What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সেরা বাঙালি ২ (1 Viewer)

BRICK

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Dec 12, 2019
Threads
355
Messages
10,068
Credits
81,248
Thermometer
Sari
Strawberry
Glasses sunglasses
T-Shirt
Calculator
দু'হাজার চার সালে বিবিসি বাংলা একটি 'শ্রোতা জরিপ'-এর আয়োজন করে। বিষয়টি ছিলো - সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে? তিরিশ দিনের ওপর চালানো জরিপে শ্রোতাদের ভোটে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ২০জনের জীবন নিয়ে বিবিসি বাংলায় বেতার অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয় ২০০৪-এর ২৬শে মার্চ থেকে ১৫ই এপ্রিল পর্যন্ত।

বিবিসি বাংলার সেই জরিপে শ্রোতাদের মনোনীত শীর্ষ কুড়িজন বাঙালির তালিকায় ১৬তম স্থানে আসেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। আজ তাঁর জীবন-কথা।

শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সর্বপ্রথম যুক্তি-তর্ক দিয়ে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে বিবেচিত করার যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলিম জাগরণ এবং বাঙালির চেতনা বিকাশের অগ্রদূত হিসাবে স্বীকৃত হয়েছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ২৪ পরগণার পেয়ারা গ্রামে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জন্ম ১৮৮৫ সালের ১১ই জুলাই।

তাঁর জীবদ্দশায় বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। তাঁকে বলা হতো "চলন্ত এনসাইক্লোপেডিয়া"। বিভিন্ন ভাষার প্রতি ছোটবেলা থেকেই ছিল তাঁর অদম্য আগ্রহ।

তাঁর চতুর্থ পুত্র মুহম্মদ তকিউল্লাহ বিবিসি বাংলাকে জানান, পশ্চিমবঙ্গে হাওড়া জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রাস পাশ করার পর ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়তে যান।

"কলকাতা মাদ্রাসার একটি ইউনিট তখন প্রেসিডেন্সি কলেজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেখান থেকে এফ.এ. (বর্তমান এইচএসসি সমমান) পাশ করার পর ১৯১০ সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তারপর তিনি এম.এ. এবং আইন পড়েন। ১৯২৮ সালে প্যারিসের সরবোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট লাভ করেন," জানান মুহম্মদ তকিউল্লাহ।

ডক্টরেট শেষ করার আগেই তিনি গবেষণার কাজ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনার কাজ করেন ১৯২১ সাল থেকে।

১৯৪৪ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বাংলা ও সংস্কৃতের অধ্যাপক ও রিডারের দায়িত্ব পালন করেন।
মুহম্মদ তকিউল্লাহ জানান, ১৯৪৪ সালে কয়েকবছর বগুড়া কলেজে প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করার পর ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ আবার ফিরে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবং সেখান থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান ১৯৫৮/৫৯ পর্যন্ত।

"তিনি করাচিতে ঊর্দু অভিধান বোর্ডের প্রধান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। করাচি থেকে ঢাকায় ফিরে তিনি প্রফেসর এমিরেটাস হন। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম প্রফেসর এমিরেটাস," বলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ছেলে মুহম্মদ তকিউল্লাহ।

তাঁর জীবদ্দশায় বহু ভাষা শিখেছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান তৈরি ক'রে বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখেন।

বাংলা অ্যাকাডেমির ইসলামি বিশ্বকোষ প্রকল্পের অস্থায়ী সম্পাদক পদেও কাজ করেছিলেন তিনি। এছাড়াও বাংলা অ্যাকাডেমির পঞ্জিকার তারিখ বিন্যাস কমিটির সভাপতি হিসাবে তাঁর নেতৃত্বে বাংলা পঞ্জিকা একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত রূপ পায়।

এই অনুষ্ঠানমালা তৈরির সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন আবুল কালাম মঞ্জুল মোরশেদ। তিনি বলেন এম.এ পাশ করার পর জার্মানিতে গিয়েছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।

"সেখানে জার্মান, ফরাসি সহ বেশ কয়েকটি ইওরোপীয় ভাষাও শিখেছিলেন তিনি। বাংলাদেশে থাকাকালীন বাংলা ভাষার সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজি, হিন্দি, ঊর্দু, আরবি ও ফারসি ভাষায় দক্ষতা লাভ করেছিলেন।"

