What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other রুনা লায়লা একজনই (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
XHuyT1v.jpg


রুনা লায়লা..
নামটাই যথেষ্ট।

একাই একটা অধ্যায়। নামটাই বড় একটা ভূগোল। এ ভূগোলটা গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বাধীনতার আগ থেকেই। তিনি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান তিন রাষ্ট্রেই সুপরিচিত। আন্তর্জাতিক খ্যাতি তাঁর। দেশের বাইরে আজও তাকে ভারতীয় বা পাকিস্তানিরা তাদের শিল্পী মনে করে যা গড়ে উঠেছে রুনা লায়লার আর্লি লাইফের স্টারডমের কারণে।

জন্ম ১৭ নভেম্বর ১৯৫২, সিলেটে।
বাবা সৈয়দ এমদাদ আলী মা আনিতা সেন ওরফে আমেনা লায়লা। তাঁর মামা সুবীর সেন ভারতের বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী। তাঁর বাবা রাজশাহী থেকে বদলি হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের মুলতানে যান। তখন থেকে পাকিস্তানের লাহোরে, করাচিতে শৈশব কাটে। বড়বোন দিনা লায়লা গান করতেন আর তিনি শুনতেন, মুখস্থ করে ফেলতেন শুনে শুনে। তাঁর প্রখর স্মৃতিশক্তি দেখে ওস্তাদ তাঁর মাকে বলেন গানে বসানোর জন্য। কণ্ঠও অসাধারণ ছিল ওস্তাদের মনে ধরে যায়। এভাবেই একজন রুনা লায়লার রুনা লায়লা হয়ে ওঠা।

ষাটের দশকে পাকিস্তান টেলিভিশনে সঙ্গীত পরিবেশনা করতে থাকেন। সত্তরের দশকে চলচ্চিত্রে গান করেন। ভারতে 'ও মেরা বাবু ছ্যাল সাবিলা' এবং 'দমাদম মাস্ত কালান্দার' ভারত-পাকিস্তান দুইদেশেই তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় গান। 'ও মেরা বাবু' গানটি পাকিস্তানে 'মন কি জিত' নামের উর্দু সিনেমাতে গেয়েছেন পরে এ গানটি বলিউডে 'ঘর দুয়ার' নামের হিন্দি সিনেমায় রিমেক করা হয়। উর্দুতে গানটি ছিল লিজেন্ড শবনমের লিপে। ভারতের দূরদর্শন টিভিতে এ গানটিতে রুনা লায়লা সরাসরি পারফর্ম করেছিলেন। অমিতাভ বচ্চনের 'অগ্নিপথ' সিনেমায় জনপ্রিয় 'আলিবাবা' গানটি তিনি করেন।

L6kJuY2.jpg


ভারতে রুনা লায়লাকে একটা সময় 'দমাদম গার্ল' বলা হয়। 'loves of runa laila' অ্যালবামের জন্য ডাবল প্ল্যাটিনাম অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। লতা মুঙ্গেশকরের তিনি বড় ভক্ত। রুনা লায়লা ১৮ টি ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান করেছেন।

বলিউডের নায়ক শশী কাপুর তাঁর ক্রাশ ছিলেন যৌবনে। ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে একবার তাকে স্পেশাল গেস্ট করা হয় সেখানে শশী কাপুরের সাথে তাঁর দেখা হয়। শশী কাপুর নিজেই তাঁকে ওয়েলকাম করেছিলেন। রুনা লায়লার প্রেমে পড়েননি তাঁর প্রজন্মের দর্শক, শ্রোতারা এটা হতেই পারে না তাই তিনিও ছিলেন হাজারো তরুণের ক্রাশ।

ভারত, পাকিস্তানে ফিল্মের অফার পেয়েছিলেন। বলিউড অভিনেতা রাজ কাপুরও অফার করেছিলেন। কিন্তু তিনি গানে মনোযোগী ছিলেন বেশি। তাঁর কাছে দুই মাধ্যমে কাজ করাটা ঠিক মনে হয়নি তাই ফিল্ম করেননি সিরিয়াসলি। পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম তাঁকে যখন 'শিল্পী' ছবির অফার দেন তিনি না করেননি। কারণ তিনি এ পরিচালককে খুব শ্রদ্ধা করতেন। তাছাড়া ছবিটি ছিল তাঁরই সেমি-বায়োগ্রাফি তাই রাজি হয়েছিলেন। ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন নায়ক আলমগীর। রুনা লায়লা আলমগীরের অভিনয়ের ভক্ত ছিলেন তাই পরিচালক তাঁকেই কাস্ট করেন। ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত ছিল। 'শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাব' গানটিও এ ছবিতে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়।

