করোনাভাইরাসের মৃত বা দুর্বল অংশ, প্রোটিন কিংবা আরএনএ ব্যবহার করে টিকা তৈরি করা হয়েছে, যা অ্যান্টিজেন হিসেবে কাজ করে। ফলে টিকা নেওয়ার পর আমাদের শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এটা সংক্রমণ এড়াতে কাজ করে। তবে টিকা নেওয়ার পরও কেউ কেউ সংক্রমিত হচ্ছেন। তার মানে এই নয় যে টিকা আমাদের শরীরে কাজ করছে না। এ ক্ষেত্রে একটা কথা মনে রাখতে হবে, কোনো টিকাই শতভাগ সুরক্ষা দেয় না। তবে টিকা নিলে সংক্রমণের ঝুঁকি, সংক্রমণ ছড়ানোর হার, অসুস্থতার মাত্রা ও মৃত্যুহার কমে যায়।
ব্যক্তিগত ঝুঁকি ও টিকার ধরনের ওপর ভিত্তি করে সংক্রমণের উপসর্গ ও তীব্রতা ভিন্ন হতে পারে। আবার রূপ পাল্টে করোনাভাইরাস দিন দিন আরও ভয়ানক হচ্ছে। গবেষকদের মতে, এই ভাইরাসের নতুন ধরনগুলো টিকা নেওয়ার ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে পারে। যাঁরা টিকা নেওয়ার পরও সংক্রমিত হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে কিছু সাধারণ উপসর্গ দেখা দিচ্ছে:
● করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণের উল্লেখযোগ্য একটি উপসর্গ হলো মাথাব্যথা।
● টিকা নেওয়ার পরও করোনা সংক্রমিত হওয়া অনেকের মধ্যে সর্দি, নাক দিয়ে পানি পড়ার উপসর্গ দেখা গেছে। গবেষকদের মতে, করোনার ডেলটা ধরন এতটাই শক্তিশালী যে তা শ্বাসতন্ত্রকে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে।
● িটকা নিয়ে করোনা সংক্রমিত হলে আরেকটি বিশেষ উপসর্গ হাঁচি শুরু হয়। হাঁচি করোনার সংক্রমণের প্রধান উপসর্গগুলোর মধ্যে ছিল না। কাজেই টিকা নেওয়ার পর ঘন ঘন হাঁচি হলে করোনা পরীক্ষা করানো উচিত।
● করোনার নতুন ধরনগুলোর সংক্রমণের উপসর্গ হিসেবে গলাব্যথার প্রাধান্য লক্ষ করা যাচ্ছে। যাঁরা টিকা নিয়েও ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যেও গলাব্যথার হার বেশি।
করোনাভাইরাসের আগের ধরনগুলোর তুলনায় ডেলটা ধরনের সংক্রমণে রোগের তীব্রতা বেশি। ডেলটা ধরনের উপসর্গগুলো হলো মাথাব্যথা, গলাব্যথা, সর্দি, জ্বর। করোনাভাইরাসের এই ধরনে সংক্রমিত হলে সচরাচর কাশি থাকে না, স্বাদ-গন্ধ চলে যায় না। এ জন্য অনেকে সাধারণ সর্দি-জ্বর মনে করে ভুল করেন।
এরপরও টিকা নেওয়াই সবচেয়ে বড় সুরক্ষার পথ। তবে টিকা নেওয়ার পরও মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলতে হবে।
[FA]pen[/FA] লেখক: ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান | বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