What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

স্তন ক্যানসার সচেতনতা ও চিকিৎসা (1 Viewer)

antiks

Member
Joined
Jan 31, 2019
Threads
27
Messages
101
Credits
4,029
(লেখা
ডা. ফেরদৌস শাহরিয়ার সাঈদ)

prothomalo-bangla%2F2020-10%2F5db2ce0a-7480-4c56-8814-bbc6c76d07f9%2Fpexels_ave_calvar_martinez_5072316.jpg




নারীদের ক্যানসারের মধ্যে স্তন ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। প্রতিবছর প্রায় ২ দশমিক ১ মিলিয়ন মহিলা সারা বিশ্বে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এক পরিসংখ্যানমতে, কেবল ২০১৮ সালে পৃথিবীতে ৬ লাখ ২৭ হাজার মহিলা স্তন ক্যানসারে মারা যান।

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়লেও ইদানীং অল্প বয়সীদের মধ্যেও এ ক্যানসারের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এখন স্তন ক্যানসারের হার বেড়েই চলেছে।

আমরা জানি, ক্যানসার চিকিৎসার সাফল্য এবং এর ভবিষ্যৎ নির্ভর করে রোগটি কোন পর্যায়ে নির্ণিত হচ্ছে তার ওপর। প্রাথমিক স্টেজে ধরা পড়লে এটি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ রোগের লক্ষণগুলো জানা প্রত্যেক নারীর জন্যই আবশ্যক। আবার চিকিৎসার তুলনায় এই রোগের প্রতিরোধই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। তাই এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে এমন বিষয়গুলো জেনে রাখাও জরুরি যাতে সেগুলো পরিহার করা সম্ভব হয়।
 

স্তন ক্যানসার কি?​

আমাদের শরীরের যেকোনো স্থানের কোষগুলো যখন খুব দ্রুত বাড়তে থাকে, তখন সেগুলো একটি অস্বাভাবিক চাকা বা পিণ্ড তৈরি করে। এ ধরনের চাকা বা পিণ্ডকে সাধারণ ভাষায় টিউমার বলা হয়। টিউমার দুই ধরনের হতে পারে, বেনাইন বা অক্ষতিকর এবং ম্যালিগন্যান্ট বা ক্ষতিকর। বেশির ভাগ স্তন টিউমারই বেনাইন; মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হল ম্যালিগন্যান্ট টিউমার যাকে আমরা ক্যানসার বলে থাকি।

prothomalo-bangla%2F2020-10%2F88e3057a-9c64-4d08-94e2-7c9b78cb7d62%2FPhoto_by_Anna_Tarazevich_from_Pexels.jpg





স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিগুলো​

স্তন ক্যানসারের কারণ এখনো পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিছু কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে যেগুলো ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। সেগুলো জেনে রাখা খুবই জরুরি। স্তন ক্যানসারের অপরিবর্তনযোগ্য কারণগুলো:

১. বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

২. জেনেটিক কারণে স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ে। BRCA1 এবং BRCA2 জিন মিউটেশনের ফলে স্তন ক্যানসার হতে পারে।

৩. একই পরিবারের দুজন বা তার বেশি নিকটাত্মীয়ের স্তন ক্যানসার থাকলে অথবা একই পরিবারের সদস্যদের স্তন বা ওভারিয়ান ক্যানসার থাকলে কিংবা ৪০ বছরের কম বয়সী একজন নিকটাত্মীয়ের স্তন ক্যানসার থাকলে এই রোগের সম্ভাবনা বাড়ে।

৪. মহিলাদের যদি ঋতুস্রাব খুব অল্প বয়সে শুরু হয় এবং ঋতুস্রাব বন্ধ যদি খুব বেশি বয়সে হয়ে থাকে, তাহলে ইস্ট্রোজেন নামক হরমোনের সঙ্গে মহিলাদের সংস্পর্শ অনেক বেশি দিন ধরে হয়। তাই এ রোগের সম্ভাবনাও বাড়ে।

