What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

হারানো ইনকা সভ্যতা ও তাদের রহস্যময় শহর মাচু পিচু (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
d25U5Kp.jpg


তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে আধুনিক সভ্যতা গুলোর একটি ছিল ইনকা সভ্যতা। এটি পৃথিবীর ইতিহাসের প্রাচীন সভ্যতাগুলোর মধ্যে অন্যতম আলোচিত একটি সভ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইনকা সভ্যতার সাম্রাজ্য ছিল ব্যাপক পরিসরে বিস্তৃত। প্রায় ১৪৫০ খ্রীষ্টাব্দে তাদের হাতেই গঠিত হয় একটি শহর। অনেকে আবার একে দূর্গ বলে। এর নাম মাচু পিচু !

মাচু পিচু এর অবস্থান

পেরুর রাজধানী লিমা থেকে ৩৫৭ মাইল দূরে ইনকাদের রাজধানী কোস্কো। এর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার ভিতরে, পাহাড়ের উপর তৈরী হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে প্রায় ২৪০০ মিটার উচুতে অবস্থিত এ শহর।

Kcyj3aK.png


কচুয়া ভাষায় মাচু পিচু নামের অর্থ হচ্ছে প্রাচীন পর্বত। আধুনিকতার মিশেলে তৈরী এই নগরী খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। স্পেনীয়দের আক্রমণ বেশিদিন এগোতে দেয়নি এই সাম্রাজ্যের ইতিহাস , অনেকের ধারণা স্পেন নাগরিকদের থেকে গুটিবসন্ত ছড়িয়ে পরে ইনকা নগরীর মানুষের মধ্যে ফলে ইনকা নগরী পরিত্যক্ত হয়ে পরে। নিজেরদের শহর থেকে মাচু পিচু দূরে তৈরি করায় সেসময় আসলে এই রাজ্য সম্পর্কে ইনকার মানুষ ছাড়া বাইরের কারো কোন ধারনাই ছিল না। ফলে সেটি ছিল বহির্বিশ্বের মানুষের জানার অন্তরালে। জনবসতিবিহীন হওয়ায় সেখানে একসময় গাছে ঢেকে যায় এবং তা সম্পূর্ন রুপে প্রকৃতির অন্তরালে চলে যায়। স্থানীয় কিছু মানুষ ছাড়া তৎকালীন কারোরই এ সম্পর্কে কোন ধারনাই ছিল না। এরপর পেরিয়ে গেল প্রায় সাড়ে চারশ বছরেরও বেশি সময়।

মাচু পিচুর আবিষ্কার

১৯১১ সালে মার্কিন ঐতিহাসিক হাইরাম বিঙ্গাম স্থানীয় কিছু কৃষকের সহায়তায় প্রথম বিশ্ববাসীর নজরে নিয়ে আসেন হারানো এই দূর্গটিকে। হাইরাম সেখানে পুরাতাত্বিক গবেষণা চালিয়ে এই অঞ্চল সম্পর্কে একটি বই লেখেন, এখানেই তিনি মাচু পিচুকে ইনকাদের হারানো সভ্যতা হিসেবে উল্লেখ করেন, স্থানীয় মানুষের সহযোগীতায় নতুন এই স্থানে পৌছালেও অজানা কারনে তিনি রার বই এর মধ্যে সেখানের কোন ব্যাক্তির নাম উল্লেখ করেননি। এমনকি মাচু পিচু আবিষ্কারের পেছনে তাদের কোনরকম কৃতিত্ব পর্যন্ত দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি।

wpOTRYk.png


মজার ব্যাপার হচ্ছে এমন যেকোনো দূর্গ বা স্থান রয়েছে হাইরাম নিজেই জানতেন না। তিনি গবেষনা করছিলেন ইনকা অধিবাসীদের নগরী ভিটকোস (Vitcos) নিয়ে। স্পেনের সাথে যুদ্ধে ইনকা অধিবাসীরা এ নগরীতেই আশ্রয় নিয়েছিল। স্পেনের বিরুদ্ধে সর্বশেষ প্রতিরোধের স্থান ছিল ভিটকোস নগরী । একটি মজার ব্যাপার হচ্ছে বিঙ্গামকে যারা মাচু পিচুতে নিয়ে গিয়েছিল তাদের কিছু কিছু পরিবার সেখানের তৈরি স্থাপনাতে বসবাস করত। তারা কিন্তু সেখানের মূল বাসিন্দা ছিলেন না। মূল বাসিন্দারা মাচু পিচু তৈরীর ১০০ বছরের মধ্যেই মারা যান। গবেষণার সময় সেখানে ভেরতে পাওয়া গিয়েছিল বেশ কিছু মমি যার অধিকাংশই নারী বা মেয়েদের। ১৯১৫ সাল পর্যন্ত গবেষনা করার পর মাচু পিচু নিয়ে বেশ কিছু বই লিখেন তিনি। তখন থেকেই শুরু হয় নতুন বিতর্ক। হুট করেই ফরাসী গবেষক সাইমন ওয়েসবার (Simon Waisbard) দাবী করে বসেন তিনি ও তার ২ সহযোগী আগেই এ জায়গা আবিষ্কার করেছেন এবং সেখানের একটি পাথরে তারা তাদের নাম খোদাই করে লেখে এসেছেন। একইভাবে ইংরেজ এক প্রকৌশলের দাবী তিনি অন্য একটি পাহাড়ের উপর থেকে মাচু পিচু দেখতে পান এবং এ সম্পর্কে স্থানীয় খ্রিষ্টান মিশনারীদের সাথে কথা বলেন। এবং মিশনারীর দাবী ছিল তিনি ও তার এক সহযোগী ১৯০৬ সালেই মাচু পিচু আবিষ্কার করেন।

