What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শুভ-অশুভ (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,620
Messages
122,690
Credits
314,291
DVD
Whiskey
SanDisk Sansa
SanDisk Sansa
Computer
Glasses sunglasses
শুভ-অশুভ


সেদিন রাজার মেজাজ খুব খারাপ ছিলো। দরবারে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রজাদের সাথে মত পার্থক্য দেখা দেয়াতে এমন অবস্থার সৃস্টি হয়েছে। মন ভালো করার উপায় হিসাবে রাজা শিকারে যাবার মনোঃস্থির করলেন। সিপাহসালার আর উজিরকে জানিয়ে দিলেন, বৈকালিক শিকারের জন্য যেনো সব আয়োজন ঠিক করে রাখা হয়। মধ্যাহ্ন ভোজের পর পরই রাজা শিকারে বেরিয়ে পড়বেন। কথা মতো সৈন্য সামন্ত সব তৈরীই ছিলো। কিন্তু রাজা শিকারের উদ্দেশ্যে বেরোতেই সামনে নাসিরিদ্দীন হোজ্জাকে দেখতে পেলেন। "শিকারে যাবার পথে হোজ্জাকে দেখলে আমার শিকার ভাগ্য খারাপ হয়ে যায়। হোজ্জা যেনো আমার দিকে চোখ তুলে না তাকায়। আর তাকে চাবুক পেটা করে আমার রাস্তা থেকে হঠাও..." রাজা খুব রাগত স্বরেই সিপাহসালারকে কথা ক'টি বললেন।
রাজার আদেশ বলে কথা। সিপাহসালার সাথে সাথেই সৈন্যদের হুকুম দিলেন, হোজ্জাকে চাবুকপেটা করে যেনো রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। উৎসুক সৈন্যরা কাজে নেমে পড়লো হুকুম পাবার সাথে সাথেই। চাবুক মেরে হোজ্জাকে রাস্তা থেকে তাড়িয়ে দিলো তারা। রাজা বীর দর্পে শিকারের উদ্দেশ্যে ছুটে চললেন।
শিকার খুব ভালো হয়েছে। রাজা বেজায় খুশী। অনেকদিন পর ভালো শিকার করাতে সকালে ঘটে যাওয়া দরবারের সব কথা তিনি ভুলে গেলেন। সেই সাথে হোজ্জার সাথে খারাপ আচরণের কথাটিও মনে পড়ে গেলো। ব্যাপারটি নিয়ে শুরুতে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়লেও কিছুক্ষন পরই হোজ্জার জন্য অনুশোচনা হতে পাগলো। তখনি রাজা পেয়াদা দিয়ে হোজ্জাকে ডেকে আনলেন।
হোজ্জা রাজ প্রাসাদে আসার পর রাজা তাকে বললেন, "আমি সত্যিই দুঃখিত, হোজ্জা। ভেবেছিলাম- তুমি অশুভ। আসলে তুমি তা নও। শিকারে যাবার আগে তোমাকে দেখার পর আমি আজ ভালো শিকার করেছি।"
রাজার কথা শুনে হোজ্জা বললো। " আপনি আমাকে দেখার পর ভালো শিকার করছেন, আর আমি আপনাকে দেখার পর চাবুক পেটা খেয়েছি। কে যে কার শুভ-অশুভ বুঝলাম না !
 
