What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other যেমন দেখেছিলাম হুমায়ূন ফরীদিকে (1 Viewer)

SoundTrack

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
530
Messages
13,427
Credits
283,140
Recipe pizza
Loudspeaker
xp2kU1D.jpg


আজ ১৩ ই ফেব্রুয়ারি বাংলা ১ লা ফাল্গুন। এই পয়লা ফাল্গুনেই আমরা গত ২০১২ সালে হারিয়েছিলাম বাংলাদেশের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি’কে। আমার কাছে এই প্রিয় অভিনেতা জড়িয়ে আছেন অনেক অনেক ভালোলাগা, আনন্দের স্মৃতি হয়ে যা কোনদিন ভুলার নয়। তাই প্রিয় অভিনেতার ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে হুমায়ূন ফরীদিকে নিয়ে আজ ব্লগে, ফেইসবুকে, পত্রিকার পাতায় অনেকেই লিখবেন। কিন্তু আমার লিখাটি সম্পূর্ণ আলাদা। আমি আমার জীবনের সেরা সময়টাতে ফরিদিকে দেখেছি বহুবার, বহুদিন । ফরীদিকে কেমন দেখেছিলাম সেটা আজ আপনাদের সংক্ষেপে একটু বলতে চাই।

বাণিজ্যিক ধারার সামাজিক অ্যাকশন ছবির জমজমাট ৮০র দশক পার হয়ে শুরু হলো ৯০ দশক। সেই ৯০ দশকের শুরুতেই বাংলা চলচ্চিত্রে আবির্ভাব হয় হুমায়ুন ফরিদি নামক জনপ্রিয় একজন টেলিভিশন নাট্যঅভিনেতার। যিনি মাত্রই শেষ করে এসেছেন বাংলাদেশ টেলিভিশন এর জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক শহিদুল্লাহ কায়সার এর রচিত ও আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নাট্যরূপ ‘সংশপ্তক’। যে নাটকে ফরিদি ছিলেন মিয়া বাড়ির প্রধান মিয়ার বেটার (খলিলুল্লাহ খান) এর ঘনিষ্ঠ সহচর, খাস লোক বা বিশ্বস্ত ‘হুকুমের গোলাম’ রমজান। যিনি পরবর্তীতে গ্রামের হুলমতি নামক এক অসহায় দরিদ্র নারীর উপর লোলুপ দৃষ্টি দিয়ে থাকেন যার ফলে হুলমতি প্রতিশোধ নিতে রমজানের ডান কান কেটে ফেলে। রমজান হয়ে যায় ‘কান কাটা রমজান’। সেই ‘কান কাটা রমজান’ এতটাই জনপ্রিয় ও আলোচিত হয় যে টিভি নাটকের ব্যস্ত ফরিদির বাংলা চলচ্চিত্রে সুযোগ আসে খল চরিত্রে অভিনয় করার।