রুনা লায়লার বিয়ে হয় তিনবার। প্রথমবার খাজা জাভেদ কায়সারকে, দ্বিতীয়বার সুইস নাগরিক রন ড্যানিয়েল এবং ১৯৯৯ সালে অভিনেতা আলমগীরকে বিয়ে করেন। তাঁর মেয়ে তানি লায়লা। নায়ক আলমগীর স্যুটিং-এ গেলে, হোটেলে খেতে গেলে রুনা লায়লারই গান বাজাতে দেখতেন। তখন তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। একসময় তাঁরা জীবনসঙ্গী হবেন এটা ভাবেননি কখনো।

কথিত আছে রুনা লায়লা তাঁর কণ্ঠটা দান করে যাবেন। কণ্ঠ দান করে ঐ কণ্ঠের মাদকতা অন্য কণ্ঠে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে একই মাদকতা পাওয়া যাবে এটা বিশ্বাস হয় না।

তাঁর ছবির গানের পাশাপাশি আধুনিক গান যেমন-'যখন থামবে কোলাহল, অনেক বৃষ্টি ঝরে তুমি এলে, ইস্টিশনের রেলগাড়িটা', ফোক গান 'পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম' এগুলো তুমুল জনপ্রিয়। দেশের গান যেমন-'মাঠের কবি বলে এসো নবীন, আমায় গেঁথে দাও না মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা, প্রতিদিন তোমায় দেখি সূর্যর আগে' অসাধারণ ও জনপ্রিয়।

ছবির গানে শাবানা, ববিতা, অণ্ঞ্জু ঘোষ, সুচরিতা, রোজিনা, দিতি, মৌসুমী, শাবনূর এরকম লিজেন্ডারি অনেক অভিনেত্রীর লিপে তিনি গান করেছেন।

OrOVUsA.jpg


জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন সাতবার –
দি রেইন (১৯৭৬), যাদুর বাঁশি (১৯৭৭), অ্যাক্সিডেন্ট (১৯৮৯), অন্তরে অন্তরে (১৯৯৪), তুমি আসবে বলে (২০১২), দেবদাস (২০১৩), প্রিয়া তুমি সুখী হও (২০১৪)।
ভারতে পেয়েছেন – সায়গল অ্যাওয়ার্ড, অনন্যা পুরস্কার, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার।
পাকিস্তানে পেয়েছেন – নিগার পুরস্কার, গ্র্যাজুয়েট পুরস্কার, ক্রিটিক্স পুরস্কার, জাতীয় সঙ্গীত পরিষদ স্বর্ণপদক।

রুনা লায়লা বিচারক ছিলেন বিভিন্ন সঙ্গীত প্রতিভা অন্বেষণ অনুষ্ঠানের। যেমন :
সারেগামাপা – ভারত [১৯৯৯] সুরক্ষেত্র (দুবাই), সেরাকণ্ঠ – বাংলাদেশ
[২০১২] পাওয়ার ভয়েস – বাংলাদেশ, মীরাক্কেল – ভারত (অতিথি) [২০১৩] ক্ষুদে গানরাজ – বাংলাদেশ , গ্রেট মিউজিক গুরুকুল – ভারত [২০১৪] দাদাগিরি – ভারত [২০১৬]

