What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review সব বয়ফ্রেন্ডের কপালে বউ জুটে না (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
ygYN4LD.jpg


বয়ফ্রেন্ড
ধরন : রোমান্টিক ড্রামা
পরিচালক : উত্তম আকাশ
প্রযোজনা : নিপা এন্টারপ্রাইজ
পরিবেশনা : শাপলা মিডিয়া
অভিনয় : তাসকিন রহমান (রনি), সেমন্তী সৌমি (বৃষ্টি), লোপা নাহার (রিয়া), আমান রেজা (আরমান), মারুক আকিব (রনির ভাই), মৌসুমী স্যান্যাল (রনির ভাবৗ), অমিত হাসান (মুন্নাভাই), শিবা শানু (মিল্টন), জাহিদ আলম, পার্থ সারথী (বাদশা), বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী (বৃষ্টির বাবা), তুলিকা বসু (বৃষ্টির মা), সাদেক বাচ্চু (হাইস্কুলের হেডমাস্টার), সেলিম খান (কোচ), ববি (বিশেষ চরিত্র) প্রমুখ।
শুভমুক্তি : ৮ মার্চ (সীমিত), ১২ এপ্রিল (বড় পরিসরে) ২০১৯

নামকরণ : সময় এগিয়ে গেলো, সবকিছু বদলে গেলো; চঞ্চল স্বভাবের সেই মেয়েটির একটি সুন্দর সংসার হলো; কিন্তু অতীতে পড়ে থাকা বয়ফ্রেন্ড আজীবন বয়ফ্রেন্ড-ই রয়ে গেলো। পুরো ছবির মূল বিষয়বস্তুকে এক লাইনে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলাম। নাম হিসেবে বয়ফ্রেন্ড খুব একটা খারাপ হয়নি, তবে এক্ষেত্রে সুন্দর বাংলা শব্দের ব্যবহার খুব সহজেই করা যেতো। কেন করা হলো না, সেটা বুঝে আসেনি।

কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ : বৃষ্টির বাবার (বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী) ইচ্ছা ঢাকায় কেনা তার জায়গায় তিনি দালান তুলবেন, কিন্তু এলাকার কিছু পাতি মাস্তান সে জমি বেদখল করে বাধার সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে বৃষ্টির বাবা তার বন্ধুর পরামর্শে কোনো পুলিশের ঝামেলায় না জড়িয়ে ক্লাবের ছেলেদের দিয়ে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেন। উক্ত ক্লাবের সেক্রেটারী হলেন রনি (তাসকিন), যিনি একজন ক্রিকেটার। রনির নিকট সবকিছু খুলে বলা হলে সে এবং তার ক্লাবের ছেলেরা মারধর করে মাস্তানের হাত থেকে জমিকে বাঁচায়। পরবর্তীতে উক্ত মাস্তান গ্রুপদের সাথে রনি এবং তার টিমের একাধিক ঝামেলা হওয়ায় এদের পেছনের মুন্না (অমিত হাসান) এবং মিল্টনের (শিবা শানু) মতো রাঘব বোয়ালরা, রনিকে তাদের টার্গেটে পরিণত করেন। রনি পেশায় একজন ক্রিকেটার হওয়ায় তারা চায় তার ক্যারিয়ার এবং জীবন দুটোই শেষ করে দিতে।

অন্যদিকে সাহসিকতার সাথে জমি উদ্ধার করে দেওয়ায় সুন্দরী মেয়ের বৃষ্টির (সেমন্তী) সুনজরে পড়েন রনি। রনিও বৃষ্টির প্রতি আলাদা একটা টান অনুভব করেন। শুরু হয় তাদের কাছে আসার গল্প। পরবর্তীতে গল্প বেশ কিছু মোড় এবং বাঁক নেওয়ার মাধ্যমে ৮ বছর সামনে এগিয়ে যায় এবং শেষ পরিণতির দিকে এগোতে থাকে।