হোজ্জার বাজিতে জেতা


কিছুদিন ধরেই হোজ্জা অসুস্থ্য। দিনে দিনে অসুস্থ্যতা তার বেড়েই চলেছে। শেষে হোজ্জা অসুস্থ্যতায় একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে গেলো। হোজ্জা তো বিছানা নিয়েছে, কিন্তু হোজ্জার গাধাকে কে দেখভাল করবে। ওই গাধাটাই যে হোজ্জার সম্বল। এখানে-সেখানে যাওয়ার জন্য তার প্রিয় গাধাটা ছাড়া যে কোনো উপায় নেই। চিন্তায় পড়ে গেলো হোজ্জা। সময় মতো গাধাকে খাবার না খাওয়ালে যে গাধাটা মরে যাবে। স্ত্রীকে ডেকে হোজ্জা বললো, "আমি তো বিছানা থেকে উঠতেই পারছি না। গাধাটাও ওদিকে না খেয়ে আছে। আমি সূস্থ্য হয়ে না উঠে পর্যন্ত তুমি গাধাটাকে খায়ানোর ব্যবস্থা করো না "
হোজ্জার স্ত্রী ছিলো ভিষন আদুরে আর অলস। সে অতিরিক্ত কোনো কাজই করতে চাইতো না। ঘরের কাজই সে পারলে না করে দিন পার করে দেয়, আর এতো গাধাকে খাওয়ানো। হোজ্জার স্ত্রী শ্রেফ না করে দিলো। বললো, "আমি কিছুতেই তোমার ওই বজ্জাত গাধাকে খাওয়াতে পারবো না।"
স্ত্রীর কথায় হোজ্জা খুব কস্ট পেলেও একটা বুদ্ধি সে বের করলো। সে বললো, "তুমি আমার স্ত্রী। গাধাকে তুমি না খাওয়ালে খাওয়াবে কে ? আচ্ছা ঠিক আছে, একটা বাজি হয়ে যাক। আমাদের দু'জন এখন থেকে আর কথা বলবো না। দুজনের মাঝে যে আগে কথা বলবে সেই গাধাকে খাওয়াবে।"
এই কথায় হোজ্জার বউ রাজি হয়ে গেলো। হোজ্জার বউ মনে মনে ভাবলো, বাড়িতে থাকলে কখন মনের ভুলে কথা বলে ফেলি, তার চাইতে এই দুপর আর বিকালটা আমি বাইরে থেকে কাটিয়ে আসি। হোজ্জা তো আর বিছানা থেকে উঠতে পারবে না। আমি বাইরে গিয়ে ঘুরে এলে কথা বলার প্রয়োজন হবে না আর আমি তখন বাজিতে জিতে যাবো। যেই ভাবা সেই কাজ। হোজ্জার স্ত্রী হোজ্জার দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো। হোজ্জা ব্যাপারটা বুঝতে পারলেও চুপ করে রইলো।
কিছুক্ষন পর ঘরে চোর ঢুকলো। বিছানায় শুয়ে থেকে হোজ্জা দেখতে পাগলো চোর একে একে ঘরের সব কিছু নিয়ে যাচ্ছে। সে বিছানা থেকে উঠতে পারছে না ঠিক তবে চেঁচাচ্ছেও না। চোর ব্যাপারটা দেখে অবাক হলেও সে তার কাজ ঠিকমতোই সেরে নিলো। ঘর সাফাইয়ের কাজে সে কোনো অবহেলা করলো না। পুরো ঘর সাফাই করেই সে বেরোলো। হোজ্জা মনে মনে ভাবলো, বাজিতে সে নিশ্চিত জিতে যাবে।
সন্ধ্যা হবার আগে আগে হোজ্জার স্ত্রী বাড়িতে ফিরে এলো। ঘরে ঢুকেই ঘরের অবস্থা দেখে সে চিৎকার দিয়ে উঠলো, "হায় আল্লাহ !, একি সর্বনাশ হয়ে গেলো ! ঘরের সব কিছু যে চুরি হয়ে গেলো..."
হোজ্জার স্ত্রীর চিৎকারে হোজ্জাও উল্লাসে চেঁচিয়ে উঠে বললো, "আমি বাজিতে জিতে গেছি... আমি বাজিতে জিতে গেছি। এখন বাজির শর্ত অনুযায়ী তোমাকেই গাধাটাকে খাওয়াতে হবে... "
 
কলিজার পাই রেসেপি

হোজ্জা বেশ কিছুদিন যাবত ভালো-মন্দ তেমন খেতে পারছে না। রোজ রোজ শুকনো রুটি আর সবজি খেতে খেতে যেনো হোজ্জার মুখ পঁচে গ্যাছে। তাই সিদ্ধান্ত নিলো আজ সে কলিজার পাই খাবে। ভাবনা অনুযায়ী হোজ্জা বাজার থেকে বেশ কিছুটা কলিজা কিনে নিলো। সেই সাথে নামকরা একজন শেফের কাছ থেকে উত্তমভাবে পাই রান্না করার রেসেপি চেয়ে নিলো। কলিজা আর রেসেপি নিয়ে বাজার থেকে ফেরার সময় মনে মনে ভাবতে থাকলো এই রেসেপি গিন্নীকে ধরিয়ে দিয়ে রেসেপি অনুযায়ী কলিজার পাই রান্না করায়ে মজা করে খাবে। ভাবতেই যেনো হোজ্জার মুখে পানি চলে এলো। চোখ দুটো আবেশে ছোট হয়ে এলো আর সে মনে মনে আরো সূখকর কিছু ভাবতে থাকলো।
ঠিক তখনি একটি বাজপাখি উড়ে এসে হোজ্জার হাত থেকে কলিজাটুকু ছোঁ মেরে নিয়ে উড়ে পালালো। হোজ্জাও কম যায় না। সেও বাজপাখির পেছনে দৌড়াতে থাকলো আর ডেকে ডেকে বলতে পাগলো, "আমার কলিজা নিয়ে যাসনে। এটা দিয়ে আমি পাই রান্না করে খাবো..."
কিন্তু দৌড়ে কি আর বাজপাখির নাগাল পাওয়া যায় ? বাজপাখি হোজ্জার চোখের সামনে দিয়ে আস্তে আস্তে নাগালের বাইরে চলে গেলো। তখন হোজ্জা বাজপাখিকে উদ্দেশ্য করে চেঁচিয়ে বললো, "বোকা কোথাকার ! কলিজা নিয়ে গেছো ঠিক আছে, কিন্তু রেসেপি যে আমার কাছেই আছে...। দেখবো তুমি কিভাবে পাই রান্না করে খাও।"
 

Users who are viewing this thread

Back
Top