![Xc9cUjG.jpg](https://i.imgur.com/Xc9cUjG.jpg)
'মানুষের মধ্যে আমরা স্রেফ দুটো জিনিস দেখতে পাই। এক, আমরা যা দেখতে চাই আর দুই, যা তারা আমাদের দেখাতে চায়।'
এই সত্যিটা উপলব্ধি করতে আমাদের আদিগন্ত সময় লাগে। অথচ দেখুন যুবা বয়সেই বিমূর্ত এই সত্যকে আঁকড়ে ধরেছিল ডেক্সটার মরগান; পেশায় যে ব্লাড স্প্যাটার অ্যানালিস্ট ,আর শখে… সিরিয়াল কিলার।
প্রারম্ভেই গুরুগম্ভীর দর্শন কথা পাঠকের কপাল কুঁচকে ফেলবার জন্য যথেষ্ট। না, কোন জীবনগাঁথা লিখতে বসিনি। সিরিয়াল কিলারের জীবনী লিখে কী হবে বলুন?
ডেক্সটার মরগান সিরিয়াল কিলার হলেও বাকি সব খুনিদের মতো পিশাচ নয়, উল্টো কারো কারো জন্য ত্রাতা। থতমত খাবার আগে নিশ্চিত করি, ২০০৬-১৩ অব্দি শো-টাইমে চলা সিরিজের কথা বলছি। বাস্তবে ডেক্সটারের অস্তিত্ব না থাকলেও বহু খুনিকে উদ্বুদ্ধ করেছিল এই সিরিজ।
অ্যান্টি হিরোর যুগ
মিলেনিয়ামের প্রথম ভাগে বিশ্ব সিনেমা ও সিরিজে আসে নব্য ঢেউ। প্রোটাগনিস্টই সময়ের আবর্তে পরিণত হয় অ্যান্টাগনিস্টে। অর্থাৎ, যিনি নায়ক তিনিই ভিলেন। ১৯৯৯-২০০৭ অব্দি চলা 'The Sopranos', ২০০৮-১৩ এর 'Breaking Bad' এর ওয়াল্টার হোয়াইট- জনপ্রিয়তার পাশাপাশি নৈতিক দ্বন্দ্বেও ফেলে দেয় দর্শককে। ওদিকে সিনেমার ক্ষেত্রেও American Psycho বা নোলানের 'Dark Knight Rises' এর জোকার- সরাসরি আইকনে পরিণত হয়।
সেদিক থেকে বড় একটা অসুবিধেতেই পড়তে যাচ্ছিল মিস্টার মরগান। সিরিয়াল কিলার তাপ্পা লাগা মানেই ভয়ংকর খুনির সাথে দ্বৈরথে নামবে দর্শক। অথচ চিরাচরিত সেই চিত্রের বাইরে এসে আদ্যোপান্ত নৈতিক এক ক্রমিক খুনির সাথে পরিচয় ঘটে দর্শকের। বিশেষত সিরিজের প্রথম থেকেই ভরাট কণ্ঠের নিষ্পাপ স্বীকারোক্তি চমকে দেয়।
পেশায় আমেরিকার মায়ামি শহরের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের তুখোড় অ্যানালিস্ট হলেও আদতে সে ক্রমিক খুনি। ভাবছেন, পুলিশ বিভাগে কর্মরত থেকেও কীভাবে এহেন কুকর্ম সম্পাদন সম্ভব? সেখানেই বিস্তর চমক রেখছেন শো-য়ের নির্মাতারা।
হত্যাকাণ্ডের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণে যাদের আগ্রহ অসীম, তাদের জন্য ধ্রুপদী এই উপাদেয় সিরিজ। ট্রাংকুলাইজারের প্রভাবে টার্গেটকে অজ্ঞান করা থেকে কেটেকুটে সলিল সমাধি করা অবধি পুরোটাই বারবার দেখিয়েছেন ড্যানিয়েল সেরন, মেলিসা রোজেনবার্গ ও ক্লাইড ফিলিপসরা।
