What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review টু বি কন্টিনিউড : জোড়াতালির নির্মাণ যেমন হওয়া উচিত (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
y2qf4yB.jpg


দেখে আসলাম ভাই বেরাদারদের মাঝে আমার পছন্দের পরিচালক ইফতেখার আহমেদ ফাহমির বহুল অপেক্ষাকৃত সিনেমা "টু বি কন্টিনিউড"। ছবির মাঝে অনেকদিন কাজ বন্ধ থাকায় শেষমেশ গল্প পরিবর্তন করে তাহসানের অংশটুকু বাদ দিয়েই ছাড়া হয়েছে জানি। মূল অভিনেতা ফাহমি নিজেই, সাথে রোমেল, মিশু সাব্বির, পূর্ণিমা, আবুল হায়াত, মিতা রহমান।
সময়কালঃ ২ ঘন্টা।

ভিডিও রিভিউ…

ছবিটা ইম্প্রেস টেলিফিল্ম নিজেদের মত সম্পাদনা করে মুক্তি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে ফাহমির বক্তব্য – তিনি ছবিটা বের হলেই খুশি। সিনেমা হলে না হয়ে টিভি রেডিওতে হলে তাই সই।

এসব কিছু জেনে সিনেমাটা হলে দেখার আগ্রহ কমে গেলেও এক বন্ধুর পীড়াপীড়িতে দেখতে হল। আমি চাচ্ছিলাম একবারে directors cut দেখতে, হয়ত ইউটিউবে কোন না কোনোদিন আসবে, আবার নাও আসতে পারে। হুদাই আফসোস করে কি লাভ? দেখে ফেলি হল কাছেই তো।

বৃষ্টিস্নাত দুপুরে দর্শক সমাগম প্রত্যাশিতভাবেই খুব সামান্য। সেটাও মন্দ না। বকবক প্যারা নেই। যেখানে খুশি বস।

8XjuXXt.jpg


সিনেমার শুরুর ১০-১৫ মিনিট কিছু দৃশ্য দেখলাম… যেগুলা কানেক্ট করতে সমস্যা হচ্ছিল খুব কারণ বাংলা সিনেমার টিপিকাল পরিষ্কারভাবে ডাব করা সংলাপ না, বরং ভাই বেরাদারের নাটকের স্টাইলেই কথা বলছে সবাই। খুব ফাস্ট এবং স্বতঃস্ফূর্ত। সমস্যা হচ্ছে সংলাপগুলা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছিলাম না, যেটা সম্ভবত বলাকার সাউন্ড সিস্টেমের সীমাবদ্ধতা। আবহ সংগীতগুলা ভালো হলেও প্লেসিং খাপছাড়া। যেটা আমাদের পরিচালকরা এখনও আত্তস্ত করতে পারেন নি বলে আমি মনে করি। Aynabaji did it perfectly. বাকিগুলায় মুখস্ত নিয়ম মেনে চলে বসিয়ে দেয়া লাগে। অথচ সংগীত আসবে দৃশ্যের অনুষঙ্গ হিসেবে কাহিনীকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

XawrOmS.jpg


গল্প ৩ বন্ধুর, ফাহমি -রোমেল আর মিশু। সারাদিন বাউন্ডুলেপনা, টাঙ্কিবাজি, আড্ডা করে যাচ্ছে। নিজেদের আড্ডার মধ্য দিয়েই তাদের ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড সুন্দর করে জানা যায়। শুধু ফাহমি র বাবামার সম্পর্কটা আলাদাভাবে দেখতে পাই। ফাহমি র ঘুম ভাঙে আমার সোনার বাংলা গানে। তার বাবা আবুল হায়াত আর মা মিতা রহমানের মাঝে মিষ্টি একটা বুড়াবুড়ি সম্পর্ক। বেশ মাইডিয়ার ধরণের লোকই মনে হয় ওনাকে।

2WkUDjP.jpg


মেজর একটা টুইস্ট দিয়ে যখন ইন্টারমিশন হয়, তখন ইতিমধ্যেই কিছুটা বিরক্তি এবং হতাশা।