১৯৯১ সালে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ধারার ছায়াছবির জনপ্রিয় ও ব্যস্ত পরিচালক শহিদুল ইসলাম খোকন বরাবরের মতো চিত্রনায়ক রুবেল কে নিয়ে ‘সন্ত্রাস’ ছবিটি নির্মাণ শুরু করতে যাবেন। ছবির শুটিং শুরু করার আগে পরিচালকের মাথায় হঠাৎ খেয়াল চাপে জনপ্রিয় ‘কান কাটা রমজান’ অর্থাৎ হুমায়ুন ফরিদি কে ছবির প্রধান খলনায়ক হিসেবে নিবেন। কিন্তু ফরিদির চলচ্চিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা এর আগে মাত্র একটি তাও সেটা মুল ধারা বাণিজ্যিক ছবির বাহিরে যার নাম ছিল ‘দহন’। ছবিটি ব্যবসায়িক ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল কিন্তু সমালোচকদের প্রশংশা অর্জন করেছিল। তাই ফরিদিকে খলনায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রের দর্শক কিভাবে নিবে সেটাও ছিল একটি চিন্তার বিষয়। কারন তখন চলচ্চিত্রে খলনায়ক হিসেবে রাজীব, এটিএম শামসুজ্জামান , আহমেদ শরীফ, খলিলুল্লাহ খান, মিজু আহমেদ, রাজ, মাহবুব খান , ড্যানি সিডাক দারুন ব্যস্ত এবং সবাই সফল। এমতাবস্থায় জনপ্রিয় খলনায়কদের ছাড়া রুবেলের মতো মার্শাল আর্ট হিরোর ছবিতে টেলিভিশন এর একজন অভিনেতাকে নির্বাচন করাটাও বিরাট ঝুঁকি। কারন রুবেল সেই সময় একের পর এক ছবি দিয়ে বক্স অফিস দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন যার সাথে নিয়মিত খলনায়ক থাকতো খলিল, ড্যানি সিডাক , ইলিয়াস কোবরা যাদের দর্শক গ্রহন করেছিলেন বেশ ভালোভাবেই। এমতাবস্থায় রুবেলের বিশাল ভক্ত ও বাংলা ছায়াছবির নিয়মিত বিশাল সংখ্যাক দর্শক ফরিদি কে গ্রহন করবেন কিনা সেটা ছিল মুল ভাবনার বিষয়।সবশেষে পরিচালক খোকন আলপনা চলচ্চিত্রের কর্ণধার প্রযোজক আজিজুল হক পুটুর সাথে একরকম চ্যালেঞ্জ নিয়েই ফরিদিকে ছবিতে মুল খলনায়ক হিসেবে নির্বাচন করেন। প্রযোজক আজিজুল হক পুটু শহিদুল ইসলাম খোকনের উপর আস্থা রেখেছিলেন কারন এর আগে এই শহিদুল ইসলাম খোকন রুবেলের একাধিক সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছিলেন প্রয়োজক আজিজুল হক পুটুকে। সেই সুত্রে খোকনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা তিনি করেননি। ১৯৯০ সালের শেষ দিকে খোকন যে সময়টায় ফরিদি কে ছবির মুল খলনায়ক হিসেবে নির্বাচন করলেন তাঁর মাত্র কিছুদিন আগেই টেলিভিশনের আলোচিত জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’ শেষ হয়েছে। ফলে সেই ‘কান কাটা রমজান’ এর রেশটা দর্শকদের মধ্যে রয়ে গিয়েছিল। আর সেই জনপ্রিয়তার রেশের উপর ভিত্তি করেই খোকন একটা ঝুঁকি নিয়েই নিলেন। ছবিতে আরেক জন নায়ক হিসেবে জাফর ইকবাল কে নির্বাচন করেন যেটি ছিল নায়ক জাফর ইকবালরেও খোকন – রুবেল এর সাথে প্রথম কাজ। শুরু হলো ‘সন্ত্রাস’ ছবির কাজ। এরপর মুক্তি পাওয়ার আগে টেলিভিশনে ছবির বিজ্ঞাপনে দর্শক দেখতে পায় তাদের জনপ্রিয় অভিনেতা কান কাটা রমজান হিসেবে খ্যাত প্রিয় ফরিদিকে। ট্রেলার দেখেই ছবিটি সম্পর্কে দর্শকদের আগ্রহ বেড়ে যায়। ট্রেলারটি ছিল এইরকম – ফরিদি নতুন গ্যাঁট আপ কাঁচা পাকা ছোট চুল ও চোখে চশমা, পাঞ্জাবি পায়জামা পরিহিত কোন রাজনৈতিক নেতার মতো উত্তেজিত ভঙ্গিমায় সংলাপ বলছে, দৌড়ে এসে রুবেল তিন চারজনকে তাঁর কংফু স্টাইলে লাথি মারছে, এক পা খোঁড়া জাফর ইকবাল এর গানের অংশ ‘ভিক্ষা চাইনা মেম সাহেব কুত্তাটা সামলাও’ এবং সবশেষে সমুদ্রের মাঝখানে একটি জাহাজ বিস্ফোরণ এর দৃশ্য দেখিয়ে গাজী মাজহারুল ইসলাম এর কণ্ঠে বলা হয় শহিদুল ইসলাম খোকন এর ‘সন্ত্রাস’ ।

