What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Other শাহীন আলম : শুধুই সাইড নায়ক নয়, অন্যতম (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,441
Pen edit
Sailboat
Profile Music
IOYUque.jpg


‘মন দিলাম প্রাণ দিলাম
আর কি আছে বাকি,
ও আমার কাজল পাখি
ও আমার পরাণ পাখি’

NxjJ6wn.jpg


১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘ঘাটের মাঝি।’ টাইটেল সংটি জনপ্রিয় হয়ে যায়। নায়ক শাহীন আলম বিপরীতে কুমকুম। রেডিওতে ‘অনুরোধের আসর গানের ডালি’-তে যে গানগুলো শুনতে চেয়ে শ্রোতারা চিঠি লিখত এ গানটি তার মধ্যে একটি।

কিছু কিছু তারকা আছে যারা প্রতিভা নিয়ে এসেও ভুল করে বসে, শাহীন আলম তাদেরই একজন। ছেলেটি নব্বই দশকে চমৎকার ক্যারিয়ার পাবার পরেও ২০০০ পরবর্তী অশ্লীলতার সময়ে গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে হারিয়ে গেছে। মাঝখানে অসুস্থ ছিল কিছুদিন এবং এখন ঢাকার গাউছিয়া মার্কেটে কাপড়ের দোকান দিয়েছে।

১৯৮৬ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’-র মাধ্যমে ঢালিউডে আগমন তার। অবাক করা তথ্য হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিতে আগমনের সাথেই এই শাহীন আলমকে দিয়েই বিগ বাজেটের ‘মাসুদ রানা’-র দ্বিতীয় কিস্তি হবার কথা ছিল। শুটিংও হয়েছিল কিছু অংশের কিন্তু সেটি শেষ পর্যন্ত শেষ হয়নি।
জাহাঙ্গীর আলম, রুবেল-দের উত্তরসূরি হিসেবে মার্শাল আর্টে ব্ল্যাকবেল্টধারী ছিল। যদিও তার ছবিগুলোতে মার্শাল আর্টকে সেভাবে উপস্থাপন করা হত না তবে ছবিতে ফাইটিং দেখলে তাকে দক্ষ মনে হয়।

প্রথম ছবি – মায়ের কান্না (১৯৯১)। উল্লেখযোগ্য ছবি ঘাটের মাঝি, এক পলকে, গরিবের সংসার, তেজী, চাঁদাবাজ, প্রেম প্রতিশোধ, টাইগার, রাগ-অনুরাগ, দাগী সন্তান, বাঘা-বাঘিনী, আলিফ লায়লা, স্বপ্নের নায়ক, আণ্জুমান, অজানা শত্রু, দেশদ্রোহী, প্রেম দিওয়ানা, আমার মা, পাগলা বাবুল, হঠাৎ বৃষ্টি, শক্তির লড়াই, দলপতি, পাপী সন্তান, ঢাকাইয়া মাস্তান, বিগবস, বাবা, বাঘের বাচ্চা, বিদ্রোহী সালাউদ্দিন, তেজী পুরুষ ইত্যাদি।

p0xS4d0.jpg


শাহীন আলম জসিম, রুবেল, ইলিয়াস কাঞ্চন, মান্না, শাকিব খান-দের ছবিতে দ্বিতীয় নায়কের ভূমিকায় থাকলেও তার চরিত্রের গুরুত্ব থাকত। নিজে মূল নায়কও ছিল ‘ঘাটের মাঝি, এক পলকে, আলিফ লায়লা, পাপী সন্তান’ ছবিগুলোতে। এমনকি একাধিক নায়কের ছবিতেও তার ভূমিকা থাকত অন্যতম। যেমন – ‘গরিবের সংসার’ ছবিতে জসিম, বাপ্পারাজ, ড্যানি সিডাক থাকার পরেও শাহীন আলম ছিল ছবির অন্যতম নায়ক। বিপরীতে ছিল লিমা। লিমা তিন ভাইয়ের আদরের বোন। লিমা শহরে এসে বিপদে পড়ার পর শাহিন আলম তাকে আশ্রয় দেয়। লিমার জীবন পাল্টে দেয়াতে তার অবদান থাকে। এভাবে অন্য ছবিগুলোতেও ভূমিকা ছিল।

‘ঘাটের মাঝি’-তে ‘ও আমার সুজন মাঝি, ঘাটের মাঝি’ গানটিতে শাহীন আলম-কুমকুম রসায়ন দর্শক গ্রহণ করেছিল। ফোক ও পল্লীগ্রামের চমৎকার লোকেশন, কস্টিউমে হওয়াতে দর্শক লুফে নেয়। মান্নার সাথে ‘তেজী’ ছবিটি খুব আলোচিত ছিল। ছবির সবচেয়ে জনপ্রিয় গান –

‘টাকা নাই রে পয়সা নাই রে
ঘর নাই রে বাড়ি নাই রে
চাকরি নাই রে বেতন নাই রে
এই তো জীবনধারা
বড় কষ্টে আছি আমরা
বেকার যুবক যারা’