ছবির কাহিনী এবং সংলাপ লিখেছেন ভারতের প্রিয় চট্টোপাধ্যায়। গীতিকার হিসেবে তার বেশ নামডাক আছে। সব মিলিয়ে ছবির গল্পটি বেশ ভালোই ছিল। তবে চিত্রনাট্য তৈরিতে বেশকিছু দৈব্যশক্তির আশ্রয় নিতে হয়েছে। অর্থাৎ কিছু কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে যুক্তিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চিত্রনাট্য তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও ছবিতে ভালো কিছু সংলাপ ছিল, তবে পাঞ্চলাইনের বড্ড অভাব। এই ধরনের ছবির জন্য ভালো পাঞ্চলাইন খুবই জরুরী, কিন্তু এ ছবিতে মনে রাখার মতো তেমন পাঞ্চলাইন পাওয়া গেলো না।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৪০

e3sqDoj.jpg


পরিচালনা ও অভিনয় : ইদানিংকালে এফডিসির যে কয়জন পরিচালক নিয়মিত সিনেমা পরিচালনা করছেন, তাদের মধ্যে ব্যস্ততার বিচারে উত্তম আকাশ বেশ এগিয়ে। ৬৩ বছর বয়সী সিনিয়র এই পরিচালকের হাতে বর্তমানে যে পরিমাণ ছবি আছে, অন্যরা সে তুলনায় অনেকটা বেকারত্বের দিন পার করছে।

নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে ইন্ডাস্ট্রিতে আসা এই পরিচালক হয়তো কখনোই কোনো আহামরি প্রতিভা দেখাতে পারেননি, কিন্তু তিনি জানতেন হিট ছবির ফর্মূলা কী। যার দরুণ তার ক্যারিয়ারে বহু কমার্শিয়াল হিট ছবি রয়েছে। এককালে তিনি অশ্লীলতার দিকেও শামিল হয়েছিলেন, সেকথা না হয় আজ তুলেই রাখলাম। কথা হলো, উনি খুব সম্ভবত বার্ধক্যজনিত কারণে বর্তমানে সিনেমায় গল্প কীভাবে শুরু করতে হয় এবং কীভাবে শেষ করতে হয় তা ভুলে গেছেন। ডিজিটাল যুগে তার প্রতিটি সিনেমা যেনো কোনো জোড়াতালি মার্কা ভিডিও! তিনি ভুলে গেছেন কীভাবে নায়ককে পর্দায় উপস্থাপন করতে হয়, কীভাবে খলনায়ককে পর্দায় উপস্থাপন করতে হয়। এছবিতে একটা গল্প ছিল, তাই হয়তো কারো কাছে বস্তাপচা না-ও লাগতে পারে। তবে আমি তার পরিচালনায় বরাবরের মতো এবারও হতাশ। উনি নব্বই দশকে "মুক্তির সংগ্রাম", "সাবাশ বাঙালি" কিংবা "কে অপরাধী" বানিয়ে যে যশ-খ্যাতি কামিয়েছেন, এই ২০১৮/১৯ এ এসে সেটাই দেদারছে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

তাসকিন রহমানকে এই প্রথমবার একক নায়ক হিসেবে বড়পর্দায় দেখলাম। "ঢাকা অ্যাটাক", "সুলতান" কিংবা "যদি একদিন" এ তাকে যেভাবে পেয়েছি, এবার তাকে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে পেলাম। অভিনয়ে তার বেশকিছু জায়গায় জড়তা দৃশ্যমান, কিন্তু তিনি চেষ্টা করেছেন সেটা হিরোয়িজম দিয়ে পুষিয়ে দেওয়ার। ছবিতে তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বেশ কয়েকটি এন্ট্রি সিন রয়েছে, সেগুলো বেশ ভালো, হাততালি দেওয়ার মতো। কিন্তু ছবির শুরুতেই পর্দায় তার হুট করেই একটা গানের মাধ্যমে এন্ট্রি নেওয়ার বিষয়টা ঠিক হজম হলো না। শুরু যেহেতু ভালো হয়নি, তাই বাকি এন্ট্রিগুলো যতই ভালো হোক তা আমার মতো দর্শকমনে তেমন প্রভাব রাখতে পারেনি।

সেমন্তী সৌমিকে এই প্রথমবার কোনো প্রধান চরিত্রে অভিনয় করতে দেখলাম, এর আগে তাকে "অস্তিত্ব" ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে দেখেছিলাম। পর্দায় তিনি এক অন্যরকম লাবণ্যপ্রভা ছড়িয়েছেন। তার সাজগোজের মধ্যে বিদ্যা সিনহা মিমের একটা ঝাপসা ছায়া খুজেঁ পাওয়া যায়। অভিনয়ে তিনি বেশ জড়োসড়ো, আশাকরি ভবিষ্যতে তিনি এই জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

