What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

খোয়াব ভবন – যেখানে ভীড় জমাতেন বলিউডের নায়িকারা (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
hoVuQIn.jpg


'খোয়াব' ভবন ছিলো রহস্য ঘেরা এক বাড়ি। প্রায় ১০ কাঠা জমির উপর তিন তলাবিশিষ্ট এই খোয়াব ভবনের জায়গা তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে তার শ্বশুরের পক্ষ থেকে দেয়া হয়। কাগজপত্রে এই জায়গার মালিক মামুনের স্ত্রী৷ সেখানে সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশ।

চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর শুরু হয় তারেকের বন্ধু মামুনের আর্থিক উত্থান। ক্ষমতার মাত্র ছয় মাসের মাথায় এ জায়গায় মামুন তিনতলা ভবনটি নির্মাণ করেন। সম্পূর্ণ বিদেশী পোড়া মাটি (টেরাকোটা) টাইলস সহ নানা ধরনের নকশী গাঁথায় ভবনটি তৈরি করা হয়। অভ্যন্তরে রয়েছে বিদেশী নানান রংয়ের লাইটিং ও শিল্পীর হাতের তৈরি কাজ। নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত অনুরূপ অবস্থা। গাজীপুর জেলা শহরে এত বিলাসবহুল ও দামী ভবন আর একটাও নেই।

চার দলীয় সরকারের সময় এই "খোয়াব" ছিলো তারেক জিয়ার বিনোদন কেন্দ্র। "খোয়াব" সারাদিন চুপচাপ থাকলেও, রাত বাড়লে ঝলমলে আলো দামী গাড়ি আর সুন্দরী মডেল নায়িকায় ভরে যেত। জেনে অবাক হবেন, শুধু বাংলাদেশি নয়, বলিউডের সুন্দরী নায়িকারাও ভীড় জমাতেন এই "খোয়াব ভবনে" !

তৎকালীন সময়ে একটা ঘটনা খুব আলোড়ন তৈরি করে…

Ws4RbUI.jpg


খোয়াব ভবন

২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাস। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর মন্ত্রণালয়ে জরুরী বৈঠকে বসেছেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজি, র‌্যাবের ডিজি সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত। বৈঠক কেবল শুরু হয়েছে। এমন সময় বেজে উঠল বাবরের ফোন। একটু বিরক্ত হয়ে ফোনের দিকে তাকালেন। ফোন নাম্বার দেখে ভরা মিটিংয়ে লাফিয়ে উঠে ফোনটা ধরলেন। বললেন 'জ্বী, ভাইয়া'। তারপর শুধু জ্বী জ্বী। আমি এক্ষুনি বেরুচ্ছি। ব্যস !! আনুষ্ঠানিকভাবে মিটিং শেষ না করেই প্রায় দৌড়াতে দৌড়াতে বেরুলেন। বাইরে দাঁড়ানো আট-দশজন মিডিয়া কর্মীকে প্রায় ধাক্কা দিয়েই লিফটের কাছে চলে গেলেন। তার পিএস এপিএস সহ ব্যক্তিগত স্টাফরা পড়িমড়ি করে ছুটছেন তাঁর পেছনে। গাড়িতে উঠেই বললেন এয়ারপোর্টে যাও। গাড়িতে উঠেই এয়ারপোর্টে ম্যাসেজ পাঠাতে শুরু করলেন। ভিআইপি আসবে এমিরেটসে ইত্যাদি ইত্যাদি।

