নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে বাংলাদেশ টস হেরে ব্যাট করতে নামে। ছন্দহীন ব্যাটিংয়ের মিছিলে ভিন্ন মূর্তিতে হাজির হন সাব্বির রহমান। ওয়ান ম্যান আর্মি হয়ে ভারতের বোলারদের কড়া শাসন করেন। মাত্র ৫০ বল মোকাবেলা করে ৭টি চার ও ৪ ছক্কায় ৭৭ রানের ইনিংস খেলেন।
শেষ ওভারে মিরাজের নেওয়া ১৮ রানে ভর করে বাংলাদেশ ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছে। ১৬৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করছে ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ভারত : ১৫১/৫ (১৯ ওভার শেষে)
ব্যাটিং : শঙ্কর ১২* ও কার্তিক ২২*।
জিততে : ১২ বলে ৩৪ প্রয়োজন।
রোহিত শর্মাকে ফেরালেন অপু : দলীয় ৯৮ রানের মাথায় নাজমুল অপুর বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ধরা পড়েন রোহিত শর্মা। বিপজ্জনক এই ব্যাটসম্যান ৪৩ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৬ রান করে যান।
রুবেলের দ্বিতীয় শিকার রাহুল : রুবেল হোসেনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন লোকেশ রাহুল। ৯.৩ ওভারের সময় দলীয় ৮৩ রানের মাথায় রুবেলের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে সাব্বিরের হাতে ধরা পড়েন রাহুল। ১৪ বল খেলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করেন।
পাওয়ার প্লেতে ভারতের ৫৬ : পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ ৩ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান করেছিল। ভারত সেখানে ২ উইকেট হারিয়ে করেছে ৫৬ রান। রোহিত শর্মা মারমুখী ব্যাটিংয়ে দলের রানের চাকা সচল রেখেছেন।
রায়নাকে ফেরালেন রুবেল : ধাওয়ান ফিরে যাওয়ার পর দলীয় সংগ্রহে আর কোনো রান যুক্ত হওয়ার আগেই সাজঘরে ফেরেন রায়না। রুবেলের বলে এজ হয়ে মুশফিকের হাতে ধরা পড়েন রায়না। ৩ বল মোকাবেলা করে তিনি কোনো রান করতে পারেননি।
সাকিবের প্রথম আঘাত : দলীয় ৩২ রানের মাথায় শিখর ধাওয়ানকে ফেরান সাকিব। তার বল মিডউইকেট দিয়ে মারতে গিয়ে বদলি খেলোয়াড় আরিফুল হকের হাতে ধরা পড়েন ধাওয়ান। ৭ বলে ১ ছক্কায় ১০ রান করে যান তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ১৬৬/৮ (২০ ওভারে)
ব্যাটিং : সাব্বির ৭৭, মাহমুদউল্লাহ ২১, মিরাজ ১৯* ও তামিম ১৫।
বোলিং : চাহাল ৪-০-১৮-৩, উনাদকট ৪-০-৩৩-২, সুন্দর ৪-০-২০-১।
৭৭ রান করে ফিরলেন সাব্বির : অফ ফর্মে থাকা সাব্বির রহমান আজ জ্বলে উঠলেন। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নেমে ১১ বল বাকি থাকতে আউট হন। ৫০ বল মোকাবেলা করে ৭টি চার ও ৪ ছক্কায় ৭৭ রান করে যান। জয়দেভ উনাদকটের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
সাকিব রান আউট : ১৭তম ওভারের পঞ্চম বলে রান নিতে গিয়ে আউট হন সাকিব। বিজয় শঙ্করের বলে কভারে ঠেলে রান নিতে গিয়ে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে পৌঁছাতে পারেননি সাকিব। তার পৌছানোর আগেই বিজয় শঙ্কর স্ট্যাম্প ভেঙে দেন। ৭ রান করে ফিরে যান তিনি।
সাব্বিরের চতুর্থ ফিফটি : টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি তুলে নিয়েছেন সাব্বির রহমান। ৩৭ বল খেলে ৫টা চার ও ২ ছক্কায় ৫০ রান করেন। ছন্দহীন ব্যাটিংয়ের দিনে ওয়ান ম্যান আর্মি হয়ে লড়ছেন তিনি।
