What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review রিভিউ নয়, ব্যক্তিগত অনুভূতি: আগষ্ট ১৪ (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
Y6IfTue.jpg


অন্য সবার কথা জানিনা, তবে আমি বরাবরই নাটক/ সিনেমা/ ওয়েব সিরিজ দেখি পরিপূর্ণ বিনোদনের আশায়। একেক দর্শক একেকভাবে বিনোদন নিংড়ে নেন। আমার তরিকা হলো: একদম গোড়া থেকে শেষ অব্দি দেখতে হবে। একটি অনুভূতিও ফেলতে দেয়া যাবে না। যদি কোনো কারণে ৫ মিনিট মিস হয়ে যায়, আমি সেই সিনেমা পুনরায় দেখি টিকেট কেটে। বাড়িতে বসে সিনেমা দেখার সময় অনেকেই বলেন, "গান টেনে দাও"। আমি কখনোই এই টানাটানির সূত্রে নিজেকে ফেলিনা। গানের ভেতরের আবেগ, সেই চরিত্রগুলোর অনুভূতির নি:সৃত রস আমি আহরণ করতে চাই। এ কারণেই হয়তো একই নাটক/সিনেমা একাধিকবার (প্রয়োজনে শতবার) দেখতেও আমি ক্লান্ত হই না।

আমার কাছে গল্পের চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ সম্পূর্ণ প্যাকেজটা। এ কারণেই হয়তো হলিউডের 'স্টেপ মম'-এর রিমেক টেলিফিল্ম 'দুই প্রান্তে' (সুবর্ণা মুস্তাফা-বিপাশা হায়াত-হুমায়ূন ফরীদি) আমি প্রায় অর্ধশতবার দেখেছি। শুধুমাত্র অভিনয় আর সংলাপ দেখার জন্য। শরৎবাবুর 'দেবদাস'-এর কাহিনী বিকৃত করার পরও সঞ্জয় লীলা বানসালির 'দেবদাস' দেখেছি অসংখ্যবার। চেনা-জানা কাহিনী বার বার দেখা যায় তখনই, যখন পরিচালক সেই গল্পটিকে তার নিজের ঢংয়ে আমাদের সামনে সততার সাথে উপস্থাপন করেন। ধান ভাঙতে শিবের গীত এ কারণেই করলাম-শিহাব শাহীনের ওয়েব সিরিজ 'আগষ্ট ১৪' সেই বার বার দেখার মতই একটি কাজ। রোমান্টিক ধারার নাটকে খ্যাত শিহাব শাহীনের এবারের কাজের ঢং আমাকে ও আমার স্ত্রীকে ভীষণভাবে বিনোদিত করেছে। আলোড়িত করেছে। ঐশীর গল্প জানার পরও 'আগষ্ট ১৪'-এর তুশীর গল্প ১ম পর্বের ১ম দৃশ্য থেকে আমাদের স্ক্রিনের সামনে বসিয়ে রাখতে বাধ্য করেছে। আমি শিহাব শাহীনের ক্রেজি ফ্যান নই, তাসনুভা তিশার মনে রাখার মত কোনো নাটকের নামও আমার মনে পড়ে না, তবে 'আগষ্ট ১৪' দেখার পর বলতে দ্বিধা নেই, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যত ওয়েব সিরিজ হয়েছে তার মধ্যে 'আগস্ট ১৪'ই সেরা।

কেন সেরা? বলছি:

  • ঐশীর ঘটনাটি ৭ বছর আগের। কিন্তু এই ক'বছরে অন্য কোনো প্রযোজক/পরিচালক এই প্লট নিয়ে কাজ করেনি/ করতে পারেনি। বিঞ্জ/ শিহাব শাহীন সেই সাহস দেখিয়েছেন।
  • শিহাব শাহীন প্রেমের নাটকে সুপরিচিত। তাকে এ ধরনের crime mystery গল্পের জন্য নির্বাচন করা প্রযোজকের দিক থেকে আরেকটি মাস্টার স্ট্রোক।
  • ধারাবাহিক নাটক বা ওয়েব সিরিজে প্রতিটি পর্বের শেষ দৃশ্যে এমন কিছু থাকতে হয়, যা পরের পর্ব দেখার জন্য প্রলুব্ধ করে। 'আগষ্ট ১৪'-এর প্রতিটি পর্বে সেই ম্যাজিকটি আমি পেয়েছি।
  • এই ওয়েব সিরিজের বাজেটের তুলনায় আরো ৪/৫ গুণ বেশি বাজেট (কিছু ক্ষেত্রে আরো বেশি) খরচ করার পরও বেশির ভাগ সময় মনে রাখার মত চলচ্চিত্র আমরা পাই না। দ্বিতীয়বার দেখতে ইচ্ছে করেনা। তবে 'আগষ্ট ১৪' এর-ই মধ্যে আমি দুই বার দেখে ফেলেছি। প্রথমবার দেখার পর একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম আমরা। ভেবেছিলাম হয়তো অতি আবেগী হয়ে পড়েছি, তাই ফেসবুকে কিছু লিখবো না। নিজেকে পরীক্ষা করার জন্যই দ্বিতীয়বার দেখা। কিন্তু না! আমাকে বলতেই হবে, ৬ পর্বের এই সিরিজের প্রতিটি ফ্রেমে প্রযোজক-পরিচালক-অভিনয়শিল্পী-চিত্রগ্রাহক-সম্পাদক-আবহ সংগীত পরিচালক-শিল্প নির্দেশক প্রত্যেকের সততা স্পষ্টত: দৃশ্যমান। বিদগ্ধ সমালোচকদের মত করে হয়তো বলা যেতেই পারে, সংলাপ আরো ক্ষুরধার হলে আরো চিত্তাকর্ষক হতো, সম্পাদনায় আরেকটু আধুনিকতার প্রলেপ থাকলে আরেকটু জমে যেত। তবে এই সব কিছুর উত্তর আমার কাছেই আছে। ট্রেলার দেখে ভ্রূঁ কুঁচকিয়ে আমিও বলেছিলাম, WTF ! এসব কি? তবে সম্পূর্ণ ওয়েব সিরিজ দেখার পর আমার কোনো দৃশ্যই অশালীন/কুরুচিপূর্ণ মনে হয়নি। বরং দৃশ্যগুলো বিয়োগ হলেই মনে হতো, মূল প্লটের সাথে অসততা করা হয়েছে।
কাহিনীতে আমরা এতটাই ডুবে গিয়েছিলাম, পদে পদে ঐশী/ তুশিকে ধিক্কার জানিয়েছি। মনিরা মিঠু যখন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন, আমি মনের অজান্তেই মনিটরে হাত বুলিয়ে মায়ের মাথায় হাত বুলিয়েছি (এরকম কিছু পাগলামো রোগ রয়েছে আমার)। বাবা শহীদুজ্জামান সেলিম যখন চোখ বুঁজবার ঠিক আগ মুহূর্তে মাথা ঘুরিয়ে মেয়ের দিকে তাকান, আমার স্ত্রীর চোখ গড়িয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছিল। তুশির ভাইকে কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছিল। 'আগষ্ট ১৪' দেখার পর এখন পর্যন্ত কানে শুধু থিম সংটি বেজে চলেছে। যতবার মনে পড়েছে, ততবার আমরা আলাপ করেছি, বাবা-মায়ের সাথে আরো ভালো হয়ে থাকার শপথ করেছি, তাদের মনে বিন্দুমাত্র কষ্ট না দেয়ার চেষ্টা করেছি-একটি ওয়েব সিরিজ থেকে এর বেশি কি প্রত্যাশা করতে পারি?

xft9JzN.jpg


পরিচালক শিহাব শাহীনের কাছ থেকে নতুন করে আশা বেড়ে গেল। এখন থেকে এরকম চমক জাগানিয়া কাজে তাকে আরো বেশি বেশি চাই। ভালোর কোনো শেষ নেই। তবে 'আগষ্ট ১৪' অনেকদিন মনে থাকার মত একটি কাজ হয়েছে। বিশেষ করে যথাযথ শিল্পী নির্বাচনের দক্ষতার জন্য সজোরে একটি হাততালি পেতেই পারেন নির্মাতা ও টীম।