মার্কিন ক্রাইম ঔপন্যাসিক জেফ লিন্ডসের 'Darkly Dreaming Dexter'-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি হয় এর প্রথম কিস্তি। এরপরের বাকি সাত সিজনের দায়িত্ব অর্পিত ছিল সিরিজের নিজস্ব রচনাকারদের উপর।
![SFcVbva.jpg](https://i.imgur.com/SFcVbva.jpg)
ট্রিনিটির হাতেই পরিবারকে হারায় ডেক্স
অবিমিশ্র এক চরিত্র
'আমার ভেতরের যেই শূন্যতা, যেই খাপছাড়া রিক্তভাব, সেটা আসলে বড় কোন বিষয় নয়। আমার মনে হয়, বেশিরভাগ লোকের আবেগ, পারস্পরিক সৌহার্দ্য আসলে মেকি। আমিও তাদের মতো কপট। অনুভূতিকে নকল করে চলি আমি, আবেগের ছিটেফোঁটাও সেখানে নেই।'
প্রথম পর্বের এই বিহ্বল স্বীকারোক্তি আপাদমস্তক কাঁপিয়ে দেয় দর্শকদের। অকপট জবানে ধীরে ধীরে ডেক্সটারের বাকিটুকুও ক্রমে প্রকাশিত হয়। দ্বৈত জীবনে পেশাগত দিক থেকে অসম্ভব মেধাবী এক ব্লাড স্প্যাটার অ্যানালিস্ট সে, ক্রাইম সিন দেখেই গল্পের মতো ধরে ফেলতে পারে হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যপট। একেক ছিটে রক্ত যেন তার কাছে একেক তুলির আঁচড়। আর সেই চিত্রকর্মের একমাত্র ও একান্ত বোদ্ধা ডেক্স।
ওদিকে রক্তের সাথেই যার বসত, তাঁরও ব্যক্তিগতভাবে রক্তের নেশা প্রচুর। তাঁর একমাত্র আসক্তি খুনে। তবে পথে-ঘাটের যে কাউকে সুযোগ বুঝে বোধ করে ফেলে না এই 'ডার্ক প্যাসেঞ্জার'। মায়ামি মেট্রোতে কাজের সুবাদে নিত্যদিনই মেলে অপরাধীদের তালিকা। সেই তালিকা ধরেই চলে তদন্ত। দোষী সাব্যস্ত হলেই হল- 'কিল টেবিল'ই অপরাধীর নিয়তি।
এটুকু ভূমিকাতেই টের পাচ্ছেন, গড়পড়তা ক্রমিক খুনে নয় ডেক্স। বরং রক্ষাকর্তা হিসেবেই তাঁকে চেনানো যায়। তীব্র খুনের নেশাকে নৈতিক ধারায় টানার সমস্ত কৃতিত্ব অবশ্য পালক পিতা হ্যারি মরগানের প্রাপ্য। মাত্র দশ বছরেই যখন ছেলের মাঝে তীক্ষ্ণ ধী সম্পন্ন এক হন্তারককে দেখতে পান, তখনই সাজিয়ে ফেলেন ছক। কোড আর নীতির বলয়ে বেঁধে ফেলেন সুচতুর ডেক্সকে।
প্রত্যেক সিজনেই নব নব উপায়ে তদন্ত ও হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেখা যায়। আইস ট্রাক কিলার, ট্রিনিটি কিলার, ডুমসডে কিলার প্রভৃতি সিরিয়াল কিলারের মুখোমুখিও হতে হয় ডেক্স তথা মায়ামির 'বে-হারবার বুচার'কে।
কেন্দ্রীয় চরিত্র ডেক্স হলেও এর পাশাপাশি বোন ডেবরা মরগান, লেফটেন্যান্ট মারিয়া লাগুয়েরতা, রিটা, জোয়ে কুইন, ভিন্স মাসুকা, হানাহ, লুমেন, হ্যারি, ম্যাথিউ, হ্যারিসন, ভোগেল, ব্রায়ান মোসার, এঞ্জেল বাতিস্তা প্রমুখ চরিত্রেরও ছিল অসামান্য গুরুত্ব।
![dvEVY5h.jpg](https://i.imgur.com/dvEVY5h.jpg)
সিরিজ নির্মাণের পর প্রকাশ পায় লিন্ডসের উপন্যাসের বাকি পর্বেরা; Photo