ভুল বোঝাবুঝির শিকার মাহমুদউল্লাহ : দলীয় ১০৪ রানের মাথায় রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়ে ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিজয় শঙ্করের দেওয়া স্লোয়ার মিস করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাব্বির দৌড়ে প্রান্ত বদল করে ফেলেন। মাহমুদউল্লাহ দোটানার মধ্যে শেষ পর্যন্ত দৌড় দিলেও পৌঁছাতে পারেননি। শঙ্কর নিজ হাতে বল নিয়ে গিয়ে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন।
বাংলাদেশের ১০০ : ১৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ১০০। ৬৮ রানে মুশফিক ফিরে যাওয়ার পর সাব্বির ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে দলীয় সংগ্রহকে শতরান পার করেন।
মুশফিকও সাজঘরে : ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন সাব্বির ও মুশফিক। তারা দুজন ৩৫ রানের জুটিও গড়েন। কিন্তু দলীয় ৬৮ রানের মাথায় চাহালের বলে শঙ্করের হাতে ধরা পড়েন। ১২ বল খেলে ৯ রান করে যান তিনি। তার উইকেট পতনের মধ্য দিয়ে আরো চাপে পড়ল বাংলাদেশ।
পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান : পাওয়ার প্লে এর ৬ ওভারে বাংলাদেশ ৩ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান তুলেছে। উদ্বোধনী জুটিতে লিটন ও তামিম ২৭ রান তোলেন। এরপর ৬ রান যোগ করতেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তাতে রানের গতি যায় কমে। তাতে পাওয়ার প্লেতে ৪০ রানের বেশি পায়নি টাইগাররা।
৩৩ রানেই ৩ উইকেট নেই : যজুবেন্দ্র চাহালের করা পঞ্চম ওভারের শেষ বলে সৌম্য সরকারও আউট হন। স্কয়ার লেগ দিয়ে সুইপ শট খেলতে গিয়ে শিখর ধাওয়ানের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য। ২ বল খেলে ১ রান করে যান তিনি।
তামিমও সাজঘরে : লিটন কুমার দাস আউট হওয়ার ১ ওভারের মাথায় ফিরলেন তামিম ইকবালও। যজুবেন্দ্র চাহালের করা পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের এক ইঞ্চি সামনে শার্দুল ঠাকুরের হাতে ধরা পড়েন তামিম। যাওয়ার আগে ১৩ বলে ১ চারে ১৫ রান করেন তিনি।
ফিরলেন লিটন : ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে টপ এজ হয়। বল চলে যায় সুরেশ রায়নার কাছে। সহজেই তালুবন্দি করেন বল। লিটন দলীয় ২৭ রানের মাথায় ফিরে যান ৯ বলে ১ ছক্কায় ১১ রান করে।
অপরিবর্বিত একাদশ : ফাইনালকে সামনে রেখে বাংলাদেশ দলে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। আগের ম্যাচের অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে টাইগাররা। এদিকে ভারতের একাদশে একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। জয়দেভ উনাদকট একাদশে এসেছেন মোহাম্মদ সিরাজের পরিবর্তে। নতুন উইকেটে খেলা হচ্ছে। উইকেটে কিছুটা ঘাসও রয়েছে। পেসাররা সুবিধা পাবেন। এই উইকেটে ১৮০-১৯০ রান হতে পারে লড়াকু সংগ্রহ।
আগের যতো ফাইনাল : এর আগে বাংলাদেশ চারবার ফাইনাল খেলেছে। একবারও জয় পায়নি। ২০০৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল খেলেছিল টাইগাররা। এরপর ২০১২ ও ২০১৬ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। আর সবশেষ গেল জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল খেলেছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। গেল চারবারের ফাইনালে একবারও জয় পায়নি বাংলাদেশ। এছাড়া ভারতের বিপক্ষে এর আগে ৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মাঠে নেমে একটিতেও জয় পায়নি বাংলাদেশ।
এবার সেই বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারবে টাইগাররা? সেটা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে রাত পর্যন্ত।