What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Warsaw Treaty Organization (WTO) স্নায়ুযুদ্ধ কালীন ন্যাটোর প্রতিপক্ষ (1 Viewer)

BdYDOPI.jpg


WTO বলতে সাধারণত আমরা ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনকেই বুঝে থাকি। কিন্তু আজকে আমরা ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন নিয়ে কথা বলবো না। কথা বলব Warsaw Treaty Organization (WTO) নিয়ে। যদিও বর্তমানে এটা বিলুপ্ত তবুও স্নায়ুযুদ্ধের সময় এই জোট বা চুক্তি টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ইউরোপের প্রক্ষাপটে। WTO এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল ১৪ই মে, ১৯৫৫ সালে।

SOVDXL3.png


ইউরোপীয় বিভেদ Source: Wikipedia

প্রথমেই কিছু খুঁটিনাটি জিনিস জেনে নেয়া যাক –

এটা ওয়ারশ প্যাক্ট হিসেবেও পরিচিত। এর সূচনা ১৪ই মে, ১৯৫৫ সালে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ শহরে। হেডকোয়ার্টার ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের শহর মস্কোতে। এই চুক্তির সদস্য ছিল মোট আটটি রাষ্ট্র। সোভিয়েত ইউনিয়ন, পূর্ব জার্মানি, হাঙ্গেরি, চেকোস্লোভাকিয়া, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, পোল্যান্ড, আলবেনিয়া। তবে এই প্যাক্ট এর লোগোতে আমরা সাতটি দেশের পতাকা দেখতে পাই। কারণ আলবেনিয়া পরবর্তীতে এই চুক্তি থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নেয় ১৯৬৮ সালে। আর ১৯৬৩ সালে মঙ্গোলিয়া পর্যবেক্ষক দেশ হিসেবে যুক্ত হয়। পর্যবেক্ষক দেশ পূর্ণ সদস্যের মর্যাদা পায় না এ কারণে লোগোতে এদের পতাকা আমরা দেখতে পাই না। সর্বশেষ ১লা জুলাই,১৯৯১ সালে এই চুক্তি বিলুপ্ত বলে ঘোষণা করা হয়।

এই চুক্তি আসলে কিসের জন্য? সেটাই জানবো এখন। আমরা জানি যে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সারা বিশ্বে পোলারাইজেশন অর্থাৎ মেরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এক মেরুতে ছিলো পুঁজিবাদী আদর্শে বিশ্বাসী আমেরিকা ও তার মিত্ররা(পশ্চিম ইউরোপীয় দেশসমূহ) এবং অন্য মেরুতে ছিলো সমাজতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তার মিত্ররা(পূর্ব ইউরোপীয় দেশসমূহ)। ইউরোপের ভূখন্ড ছিলো এই দুই মহাশক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শীতল যুদ্ধকালীন উত্তপ্ত ইউরোপে প্রভাব বিস্তারের জন্য ১৯৪৯ এ গঠিত হয় ন্যাটো। এই ন্যাটোর বিপরীত আদর্শগত প্রতিরূপী সংগঠনই হচ্ছে এই ওয়ারশ জোট। তৎকালীন সোভিয়েট ইউনিয়ন তার মিত্র রাষ্ট্রসমূহ নিয়ে ন্যাটোর প্রভাব ক্ষুন্ন করতেই ১৯৫৫ সালে গঠন করে এই ওয়ারশ জোট।

R2T6jOb.png


সোভিয়েত বলয় Source: Wikipedia

খুব সহজভাষায় এটাই এই চুক্তির কারন। তবে এই চুক্তির আড়ালে আরো অনেক কারনই ছিলো। শুরুতে ওয়ারশ জোটের অগ্রগামী দেশ সোভিয়েট ইউনিয়ন নিজেই ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। সেটা আবার অন্য গল্প, তা নাহয় আরেকদিন হবে। যেটা বলছিলাম, এই চুক্তির পেছনে অনেক কারনই ছিলো। কিন্তু যেই ঘটনাকে প্রত্যক্ষভাবে এই চুক্তির কারন হিসেবে ধরা হয় তা হলো পশ্চিম জার্মানির ন্যাটো-তে যোগদান। ১৯৪৫ থেকে ১৯৫৫। এখনো যুদ্ধের রেশ কাটেনি। দুটো বিশ্বযুদ্ধের পেছনেই ছিলো জার্মানির বড় হাত। তাই পশ্চিম জার্মানির ন্যাটো তে যোগদানের ফলে পূর্ব ইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহ নিজেদের মধ্যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দৃঢ় করতে চায়। আর সেইসাথে সোভিয়েট রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারকারী মনোভাব তো ছিলোই। এই সবকিছু মিলেই গঠিত হয় এই জোট বা কার্যকর হয় ওয়ারশ চুক্তি।

9c8xANB.jpg


ওয়ারশ প্যাক্ট Source: School-History

৫৫ থেকে ৯১, এই ৩৬ বছরে নানারকম কূটনীতিক যুদ্ধ, কৌশলগত আক্রমনে এই ওয়ারশ জোটের হাত থাকলেও এরা কখনো সরাসরি ন্যাটোর বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়নি। ৩৬ বছরের এই ব্যাপ্তিকালে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে ১৯৫৬ সালে হাঙ্গেরির ইম্রে নেগি এর সরকারের উৎখাত। ১৯৬৮ সালে চেকোস্লোভাকিয়াতে আক্রমণ। এছাড়াও ওয়ারশ জোটের খুবই চাঞ্চল্যকর একটা তথ্য সামনে আসে ২০০৫ সালে যখন পোলিশ সরকার ওয়ারশ প্যাক্ট সম্পর্কিত বেশকিছু নথি প্রকাশ করে। এই নথিতে ন্যাটো এবং আমেরিকান জোটের বিরুদ্ধে Seven Days to the River Rhine নামক একটা নিউক্লিয়ার যুদ্ধের খসড়া পরিকল্পনা ছিলো । যদিও এটা আক্রমণাত্মক নাকি আত্নরক্ষার্থক তা নিয়ে অনেক মতামত রয়েছে।

এবার এই চুক্তির বিলুপ্ত হবার কারন জানা যাক। শীতল যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে সোভিয়েট রাশিয়া আগের মত প্রভাভ বিস্তারে অসমর্থ হয়। একে একে সোভিয়েট বলয়ের বিভিন্ন দেশে কমিউনিস্ট সরকারের পতন ঘটতে শুরু করে। পোল্যান্ড, হাঙ্গেরির মত দেশ আমেরিকার বিভিন্ন সামরিক অভিযানে(কুয়েত) সাহায্য করে। এইভাবেই ধীরে ধীরে কার্যত সকল দেশই ওয়ারশ চুক্তি থেকে বের হয়ে যায়। এবং ১৯৯১ সালের ৩১শে জুলাই প্রাগে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
 
Historic datasheet- many unknown facts relating to modern European history.
 

Users who are viewing this thread

Back
Top