তাসনুভা তিশা কেন ঐশী'র চরিত্রে? ওয়েব সিরিজ দেখার আগে বার বার ভেবেছি। আর সম্পূর্ণ সিরিজ দেখার পর ভেবেছি, তিশা ছাড়া এ চরিত্রে আর কে এতটা বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করতে পারতেন? তিশার মায়াবী মুখশ্রী দিয়ে এই ধরনের 'সাইকো' চরিত্রে দাপটের সাথে অভিনয় ছিল দর্শকের জন্য সবচাইতে বড় প্রাপ্তি। শুধুমাত্র তিশার অভিনয় দেখার জন্য হলেও এই ওয়েব সিরিজটি বার বার দেখা যায়। 'আগষ্ট ১৪'-নি:সন্দেহে তিশার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। এমনকি এরপর তার আর অভিনয় না করলেও চলে। এক জীবনে একজন অভিনয়শিল্পী যে ধরনের চরিত্রে কাজ করার তালাশে থাকেন, 'তুশী' তিশার জন্য ঠিক সেরকম চরিত্র।

To view this content we will need your consent to set third party cookies.
For more detailed information, see our cookies page.

তিশাকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন শতাব্দী ওয়াদুদ। তার মেধার স্বাদ দর্শকরা অতীতে অসংখ্যবার পেয়েছে। তবে একই সাথে ইস্পাত কঠিন পুলিশ অফিসার ও কোমল মনের বাবার দোদুল্যমান জার্নির সাথে দর্শকরাও প্রতিটি স্তরে ভ্রমণ করেছেন। শেষ দৃশ্যে শতাব্দী ওয়াদুদের অভিনয়ে দর্শকরা কাঁদতে বাধ্য হবেন। প্রত্যেক বাবা একবার হলেও নিজ সন্তানকে জড়িয়ে ধরতে চাইবেন। সুঅভিনেতারা এভাবেই প্রভাব ফেলে দর্শক মনে।

শহীদুজ্জামান সেলিম-মনিরা মিঠুর মত মেধাবী অভিনয়শিল্পীরা তুলনায় তাদের শক্তিশালী মেধা প্রদর্শনের সুযোগ পেয়েছেন কম। তবে যতটুকু পেয়েছেন, মুগ্ধ করেছেন। বিশ্বাসযোগ্য অভিনয় করেছেন। অন্যান্য চরিত্রে যারাই ছিলেন (মাসুম বাশার, হিন্দোল রায়, সুজাত শিমুল, উজ্জল মাহমুদ, নূর-এ-আলম নয়ন, শাওন, তানভীর, অনুভব, গল্প) সাবলীল ছিলেন। বিশেষ করে গৃহপরিচারিকা চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন এবং অটোরিকশা চালক-ভীষণ রকম বাস্তবিক।

'আগষ্ট ১৪' অনেক বেশি সাহসী সিরিজ কারণ এ ধরনের সত্যি ঘটনাকে 'উত্তেজনার ঠাসা বুননে' দর্শকের সামনে তুলে ধরার জন্য সত্যিই সাহস লাগে (এ ধরনের মহান পেশায় যারা নিয়োজিত, তাদের ব্যক্তিজীবন বলে যে কিছু নেই, আবারো বুঝতে পেরেছি) । বাংলা সিনেমায় বা নাটকে এর আগে কোনো পুলিশ অফিসারের মুখে হতাশ হয়ে বলতে শুনিনি-"বা*র চাকরী হলো পুলিশের চাকরী"-এই ধরনের সংলাপ দেয়ার জন্যও সাহস লাগে। 'সমাজ কল্যাণ থেকে আসা মহিলা খুব ডিস্টার্ব করছে'-এ ধরনের সংলাপ চাইলেই এড়িয়ে দেয়া যেত। কিন্তু গল্প যখন যেটা চেয়েছে, পরিচালক সেটিই দিয়েছেন। সেজন্যই হয়তো 'আগষ্ট ১৪' আমাদের কাছে বিশেষ হয়ে থাকবে। মুক্তির পর এত আলোচনা-সমালোচনা এ সময়ের অনেক সিনেমা মুক্তির পরও হয় না। 'আগষ্ট ১৪'-এর ক্ষেত্রে হয়েছে/ হচ্ছে। এখানেই সফল নির্মাতারা। পুরো টীমকে আমাদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন, ধন্যবাদ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top