ইট–পাথরের এই শহরে সবুজ খুঁজে পাওয়া একটু কঠিনই বটে। তাই অনেকেই চান নিজের অন্দরমহলটাকে সবুজের আভায় সাজাতে। এতে অন্দরসজ্জায় যেমন পরিবর্তন আসবে, তেমনই বাড়ি হয়ে উঠবে আরও বসবাস উপযোগী। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, পর্যাপ্ত আলো না থাকলে বাড়িতে ইনডোর প্ল্যান্ট রাখা যায় না। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, ইনডোর প্ল্যান্টের এমন কিছু প্রজাতি রয়েছে, যা বাড়ির ভেতর বা ঘরের স্বল্প আলোতেও বেড়ে উঠতে পারবে। তা ছাড়া এসব গাছ ঘরের বাতাসও রাখে দূষণমুক্ত।
অ্যালোভেরা
বাংলায় এর নাম ঘৃতকুমারী বা ঘৃতকাঞ্চন। এই গাছের রস ত্বক ও চুল পরিচর্যায় কাজে লাগে। ঘরের ভেতরের বাতাসকে পরিষ্কার রাখতে এবং অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে এর তুলনা নেই। মাত্র ১টি অ্যালোভেরা গাছ ৯টি বায়োলজিক্যাল এয়ার পিউরিফায়ারের সমান কাজ করে।
ক্যাকটাস
কাঁটাযুক্ত এই গাছও আপনি খুব সহজে ঘরে রাখতে পারেন। মরুভূমির ক্যাকটাস ছাড়া অন্য জাতের ক্যাকটাসের জন্য খুব বেশি আলোর প্রয়োজন হয় না। এমনকি খুব বেশি পানিরও প্রয়োজন হয় না। সপ্তাহে দুই দিন রোদ আর অল্প কিছু পানি এর জন্য যথেষ্ট। বিভিন্ন রকম ক্যাকটাস কিনতে পাওয়া যায় নার্সারিগুলোয়। বারান্দা কিংবা জানালার পাশে খুব সহজে রেখে দিতে পারেন এই গাছ।
লেডি পাম
সবুজ এই গাছ পামগাছেরই একটি প্রজাতি। এটি আকারে ছোট এবং ঘরের ভেতর বড় করার উপযোগী। অফিস বা কমার্শিয়াল স্পেসগুলোর জন্য সর্বাপেক্ষা উপযোগী গাছগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লেডি পাম। এটি দেখতে অনেকটা ছোট তালগাছের মতো হয়। সাধারণত এটি রাপিস নামে বেশি পরিচিত, খুব সহজেই এই গাছ ঘরের ভেতর রাখা যায়। লেডি পাম খুব ধীরে বৃদ্ধি পায়। খুব একটা রোদেরও দরকার পড়ে না এই গাছের।
ড্রাগন টি
এই গাছের যত্ন এবং পরিচর্যা খুবই সহজ। যেকোনো রকম তাপমাত্রায় বেড়ে ওঠার আশ্চর্য ক্ষমতা রয়েছে এই গাছের। তবে প্রতিদিন নিয়মিত পানি দিলে এই গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে। আলোর প্রয়োজন থাকলেও সূর্যের আলোর প্রয়োজন নেই।
চাইনিজ এভারগ্রিন
ছবি: উইকিপিডিয়া
এই গাছ কম আলো, কম জলেও বাঁচে বলে বাড়ির ভেতর যেখানে সূর্যের আলো প্রায় পৌঁছায় না, সেখানেও বেঁচে থাকে এই গাছ। এই গাছকে এয়ার পিউরিফায়ার নামেও ডাকা হয়। ছায়াতেই ভালো থাকে এরা।
ব্যাম্বু পাম
এই গাছ ৮ থেকে ১২ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। প্রচুর পরিমাণ বাতাস পরিশোধন করতে পারে। বাতাস থেকে ফর্ম্যালডিহাইড, ট্রাইক্লোরোইথিলিন নামক বিষাক্ত দূষণমুক্ত করে ঘরের পরিবেশকে করে তোলে বসবাসের উপযোগী। ঝোপযুক্ত গাছটি ঘরের মধ্যে থাকা বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। কয়েক দিন পরপর কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলোতে গাছটি রাখতে হয়।
ইন্ডিয়ান ব্যাসিল বা তুলসী গাছ
ছবি: উইকিপিডিয়া
তুলসী একটি ঔষধি গাছ। এর পাতা, বীজ, ডাল সবকিছুই মানুষের জন্য উপকারী। আয়ুর্বেদে তুলসীকে ভেষজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সর্দি–কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বর জ্বর ভাব দূর করার জন্য তুলসী পাতার রস খুবই উপকারী। তুলসী গাছ ঘরে খুব সহজেই রাখা যায়। খুব একটা যত্নেরও দরকার হয় না এই গাছের। বাতাসকে পরিষ্কার রাখে এই গাছ।
* সাহিদা আক্তার