What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review যে কারণে মুক্তিযুদ্ধে আবুল হায়াত অংশগ্রহণ করেননি ! (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,654
Messages
117,056
Credits
1,241,720
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
00IO6c9.jpg


একাত্তরের যুদ্ধে পাকিস্তানি আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলো বাংলাদেশের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ। কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতাসহ সকল শ্রেনী ও পেশার মানুষের প্রায় ৯ মাসব্যাপী কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ ও সাহসিকতার ফসল আমাদের আজকের এই স্বাধীন দেশ। আমাদের বাংলাদেশ…

স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ের বেশ কয়েকজন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, যেমন – মহানায়ক জসিম, অভিনেতা আবুল খায়ের, হুমায়ুন ফরীদি, সোহেল রানা, জাফর ইকবাল, ফারুক, রাইসুল আসাদ এবং গায়ক আজম খান সহ আরো অনেকেই সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন !

কিন্তু সেইসব কৃতি নামের মাঝে খুঁজে পাওয়া যাবেনা স্বনামধন্য অভিনেতা 'আবুল হায়াত' এর নাম। কিন্তু কেনো? কেনো মুক্তিযুদ্ধে আবুল হায়াত অংশগ্রহণ করেননি, এটা সবারই প্রশ্ন। তিনি কি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির অংশ ছিলেন? নাকি যথাযথ সুযোগ কিংবা সাহসের অভাবে ঘরে বসে কাটিয়েছেন দীর্ঘ নয়টি মাস ! বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে বেশ আফসোস করে বক্তব্য রেথেছেন কিংবদন্তী এ অভিনেতা। চলুন, আবুল হায়‍াতের মুখ থেকেই জেনে নেয়া যাক এসব প্রশ্নের উত্তর…

আবুল হায়াতের জবানবন্দি

মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নেয়ার কারণ হিসেবে আবুল হায়াত বলেন –

"১৯৬৯-৭০ সেই সময়টা ছিলো উত্তাল। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের উদ্যোগে গোটা দেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলন চলছিলো। সেই আন্দোলনের সঙ্গে আমি সরাসরি জড়িত ছিলাম। পাকিস্তানি শাসকরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাটক নিষিদ্ধ করেছিলো। কিন্তু আমরা সেই নিষেধ না মেনে হলে মাঠে-ঘাটে, শহীদ মিনারে, ট্রাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিপ্লবী নাটক করেছি। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ বিপ্লবী নাটক 'রক্ত দিলাম স্বাধীনতার জন্য' প্রদর্শিত হয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হওয়াতে নাটকটিতে আমি অভিনয় করতে পারিনি। আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই দিনই আমার বড় মেয়ে বিপাশার জন্ম হয়। একটু সুস্থ হওয়ার পর আমার পরিবার আমাকে নিয়ে গ্রামে চলে যায়। মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত আমি আমাশয় রোগে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকি। শুধু এই কারণে আমার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা হয়নি। খানিকটা সুস্থ হওয়ার পর জুন মাসে আমি ঢাকায় ফিরে আসি। জুন থেকে ডিসেম্বর ঢাকাতেই ছিলাম। সেই সময় আর্মিদের সামনে অনেকবার বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি।

আর্মিরা একদিন আমার বাসায় এলো। আমাকে বললো, 'তোমার কাছে নাকি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য একটা বন্দুক আছে। বন্দুকটা আমাদের দিয়ে দাও।'

আমিও বন্দুকের কথা স্বীকার করে তাদের দিয়ে দিলাম। মার্চ মাসেই সরকার সব বন্দুক জমা দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলো। কিন্তু আমি অসুস্থ থাকায় জমা দিতে পারিনি। আমাদের বাড়িতে পুরুষ শুধু আমিই ছিলাম, তাই কারো পক্ষে জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। বন্দুক থাকার অপরাধে তারা আমাকে ধরে নিয়ে যায়। যদিও শেষমুহূর্তে আমাকে তারা ছেড়ে দেয় একটা শর্তসাপেক্ষে। শর্তটা ছিলো, আর্মি জেনারেলের কাছ থেকে লাইসেন্সের একটা সই আনতে হবে। আমাকে সাতদিনের সময় দেওয়া হলো। আমাকে বলেছিলো, তুমি মুক্তির লোক। যদি এটা না করো, তাহলে তোমাকে মেরে ফেলা হবে। পরে আমার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আমি বন্দুকের লাইসেন্সে সই করিয়ে আনি। আমার ভাগ্য ভালো, শেষ পযর্ন্ত তারা আমাকে হত্যা করেনি।

এরপর ডিসেম্বরে আমার বাড়ির পাশে একটা বোমা ফাটে। আর্মিরা আবারো আমাকে ধরে নিয়ে যায়। আমাকে লাইনে দাঁড় করানো হয়। তারপর তারা আমাকে জিজ্ঞেস করলো, আমি কি করি? বললাম, আমি পানির ইঞ্জিনিয়ার (ওয়াসা)। এটা শুনে আমাকে ছেড়ে দেয়।

বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আমি আয়তুল কুরসি পড়ে বের হতাম। কারণ বের হলেই তারা আইডি কার্ড দেখতে চাইত, আরো নানা ধরনের বিব্রতকর প্রশ্ন করত। সবসময়ই আমি ভয়ে ভয়ে থাকতাম।"

এভাবেই অভিনেতা আবুল হায়াত তার কষ্টের কথা জানান। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে না পারাটা কষ্টটা যে কত গভীর ও বেদনাদায়ক, উনার কথা থেকেই তা অনুভব করে নেয়া যায়।

শ্রদ্ধেয় আবুল হায়াত স্যারের হয়ত অসুস্থতাজনিত কারণে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করা সম্ভব হয়নি, কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি স্বাধীন দেশে বেশ কয়েকটি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সিনেমার সোনালী পর্দায় একে৪৭ দিয়ে গুলি করে পাখির মত ঝাঁকে ঝাঁকে হানাদার মেরেছেন। নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই নতুনভাবে আমাদের হৃদয়ে জায়গা করে নিচ্ছেন আবুল হায়াত। একটা সময় মানুষ তাকে নিয়ে খুব একটা আগ্রহ না দেখালেও বর্তমানে ফেসবুকে তরুণদের মাঝে তাকে নিয়ে বেশ আলোচনা হতে দেখা যায়। স্বাধীন বাংলাদেশে আজীবন তার নাম উচ্চারিত হোক শ্রদ্ধা এবং সম্মানের সাথে, এটাই নির্জনমলা'র প্রত্যাশা…
 

Users who are viewing this thread

Back
Top