বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফলের মধ্যে একটি পেঁপে। এতে আছে প্রাকৃতিক ফাইবার হিসেবে পুষ্টি, ভিটামিন এ, সি, কে, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, প্রোটিন। অত্যন্ত সহজলভ্য এই ফলটি যাদের ডায়াবেটিস আছে তারাও খেতে পারেন। তাই ইফতারিতে সহজপাচ্য পাকা পেঁপে কিংবা পেঁপের জুস খেতে পারেন। এতে পুষ্টির চাহিদা বেশ মিটবে।
পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ পেঁপের যে গুনাগুণ রয়েছে, তা জানা যাক-
হৃদরোগ থেকে রক্ষা
নিয়মিত পেঁপে খেলে অথেরোস্ক্লেরোসিস এবং ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। পেঁপের ভিটামিন এ, সি এবং ই, সমূহের এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর চমৎকার উৎস। এ তিনটি পুষ্টি কোলস্টেরল প্রতিরোধে সাহায্য করে, যা হার্ট এটাক ও স্ট্রোক এর প্রধান কারণ।
দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করে
অপথ্যালমোলজি আর্কাইভস প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিদিন তিনবার পেঁপে খেলে চোখের বয়সজনিত ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। বয়স্কদের মধ্যে দৃষ্টি ক্ষতি প্রাথমিক কারণ, প্রতিদিনের খাবারে তলনামূলকভাবে কম পুষ্টি গ্রহণ করা। পেঁপে আপনার চোখের জন্য ভালো এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ, সি, ও ই এর উপস্থিতির কারণে।
হজমে সহায়তা করে
বদ হজমের রোগীদের পাকা পেঁপে খেলে খুব উপকার মিলবে। পাঁকা পেঁপে খেলে মুখে রুচি ও খিদে বাড়ে। তাছাড়া পাকা পেঁপে কোষ্ঠ পরিষ্কার করে এবং বায়ু নাশ করে।
অর্শ ও কৃমিনাশক
কাঁচা পেঁপের বীজ কৃমিনাশক। কাঁচা পেঁপের আঠা চিনি বা বাতাসার সাথে মিশিয়ে খেলে অর্শ ও জন্ডিসসহ লিভারের নানা রোগ ভালো হয়। এ আঠা প্রতিদিন সকালে ৫- ৭ ফোঁটা আঠা বাতাসার সাথে মিশিয়ে খেলে অর্শের রক্ত পড়া বন্ধ হয়। ব্রন আঁচিল জিভের ক্ষতে এ আঠা লাগলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
কোলস্টেরল কমায়
পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই কোলস্টেরলের সমস্যায় যারা দুশ্চিন্তায় আছেন, তারা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পেঁপে রাখুন। অন্যান্য কোলস্টেরল যুক্ত খাবারের বদলে পেঁপে খান।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন আছে। এ ছাড়াও আরো অনেক পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। যা ক্যারোটিন ফুসফুস ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
চুলের যত্নে
টক দইয়ের সাথে পেঁপে মিশিয়ে চুলে মাখলে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও চুল ঝলমলে হয়। ১ চামচ পেঁপের আঠা ৭/৮ চামচ পানি দিয়ে চুলের গোড়ায় কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেললে উকুন মরে যায়।
ত্বকের যত্নে
পেঁপে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ফল, তাই ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। প্রতিদিন পাকা পেঁপের সাথে মধু ও টকদই মিশিয়ে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
ব্রণের দাগ কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায়
ব্রণের সমস্যা প্রায় সবারই থাকে। এসব ব্রণের কারণে মুখে খুব বাজে ধরনের দাগ তৈরি হয়। এই দাগগুলো নিরাময় করতে পারে এই ফলটি। মুখের অন্যান্য যেকোনো দাগ যেমন মেছতা, ফুস্কুরির দাগও খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে। মুখের বিভিন্ন দাগ দূর করার পাশাপাশি পেঁপে ফলটি মুখের উজ্জ্বলতাও ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।
প্রতিদিন অন্তত ১০০ গ্রাম পরিমাণ পেঁপে খাওয়া যেতে পারে। ১০০ গ্রাম পেঁপেতে পাওয়া যায় ৩৯ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট আছে ৯ দশমিক ৮১ গ্রাম, ফ্যাট শূন্য দশমিক ১৪ গ্রাম, প্রোটিন শূন্য দশমিক ৬১ গ্রাম।
রোজার ক্লান্তি শেষে পেঁপে পুষ্টি ও ভিটামিনের চাহিদাও বেশ কমিয়ে দিতে পারে।