বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণালি যুগ বলতে নব্বই দশক পর্যন্ত ধরা হয়। মূলত এই দশক পর্যন্তই এসেছে বিভিন্ন ধারার চমৎকার চমৎকার সব চলচ্চিত্র, যে সব চলচ্চিত্র রাঙিয়েছে আমাদের বিনোদন অঙ্গন। প্রযোজক-পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী থেকে সমস্ত কলাকুশলীদের একান্ত প্রচেষ্টায় চলচ্চিত্র অঙ্গন ছিল আলোকিত। শুধু চলচ্চিত্রই নয়… সে সময়ের পোস্টারে থাকতো নান্দনিকতা আর ভিন্ন-মাত্রার ছোঁয়া। আজ সে সময়ের চলচ্চিত্র ও পোস্টারের কথাই তুলে ধরা হবে।
আমাদের চলচ্চিত্রের অন্যতম একটি অধ্যায় ছিল ফোক-ফ্যান্টাসি ও পোশাকি ধারার, আরব্য রজনীর গল্পই মূলত সে সব চলচ্চিত্রে স্থান পেতো। এ ছাড়া অন্যান্য গল্পেও সে ধারার চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, মূলত আশির দশকে ছিল এ ধারার রমরমা সময়। এর মধ্যে যেমন; আনার কলি (১৯৮০), বে-দ্বীন (১৯৮০), আলিফ লায়লা (১৯৮০), কোরবানি (১৯৮৫), ছক্কা পাঞ্জা (১৯৮০), সুলতানা ডাকু (১৯৮১), আবে হায়াত (১৯৮৩), লায়লী মজনু (১৯৮৩), শাহী চোর (১৯৮৩), সালতানাৎ (১৯৮২), বে-রহম (১৯৮৫), আলাদিন আলিবাবা সিন্দাবাদ (১৯৮১), ঈদ মোবারক (১৯৮২), আল্লাহ মেহেরবান (১৯৮১)-সহ আরও বহু চলচ্চিত্র।
এ ধরনের চলচ্চিত্রের পোস্টারে থাকতো ভিন্নতা, যেমন; বিশাল বিশাল দালানকোঠা, দুরন্ত ঘোড়ায় চড়ে নায়ক-নায়িকাদের ছুটে চলা, তলোয়ার দিয়ে মারামারি, আরব্য রজনীর নারীদের মতো করে অভিনেত্রীদের উপস্থাপন, বন্দুক যুদ্ধ, আগুনের ফুলকি, দরবেশসহ আরও বহু কিছু। এই দশকে শুধু পোশাকি ও ফ্যান্টাসিই নয়, ফোক ধাঁচের চলচ্চিত্রও দেখা গেল সমান তালে, যেমন; সোনার চেয়ে দামি (১৯৮০), বিষকন্যার প্রেম (১৯৮৬), জিপসি সর্দার (১৯৮৫), চাঁদ সওদাগর (১৯৮৬), বানজারান (১৯৮৫), চন্ডীদাস ও রজকিনী (১৯৮৭), সতী নাগকন্যা (১৯৮৫), বেহুলা লখিন্দর (১৯৮৮), বেদের মেয়ে জোছনা (১৯৮৯)। এসব চলচ্চিত্রের পোস্টারে থাকতো বড় বড় নৌযান, সাপ, সাপের ফণার ভেতর মানুষের ছবি, বিন বাজানো অবস্থায় কোন রমণী, বানর, হাতি, সাপের খেলাসহ নায়ক-নায়িকাদের রোমান্টিকভাবে যুগলবন্দী অবস্থায় দেখা যেতো।