"পরবর্তীকালে যে কাজটির জন্য তিনি অসামান্য কৃতিত্বের দাবিদার হয়ে ওঠেন, সেটা হল বাংলা একাডেমি থেকে আঞ্চলিক ভাষার অভিধান বের করার পরিকল্পনা। আমার মনে হয়, শুধু তখন কেন, এখনও এমন কোন ব্যক্তি নেই, যিনি এই কাজটি করতে পারতেন," বলেন আবুল কালাম মঞ্জুল মোরশেদ।

"তাঁকে যখন এই কাজটি দেওয়া হল, তখন মূলত তাঁরই প্রচেষ্টায় বিশাল একটি আঞ্চলিক ভাষার অভিধান তৈরি হয়েছিল।"
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর একটি লেখার মধ্যে দিয়ে, যেটা মুহম্মদ তকিউল্লাহ মনে করেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা।

"কমরেড পত্রিকায় একটি লেখা তিনি লেখেন, 'দ্য ল্যাঙ্গোয়েজ প্রবলেম অফ পাকিস্তান'। এই নিবন্ধে যে কথাগুলো তিনি বলেন, সেগুলো হচ্ছে এই যে পাকিস্তান রাষ্ট্রের বাংলাভাষী অংশে, যদি বাংলা ছাড়া অন্য কোন ভাষা রাষ্ট্রভাষা হয়, তাহলে সেই স্বাধীনতা হবে পরাধীনতারই নামান্তর। একথা তিনি বলেন ১৯৪৭ সালের তেসরা অগাস্ট অর্থাৎ ১৪ই অগাস্টের এগারোদিন আগে," বলেন মি. তকিউল্লাহ।

"এই কথাটাই দেশে তখনকার বাঙালি সুধীসমাজ লুফে নেন। এবং এই কথাটার উপরই শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহই ছিলেন ভাষা আন্দোলনের প্রধান উদ্যোক্তা।"

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণার জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন বলে মনে করেন আবুল কালাম মঞ্জুল মোরশেদ।

"তিনি বাংলা ভাষার ইতিহাস দু খণ্ডে লিখেছিলেন। একসময় বিদ্যাপতির যে পদগুলো ছিল, সেগুলো সম্পাদনা করেছিলেন তিনি। এবং তাঁর একটি বিরাট কৃতিত্ব হচ্ছে প্রাচীন বাংলার যে প্রথম নিদর্শন - চর্যাপদ, সেই চর্যাপদ তিনি সম্পাদনা করেছিলেন।

''কাজেই একদিকে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, অন্যদিকে গবেষণা এবং আঞ্চলিক ভাষার অভিধান সম্পাদনা- এই দিকগুলো যদি আমরা বিচার করি, তাহলে আমরা দেখব প্রতিভার বৈচিত্র্যে তিনি কত অসামান্য ব্যক্তি ছিলেন," বলেন আবুল কালাম মঞ্জুল মোরশেদ।
বহুভাষাবিদ, বিশিষ্ট শিক্ষক ও দার্শনিক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ মারা যান ১৩ই জুলাই ১৯৫৯ সালে।

গবেষকরা মনে করেন তাঁর ৭৪ বছরের জীবনে তাঁর কাজের মাধ্যমে তিনি বাঙালি জাতিকে বাংলা ভাষা এবং বাংলা ভাষার রচনাকে ভালবাসতে শিখিয়ে গেছেন।

প্রাচ্যের অন্যতম সেরা এই ভাষাবিজ্ঞানী বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে যে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং ভূমিকা রেখেছিলেন, তার ফলেই এই ভূখণ্ডে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পথ অনেকখানি প্রশস্ত হয় বলে মনে করেন ভাষা বিষয়ক গবেষকরা।
 
খুব ভালো লাগলো ওনার ব্যাপারে এই অজানা তথ্যগুলো জেনে।
 
ড: মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ব্যাকরণে অসীম অবদান রেখেছেন।চর্যাপদে ছিলো অসামান্য অবদান। আল্লাহ ওনাকে জান্নাতবাসী করুন।
 
ডক্টর মোহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বাংলা ভাষায় যে আবদান রেখেছে তার জন্য তিনি বাঙালির মাঝে আমর হয়ে থাকবেন
 
শহীদুল্লাহ্ ভাষার জন্য অনেক অবদান রেখেছেন
 

Users who are viewing this thread

Back
Top