৫. পুরুষের তুলনায় মহিলাদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

৬. পূর্বে রেডিওথেরাপি পেয়ে থাকলে স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ে।

৭. তা ছাড়া যেসব নারীর এক স্থানে ক্যানসার হয়েছে, তাঁদের অন্য স্থানে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
 

স্তন ক্যানসারের পরিবর্তনযোগ্য কারণগুলো

prothomalo-bangla%2F2020-10%2Fcc54d689-1888-44d1-9953-e35bb8f8c080%2FPhoto_by_Miguel____Padri__n_from_Pexels.jpg


১. বেশি বয়স পর্যন্ত বিয়ে না করা এবং ৩০ বছর বয়সের পর নারীদের প্রথম সন্তানের মা হওয়া কিংবা সন্তান না নেওয়া মহিলাদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি।

২. সন্তানকে নিয়মিত বুকের দুধ না খাওয়ানো হতে পারে স্তন ক্যানসারের কারণ।

৩. অতিরিক্ত ওজন, স্থূলতা স্তন ক্যানসারের কারণ।

৪. শারীরিক পরিশ্রম একেবারেই না করা স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

৫. গর্ভনিরোধক ওষুধ ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ায়।

৬. অ্যালকোহল পান স্তন ক্যানসারের কারণ।

এ রোগের লক্ষণগুলো

১. স্তনে অথবা বগলের নিচে কোনো চাকা বা পিণ্ড। স্তনে অধিকাংশ পিণ্ড বা লাম্প বেনাইন বা অক্ষতিকর। কিন্তু যদি পিণ্ড বা চাকা শক্ত হয়ে থাকে এবং তার অবস্থান সহজে পরিবর্তন না করে তাহলে সতর্ক হওয়া খুবই জরুরি।

২. স্তনের কোনো অংশ অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যাওয়া বা ভারী বোধ হওয়া।

৩. স্তনের চামড়া লালচে হওয়া বা ফুসকুড়ি দেখা যাওয়া।

৪. স্তনের চামড়া ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া বা টোল পড়া।

৫. স্তনবৃন্ত ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া।

৬. স্তনের আকার এবং আকৃতি পরিবর্তিত হওয়া।

৭. স্তনবৃন্ত দিয়ে রক্ত অথবা জলীয় পদার্থ নির্গত হওয়া।
 

স্তন ক্যানসার কীভাবে নির্ণয় করা হয়?​

স্তনে কোনো গোটা, চাকা বা পিণ্ড পরিলক্ষিত হলে অতিসত্বর ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া খুবই জরুরি। ডাক্তার ক্যানসার সন্দেহ করলে নিচের পরীক্ষাগুলো করে খুব সহজেই ক্যানসার নির্ণয় করা যেতে পারে:

১. মেমোগ্রাম।

২. স্তন এবং বগলের আলট্রাসনোগ্রাম।

৩. এফএনএসি।

৪. কোর বায়োপসি বা ট্রুকাট বায়োপসি এবং হিস্টোপ্যাথলজি।

কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যেতে পারে। যেমন:

১. শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। গবেষণায় দেখা গেছে অধিকাংশ স্তন ক্যানসারের রোগী ওবেজ বা স্থূল। তাই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে এ রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড পরিহার করতে হবে যথাসম্ভব।

২. শারীরিক পরিশ্রম স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়, প্রতিদিন কমপক্ষে আধা ঘণ্টা ব্যায়াম করা উচিত এবং বেশি বেশি পরিশ্রম করা উচিত।

৩. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। সবজি জাতীয় খাবার যেমন বাঁধাকপি, ফুলকপি, ফলমূল এ ধরনের খাবার বেশি খেতে হবে।

৪. মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫. বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করাতে হবে।

স্তন ক্যানসারের ঝুঁকির মধ্যে যাঁরা আছেন, তাঁদের ঘরে বসেই নিয়মিত স্তন পরীক্ষা করা উচিত, যাতে প্রাথমিক স্টেজেই এ রোগটি শনাক্ত করা যায়।
 