ট্রেলার দেখে বরাবরের রুবেল ভক্তরা ছবিটির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে। অবশেষে এক শুক্রবারে মুক্তি পেলো ‘সন্ত্রাস’ ছবিটি সারাদেশে। প্রথম দিনেই দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছবিটি দেখার জন্য। টিকেট না পেয়ে উছ্রিংখল দর্শকদের হলের বাহিরে সংঘর্ষ। হল থেকে ছবি দেখার পর দর্শকদের মুখে মুখে শুধুই ‘ফরিদি ,ফরিদি’ শ্লোগান। ছবিটির গল্প ১৯৭১ সালের ২০ শে জুলাই মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন সময়ে মুক্তাঙ্গনের খোঁজে শরণার্থীরাযখন ঘুরছিলেন নিরাপদ আশ্রয় এর জন্য। সেই যুদ্ধে ফরিদি থাকে পাক হানাদারদের দোসর। ফরিদির নাম জুলমত আলী খান যার নামের ব্যাখ্যা ফরিদি প্রথম দর্শনেই দিয়েছিলেন এভাবে ‘জুলমত’ আমার নাম, ’আলী’ হলো বাপের পদবী আর ‘খান’ হলো ‘আব্বা হুজুরের অর্থাৎ পাকিস্তানী খানদের গোত্রের একজন সে তাই নাম জুলমত আলী খান। এভাবেই ছবিতে শুরু থেকেই ফরিদি কে দেখতে পায় দর্শক। প্রথম দর্শনেই পুরো হল জুড়ে দর্শকদের তুমুল করতালি যা ফরিদিকে সাদরে গ্রহন করার একটা প্রক্রিয়া মাত্র। সেই জুলমত আলী খান হলেন রাজাকার কমান্ডার। মুক্তাঙ্গন এর খোঁজে থাকা শরণার্থীদের পথিমধ্য মুক্তিযোদ্ধা সেজে বোকা বানায় ফরিদির লোকজন। শরণার্থীরা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন দেখে মুক্তিবাহিনী ভেবে তাদের ফাঁদে পা দিয়ে সবাই নৌকা থেকে নেমে যায়। এরপর সবাইকে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে একজন, তিনি আর কেউ নন হুমায়ুন ফরিদি। সেই গুলিবিদ্ধদের মধ্য একজন আহত অবস্থায় মৃতের ভান করে থাকে যিনি জুলমত আলী খান এর চেহারাটা চিনে রাখেন। সেইসব শরণার্থীদের হত্তার পর সবার কাছে গচ্ছিত টাকা ও সোনার অলংকার লুট করে নিয়ে যান ফরিদি অর্থাৎ জুলমত। এই ঘটনার কয়েক মাস পর অর্থাৎ বিজয়ের সন্ধিখনে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সালাম ও তাঁর দুই বন্ধু রফিক ও বরকত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাকিস্তানগামি একটি জাহাজ ‘সালিমার’ কে বিধ্বস্ত করে যার মধ্য ছিল লুণ্ঠন করা ৫ টন সোনা ও আহত পাকিস্তানী সৈন্যরা। যে অপারেশনের একটি নকশা তৈরি করেন কমান্ডার সালাম যিনি খোকন, জাফর ইকবাল ও রুবেল এর বাবা। রাতের অন্ধকারে বিস্ফোরিত জাহাজটির ভেতরে থাকা সেই মালামাল গুলো কোথায় ডুবে আছে তাঁর সঠিক স্থানটির তথ্য জানে সেই অপারেশন এর নেতৃত্বদানকারী মুক্তিযোদ্ধা সালাম যিনি নিজেই সেই নকশা তৈরি করেছিলেন। ১৬ ই ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ফরিদি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা সাজিয়ে আনন্দ মিছিলে যোগ দিয়ে হয়ে যান একজন ‘সলিড মুক্তিযোদ্ধা’।

১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকায় সেই তিন মুক্তিযোদ্ধাদের কথা প্রকাশিত হয় যারা সেই ‘সালিমার’ জাহাজটি বিধ্বস্ত করেছিলেন। যার খবর ফরিদি জেনে যায় যেখানে ফরিদির জানা মতে ৫ টন স্বর্ণালংকার ছিল যার কথা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়নি। ফলে ফরিদি ভেবে নেয় হয়তো সেই তিন মুক্তিযোদ্ধা জাহাজের ভেতরে থাকা স্বর্ণালংকার এর কথা জানে না। ফরিদির শুধু দরকার সেই জাহাজটির ডুবে যাওয়ার সঠিক স্থানটি কোথায় তা । খোকন, জাফর ইকবাল ও রুবেল এর পিতার কাছ থেকে নকশাটি ছিনিয়ে নিতে চায় ফরিদি , ফলাফল খুন। এরপর রুবেলের বাবার নকশাটি চার টুকরো ভাগে ছিঁড়ে তিনি স্ত্রী ও ছোট সন্তানদের হাতে তুলে দেন। পথিমধ্য রুবেল ও খোকন তাঁরা মা খালেদা আক্তার কল্পনা ও ভাই জাফর ইকবাল এর কাছ থেকে হারিয়ে যান। ফলে সেই নকশার একটি অংশ রয়ে যায় রুবেলের কাছে আর একটি অংশ রয়ে যায় খোকন এর কাছে এভাবেই শুরু হয় ছবিটির জমজমাট গল্প।