পর্দার পেছনের কথা
প্রথম থেকেই কৌতূহলের ছক এঁকে দিয়েছিল এর প্রচারণায় নিয়োজিত দল। শো আরম্ভের পূর্বেই ইংলিশ দর্শকদের মোবাইলে "Hello (ব্যক্তির নাম). I'm heading to the UK sooner than you might think. Dexter." লেখা এসএমএস পাঠানো হতো। চটকদার প্রচারণা হলেও কেউ কেউ ব্যক্তিগত তথ্যের হুমকি হিসেবে একে দেখেন। ইমেইলে বিভিন্ন হত্যাকান্ডের বিচ্ছিন্ন ফুটেজ পাঠিয়েও তাক লাগায় এই মার্কেটিং দল।
সদ্যই Six Feet Under সমাপ্ত করে উঠেছিলেন মাইকেল সি হল। সেখানেও লাশ, মৃত্যুরই কারবার ছিল মূল প্রতিপাদ্য। ওদিকে লেখক জেফ লিন্ডসের প্রথম পছন্দ ছিলেন জেরেমি রেনার। 'হকআই'কে প্রস্তাবও দেয়া হয়। কিন্তু সদ্যই 'Dahmer'- এ সিরিয়াল কিলারের খোলসে আবৃত ছিল রেনার। পুনরাবৃত্তি এড়াতেই প্রস্তাব পৌঁছুল মাইকেল সি হলের দোরে। প্রযোজকের চাপে মাইকেলের অডিশনে উপস্থিত ছিলেন জেফ। মাইকেল এক লাইন আউড়াতেই গোটা টিম তখনই নিশ্চিত- 'পারফেক্ট' ডেক্সটারের চরিত্রে মাইকেলকেই মানায়।
![5wKJEIT.jpg](https://i.imgur.com/5wKJEIT.jpg)
হত্যার সময় স্লাইডে রক্তের ফোটা হিসেবে ব্যবহৃত হতো ম্যাপল সিরাপ মিশ্রণ
সুযোগ পেলেও যাত্রাটা সহজ হয়নি সুদর্শন এই অভিনেতার। শো চলাকালেই হজকিনস লিম্ফোমায় (ক্যান্সার) ধরা পড়ে। চিকিৎসা ও কেমোথেরাপির মাঝেই চলে শুটিং। থেরাপির কারণে চুল হারানোয় সিজন পাঁচে পরচুলা পরতে হয়েছিল তাঁকে।
কতগুলো নিয়মের আবর্তে বাধা ছিল এই ব্লাড স্প্যাটার এনালিস্ট, তা কিন্তু না। জঘন্য অপরাধীদের খুন করবার সময় কিছু আচারও মেনে চলতো সে। যেমন- পুরো প্লাস্টিকের মোড়কে মুড়ে ফেলতো আসন্ন- মৃতের নগ্ন দেহ, কৃতকর্মের কথা স্মরণ করিয়ে অনুতপ্ত করার চেষ্টাও করা হতো, স্লাইডে জমতো এক ফোটা রক্ত- ট্রফি হিসেবে। আর হ্যাঁ, খুনের পর মৃতদেহের টুকরো একে একে তিনটে ব্যাগে ভরে মাঝ সমুদ্রে ফেলে দেয়াও ছিল শেষ অঙ্ক।
প্রতিটি খুনের সময়ই ডেক্সটারের পরনে থাকতো লং-স্লিভের শ্যাওলা সবুজ হেনলে শার্ট। শো-য়ে কখনোই রক্ত ব্যবহার করা হয়নি। রক্ত হিসেবে যা দেখানো হতো তা ছিল ম্যাপল সিরাপ, ফুড কালার, পেপারমিন্ট তেল এবং ডিটারজেন্ট। তবে বাক্সে রাখা স্লাইডে রক্ত হিসেবে আসবাবের রং দেয়া হতো।
বিখ্যাত কিল রুম সাজাতে টানা ১২ ঘণ্টা লেগে যেতো। আর শুটিংয়ে কাটত আরও ৮-৯ ঘণ্টা। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, চেইন স সমস্ত ছিল অকৃত্রিম, তবে শুটের আগে সেগুলো ভোঁতা করে নেয়াতেই ছিল রক্ষে!