ফোক-ফ্যান্টাসি ও পোশাকি চলচ্চিত্রের ভিড়ে আশির দশকে ছিল সামাজিক ধারার সঙ্গে অ্যাকশন চলচ্চিত্রের সফল একটি অধ্যায়। যেমন; যদি জানতেম (১৯৮০), সমর্পণ (১৯৮৮), সংঘর্ষ (১৯৮০), ঝুমকা (১৯৮১), শাস্তি (১৯৮০), আশা (১৯৮০), ছুটির ঘণ্টা (১৯৮০), সুন্দরী (১৯৮০), সবুজ সাথী (১৯৮২), কসাই (১৯৮১), আলী আসমা (১৯৮২), এখনই সময় (১৯৮০), ওগো বিদেশিনী (১৯৮৬), আদিল (১৯৮৮), বিনি সুতার মালা (১৯৮১), জন্ম থেকে জ্বলছি (১৯৮১), দুই পয়সার আলতা (১৯৮২), হীরামতি (১৯৮৮) মধু মালতি (১৯৮২), এতিম (১৯৮০), সখিনার যুদ্ধ (১৯৮৪), সেলিম জাভেদ (১৯৮১), কুদরত (১৯৮১), সোহাগ মিলন (১৯৮২), রাজা সাহেব (১৯৮২), লাল মেম সাহেব (১৯৮৪), নান্টু ঘটক (১৯৮২), লালু মাস্তান (১৯৮৭), ভেজা চোখ (১৯৮৮), তিন কন্যা (১৯৮৫), নসিব (১৯৮৪), হিম্মতওয়ালী (১৯৮৪), লড়াকু (১৯৮৬), বজ্রমুষ্টি (১৯৮৯)-র মতো অনেক সফল চলচ্চিত্র। সামাজিক চলচ্চিত্রগুলোর পোস্টারে ফুটিয়ে তোলা হতো পারিবারিক আবহ, সেখানে কখনো প্রকাশ পেতো দুঃখ আবার কখনো আনন্দঘন মুহূর্ত। গ্রামীণ গল্প হলে গরুর গাড়ি, বেদে বহর, নদীর ঘাট, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বড় বড় ছবি। অ্যাকশন চলচ্চিত্রের পোস্টারে থাকতো প্রধান অভিনেতা-অভিনেত্রীর রক্তাক্ত মুখচ্ছবি, মন্দ চরিত্রের আক্রোশ চাহনি, মোটরসাইকেলের জাম্প, ভিন দেশের কিছু দৃশ্য, বন্দুকের অ্যাকশন সংবলিত ছবি সঙ্গে আকর্ষণীয়ভাবে নৃত্যরত রমণী।
একটি বিষয়ে উল্লেখ না করলেই নয়, বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশনের ধারাকে চেঞ্জ করে এই আশির দশকেই গুণী মেধাবী চলচ্চিত্র নির্মাতা মরহুম শহীদুল ইসলাম খোকন সাহেব নির্মাণ করেছিলেন সম্পূর্ণ মার্শাল আর্ট সংবলিত ‘লড়াকু’ ও ‘বজ্রমুষ্টি’। এ ছবি দুটির মাধ্যমেই দর্শকেরা পেয়েছিল বাংলা চলচ্চিত্রে পূর্ণাঙ্গ মার্শাল আর্টে দেখার স্বাদ।
যাই হোক, শুধু এই ফোক-ফ্যান্টাসি, পোশাকি আর সামাজিক-অ্যাকশন চলচ্চিত্রই নয় এই দশকেও তৈরি হয় সাহিত্য নির্ভর চলচ্চিত্রের এক সফল অধ্যায়। সবচেয়ে সফল সাহিত্য নির্ভর চলচ্চিত্র দেবদাস (১৯৮২) নির্মিত হয় এই আশির দশকে, পরিচালক ছিলেন মরহুম চাষী নজরুল ইসলাম সাহেব। এরপর একে একে তৈরি হয় চন্দ্রনাথ (১৯৮৪), ভাত দে (১৯৮৪), শুভদা (১৯৮৬), বিরাজ বৌ (১৯৮৮)-সহ আরও কিছু সফল চলচ্চিত্র। এই দশক থেকেই কিন্তু বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র তৈরি হতে থাকে, যেমন; ঘুড্ডি (১৯৮০), এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী (১৯৮০) ও দহন (১৯৮৫)!