‘সন্ত্রাস’ ছবিতে সেদিন অন্য এক ফরিদিকে আমরা আবিস্কার করলাম আমরা। যে ফরিদিকে দেখে হলের সব দর্শক বিস্মিত। ফরিদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ সব দর্শক ।এভাবেই ‘সন্ত্রাস’ ছবিতে দর্শকদের মন জয় করে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের হুমায়ূন ফরিদির পথচলা শুরু।

এরপর ফরিদিকে দেখেছি বহুদিন বহুরূপে। সব রুপেই ফরিদি আমাদের কাছে দারুন ছিলেন। শহিদুল ইসলাম খোকনের ‘টপ রংবাজ’ ছবির ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলা চুলে ঝুটি বাঁধা সন্ত্রাসের গডফাদার রুপে ফরিদি মুগ্ধ করলেন। পুরো ছবিতে ফরিদি যখনই পর্দায় এসেছেন তখনই হলভর্তি মানুষ হাততালি দিয়েছে। ‘টপ রংবাজ’ সুপারহিট। এর মাঝে শিবলি সাদিক পরিচালিত ‘ত্যাগ’ ছবিতে ‘তেল গেলে ফুরাইয়া বাত্তি যায় নিভিয়া ‘ গানটি হিট খেলো যে গানটিতে পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছিলেন ফরিদি। ‘ত্যাগ’ ছবিতেও ফরিদি ভয়ংকর এক খুনি। সেই ছবির ‘লাগছে ,লাগছে, জায়গা মতো লাগছে’ সংলাপটিও হিট । ‘লাভ’ ছবিতে রাজিবের সাথে দুর্দান্ত রয়াসন আর সংলাপ ‘ডান্ডি পটাশ’ হিট । অর্থাৎ ফরিদি বারবার এসে পর্দা কাঁপাচ্ছেন আর একের পর এক চলচ্চিত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন। শহিদুল ইসলাম খোকনের ‘অপহরণ’ ছবিটির ছেলেধরা ফরিদিকে আজো মনে পড়ে । ‘অপহরণ’ ছবিটিতে ফরিদি ছিলেন খলনায়ক কিন্তু পুরো ছবিতে দর্শক ফরিদির অভিনয় দেখে হাসতে হাসতে শেষ। ভয়ংকর খলনায়ক সাথে কমেডিপূর্ণ অভিনয় দুটোই সমান তালে চালিয়ে গিয়েছিলেন ফরিদি। ‘অপহরণ’ ছবির ‘আই আই ও’ সংলাপটি তো এপিক। হাফিজউদ্দিন পরিচালিত ‘টাকার অহংকার’ ছবিটি তো ফরিদি অসাধারন। খলনায়ক না ভালো মানুষ সেটা নিয়ে আপনি দ্বিধায় পরে যাবেন। ফরিদির চরিত্রটাই ছিল এমন। রাজিবের সাথেও এই ছবিতে ফরিদির রসায়ন দর্শকদের মনে থাকবে। ‘টাকার অহংকার’ ছবির শুরুর দিকে যুবক ফরিদি শিল্পপতি একমাত্র মায়ের সন্তান হয়েও মায়ের অমতে ভালোবেসে ডলি জহুরকে বিয়ে করে ধন সম্পত্তি ছেড়ে চলে যান সাধারন জীবন যাপন করবেন। কিন্তু বাস্তবতা বড় নির্মম হয়ে দেখা দেয়। অর্থ ছাড়া কোন মূল্য নেই। স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে রাজিবের ফাঁদে পা দিয়ে জেলে চলে যান। সাজা শেষে জেল থেকে বের হয়ে এসে শুরু হয় নতুন এক ফরিদির জীবন ।টাকা দিয়ে সব কিছু হাতের মুঠোয় নিতে চায় ও নীরবে হারিয়ে যাওয়া স্ত্রী ও সন্তানকে খুঁজতে থাকে।

