উত্তম সমাজ
عَنْ أَبِى مُوسَى عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : إِنَّ الْمُؤْمِنَ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ، يَشُدُّ بَعْضُهُ بَعْضًا. وَشَبَّكَ أَصَابِعَهُ- متفق عليه-
অনুবাদ : হযরত আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘এক মুমিন আরেক মুমিনের জন্য একটি গৃহের ন্যায়। যার একাংশ অপরাংশকে মযবূত করে’। অতঃপর তিনি তাঁর আঙ্গুলগুলি পরস্পরের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করলেন। (বুখারী হা/৪৮১, মুসলিম হা/২৫৮৫, মিশকাত হা/৪৯৫৫ ‘শিষ্টাচার সমূহ’ অধ্যায় ১৫ অনুচ্ছেদ।)
হযরত নু‘মান বিন বাশীর (রাঃ) থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, الْمُسْلِمُونَ كَرَجُلٍ وَاحِدٍ إِنِ اشْتَكَى عَيْنُهُ اشْتَكَى كُلُّهُ وَإِنِ اشْتَكَى رَأْسُهُ اشْتَكَى كُلُّهُ ‘সকল মুমিন একজন ব্যক্তির মত। যদি তার চোখে কষ্ট হয়, তাহ’লে সারা দেহে কষ্ট বোধ হয়। আর যদি মাথায় ব্যথা হয়, তাহ’লে সারা দেহ ব্যথাতুর হয়’।(মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৫৪।)
একই রাবী থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, تَرَى الْمُؤْمِنِيْنَ فِى تَرَاحُمِهِمْ وَتَوَادِّهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ كَمَثَلِ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى عُضْوًا تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ جَسَدِهِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى ‘তুমি ঈমানদারগণকে পারস্পরিক সহানুভূতি, বন্ধুত্ব ও দয়াশীলতার ক্ষেত্রে একটি দেহের মত দেখবে। যখন দেহের কোন অঙ্গ আক্রান্ত হয়, তখন সমস্ত দেহ নিদ্রাহীনতা ও জ্বরে আক্রান্ত হয়’। (মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪৯৫৩।)
উপরোক্ত হাদীছগুলিতে উত্তম সমাজের চিত্র অংকিত হয়েছে। এখানে কেবল মুমিনদের কথা বলা হয়েছে। কেননা তারাই আল্লাহর নিকট ‘শ্রেষ্ঠ জাতি’ (আলে ইমরান ৩/১১০)। আক্বীদা ও আমলের ক্ষেত্রে একই লক্ষ্যের অনুসারী হওয়ায় মুমিন সমাজে এটা সহজেই সম্ভব। তবে কোন সমাজে কেবল মুমিন বাস করে না। বরং কাফির-মুশরিকরাও সেখানে বসবাস করে। সেক্ষেত্রে তাদের সাথে মুমিনদের আচরণ কেমন হবে, সে বিষয়ে ইসলামের সুন্দর নির্দেশনা রয়েছে। যদি তারা মুমিনদের বিরুদ্ধে শত্রুতা না করে, তাহ’লে তাদের প্রতি সর্বোচ্চ মানবিক আচরণ করা হবে। কারণ সবাই এক আদমের সন্তান। আদম ছিলেন প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী। কিন্তু কাফের-মুশরিকরা তাদের আদি পিতা-মাতার ধর্ম ত্যাগ করে পথভ্রষ্ট হয়েছে। উত্তম উপদেশ ও সুন্দর আচরণের মাধ্যমে তাদেরকে জান্নাতের পথ দেখানো মুমিনের কর্তব্য। এর জন্য সে নেকী পাবে এবং দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মানিত হবে।