বিবাহপূর্ব যৌনমিলন, পায়ুকামিতা, সমকামিতাকে বৃহৎ প্রতিবেশী দেশটির সুপ্রীম কোর্ট বৈধ বলে রায় দিয়েছে ব্যক্তি স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে। তাই বলে কি তা বৈধ বলে কারু বিবেকে সায় দিবে? এটাতো স্রেফ পাশবিক স্বাধীনতা! দলীয় শাসন কখনো নিরপেক্ষ প্রশাসন উপহার দিতে পারে না, আল্লাহভীরু ব্যক্তিগণ ব্যতীত। জ্ঞানী ও ব্যক্তিত্ববান মানুষ কখনো নেতৃত্ব চেয়ে নেন না, এগুলি স্বতঃসিদ্ধ কথা। অথচ সেগুলিই চলছে অপরিহার্য বিধান রূপে বছরের পর বছর ধরে। তাহ'লে কি সর্বদা এভাবে মিথ্যারই জয়গান চলবে? জন্ডিসের রোগী সাময়িকভাবে সবকিছুকে হলুদ দেখে, তাই বলে পৃথিবী সব হলুদ হয়ে যায় না। সাপে কাটা রোগী তিতাকে মিঠা বলে, তাই বলে তিতা কখনো মিঠা হয় না। অনুরূপভাবে সসীম জ্ঞানের মানুষ অনেক সময় মিথ্যাকে সত্য বলে, সত্যকে মিথ্যা বলে, তাই বলে সত্য কখনো মিথ্যা হয় না এবং মিথ্যা কখনো সত্য হয় না। কারু মতে বিজ্ঞানই সত্য। অথচ কোন বিজ্ঞানীই নিজেকে অভ্রান্ত সত্য বলে দাবী করেননি। বরং তারা সকলেই বলেছেন, Science gives us but a partial knowledge of reality 'বিজ্ঞান আমাদেরকে কেবল আংশিক সত্যের সন্ধান দেয়'। তারা স্রেফ অনুমানের ভিত্তিতে কাজ শুরু করে থাকেন। তারা বলেন, 'আমরা কতিপয় বাহ্য প্রকাশকে দেখি মাত্র, মূল বস্ত্তকে দেখিনা'। যেমন ধোঁয়া দেখে মানুষ আগুনের সন্ধানে ছুটে থাকে।
অতএব সবকিছুর মূলে যিনি সেই মহাসত্যকে খুঁজে পাওয়া ও তাঁর দিকে ধাবিত হওয়ার চিন্তা দর্শনই হ'ল প্রকৃত অর্থে 'সত্যদর্শন'। যুগে যুগে নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে সেই সত্যেরই সন্ধান দিয়েছেন। শেষনবীর মাধ্যমে যা পূর্ণতা লাভ করেছে এবং কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বুকে যা সংরক্ষিত আছে। পৃথিবীর সকল মানুষ তাকে প্রত্যাখ্যান করলেও ঐ সত্য চিরকাল সত্যই থাকবে, কখনোই মিথ্যা হবে না। আল্লাহ বলেন, তোমার প্রভুর বাক্য সত্য ও ন্যায়নীতি দ্বারা পূর্ণ। তার পরিবর্তনকারী কেউ নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ'। 'যদি তুমি অধিকাংশ লোকের কথা শুনে চলো, তাহ'লে ওরা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। কেননা ওরা ধারণার অনুসরণ করে এবং ওরা অনুমানভিত্তিক কথা বলে' (আন'আম ১১৬-১৭)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, তোমরা কি (সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্বে) দিশেহারা হয়ে থাকবে, যেমন ইহুদী-নাছারারা হয়েছে? নিশ্চয়ই আমি তোমাদের কাছে এসেছি স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়ে। যদি আজ মূসাও বেঁচে থাকতেন, তাহ'লে আমার অনুসরণ করা ব্যতীত তার কোন গত্যন্তর থাকতো না' (আহমাদ, মিশকাত হা/১৭৭)। অতএব আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ 'অহি' পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অভ্রান্ত বিধানের কাছে আত্মসমর্পণ করাই হ'ল প্রকৃত অর্থে 'সত্যদর্শন'। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন- আমীন!!