![Nm3Kcjm.jpg](https://i.imgur.com/Nm3Kcjm.jpg)
উত্তুঙ্গ জনপ্রিয়তায় অ্যানিমেটেড সিরিজও রিলিজ পায়
ডেক্সটারের 'নক-আউট' সিরিঞ্জে থাকতো এম-৯৯ (এট্রোফিন হাইড্রোক্লোরাইড), যা সাধারণত পশুদের অজ্ঞান করতে ব্যবহার করা হয়। তবে আশার বাণী আমজনতার কেউ 'চাহিবামাত্র একে পাবেন না'। একমাত্র DEA লাইসেন্সধারীরাই এর আয়ত্তে আসতে পারেন।
সম্পূর্ণ সিরিজের উল্লেখযোগ্য দিক হলো এর সুর সংযোজন। মজার ব্যাপার হল, সুরকার ড্যানিয়েল লিখট 'ডেক্স থিম' মূলত তৈরি করেছিলেন হরর ফিল্ম Necronomicon: Book of Dead (1993) এর জন্য।
সিরিজের অন্যতম আলোচিত ভিলেন ছিল মিচেল আর্থার বা 'ট্রিনিটি কিলার'। জন লিথগোর রূপায়িত চরিত্রটি কিন্তু বাস্তবে আরেক ক্রমিক খুনি ডেনিস র্যাডার ওরফে বিটিকে কিলারের আদলেই নির্মিত।
ডেক্সটার শব্দের ল্যাটিন অর্থ হলো 'ডান হাত', এর বিপরীত 'বাম হাত' এর ল্যাটিন হচ্ছে 'সিনিস্টার'। লেখক জেফ এই নামের অর্থ দ্বারা দুই বিপরীতমুখী ব্যক্তিত্বের ভারসাম্যকেই নির্দেশ করেছেন।
গল্পের পটভূমি মায়ামি হলেও মূল চিত্রায়ন হয় ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে এবং সানসেট-গোয়ার স্টুডিওতে। মায়ামির আসল কিছু স্থানের চিত্রায়নও অবশ্য যুক্ত হয়েছে মাঝে মধ্যে।
জনপ্রিয়তার পরত
প্রথম সিজন থেকেই খ্যাতনামা সব পুরস্কার অনুষ্ঠানে মনোনয়ন পেয়ে আসে 'ডেক্সটার'। যার চূড়ান্ত ফল মেলে ২০১০ সালে মাইকেল সি হলের গোল্ডেন গ্লোব ও স্ক্রিন এক্টরস গিল্ডে। এমিতেও বরাবরই এগিয়ে ছিল আইএমডিবিতে ৮.৬ নম্বর পাওয়া এই সিরিজ।
![wTXnsnb.jpg](https://i.imgur.com/wTXnsnb.jpg)
নীতি মেনেই খুন করতেন ডেক্সটার
বিপুল জনপ্রিয় হওয়ায় প্রত্যাশার পারদটাও ছিল সপ্ত আসমানে। সেখানেই জল ঢেলে দেন নির্মাতারা। মার্কিন টিভি সিরিজের ইতিহাসে একদিকে যেমন অন্যতম সেরা হিসেবে একে মানা হয়, অন্যদিকে এর সমাপ্তি কাহিনী নিয়েও রয়েছে কর্কশ সমালোচনা।
প্রযোজক জন গোল্ডউইন বলেন, 'শো টাইমের সিদ্ধান্তেই আসলে যবনিকায় ডেক্স বেঁচে যায়। তাদের ধারণা ছিল, লোকে ওর মৃত্যু মানতে পারবে না।' নির্বাহী প্রযোজক সারা কোলেও বিশদ বোঝান এভাবে,' শেষ দৃশ্যে আমরা ডেক্সের মুখটা দেখি। পুরনো কাজ, যা তার প্যাশন ছিল, যেভাবে সে নিজেকে ব্যাখ্যা করতো- তার বদলে দেখি সুনসান নিস্তব্ধতা। এটা মৃত্যুর থেকেও বেদনাদায়ক।'
সাংস্কৃতিক প্রভাব ও অন্যান্য
বিতর্কিত বিষয় ও সহিংস দৃশ্যের জন্য কম রোষানলেও পড়তে হয়নি এই শো-কে। মার্কিন সিবিএস নেটওয়ার্ক যখন ২০০৭ এর পুনঃপ্রচার চালু করে, তখনই প্যারেন্টস টেলিভিশন কাউন্সিলের বিরোধিতার মুখে পড়ে নির্মাতা দল।
পিটিসির দাবি ছিল, শুধুমাত্র প্রাইম গ্রাহকেরাই যেন এই সিরিজ দেখতে পান। আপামর জনতা, বিশেষত শিশুদের মনোবিকাশে এটি ভয়ানক প্রভাব ফেলতে পারে বলে তাদের ধারণা ছিল। কারণ সিরিজের মূল চরিত্রের মধ্যেই ছিল বিপরীত বৈশিষ্টের তুমুল দ্বন্দ্ব।
সিরিজের অনুপ্রেরণায় ২০০৯ সালে 'Dexter: Early Cuts' নামে তিন সিজনের অ্যানিমেটেড সিরিজও প্রকাশ পায়। এমনকি মারভেল কমিকসও ২০১৩ তে Dexter limited series কমিকস আকারে প্রকাশ করে, যার লেখনীতে ছিলেন জেফ লিন্ডসে এবং রং-তুলিতে ফুটিয়ে তোলেন তালাজিক।
এদিকে খেলনা প্রস্তুতকারি প্রতিষ্ঠান আর গেম ডেভেলপাররাও বসে নেই। ২০০৯ এ ইকারাস স্টুডিও, ২০১০ সালে শোটাইম দুটি পৃথক গেম তৈরি করে। ডেক্সের নাম অঙ্কিত বোর্ড গেম, টিশার্ট, ছুরির বিক্রিও চলে দেদারসে।
খুনের প্রেরণায় ডেক্সটার?