ছবির অন্য নায়িকা লোপা নাহারের চরিত্রের ব্যাপ্তি কিছুটা কম ছিল, তবে তিনি নবাগতা হিসেবে নিজেকে খুব সাবলীল এবং স্মার্টনেসের সাথে উপস্থাপন করেছেন। সবথেকে বড় স্বস্তির বিষয়, অভিনয় মোটেও ক্লিশে লাগেনি।

গল্পের দুই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আমান রেজা এবং মারুফ আকিব গতানুগতিক পারফরমেন্স দিয়েছেন। আমান রেজাকে তাসকিনের বিপরীতে ততটা শক্তিশালী রূপে পাওয়া গেলো না। অন্যদিকে মারুফ আকিব এবং তার চরিত্রটি যেনো গল্পের কোনো লজিক মানেন না, পর্দায় তার হুটহাট করেই আগমন ঘটে। তবে এবার তাকে আর পুলিশ অফিসার চরিত্রে পাইনি, নায়কের বড় ভাই হিসেবে পেয়েছি। ভিন্নস্বাদ পেলাম।

অমিত হাসান পুরো ছবিতে কুল ভিলেনের অভিনয়টা করে যাচ্ছিলেন, সবকিছুতে জল ঢেলে দিলেন ছবির শেষার্ধে এসে। এখানে তিনি তার সেই গতানুগতিক চিৎকার চেঁচামেচি করা অভিনয় প্রদর্শন করলেন। তার সহযোগী হিসেবে শিবা শানু আশানুরূপ তেমন কিছু দেখাতে পারেননি। গতানুগতিক ছিলেন।

ছবিতে তুলিকা বসু, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী , মৌসুমী স্যানাল এবং পার্থ সারথীর মতো যারা ভারতের আর্টিস্ট ছিলেন, তাদের ডাবিং এ অনেক সমস্যা চোখে পড়লো। কেন জানি তাদের সেই পারফরমেন্স পেলাম না, যেমনটা অন্যান্য ছবিগুলোতে পাই।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ৩০

কারিগরি : সিনেমাটোগ্রাফির কাজ মোটামুটি ভালো ছিল, তবে কিছু জায়গায় দক্ষতার দৈন্যদশার চিত্রও ফুটে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কাজও ভালোই লাগতো, যদি না দুই-একটা তামিল এবং হিন্দি ছবির মিউজিক বসানো হতো। তবে ছবির ট্রেইলারে যেভাবে দেদারসে অন্য ছবির মিউজিক বসিয়ে ষোলোকলা পূর্ণ করা হয়েছে, পুরো সিনেমায় ভারতের শ্রীপ্রিতম এমনটা করেননি।

পুরো ছবিটি শ্যুট করা হয়েছে ঢাকা এবং গাজীপুরে। ইনডোরের লোকেশনগুলো ছাড়া বাকি আউটডোরের লোকেশন গুলো তেমন ভালো লাগেনি। ছবির ফাইট কোরিওগ্রাফি একদমই নিম্নমানের। তাসকিন রহমান ভালো কিছু এ্যাকশন দেখানোর চেষ্টা করেছেন, ভালো দিক এইটুকুই। গানের মধ্যে "বলে দে কে তুই আমার" এর কোরিওগ্রাফি মোটামুটি সন্তোষজনক ছিল, বাকিগুলোর যাচ্ছেতাই অবস্থা। আর সম্পাদনা এবং কালার গ্রেডিং এর কাজ কি বলবো? এই কাজ কোনো জাতের মধ্যে পড়ে না। সম্পাদক আব্দুর রহিম শাপলা মিডিয়ার ব্যনারে এমন একের পর এক জঘন্য কাজ উপহার দিয়ে যাচ্ছেন, তারপর কেন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভালো কাউকে এই সেক্টরটি সামলাতে দিচ্ছে না, সেটাই বুঝে আসছে না।