বিরতির পর মজাদার গল্প থেকে বিষাদময় গল্পে প্রবেশ… যেন নতুন আরেকটা নাটক দেখছি। গানবিহীন প্রথম ভাগের কন্ট্রাস্টে ৩টা গান এই সময়, যার দুইটা একদম পরপর। গানগুলা সুন্দর। কিন্তু পেসিং অতিরিক্ত স্লো হয়ে গেল। এসময় পূর্ণিমা প্রবেশ করে ভালোভাবে। আমি নিশ্চিত সেখানে বেশ কিছু দৃশ্য দরকার ছিল কিছু একটা প্রতিষ্ঠা করতে সেগুলা ছিলনা বলেই ঠিক কনভিন্সিং হয়নি। একটা সময়ে একটু ঘুমিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু বলাকায় সিট ঠিক ঘুমানোর উপযুক্ত না।

pyvNoPR.jpg


শেষে চিঠির একটি দৃশ্য আছে – স্পয়লার দিবনা, খুব চমতকার করে লেখা দৃশ্যের ভিজুয়ালাইজেশান এ দরকার ছিল Montage স্টাইল। যে বলছে তার দৃশ্য, কিছু ফ্ল্যাশব্যাক আর ফ্ল্যাশিং অফ আদার ক্যারেক্টারস। মানে লম্বা একটা সময় ধরে যদি একজন খুব আবেগি কথাও ব্যাকগ্রাউন্ডে বলে যায় আর পর্দায় যদি শুধু পত্রপাঠককে দেখানো হয়, সেটা যেই এঙ্গেল থেকেই হোক, montage হলে অনেক সুন্দর আর পরিপক্ক হয় ব্যাপারটা (প্রাক্তন সিনেমায় বিরতির আগে আগে সৌমিত্রর হঠাৎ দেখা কবিতা পড়ার সাথে যেভাবে দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে সেটা, কদিন আগে নিশোর উচ্চতর হিসাববিজ্ঞানে বউ ঘরে অপেক্ষা করছে, অফিস সেরে স্বামী তার সাথে মনে মনে কথা বলছে – সেটা)। এভাবে যখন শেষ হল, তখন চোখে পানি আসা উচিত ছিল এল না। বের হতে পেরেই খুশি।

Ua7CiRO.png


Bug করছিল – ভয়ংকর সুন্দরে যেই ইস্যুটা ছিল সেটাই। ফাহমি র মাথায় যেই গল্পটা ছিল সেটাকে সিনেমায় ফেলতে গিয়ে সে বড় একটা সময় নষ্ট করতে অন্য গল্প বলেছে যেটার সাথে মূল গল্পের কোন সম্পর্ক নেই। এটা বড় একটা ভুল। To be Continued এর মূল গল্প কিন্তু দ্বিতীয়ভাগে। অথচ প্রথম ১ ঘন্টা ৩ বন্ধুর সম্পর্ক আর প্রাত্যহিক জীবন দেখাতে অন্য প্লট চলে যেগুলা actually অন্য একটা নাটক। ঐ গল্প নিয়ে প্রচুর নাটক হয়েছে হচ্ছে – সেখানে চেনাজানা কমেডি ছাড়া কিছুই নেই।

জানি অনেক দৃশ্যই বাদ দিয়ে এই কাটটা হয়েছে। তবু – গল্প বলার ধরনে সমস্যাটা তো উপেক্ষা করা যাচ্ছেনা। বলতে বাধ্য হচ্ছি ২টা নাটকের ভিন্ন দুইটা গল্প নিয়ে জোড়া দিয়ে সিনেমা বানানো হয়েছে।

এবার আসি কারিগরি বিষয়ে –

সিনেমাটোগ্রাফিঃ খুবই ভালো। তবে কিছু শটে আমার ইস্যু আছে। যেমন একটা শটে মিশু অন্য রুমে ফ্লরে শুয়ে ফোনে কথা বলছে। আরেক রুমে ফাহমি -রোমেল। ওদের রুম থেকে ক্যামেরা স্লো জুম করে মিশুর কাছে যাচ্ছে – এই ফর্মুলা ব্যবহৃত হয় হরর ফিল্মে, like James Wann এর হররগুলা। ঐ শটটায় ঐ ক্যামেরাওয়ার্কের দরকার নেই কিন্তু। সুতরাং এই অপ্রয়োজনে "পারি আমি জিনিসটা" বলে দেখায় দিলাম এই প্রবণতাটা খারাপ। এছাড়া পুরা মুভি জুড়ে চমৎকার কাজ সিনেমাটোগ্রাফির। প্রচুর ফোকাস অফ ফোকাসের খেলা, চিপাচুপা দিয়ে ফ্রেম করা – যেগুলায় কারিগর মনের মাধুরি মিশিয়ে ঢেলে দিয়েছেন যা পারেন।

