সম্ভাবনাময় ফল লটকন
প্রচুর ক্যালরি, খাদ্য ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল লটকন। দক্ষিণ এশিয়ায় বেশ কিছু জায়গায় বুনোগাছ হিসাবে জন্মালেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে। ইংরেজী বার্মিজ গ্রেপ নামে পরিচিত হ'লেও আমাদের দেশে এ ফলটি বুবি, বুগি, লটকা, লটকো, নটকো ইত্যাদি নামে পরিচিত। মার্চ মাসের দিকে লটকন গাছে ফুল আসে এবং ফল পরিপক্ক হ'তে চার-পাঁচ মাস সময় লাগে। জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে লটকন বাজারে পাওয়া যায়।
লটকনের বিক্রিও ভালো। বাংলাদেশে একসময় অপ্রচলিত ফলের তালিকায় ছিল লটকন। কিন্তু এখন চাহিদা বাড়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। নরসিংদী যেলার শিবপুর, বেলাব, মনোহরদী ও সদরে প্রচুর পরিমাণে চাষ হচ্ছে। নরসিংদীর লাল মাটির সবুজ পাহাড়ী এলাকায় এবছর ১১৫ গ্রামে প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে লটকনের ব্যাপক চাষ করা হয়। এছাড়া গাযীপুর, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও সিলেট যেলার বিভিন্ন উপযেলায় বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। বর্তমানে এ ফলটি দেশের বিভিন্ন যেলা সহ মধ্যপ্রাচ্য, লন্ডন ও ইউরোপের দেশগুলোতেও রফতানী হচ্ছে।
লটকনের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। পুষ্টিমানের দিকেও লটকন অনেক সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে ১৭৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ১৬৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৩৭ মিলিগ্রাম শর্করা, ১৭৭ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম ও ১০০ মিলিগ্রাম লৌহ রয়েছে। এছাড়া লটকনের বীজ মূল্যবান রং উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। সিল্ক, তুলা ও পোশাকশিল্পে এ রং ব্যবহার করা হয়।