ছেলে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিতে অনিদ্রার সমস্যাটা বলতে গেলে একটা সাধারণ বিষয় হলেও এর ফলে কিছুটা মানসিক অশান্তির সৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই এই সময় নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনের মাধ্যমে অনিদ্রাসহ বয়ঃসন্ধি কালের যাবতীয় সমস্যা কাটিয়ে উঠা সম্ভব। তবে এ বিষয়ে প্রত্যেক মা বাবারই সতর্ক থাকা উচিত। বিশ্বে প্রায় এক-চতুর্থাংশ কিশোর-কিশোরী নিদ্রাহীনতার সমস্যায় ভুগছে । এদের ৪ থেকে ৫ শতাংশের সমস্যা রীতিমতো রোগের পর্যায়ে পড়ে ।
অনিদ্রার কারণে কৈশোরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা হলো মনোযোগের অভাব, লেখাপড়ায় ব্যাঘাত, আচরণগত সমস্যা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা । এতে বিষণ্নতা বা ডিপ্রেশন হতে পারে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায় । অনেকে মাদকাসক্তির দিকেও ঝুঁকে পড়তে পারে । কৈশোরে অনিদ্রার একটি বড় কারণ নিতান্তই শারীরবৃত্তীয় ও হরমোনজনিত । ঘুম নিয়ন্ত্রণকারী গুরুত্বপূর্ণ হরমোন মেলাটোনিক নিঃসরণের দৈনন্দিন ছন্দ ব্যাহত হয় বয়ঃসন্ধিকালে।
স্বাভাবিকভাবে রাত ১১টার দিকে মেলাটোনিকের মাত্রা সর্বোচ্চ থাকার কথা থাকলেও বয়ঃসন্ধিতে নানা হরমোনের তারতম্যে এর সময় ঘণ্টা দুয়েক পিছিয়ে যায় । কখনো কখনো এই সময় মধ্যরাত পেরিয়ে শেষ রাতে চলে যেতে পারে । ফলে যখন ঘুমের গভীর স্তরে যাওয়ার সময় হয়, তখনই স্কুল বা কলেজের জন্য তাকে উঠে পড়তে হয় । আর এর প্রভাব সারা দিন থেকে যায়। অনিদ্রার আরেকটি কারণ বংশগত ।
কেউ কেউ রাতের বেলায় পা কামড়ানো (রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম), উদ্বেগ বা ভয়ের কারণে ঘুমাতে পারে না । অতিরিক্ত স্থূল ব্যক্তিরা রাতে স্লিপ অ্যাপনিয়া বা শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার দরুন নিদ্রাহীনতায় ভোগে । ঘুমের অন্তত ৯০ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টা আগে পর্যন্ত স্নায়ু উত্তেজক কার্যাবলি থেকে বিরত থাকতে হবে। যেমন টিভি দেখা, ফেসবুকিং, সেলফোনে কথা বলা বা কম্পিউটার গেম খেলা। ঘুমের দুই ঘণ্টা আগে থেকে কোনো রকম ব্যায়াম করাও চলবে না ।