এই তো গেল আশির দশক। পরের দশকের কী অবস্থা? সামাজিক প্রেক্ষাপট মূল বিষয়বস্তু হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসেছে অ্যাকশন ভিত্তিক চলচ্চিত্রের ছোঁয়া। তেমনি আশির দশকে দেখা গেছে ফোক-ফ্যান্টাসি আর পোশাকি চলচ্চিত্রের জোয়ার, যদিও ১৯৭৯ সালে ‘বিজয়িনী সোনাভান’-এর মাধ্যমে এই ধারার চলচ্চিত্রের শুরুটা হয়েছিল। কিন্তু এর জোয়ার ছিল মূলত আশির দশকেই, যার ভাটা পড়ে নব্বই দশকে এসে টিনেজ ভিত্তিক চলচ্চিত্রের আগমনে।
সামাজিক ও অ্যাকশান ঘরানার চলচ্চিত্রের মাঝে নব্বই দশকের শুরুর দিকে হঠাৎ করে এই টিনেজ ভিত্তিক চলচ্চিত্রের জোয়ারটা এনে দিলেন গুণী পরিচালক মরহুম ক্যাপ্টেন এহতেশাম সাহেব, তার বাম্পার হিট ‘চাঁদনী’ (১৯৯১)-র মাধ্যমে। এক জোড়া অল্প বয়সী নতুন মুখ শাবনাজ ও নাঈম, সাথে নতুন ধরনের গল্প, চমৎকার লোকেশন, শ্রুতিমধুর গান— সবকিছু মিলিয়েই এক নতুনত্বের স্বাদ পেল তখনকার দর্শকেরা। তাই হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল ‘চাঁদনী’ দেখার জন্য। ছবিটির বিশাল সাফল্য আর দর্শকদের ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিয়ে অন্য পরিচালকরাও শুরু করলেন টিনেজ ভিত্তিক চলচ্চিত্রের নির্মাণ। একের পর এক আসতে থাকলো চোখে চোখে (১৯৯২), কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৪), প্রেমগীত (১৯৯৩), সোনিয়া (১৯৯২), চাঁদের আলো (১৯৯২), স্বপ্নের ঠিকানা (১৯৯৫), জ্যোতি (১৯৯৩), অবুঝ দুটি মন (১৯৯৩), চাঁদনী রাতে (১৯৯৩), পাগল মন (১৯৯৩), অন্তরে অন্তরে (১৯৯৪), আমার ঘর আমার বেহেশত (১৯৯৭), হৃদয়ের আয়না (১৯৯৭), প্রাণের চেয়ে প্রিয় (১৯৯৭), এ জীবন তোমার আমার (১৯৯৮) হৃদয় আমার (১৯৯৫)-এর মতো উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
শাবনাজ-নাঈমের সাফল্যের হাত ধরেই এসেছিল একঝাঁক তরুণ ও সফল অভিনয়শিল্পী— সালমান শাহ,আমিন খান, ওমর সানী, মৌসুমী, শাবনূর, শাকিল খান, পপি, পূর্ণিমা, রিয়াজ, শাকিব খান প্রমুখ। তারা অভিনয় দিয়ে রাঙিয়েছে আমাদের চলচ্চিত্রের অঙ্গন। সিনিয়র রাজ্জাক, শাবানা, উজ্জ্বল, আলমগীর, সোহেল রানা, ববিতা, রোজিনা, জসিম, জাফর ইকবাল, ইলিয়াস কাঞ্চনদের ভিড়ে নিজেদের আলাদা একটি অবস্থান তৈরি করতে সফল হয়েছিল আমিন-সালমানদের মতো নতুন দিনের তারকারা। অবশ্য নব্বই পরবর্তী সময়ে এই সব সিনিয়র অভিনেতাদের একক ছবি অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়। তবে তখনকার সময়ের পরিচালক-প্রযোজকদের আন্তরিকতা আর বুদ্ধিমত্তার কারণেই সিনিয়র আর নতুন দিনের তারকাদের সংবলিত করে চলচ্চিত্র নির্মাণেই আসতে থাকে একের পর এক সফল চলচ্চিত্র।
এই দশকে শুধু টিনেজ প্রেম ভিত্তিক চলচ্চিত্রই হয়েছে তা নয়, সঙ্গে সঙ্গে হয়েছে সামাজিক, অ্যাকশন, ফোক, আর সহিংসতা-প্রতিবাদী ঘরানার চলচ্চিত্রও।
নতুন ঘরানার প্রেম-ভিত্তিক চলচ্চিত্রের মধ্যেও আসে পোস্টারের ভিন্নতা। পোস্টারে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে প্রেম-ভালোবাসাকে, দেখা গেছে নায়ক-নায়িকাদের যুগলবন্দী বড় বড় ছবি, সঙ্গে ভালোবাসার প্রতীক হার্টের চিহ্ন, ফুলের বাগান, নদী, নৌকা, সরিষা খেত, রেল লাইন ধরে চলা অভিনেতাদের ছবি!