AZopehO.jpg


লোকেশান চিটাগাং এর পাহাড়ি মনোরম পরিবেশ, প্রায়ই মেঘলা… সবুজঘন… স্টানিং কিছু না, সহজসরল কিন্তু টোনের সাথে যায় এমন।
ড্রেস-আপে নজর কাড়ে ৩ জনের রংবেরঙের টিশার্ট আর টিশার্টে লেখা লাইনগুলা। কই যে পায় টিশার্টগুলা!! ইচ্ছা করে কিনি।

ovIOqBy.jpg


অভিনয়ে – ফাহমি , পূর্ণিমার কথাই বলবো আলাদা করে। আবুল হায়াত আর মিতা হোক দুজনেই ভালো। তারা যেমন করেন তার চেয়ে খুব গ্রাউন্ডব্রেকিং কিছু করেন নি। পূর্ণিমা… পুরাই মুগ্ধ করল। ওর স্ক্রিনটাইম যদি আরও হত, আহারে… এই মেয়েটা বড় পর্দা ছোট পর্দা সব জায়গাতেই এত সাবলীল… মেকাপের বাড়াবাড়ি নেই, এক্সপ্রেশানের বাড়াবাড়ি নেই, খুব ন্যাচারাল, নেকামি নেই। মুভিতে হাবিবের গানটা তাই আমার সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত পুরা মুভির।

মিশু সাব্বির বরাবরের মতই irritating. জানিনা সবাই কি পায় ওর মধ্যে। সব জায়গায় একই চরিত্র, একই কমেডি, আমার একদম ভালো লাগেনা ওকে দুঃখিত। বরং রোমেল অনেক জোস।

RTC6Jba.png


একগাদা পার্শ্ব চরিত্র – সোহেল খান, সুমন পাটয়ারি, অপর্ণা… এছাড়াও ভাই বেরাদারের নাটকগুলার চেনা অনেক মুখই দেখবেন একটু পরপর আর বলবেন… আরে এও আছে! সবাই ভালো, নেচারাল, সংলাপও হাসাবে ব্যাপক। কিন্তু সবাই সবসময় যেমন রোলে থাকে, ঠিক তেমন রোলেই। পার্থক্য এই – এতদিন টিভি নাটকে দেখে হাসতাম, আর এখন সিনেমা হলে দেখছি।

মুভিটার ভালো দিক – এর সাবলীল সংলাপ আর অভিনয় – ফাহমি তার মধ্যে সেরা। তার নিজের প্রতিটা দৃশ্য তার পরিচালনা, লেখা আর অভিনয়ে জমজমাট।

সবমিলিয়ে "টু বি কন্টিনিউড" চেনাজানা গল্প নিয়ে করা – তবু নিজেদের গল্প… নিজেদের বাস্তবতা আর ৭১ এর ছোঁয়া। নতুন কিছু না, আমার মনে হচ্ছে মুভিটার পুরা ভার্সন দেখলে আরও ভালো লাগত।
তখন না হয় আবার রিভিউ দেবো। এটা theatrical version এর রিভিউ।

3frjhcM.png


অনেক বাণিজ্যিক সিনেমার চেয়ে ভালো। বিরক্তি উৎপাদন জাতীয় কিছু নেই। আমার মনে হয় অমিতাভ রেজা, গিয়াসুদ্দিন সেলিমের কাছ থেকে বাকি নির্মাতাদের গল্প বলাটা শিখতে হবে আরও। ওরা তাদের ২টা সিনেমা আর নাটকগুলা দিয়ে ষ্ট্যাণ্ডার্ড তৈরি করে দিয়েছেন। তাদের কাজগুলা ঠিকমত ফলো করতে পারলে ফলাফল অনেক ভালো হবে।

আমার রেটিংঃ ৬.৫/১০
 

Users who are viewing this thread

Back
Top