বেকারত্ব নিয়ে বাস্তবতা তুলে ধরাতে গানটি সেসময় ভীষণ জনপ্রিয় হয়েছিল। চায়ের দোকান, ক্লাব, হোটেল, গ্রামে আসা চানাচুরের গাড়ি সবখানে গানটা বাজত।

‘জানুয়ারিতে হলো দেখা
ফেব্রুয়ারিতে পরিচয়
মার্চ-এপ্রিল গেল দুটি মন কাছে এলো
মে-জুন গেল দিতে হৃদয়
একদিন দুইদিন তিনদিন নয়
ভালোবাসতে লাগে অনেক সময়’

‘আরমান’ ছবির কনক চাঁপা-আসিফের কণ্ঠের এ জনপ্রিয় গানটি একসময় রেডিওতে ‘অনুরোধের আসর গানের ডালি’-তে বাজানো হত নিয়মিত। গানে পর্দায় ছিল শাহিন আলম ও ময়ূরী।

HdQcqOA.jpg


‘চাঁদাবাজ’ ছবিতে তার সৎ পুলিশ ইন্সপেক্টরের ভূমিকা স্মরণীয়। দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশের বড়কর্তা মিজু আহমেদ-কে শাহীন আলম গোপনে গুলি করে মেরে ফেলে আদর্শের জন্য। ‘রাগ-অনুরাগ’ ছবিতে শাবনাজের ডাবল রোলের একজন শাবনাজের প্রেমিক ছিল শাহীন। বাবা-মাকে মিলিয়ে দিতে সে শাবনাজকে সাহায্য করে। অমর নায়ক সালমান শাহ-র সাথে ‘স্বপ্নের নায়ক, আণ্জুমান’ দুটি ছবিতে কাজ করেছে। ‘আঞ্জুমান’ ছবিতে শাবনাজের ভাইয়ের চরিত্রে ছিল এবং সালমানের থেকে তাকে অ্যাকশনেবল দেখা গেছে। ফোক-ফ্যান্টাসির ছবি ‘আলিফ লায়লা’-তে দেখা গেছে। গার্মেন্টসকর্মীদের জীবনযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত ‘এক পলকে’ ছবিতে ছিল সাবরিনার বিপরীতে। ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবিতে অতিথি চরিত্রের ছোট্ট সেই অংশটি ভোলা যায় না। অসাধারণ অভিনয় ছিল। প্রিয়াঙ্কার বিয়ে ঠিক করার জন্য আসাদ পাত্র শাহীন আলমকে নিয়ে আসে বাসায়। তখন শাহিনের ঐ সংলাপটি চমৎকার লাগে-‘মুখ দেখে মনের কথা বোঝার বিদ্যে আমার জানা নেই।’ তারপর কার্ড দিয়ে আসে। প্রিয়াঙ্কা পরে দেখা করতে গেলে সেখানেও চমৎকার সংলাপ-‘তোমাকে দেখেই বুঝেছিলাম তোমার মনের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব চলছে, আমাকে বিনা সংকোচে বলতে পারো।’ তারপর অারো কিছু কথা।

5xH3FcI.jpg


২০০০ পূর্ববর্তী সময়ে শাহীন আলম প্রায় সব ধরনের বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করেছে। তার ছবির ক্যাটাগরিতে ফ্যামিলি ড্রামা (গরিবের সংসার, রাগ-অনুরাগ, মায়ের কান্না), রোমান্টিক (প্রেম দিওয়ানা), অ্যাকশন (দাগী সন্তান, আণ্জুমান, চাঁদাবাজ, তেজী), ফোক-ফ্যান্টাসি (ঘাটের মাঝি, আলিফ লায়লা)। এভাবে অন্যতম নায়ক হয়ে ওঠে মূল নায়কদের পাশাপাশি।

অশ্লীল সময়ে মেহেদি, আলেকজান্ডার বো, পিচ্চি সোহেলদের মতো শাহীন আলমও যোগ দেয়। অনেক অশ্লীল ছবিতে অভিনয় করেছে। আপত্তিকর কথা ও দৃশ্যের গানের সাথে অভিনয় করেছে অশ্লীল নায়িকাদের সাথে। নিজের অসচেতনতা এবং তখনকার ক্ষমতাসীন সিন্ডিকেটের কাছে পরাজিত হয়েছে। আর এভাবেই তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়।

তবে শাহীন আলম আজকের তথাকথিত কিছু নায়ক যারা ইন্ডাস্ট্রিতে এসেই ‘চিত্রনায়ক’ তকমা পেয়ে যায় তাদের থেকে অনেকগুণ বেটার ছিল। অভিনয়দক্ষতা ছিল। তাকে একক নায়কে বেশি কাজে লাগালে ভালো ফলাফল আসত। নির্মাতারা এ কাজটি করেননি তাকে দিয়ে। তারপরেও শাহীন আলম অশ্লীলতা পূর্ববর্তী যেসব ছবি করেছে তার মাধ্যমে সে দেশের বাণিজ্যিক ছবির অন্যতম একজন নায়ক।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top