স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা​

স্তন ক্যানসারের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:
১। অপারেশন (সার্জারি)।
২। ওষুধ (কেমোথেরাপি, হরমোনাল থেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি)।
৩। রেডিওথেরাপি।
ক্যানসারের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী চিকিৎসকেরা একাধিক চিকিৎসাপদ্ধতি নির্ধারণ করে থাকেন। যেমন অপারেশন এবং তারপর কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি অথবা অপারেশনের আগে বা পরে কেমোথেরাপি/রেডিওথেরাপি দেওয়া হতে পারে।


১. অপারেশন (সার্জারি)

প্রাথমিক স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে সার্জারি হচ্ছে চিকিৎসার প্রথম ধাপ। টিউমারটির আকৃতির ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক সার্জারির মাধ্যমে টিউমার ও তার আশপাশের কিছু সুস্থ টিস্যু অপসারণ করেন।
চিকিৎসক সাধারণত দুটি উপায়ে অপারেশন করে থাকেন
ক. স্তনে ক্যানসারের অংশটুকু অপসারণ (লাম্পেকটমি)।
খ. সম্পূর্ণ স্তন অপসারণ (মাস্টেকটমি)।
অপারেশনের সময় যদি কোনো লসিকাগ্রন্থিতে ক্যানসার থেকে থাকে, তাহলে সার্জন সাধারণত সেটিও অপসারণ করে থাকেন।


২. রেডিওথেরাপি

রেডিওথেরাপি উচ্চশক্তির এক্স-রে ব্যবহার করে ক্যানসার–আক্রান্ত কোষগুলোকে ধ্বংস করে। প্রায় ক্ষেত্রেই অপারেশনের পর ক্ষত শুকিয়ে গেলে রেডিওথেরাপি দেওয়া হয়। এটি ক্যানসার পুনরায় ফিরে আসার ঝুঁকি কমায়।


৩. কেমোথেরাপি
কেমোথেরাপিতে ক্যানসারের কোষগুলোকে ধ্বংস করার জন্য ক্যানসারবিরোধী (সাইটোটক্সিক) ওষুধ ব্যবহার করা হয়।


৪. টার্গেটেড থেরাপি

কেমোথেরাপি এবং হরমোনাল থেরাপি ছাড়াও নতুন আরও কার্যকর চিকিৎসা হলো টার্গেটেড থেরাপি, যা স্বাভাবিক কোষগুলোর ক্ষতি না করে নির্দিষ্ট কোষ ধ্বংস করতে পারে। এ ছাড়া ক্যানসারের বৃদ্ধি বা দ্রুত ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে পারে।

কখনো কখনো টার্গেটেড থেরাপি সেই সব জায়গায় কাজ করে, যেখানে কেমোথেরাপি কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। টার্গেটেড থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কেমোথেরাপির তুলানায় সীমিত। স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্রতি ৫ জনে ১ জন নারীর বিশেষ প্রোটিন এইচইআর টু (HER2) পজিটিভ থাকে এবং এ ধরনের ক্যানসার অন্যান্য ক্যানসারের তুলনায় আগ্রাসী হয়ে থাকে। এ ধরনের প্রোটিনকে লক্ষ্য করে অনেক ধরনের টার্গেটেড থেরাপি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ট্রাস্টুজুমাব, পারটুজুমাব, ট্রাস্টুজুমাব এমটানসিন, ল্যাপাটিনিব ইত্যাদি।



লেখক: সিনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যান্ড কোঅর্ডিনেটর, মেডিকেল অনকোলজি, এভারকেয়ার হসপিটাল ঢাকা
 
স্বামী দের এসময় সেই নারীর (স্ত্রীর) পাশে থাকা। এতে মেয়েটা হীনমন্যতা থেকে মুক্তি পাবে
 

Users who are viewing this thread

Back
Top