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে কিংবদন্তি এ শিল্পীর অসংখ্য জনপ্রিয় ছবির গান থেকে নির্বাচিত কিছু গান :
এই বৃষ্টি ভেজা রাতে চলে যেও না – নরম গরম
প্রিয়া আমার প্রিয়া আজ চিঠি দিয়েছে – ভেজা চোখ
গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে – স্বরলিপি
বুকে আছে মন – লড়াকু
আকাশকে প্রশ্ন করো – শর্ত
আজ রাত সারারাত জেগে থাকব – নীতিবান
তুমি আজ কথা দিয়েছ – দুই জীবন
আমি একদিন তোমায় না দেখিলে – দুই জীবন
এক পলকে ওগো – ঝড় তুফান
আইলো দারুণ ফাগুন রে – চন্দনদ্বীপের রাজকন্যা
ও কি ও বন্ধু কাজল ভোমরা রে – রঙিন রাখাল বন্ধু
ওরে মনচোরা – সওদাগর
পাহাড়ি ফুল আমি – দম মারো দম
শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাব – শিল্পী
নাই টেলিফোন নাই রে পিয়ন – কুসুম কলি
কে জানে কতদূরে সুখের ঠিকানা – শিল্পী
ও বন্ধুরে প্রাণ বন্ধুরে – মেঘ বিজলি বাদল
ও দরিয়ার পানি – তুফান
বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িত গেলাম – কসাই
তুমি আমার কত চেনা – দোলনা
জাদু বিনা বাঁশি – যাদুর বাঁশি
কথা কেন যে বলিস না – বেদ্বীন
মাই লাইফ এমেরিকা – দেশ বিদেশ
বন্ধুর বাঁশি বাজে রে – চাঁদনী
কতদিন পরে দেখা হলো দুজনাতে – চাঁদনী
আকাশের সূর্যটা আছে যতদিন – দরদী সন্তান
ও আমার বন্ধু গো – কেয়ামত থেকে কেয়ামত
একা আছি তো কি হয়েছে – কেয়ামত থেকে কেয়ামত
কাল তো ছিলাম ভালো – অন্তরে অন্তরে
এখানে দুজনে নিরজনে – অন্তরে অন্তরে
নীল সাগর পার হয়ে – স্বপ্নের পৃথিবী
নিশিদিন প্রতিদিন স্বপ্নে দেখি – স্বপ্নের নায়ক
জ্বালাইয়া প্রেমের বাতি – তুমি আমার
জ্যোতিষী গো জ্যোতিষী – স্বপ্নের পৃথিবী
আমার একদিকে পৃথিবী – আত্ম অহংকার
নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন – কুসুম কলি
প্রেমেরও ছোট্ট একটি ঘর – ঝুমুর
তোমরা কাউকে বোলো না – বিশ্বপ্রেমিক
মাই লাভ এমেরিকা – দেশ বিদেশ
তুমি আমার জীবন – অবুঝ হৃদয়
তোমাদের এই খুশির আসর গানে ভরেছে – রাঙ্গা ভাবী
প্রেমের আগুনে জ্বলে গেলাম – ফকির মজনু শাহ
তোমাকে চাই আমি আরো কাছে – নসীব
পাখি খাঁচা ভেঙে উড়ে গেলে – পয়সা পয়সা
আয়রে মেঘ আয়রে – দি রেইন
চাঁদের সাথে আমি দেব না তোমার তুলনা – আশীর্বাদ
একটি মেয়ে ভালোবেসেছিল – স্নেহ
সুন্দর সন্ধ্যায় এ গান দিলাম – শেষ খেলা
মনে রেখো আমায় – মনে রেখো আমায়
কে তুমি বলো মায়াবিনী – শেষ সংগ্রাম
দুশমনি কোরো না প্রিয়তম – দূরদেশ
আমার মন বলে তুমি আসবে – আনারকলি
রুমাল দিলে ঝগড়া হয় – গর্জন
নিশীথে নির্জনে গোপনে গোপনে – বাঁশিওয়ালা
মনে আগুন জ্বলে চোখে কেন জ্বলে না – অগ্নিস্বাক্ষী
বেদের মেয়ে জোসনা আমায় কথা দিয়েছে – বেদের মেয়ে জোসনা
একাত্তরের মা জননী – বিক্ষোভ
ও আমার জীবন সাথী – বিক্ষোভ
প্রেমপ্রীতি আর ভালোবাসা – আশা ভালোবাসা
আমার মনেরই ভেতরে আর একটি মন – দেন মোহর
যতদিন বেঁচে আছ দুনিয়াতে – সত্যের মৃত্যু নেই
আয়রে মেঘ আয়রে – দি রেইন
চুপি চুপি বলো কেউ জেনে যাবে – নিশান
পৃথিবীর জন্ম যেদিন থেকে – জ্যোতি
সুখের দিনেও আমি তোমার – সহধর্মিণী
আমার চোখে সে যে ছবি হয়ে ভাসে – লজ্জা
জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি – কুলি
ভালোবাসার পাঠশালা নাই – প্রেমের অহংকার
প্রিয়া প্রিয়া প্রিয়া বলে ডাকো যতবার – প্রেমের অহংকার
দাম দিয়ে প্রেম যায় না কেনা – এই মন তোমাকে দিলাম
কি ভালো লাগে রে – আমার দেশ আমার প্রেম
লীলাবালি – দুই দুয়ারী

রেডিওতে নব্বই দশক ও তার পরবর্তী সময়ে 'অনুরোধের আসর গানের ডালি' অনুষ্ঠানে রুনা লায়লার গানের অনুরোধ আসত নিয়মিত।

বাংলাদেশের কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করে দেশের জন্য সম্মান এনেছেন। আমরা তাঁর জন্য গর্বিত।

তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু প্রত্যাশা থাকবে সবসময়। আর হ্যাঁ, প্রথম কথাটা আবার বলতে হয়-'রুনা লায়লা একজনই।'
 

Users who are viewing this thread

Back
Top