এ অংশ পাবে ১০০ তে ২০

বিনোদন ও সামাজিক বার্তা : রোমান্টিক ঘরানার ছবি হলেও কেন জানি এছবিতে রোম্যান্স খুব একটা জমেনি। শুধু জমেনি বললে ভুল হবে, জমার মতো সেই সুযোগ এবং সময়টা দেওয়া হয়নি। মারামারি করে জমি উদ্ধার করে দিলেই যেকোনো সুন্দরী মেয়েকে পটানো যায়, এছবি যেনো সেই শিক্ষাই দিচ্ছে।

রোম্যান্সের তুলনায় ছবিতে ড্রামা গুরুত্ব পেয়েছে বেশি। গল্পে কতগুলি টুইস্ট আশায় বেশ খানিকটা বিনোদনের সঞ্চার হয়েছে। ভারতের প্রসেনজিৎ এর গাওয়া "বলে দে কে তুই আমার" গানটি সুন্দর। প্রসেনজিৎ-জেমির গাওয়া "মনে মনে গোপনে" গানটির লিরিক্স এবং কোরিওগ্রাফি খুবই বাজে, তবে সিচ্যুয়েশন অনুযায়ী ছবিতে গানটি থাকায় ভালো মানিয়েছে। ভারতের আকাশ সেনের গাওয়া "বাংলার বয়" গানটি এ ছবির সব থেকে বাজে গান। ছবিতে এই তিনটি গানই ছিল।

HRRFAtj.jpg


ছবিটি তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কিংবা প্রয়োজনীয় বার্তা দেয়না। তবে কিছু ছোট ছোট ভালো বিষয় ফুটে ওঠেছে। যেমন মেয়েরা সবসময় চায় তার পরিবার এবং তার ভালবাসার মানুষকে সন্তুষ্ট করতে। এতে চাইলে তারা তাদের ভালোবাসাকেও ভুলে যেতে পারে। ছেলেরা খুব সহজেই মেয়েদের ভালোবাসায় গলে যেতে পারে। যার দরুণ তাদের ভালোবাসায় যখন ছোট-বড় নানা ভুল-বোঝাবুজি হয়, তখন হিতে-বিপরীতও হওয়ার জোর সম্ভাবনা থাকে।

ব্যক্তিগত : সত্যি কথা বলতে, শুধুমাত্র তাসকিন রহমানকে দেখতেই এই ছবিটি আমার দেখা। শাপলা মিডিয়ার প্রতি পূর্বেও তেমন কোনো প্রত্যাশা রাখিনি, ভবিষ্যতে কোনো প্রত্যাশা রাখার মতো ইঙ্গিত পাচ্ছি না। ভালো লেগেছে এই ভেবে যে, ছবিতে একটি পরিপূর্ণ গল্প ছিল। তবে গল্পটি নানা অসঙ্গতিতে ভরা। গল্পের বেশকিছু মোড় কোনো যুক্তি দিয়েই ব্যাখ্যা করা যায় না। স্পয়লারের খাতিরে সেগুলো আর আলোচনা করলাম না।

এ ছবির বিন্দুমাত্র কোনো প্রচারণা হয়নি, যেকারণে উৎসব টার্গেট করে মুক্তি পাওয়া সত্ত্বেও হলে আশানুরূপ দর্শক সমাগম পাইনি। এছাড়া ছবির ট্রেলার, পোস্টারের কাজ পুরাই জঘন্য। ট্রেলার ছবির গল্প তুলে না ধরলেও এর গুণগত মান সিনেমার প্রতি একটা খারাপ প্রভাব ফেলেছে।

সবমিলিয়ে মনে হয়েছে ছবিটি পরিচালনার মুন্সিয়ানা এবং কারিগরি দক্ষতার অভাবে মানের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে গেছে। এগুলোর উন্নতির পাশাপাশি চিত্রনাট্যের কাজ ভালো হলে এই গল্প দিয়ে ভালো কিছু করা যেতো।

রেটিং : ৩.৫/১০

ছবিটি কেন দেখবেন : পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এবার এই একটাই ছবি মুক্তি পেয়েছে। যদি শুধুমাত্র গল্প উপভোগ করার জন্য আড়াই ঘন্টা পার করতে চান, তবে ছবিটি দেখে আসতে পারেন। চাইলে পরিবার নিয়েও ছবিটি দেখে আসতে পারেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top