Raow6Qo.jpg


এর মাঝে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘অন্ধ প্রেম’ ছবিতে দেখলাম অন্য এক ফরিদিকে। এতগুলো ছবিতে ভয়ংকর যে ফরিদি সেই ফরিদি ‘অন্ধ প্রেম’ ছবিতে এক ভালো মানুষ যে একজন মুরগি ব্যবসায়ী। পুরাই তাজ্জব হয়ে গেলাম ‘অন্ধ প্রেম’ ছবিতে ফরিদিকে দেখে। যে কিনা গ্রাম সম্পর্কের বোন অসহায় অন্ধ চম্পা’কে ঢাকা শহরে আশ্রয় দেয় এবং অন্ধ চম্পার মনের আশা পূরণ করার জন্য কোঠর পরিশ্রম করে, মান্না’র পায়ে পর্যন্ত ধরে । মেলাতে পারছিলাম না ‘অন্ধ প্রেম’ ছবির ফরিদিকে। রায়হান মুজিব পরিচালিত ‘আত্ম অহংকার’ ছবিতে ফরিদিকে যে দেখেছে সে কোনদিন ভুলতে পারবে না। পুরো ছবিতে এক হাফ প্যান্ট, গেঞ্জি ও গলায় গামছা দিয়ে প্রভুভক্ত এক চাকরের অভিনয় করে যে চাকর আছে তলে তলে মনিবের অনিষ্ট করার ধান্দায় অথচ মনিব কোন কিছুই টের পায় না। এমন অভিনয় ফরিদিকে দিয়েই সম্ভব । গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘স্নেহ’ ছবিতে তো আবার ভালো মানুষ ফরিদি। যাকে সালমান মামা বলে ডাকে । ‘স্নেহ’ ছবিতে সালমান এর সাথে ফরিদির ‘মামা ও মামা ‘গানটিতো আজো চোখে ভাসে । এ জে মিন্টুর ‘বাংলার বধূ’ ছবিতে আবুল মামা তো পুরাই সুপারহিট একটি চরিত্র । যিনি পর্দায় এসেই পরিচয় দিতে থাকেন কিভাবে তিনি এই বাড়ির বড় কুটুম হলেন সেই কথা যা শুনে হাসতে হাসতে দর্শকদের পেট ব্যথা হয়ে গিয়েছিল । পুরো ছবিতে ‘আমি হইলাম এই বাড়ির বড় কুটুম , আবুল মামা’ সংলাপটিও হিট । শহিদুল ইসলাম খোকনের ‘সতর্ক শয়তান ‘ ছবিতে প্রথমে দেখলাম এক ভয়ংকর হেরোইনসেবি ফরিদি যাকে তার আপন বড় ভাই হেরোইন দিয়ে মানুষ খুন করায় । কিন্তু পরে দেখা গেলো আসলে ফরিদি হেরোইনসেবি নয় ,সবগুলো হেরোইনের ছোট ছোট পুরিয়ার প্যাকেট দিয়ে বিশাল এক মালা বানিয়েছে অর্থাৎ সব ছিল অভিনয় যেন ‘সতর্ক শয়তান’ ।

dpedswI.jpg


এভাবে ছবি অনুযায়ী ফরিদির কথা উল্লেখ করতে গেলে পুরো একটা বই প্রকাশ করা যাবে তবুও ফরিদির অভিনীত ছবির কথা ফুরাবে না । বিশ্বপ্রেমিক, কমান্ডার, ঘাতক , ঘৃণা , পালাবে কোথায় , রাক্ষস, লম্পট, ঘরের শত্রু, শত্রু ভয়ংকর, অনুতপ্ত, গৃহযুদ্ধ, ঘাত প্রতিঘাত, সংসারের সুখ দুঃখ, বাপের টাকা, অধিকার চাই, অনেক দিনের আশা, মানুষ, ডন, মহাগুরু, ম্যাডাম ফুলি, পাগলা ঘণ্টা, হিংসা, স্ত্রী হত্যা, ভণ্ড, প্রেম দিওয়ানা, সহ অসংখ্য ছবির ফরিদিকে লিখতে গেলে একটি লিখায় সম্পূর্ণ করা সম্ভব নয় । কোন ছবি রেখে কোন ছবি বাদ দিবেন ? কোন ছবির ফরিদিকে তো বাদ দেয়া যায়না, যাবে না । এইসব চলচ্চিত্রের কারণেই ফরিদি হয়েছে আমজনতার প্রিয় অভিনেতা । আপনি যদি চলচ্চিত্রের ফরিদি সম্পর্কে আলোচনা করেন তাহলে উল্লেখিত বাণিজ্যিক ছবির ফরিদিকে আপনার চিনতে হবে, জানতে হবে। কারণ এই ফরিদি অন্য এক ফরিদি যা ফরিদিকে করেছে চলচ্চিত্রের অমর এক অভিনেতা ।

ফরিদি যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন , আপনাকে আজো ভুলিনি হয়তো কোনদিন ভুলে যাবো না। বাংলা চলচ্চিত্রের একজন হুমায়ূন ফরিদি’কে ভুলে যাওয়া আমার সম্ভব না ।।
 
আমার দেখা ফরীদির অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি হচ্ছে "ভন্ড" যেখানে তার সাথে ছিল এটিএম শামসুজ্জামান এবং রুবেল. মুক্তি পেয়েছিলো ১৯৯৮ সালে...........
 

Users who are viewing this thread

Back
Top