অন্দরে শীতলপাটির ব্যবহার এই সময়ের জন্য আদর্শ। গরমে আরাম আর অন্দরে সৌন্দর্যবৃদ্ধি– দুটো বিষয়েই দক্ষতা প্রকাশ করে আসছে এটি দিনের পর দিন।
তখন ছোট ছিলাম। মফস্বল শহরের সরকারি বাসভবন। গ্রীষ্মের উত্তাপ প্রচণ্ড। মনে পড়ে, বাবা নিয়ে এসেছিলেন শীতলপাটি। এতগুলো বছর পেরিয়ে এবার গ্রীষ্মে হঠাৎ মনে পড়ল শীতলপাটির কথা। কেমন হয় এই গ্রীষ্মে যদি পাঠক শীতলপাটি আনেন অন্দরে?
শীতলপাটির ব্যবহার এখন অনেক ভাবেই হতে পারে। গরমের সময়টা ছাড়াও নান্দনিক অন্দরে শীতলপাটির ব্যবহার হতে পারে বছরের যেকোনো সময়, ভিন্নধারায়, সৃজনশীলতায়। যারা দেশীয় ধাঁচে সাজাতে চান অন্দর, তাঁরা শীতলপাটি কাজে লাগাতে পারেন। এমনটাই জানালেন ফারজানা’স ব্লিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা গাজী। পরামর্শ দিলেন, কেমন হতে পারে অন্দরে শীতলপাটির ব্যবহার।
শীতলপাটির তৈরি কোস্টার
শীতলপাটি এ সময়ে
• খাটে বিছিয়ে দিন চাদরের বিকল্প হিসেবে।
• বসার ঘর, পারিবারিক ঘর কিংবা যেকোনো বারান্দার মেঝেতে বিছিয়ে দিন। সঙ্গে রাখতে পারেন নানা আকারের কুশন। আয়েশ করে বসে আড্ডা দিতে পারেন সেখানে। সঙ্গে কিছু নিচু মোড়া রাখা যায়। পাশে থাকুক প্রাণের পরশ—সবুজ উদ্ভিদ।
• শিশুর খেলার জায়গায় বিছিয়ে দিন। নরম তুলতুলে খেলনা হোক কিংবা শিশুর পছন্দসই অন্য যেকোনো খেলনা, রেখে দিন এর ওপরই।
খানেক বদল
নতুন কিংবা পুরোনো শীতলপাটি কেটে নিয়েই অন্দরে আনতে পারেন নান্দনিকতা। বছরের যেকোনো সময়ই তা মানানসই।
• খাবার টেবিলে রানার ও ম্যাট হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন কোনো উৎসবের সময়।
• যেকোনো কেবিনেটের পাল্লায় লাগিয়ে নিতে পারেন, ভিন্নতা আসবে।
• ফ্রেমে বাঁধাই করে দেয়ালেও টাঙাতে পারেন, বাঁধাইয়ের আগে শীতলপাটির পটে ছবি আঁকা যেতে পারে, পছন্দের কোনো ফটোগ্রাফ আটকে নেওয়া যেতে পারে। শোয়ার ঘরে বিছানার মাথার দিকটায় এমন ফ্রেম রাখতে পারেন, কিংবা অন্য কোথাও।
• বসার ঘর কিংবা খাবার ঘরের কোনো টেবিলের ওপরটা একটু নষ্ট হয়ে গেলে টেবিলের ওপর শীতলপাটি বিছিয়ে এর ওপর কাচ স্থাপন করুন। পুরোনোতেই আসবে নতুনত্ব।
খাবার পরিবেশনে ব্যবহার করা যায় শীতলপাটির প্লেসম্যাট
সাদৃশ্যে সৌন্দর্য
শীতলপাটি কিংবা এর কাটা অংশের চারপাশে দেশজ পুরোনো শাড়ি বা পুরোনো নকশিকাঁথা দিয়ে বর্ডার করে নিতে পারেন। জিনিসটা টেকসই হবে, দেখাবেও দারুণ। অন্দরে শীতলপাটি আনে দেশজ আমেজ। অত্যাধুনিক ডিজাইনের আসবাব বা অন্যান্য অনুষঙ্গ শীতলপাটির সঙ্গে মানানসই নয়। ফারজানা গাজীর কাছ থেকেই জেনে নেওয়া যাক, অন্দরে শীতলপাটি রাখতে চাইলে কোন দিকগুলো মাথায় রাখা ভালো—
• বাঁশ, বেত বা কাঠের তৈরি হালকা নকশার দেশীয় আসবাবের অন্দরে শীতলপাটি মানায়।
• সুতার কাজ, নকশিকাঁথার সেলাই কিংবা হ্যান্ডপেইন্টের কাজ করা কুশন কভার ব্যবহার করুন শীতলপাটির সঙ্গে।
• খাবার টেবিলে শীতলপাটির রানার প্রভৃতি রাখলে কাঁসা বা মাটির তৈজস কিংবা দেশজ নকশার রঙিন কোনো তৈজস ব্যবহার করুন। সঙ্গে রাখতে পারেন গ্রামীণ চেকের ন্যাপকিন। পার্বত্য এলাকার অধিবাসীদের তৈরি মোটিফের ন্যাপকিনও মানাবে দারুণ।
• কাঠ, মাটি বা টেরাকোটার শো-পিস রাখতে পারেন। ফুল রাখতে পারেন। কাচের ফুলদানি রাখলেও তা যেন খুব কারুকার্যময় কিংবা অস্বচ্ছ না হয়।
• অন্দরে শীতলপাটি ব্যবহার করলে আশপাশে রাখা আলোর উৎসটাও হোক দেশীয় ধারার। যেমন কাগজের ল্যাম্পশেড একটা দারুণ মানানসই অনুষঙ্গ। থাকতে পারে রিকশা পেইন্ট। কিংবা ল্যাম্পশেডের ওপরের দিকটায় শীতলপাটি কেটে বসানো যেতে পারে। বাঁশের অনুষঙ্গও রাখতে পারেন।