এই নব্বই দশকে দর্শকেরা আরেক ধরনের চলচ্চিত্রের সঙ্গে পরিচিত হলো, সহিংসতা আর প্রতিবাদী নির্ভর চলচ্চিত্র— যার কথা আগেই বলা হয়েছে। আশির দশকের শেষ দিকে এ ঘরানার ‘যন্ত্রণা’ ও ‘দায়ী কে’র মাধ্যমে দর্শকেরা আগেই পরিচিত ছিল। তবে নব্বই দশকে এসে এ ধরনের চলচ্চিত্র বেশি দেখা গেল, এ ঘরানায় সবচেয়ে সফল পরিচালক ছিলেন কাজী হায়াৎ সাহেব, সঙ্গে ছিলেন নায়ক মরহুম মান্না। প্রতিবাদী চলচ্চিত্রের সফল জুটিতে পরিণত হয়ে গেলেন তারা। এ ঘরানার চলচ্চিত্রের মধ্যে দাঙ্গা (১৯৯২), দেশ প্রেমিক (১৯৯৪), ত্রাস (১৯৯২), লুটতরাজ (১৯৯৭), শান্ত কেন মাস্তান (১৯৯৮), পাগলা বাবুল (১৯৯৭), দেশদ্রোহী (১৯৯৭), তেজী (১৯৯৮), ধর (১৯৯৯), আম্মাজান (১৯৯৯) উল্লেখযোগ্য। এসব ছবির প্রধান খল অভিনেতাদের ছবি প্রাধান্য পেয়েছে পোস্টারে, যেমন; ছবির নায়ক ও ভিলেনের মুখোমুখি তাকিয়ে থাকা, চিৎকার দেওয়ার ভঙ্গি, রক্তাক্ত মুখচ্ছবি, অস্ত্র হাতে ধাবমান যুবক, মোটরসাইকেলের উড়ন্ত জাম্প, ঘোড়ায় চড়ে ছুটে চলা থেকে মারামারির দৃশ্য। একটি ব্যাপার উল্লেখ করার মতো, তা হলো নব্বই দশকে হূমায়ুন ফরিদী (সন্ত্রাস), মিশা সওদাগর ও ডিপজল (তেজী)-এর মতো ভয়ংকর খল-চরিত্রের অভিনেতাদের আগমন ঘটেছিল, যাদের অসাধারণ অভিনয়ের গুনে সিনিয়র রাজিব, মিজু আহমেদসহ চলচ্চিত্রের ভিলেনদের আলাদা একটি তারকা ইমেজ গড়ে ওঠে। ফলে তাদের ছবিও নায়কদের পাশাপাশি গুরুত্ব সহকারে পোস্টারে উপস্থিত করা হতো!
নব্বই দশকেও বেশ কিছু প্রশংসনীয় বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। যেমন; নদীর নাম মধুমতি (১৯৯৫), চাকা (১৯৯৩), আগুনের পরশমণি (১৯৯৪), অচিন পাখি (১৯৯৬), দুখাই (১৯৯৭), মুক্তির গান (১৯৯৫), এখনো অনেক রাত (১৯৯৭), চিত্রা নদীর পারে (১৯৯৯), একাত্তরের যীশু (১৯৯৩) ও পোকা মাকড়ের ঘরবসতি(১৯৯৬)।
নব্বই দশকের আরেকটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়— মার্শাল আর্ট ভিত্তিক চলচ্চিত্র। এই ঘরানার চলচ্চিত্রের কথা বলতে গেলেই যার নামটি সবার আগে আসবে তিনি হলেন পরিচালক মরহুম শহীদুল ইসলাম খোকন সাহেব। যার হাত ধরেই আশির দশকের মধ্যভাগে প্রথম পূর্ণাঙ্গ মার্শাল আর্ট ভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘লড়াকু’ (১৯৮৬) নির্মাণ হয়। নায়ক ছিলেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল কারাতে পরপর দুইবার (১৯৮২-১৯৮৩) চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত রুবেল। ছবিটির অভাবনীয় সাফল্যের প্রেক্ষিতে গড়ে উঠলো খোকন-রুবেল অধ্যায়, যারা একে একে দিলেন ২৭টি সফল চলচ্চিত্র। মার্শাল আর্ট ঘরানা শুধু খোকন সাহেবের বলয়ের মধ্যেই ছিল না বরং এ ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণে দেখা গেছে মরহুম আহমেদ সাত্তার, ফজলে হক, কমল সরকার, আবুল খায়ের বুলবুল, এ জে রানাদেরও। আশির মতো পরের দশকেও সফলতার সঙ্গে মার্শাল আর্টের ধারা অব্যাহত থাকে, যার মধ্যে বিপ্লব (১৯৯০), অকর্মা (১৯৯০), টপ রংবাজ (১৯৯১), উত্থান-পতন (১৯৯২), শত্রু ভয়ংকর (১৯৯৩), চারদিকে শত্রু (১৯৯৭), ভণ্ড (১৯৯৮), দিন মজুর (১৯৯১), বিশ্ব প্রেমিক (১৯৯৫), সন্ত্রাস (১৯৯১), সম্পর্ক (১৯৯২), বিষদাঁত (১৯৯১),লম্পট (১৯৯৬), জ্বলন্ত আগুন (১৯৯১), গোলামীর জিঞ্জির (১৯৯২), বজ্রপাত (১৯৯০) দেশ দুশমন (১৯৯১) অন্যতম! এ সব ছবির পোস্টারে অনেকটা জুড়ে থাকতো মার্শাল আর্ট কসরত অবস্থায় নায়ক-ভিলেন ও নায়িকাদের ছবি, আশপাশে থাকতো ড্রাগনের অগ্নিমুখ, অন্ত্র হিসেবে নানচাকু, সামুরাইয়ের ব্যবহার বেশি দেখা যেতো!
দারুণ বৈচিত্র্যময় নব্বই দশকে শুধু এ ধরনের চলচ্চিত্রই নয় বরং শিশ-মহল (১৯৯১), বিষের বাঁশী (১৯৯৩), রূপের রানি গানের রাজা (১৯৯৩), নাচে নাগিন (১৯৯১), রূপসী নাগিন (১৯৯২), স্বপ্ন কুমার (১৯৯১), কাশেম মালার প্রেম (১৯৯১) বনের রাজা টারজান(১৯৯৫)-সহ আরও ফোক-ফ্যান্টাসি-পোশাকি ছবি এসেছে। সঙ্গে ছিল সামাজিক-অ্যাকশন চলচ্চিত্র, যেমন; সুখের মিলন (১৯৯১), মহা ভূমিকম্প (১৯৯৪), ভাঙচুর (১৯৯৫), ঘৃণা (১৯৯৪), মা মাটি দেশ (১৯৯২), মরণের পরে (১৯৯০), জন্মদাতা (১৯৯২), অর্জন (১৯৯০), বিশ্বাস অবিশ্বাস (১৯৯০), মায়ের কান্না (১৯৯২), কাজের বেটি রহিমা (১৯৯১), বুকের ধন (১৯৯৫), মুক্তির সংগ্রাম (১৯৯৫), সম্মান (১৯৯১), পিতা মাতা সন্তান (১৯৯১), প্রেম দিওয়ানা (১৯৯৩), লেডি স্মাগলার (১৯৯০), দেনমোহর (১৯৯৫), অমর বন্ধন (১৯৯০), কুচবরণ কন্যা মেঘবরণ কেশ (১৯৯০), ধনরত্ন (১৯৯০), বাংলার কমান্ডো (১৯৯৫), সংসারের সুখ দুঃখ (১৯৯৫), দুনিয়ার বাদশা (১৯৯৩), বেপরোয়া (১৯৯২), স্নেহ (১৯৯৪), লটারি (১৯৯১), ন্যায়যুদ্ধ (১৯৯১), লক্ষ্মীর সংসার(১৯৯২), বাপ বেটা ৪২০ (১৯৯১), তোমাকে চাই(১৯৯৬), দয়া মায়া (১৯৯১), চাকরানী (১৯৯৫), বিদ্রোহী বধূ (১৯৯৪), রাগ অনুরাগ(১৯৯৫)-সহ অনেক চলচ্চিত্র।
(পরবর্তী পর্বে সমাপ্য)