ব্যান্ড সংগীতের জনপ্রিয় তারকা বিপ্লব বেশ কয়েক বছর হলো প্রবাসী। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ট্যাক্সিসেবায় যুক্ত হয়েছেন তিনি। কাজের ফাঁকে সময় পেলে গানও করেন। একসময়ের ব্যস্ত এই শিল্পীকে বেশ কয়েকটি ঈদ কাটাতে হয়েছে সেখানে।
বিপ্লবের কাছে ঈদ মানেই ঈদের সকালে দুই ছেলেকে নিয়ে ঈদগাহে যাওয়া। বাসায় ফিরে খাওয়াদাওয়া করা। এরপর একটা লম্বা ঘুম। তারপর পরিচিতজন ও বন্ধুদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়। এবারের ঈদ কেমন কেটেছে তাঁর? বিপ্লব বলেন, ‘দুই ছেলেকে নিয়ে বাসার পাশের একটি স্কুলমাঠে ঈদের নামাজ পড়েছি। এটাই ঈদের বড় আনন্দ। এরপর বাসায় গিয়ে মেয়ে ও দুই ছেলের সঙ্গে আড্ডা হলো। বিকেলে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি, খাওয়াদাওয়া করেছি।’
বিপ্লব
২১ বছর আগে স্বামী-সন্তানসহ সবাইকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান শাবানা। এখন তিনি আছেন নিউজার্সিতে। শাবানা বলেন, ‘আমার মা, ভাই–বোন, সন্তানেরা সবাই এখানেই থাকেন। সবাই একসঙ্গে থাকতে পারার আনন্দটাই অন্য রকম। তবে ঈদের আনন্দ সেভাবে টের পাই না। বাংলাদেশে ঈদ নিয়ে সবার মধ্যে যে উচ্ছ্বাস, সেটা খুব মিস করি। দেশের জন্য টান কিন্তু একেবারেই অন্য রকম। আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, অভিনয়জীবন, মানুষের ভালোবাসায় শাবানা হয়ে ওঠা—সবই বাংলাদেশে। তাই যতই আমি দেশের বাইরে থাকি না কেন, আমার কাছে ঈদের আনন্দ দেশেই সবচেয়ে বেশি। তবে মাঝেমধ্যে ঈদে যখন ঢাকায় আসি, তখন সন্তানদের কথা খুব মনে পড়ে।’
ঈদের সময় শাবানাদের পরিবারের সবাই একত্র হন। সবার জন্য নিজ হাতে রান্না করেন শাবানা। স্বামী ওয়াহিদ সাদিক শাবানার বানানো লাচ্ছা সেমাই খেতে পছন্দ করেন। শাবানা বলেন, ‘ঈদের দিন আর যা–ই করি না কেন, লাচ্ছা সেমাই থাকবেই। অন্য যা–ই রান্না করি না কেন, সেটাই তিনি পছন্দ করেন। টেবিলে অনেক খাবার সাজানো থাকলেও তিনি বুঝে ফেলেন কোনটি আমার রান্না, কোনটি অন্যের। সন্তানেরাও মায়ের রান্না পছন্দ করে।’
শাবানা
একমাত্র সন্তান আইজান নেহানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকেন শাবনূর। ভেবেছিলেন, করোনার কারণে এবারের ঈদ ভালো কাটবে না। তবে শেষ পর্যন্ত যেমনটা ভেবেছিলেন, তার চেয়ে অনেক ভালো কেটেছে তাঁর। রোববার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে আটটায় ফোনালাপে শাবনূর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘুরতে ভালোবাসি। আনন্দের কাজ করতে পারলে কার না ভালো লাগে? চার দিন ধরে ঘোরাঘুরির মধ্যেই আছি। এখানে আমার আত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধব অনেক। ভেবেছিলাম এবারের ঈদ খুবই খারাপ কাটবে। চারদিকে করোনার কারণে একটা বাজে সময় যাচ্ছে সবার। আমারও মনটা খুব খারাপ ছিল। কিন্তু ভালোই কেটেছে।’
শাবনূর এখন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী, সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ায় থাকা টিভি তারকা মাহফুজ আহমেদের ঈদ কেটেছে কষ্টে। বাংলাদেশ থেকে সময়মতো অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছালেও স্ত্রী–সন্তানদের সঙ্গে ঈদ কাটাতে পারেননি তিনি। ৮ মে সিডনি পৌঁছালে সেখানকার পুলিশ বিমানবন্দর থেকে মাহফুজকে নিয়ে যায় কোয়ারেন্টিন সেন্টারে। ২২ মে পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে তাঁকে। মাহফুজ বলেন, ‘কোয়ারেন্টিন মানে কঠোর কোয়ারেন্টিন। রুমের সামনেই পুলিশ। এক পা বাইরে ফেলার সুযোগ নেই। অনেকটা জেলখানার মতোই। পুলিশই খাবার দিয়ে যাচ্ছে, মাস্ক পরে খাবার নিতে হচ্ছে। বাসায় স্ত্রী-সন্তান একা, কিন্তু আমার যাওয়ার উপায় নেই। ভিডিও কলে দেখা ছাড়া উপায় নেই। এত কাছাকাছি থেকেও স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করতে না পারাটা কষ্টের।’
মাহফুজ আহমেদ। সংগৃহীত
সুইডেনের স্টকহোমে থাকেন ঢালিউডের একসময়ের অভিনেত্রী তামান্না। ঈদ কেটেছে সেখানেই। পরিবার নিয়ে তৌকীর-বিপাশারও ঈদ কেটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশের একসময়কার অনেক অভিনয়শিল্পী এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। অন্য তারকাদের মধ্যে রোমানা, রিচি সোলায়ামান, শ্রাবন্তী, ফারজানা রিয়া, মোনালিসা, মিলা হোসেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঈদ উদ্যাপন করেছেন। শ্রাবন্তী জানান, এখানে থাকা প্রায় সবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। করোনার এই সময়ে ইতিবাচক হচ্ছে, এমন অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে, যাঁদের সঙ্গে বছরের পর বছর কথা হয়নি, দেখা হয়নি।
রিচি সোলায়মান, সংগৃহীত