এয়ারপোর্ট পৌঁছে শীতের মধ্যেই ঘাম মুছলেন বাবর। ভিআইপি লাউঞ্জ দিয়ে যখন ঢুকছেন, তখনই এমিরেটসের প্লেন ল্যান্ড করলো। বাবর প্রায় দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে বোর্ডিং ব্রিজের কাছে দাঁড়ালেন। ততক্ষণে বোর্ডিং ব্রিজ মোটামুটি ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তা রক্ষীরা। হঠাৎ বাবরের মনে হলো ফুল লাগবে। একজনকে বললেন, একটা ফুলের তোড়া জোগাড় কর। বোর্ডিং ব্রিজ খুললো। প্রথম যাত্রী যিনি বেরিয়ে এলেন তিনি হলেন শিল্পা শেঠী, ভারতের ততকালীন সুপারহিট গ্লামারাস নায়িকা ! উচ্চতায় বাবরের চেয়ে ভালোই লম্বা। বাবর তাঁর সঙ্গে হাত মেলালেন। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁকে নিয়ে ছুটলেন ভিআইপি লাউঞ্জের দিকে। ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ হলো নিমিষেই। বাবর তাঁকে নিয়ে তাঁর গাড়িতে ওঠালেন। গাড়ি ছুটলো টঙ্গীর দিকে, গাজীপুরে গিয়ে গাড়ি ঢুকলো এক বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদের মতো বাড়িতে। বাড়িটির নাম খোয়াব !

বাড়ির ভেতরের গেটে গাড়ি থেকে নামলেন শিল্পা, তাঁকে রিসিভ করলেন তারেক জিয়া, তাঁর সঙ্গী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন। শিল্পা শেঠী দুই দিন বাংলাদেশ ছিলেন, তিনি কোনো শো করেননি, শপিংও না। আসলে ওই দুই দিন খোয়াব ভবন থেকে তিনিই বেরই হননি। শিল্পা শেঠী যেমন খোয়াবেই ছিলেন, তেমনি ওই দুইদিন খোয়াবেই ছিলেন তারেক এবং মামুন। দুইদিন পর আবার বাবর এসে শিল্পাকে নিয়ে প্লেনে উঠিয়ে দেন।

শুধু শিল্পা শেঠী নয়, জানা যায় ভারতীয় নায়িকা মমতা কুলকার্নিও রাতের অতিথি হয়ে এসেছিলেন এই খোয়াব ভবনে !

বলতে ভালো না লাগলেও বলতে হচ্ছে, শুধু ভারতীয় নায়িকা নয়, বাংলাদেশেরও অনেক খ্যাতিমান নায়িকা খোয়াব ভবনে গিয়ে ধন্য হতেন। কেউ আসতে না চাইলে তাকে হয়রানি করা হত। শুধু দেশি তারকা নয়, বিদেশি তারকারাও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ সম্ভবত 'মেইড ইন ইন্ডিয়া' খ্যাত আলিশা ! ২০০৫ সালে আলিশা ঢাকায় এসেছিলেন কনসার্ট করতে। ঢাকায় পাঁচ তারকা হোটেলে পৌঁছানোর পরই আয়োজককে জানানো হয় আলিশাকে খোয়াবে যেতে হবে। ভাইয়া মিট করবেন। আয়োজক বেচারা বুঝতে পারেনি 'ভাইয়া' টা কে ! পাত্তা দেননি। একঘণ্টা পর পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় আয়োজককে। অভিযোগ অনুমতি ছাড়া কনসার্টের আয়োজন ! এরপর আলিশাকে বলা হয় গাজীপুরে যেতে। এরকম প্রস্তাবে তো আলিশা হতবাক। তিনি শরণাপন্ন হন ভারতীয় দূতাবাসের। ভারতীয় দূতাবাস খোঁজখবর নিয়ে ঘটনা বুঝতে পারে। তারা পররাষ্ট্র দপ্তরকে কঠোরভাবে জানিয়ে দেয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে। পরদিন সকালে আলিশা এবং কনসার্টের অন্য অংশগ্রহনকারীরা ভারতে চলে যান।

ওয়ান ইলেভেনে ক্ষমতা পালাবদলে গ্রেফতার হন গিয়াস উদ্দিন আল মামুন। তারপর থেকেই রহস্য ঘেরা 'খোয়াব' দাঁড়িয়ে আছে মৃত্যুপুরী এক ভুতুড়ে বাড়ি হয়ে !
 

Users who are viewing this thread

Back
Top