মার্টিন আর শেইন– সামনেই তাদের বিয়ে। অথচ বিয়ের পরিকল্পনার চেয়ে অন্যদিকেই তাদের মনোযোগ। সুযোগ পেলেই রাস্তা থেকে বিড়াল ঘরে নিয়ে আসে মার্টিন; না শেইনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে নয়- নিখাদ নিরীক্ষার জন্য।
কিছুদিন পরই পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে ভীতিকর তথ্য। ডেক্সের পাড় ভক্ত-যুগল নিয়মিত নৃশংস পন্থায় হত্যা করে বিড়ালদের। তাই নয়, ফ্রিজে মেলে আস্ত মানুষের মাথা, চামড়া, কানসহ বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ।
বহু ক্রমিক খুন ও নির্মম নির্যাতনে জড়িত ছিল আরেক মার্কিন নারী জেসিকা লোপেজ; সঙ্গী আরও দুই নারীপুরুষ। জেসিকা স্বীকার করে, ডেক্স দেখেই মরদেহ টুকরোর প্রেরণা পেতো তারা।
২০১০ সালে এন্ড্রু কনলি নাম্নী এক তরুণ খুন করে আপন ছোট ভাইকে। নির্মমভাবে শ্বাসরোধে হত্যার পর পার্কের উন্মুক্ত স্থানে ফেলে রাখে তাকে। তদন্তের জবানিতে জানায়, সিরিজ থেকেই আন্দোলিত হয় সে।
মার্ক টুইচেলের কাহিনীও ভিন্ন নয়। প্রতিভাবান এই চিত্র পরিচালক ও লেখক শুধু সিরিজের একনিষ্ঠ ভক্তই ছিল না, নিয়মিত ব্লগও লিখত তা নিয়ে। ব্লগের আত্মকথায় মাঝে মাঝেই পরিপূর্ণ খুনের বিবরণ উঠে আসতো। প্রথমে পাঠকেরা পাত্তা না দিলেও ক্রমেই সত্য উদ্ঘাটিত হয়। সৌভাগ্যক্রমে টুইচেলের এক ভিক্টিম পালানোয় প্রকাশ পায় আসল পরিচয়।
![nApZNAS.jpg](https://i.imgur.com/nApZNAS.jpg)
মাইকেল হল ছাড়াও জেনিফার কারপেন্টার, জুলি বেঞ্জ, ডেভিড জায়াস, লরেন ছিলেন মূল পটে
প্রতি কিস্তিতে বারোটি করে আট সিজনে মোট ৯৬টি পর্ব আছে এতে; ব্যাপ্তি ৪০-৫৮ মিনিট। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, প্রতি সিজনের মাঝপথেই মোটামুটি মূল শত্রুকে চিনে ফেলতো ডেক্স, অথচ বাকি পর্বগুলোয় থ্রিল থাকতো অটুট।
যবনিকা টানি টিভি ইতিহাসের আদরণীয় দুর্ধর্ষ এই খুনির কথায়, "Life doesn't have to be perfect. It just has to be lived."
অর্থাৎ, জীবনকে নিখুঁত করবার চেষ্টা অনর্থক, বরং পরিস্থিতিকে গ্রহণ করে বেঁচে থাকাই জীবন।