এভাবে প্রতি ৩০ বার চাপ দেওয়ার পর আগের মতো দুইবার করে শ্বাস দিতে হবে। নাড়ির গতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ রকম চক্রাকারে চালাতে হবে।

আক্রান্ত ব্যক্তি দীর্ঘক্ষণ পানিতে থাকার কারণে শরীরের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। তাই তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য ওই ব্যক্তিকে পানি থেকে তুলে কাপড়চোপড় দিয়ে ভালো করে ঢেকে রাখা উচিত। রোগীর অবস্থা ভালো থাকলে অর্থাৎ শ্বাসপ্রশ্বাস নিলে ও হৃৎস্পন্দন চালু থাকলে তাকে কুসুম গরম দুধ, চা ইত্যাদি খেতে দেওয়া যেতে পারে।

আক্রান্ত ব্যক্তিকে পানি থেকে তুলে উল্টো করে শুইয়ে পেটে চাপ দিয়ে পানি বের করার চেষ্টা করা মোটেও ঠিক নয়। এতে ওই ব্যক্তি বমি করে ফেলতে পারে, যা আবার ফুসফুসে প্রবেশ করে পরবর্তী সময়ে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। আবার সাঁতারে পারদর্শী নয়, এমন কোনো ব্যক্তির ডুবন্ত মানুষকে উদ্ধার করতে যাওয়া উচিত নয়, কারণ এতে দুজনের জীবনই বিপন্ন হতে পারে। রোগীর ফুসফুস ও শ্বাসনালি থেকে পানি বের করার জন্য খুব বেশি সময় না নেওয়াই শ্রেয়। প্রাথমিক চিকিৎসা চলার পাশাপাশি রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top