এরই মাঝে ১৯১৩ সালে যখন ন্যাশনাল জিওগ্রাফি মাচু পিচু নিয়ে প্রতিবেদন রচনা করে। ফলে তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পরে। পেরু সরকার তখন প্রায় ৩২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষনা করে, ১৯৮৩ সালে এটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজের স্বীকৃতি পায়। ২০০৭ সালে 7 wonders এর সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় স্থান পায় এই মাচু পিচু।

মাচু পিচু কেন এত আগ্রহের বিষয় হলো মানুষের কাছে ?

  1. মাচু পিচুর অধিবাসীগণ পাথর খোদাইয়ের কাজে খুবই দক্ষ ছিল। তাদের হাতে খোদাইকৃত এত বছর পরেও অবিকৃত অবস্থায় বিরাজমান রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে পাথরের এ কাজগুলোতে কোনরুপ চাকা, লোহার সরঞ্জাম বা মর্টার ব্যাবহৃত হয়নি।
  2. প্রায় সম্পূর্ন শহরটিই তাদের হাতে খোদাই করা পাথর দিয়ে তৈরি।
  3. প্রবল ভুমিকম্প প্রবন এলাকায় অবস্থিত এ মাচুপিচু, এমনকি আগ্নেয় উপাত্যকার উপরে এর অবস্থান অথচ এতবছর পরও এত সুগঠিত ভাবে রয়েছে মাচুপিচু।
  4. এর অধিকাংশ স্থাপনাই মাটির নীচে রয়েছে, প্রায় ৬০ শতাংশই এখনো উদ্ধার করা যায়নি।
  5. দুটি গোপন মন্দির রয়েছে। একটি চন্দ্র মন্দির , অন্যটি সূর্য মন্দির। সূর্য মন্দির শহরের কেন্দ্র বরাবর লুকানো রয়েছে।
  6. আধুনিক গবেষকরা মনে করেন মাচুপিচু হচ্ছে তীর্থ যাত্রা বা ধর্মীয় কাজে তৈরি করা স্থান। তবে তা সম্পূর্ন রুপে তৈরি করা সম্ভব হয়নি।
  7. এখন পর্যন্ত মাচু পিচুর আবিষ্কার সম্পুর্নরূপে শেষ হয়নি , গবেষণা চলমান রয়েছে।
  8. ২০১৪ সালে ফরাসী গবেষকরা মাচু পিচুতে নতুন দরজা আবিষ্কার করেন। গবেষকরা ধারনা করছে এটিই হচ্ছে ইনকা সম্রাট প্যাচাকুটির সমাধীতে যাওয়ার প্রবেশপথই হচ্ছে এ দরজা। যদিও পেরু সরকার অজ্ঞাত কারনে সে দরজা খোলার কোনো রূপ অনুমতি দেয়নি। সরকার থেকে বলা হয়েছে প্রত্নতাত্বিক নিদর্শনের এতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
  9. ধারণা করা হয় ১৫৩২ সালে এ শহর তারা ত্যাগ করে, যাওয়ার আগে প্রবেশের রাস্তার জঙ্গল আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে যায় যেনো নতুন গাছ জন্মালে প্রবেশ পথ গাছে ঢেকে যায়।
  10. ইনকারা সভ্যতার দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে ছিলো। তাদের সকলেই ছিলো দক্ষ। উপকথা প্রচলিত আছে যে, ইনকায় কেউ খাদ্যাভাবে মারা যায়নি। তবে তাদের মধ্যে ছিলো মাত্রারিতিক্ত কুসংস্কারের বিশ্বাস।
(চলবে)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top