কনেঃ এই যে! আপনি কিন্তু আমাকে আমার অনুমতি ছাড়া টাস করবেন না।
বরঃ মানে, কি বুঝলাম না।
কনেঃ বুঝতে হবে না। আপনি আমাকে টাস করবেন না। করলে কিন্তু আমি কান্না করবো।
বরঃ ওকে। তাও কান্না করতে হবে না। এখন একটু সরে বসেন, আমি ঘুমাবো। এভাবে বিছানার মাঝখানে বসে থাকলে আমি ঘুমাবো কি ভাবে?
কনেঃ শোনেন আমি আপনার ৫ বছরের ছোট। তাই আমাকে আপনি করে বলবেন না। আমাকে আপনি তুমি করে বলবেন। আর আমি আপনাকে আপনি করে বলব।
বরঃ কেনো এমনটা হবে। হয় দুজনে তুমি বলবো, না হয় আপনি।
কনেঃ দেখুন, কথা না শুনলে কিন্তু কান্না করব।
বরঃ কি আজব,,,, কথায় কথায় কাদতে হবে নাকি।
কনেঃ না, আগে বলেন রাজি কিনা।
বরঃ ওকে, রাজি… তুমি ঘুমাবে না?
কনেঃ শোনেন, আজ রাতে আমি আপনি কেউ ঘুমাবো না।
বরঃ কেনো..
কনেঃ আমি না সারা জীবন কোন প্রেম করিনি। সব সময় ভেবেছি, যাকে বিয়ে করবো, তার সাথেই প্রেম করব। আর যত দিন তাকে ভালবাসতে পারব না, ততদিন তাকে টাস করতে দিব না।
বরঃ ওহহ আচ্ছা। এর সাথে না ঘুমানোর কি কারণ বুঝলাম না।
কনেঃ আপনি আজ ঘুমাবেন না। আজ সারা রাত আপনার সাথে গল্প করবো।
বরঃ কি গল্প?
কনেঃ আমার বরকে নিয়ে আমি যত স্বপ্ন দেখছি... সেই গল্প।
বরঃ এমা,,,,, আমি না আজ খুব ক্লান্ত। কাল গল্প করি?
কনেঃ না... আজকেই। আপনি ঘুমালে কিন্তু আপনার গায়ে পানি ঢেলে দিব।
বরঃ কয় কি (এই শীতের রাতে)! না থাক, তার চেয়ে বরং গল্প করি। বলো কি বলবে।
কনেঃ আপনি তো আচ্ছা বরিং মানুষ! কথা বলতেও পারেন না ঠিক ভাবে। আমার নাম জিজ্ঞেস করেন।
বরঃ ওহহ আচ্ছা! তোমার নামতো রাইসা, তাই না?
কনেঃ আরে ধুর, এভাবে কি কেউ জিজ্ঞেস করে।
বরঃ তাহলে কি ভাবে জিজ্ঞেস করে।
কনেঃ বলবেন... “তোমার নাম কি?”
বরঃ কিন্তু আমি তো তোমার নাম জানি।
কনেঃ ইহহহহ...? আপনাকে কিন্তু.. ! ?? যা বলতে বলছি তাই বলেন।
বরঃ ওকে,,,, তোমার নাম কি?
কনেঃ আমি রাইসা।
বরঃ কিসে পড়ো?
কনেঃ অনার্স ২য় বর্ষ।
বরঃ আর কি?
কনেঃ ধুর ছাই... কি বরিং মানুষ আপনি!
বরঃ আমি আবার কি করলাম।
কনেঃ ওকে আপনার প্রশ্ন করতে হবে না। আমি নিজে থেকেই বলছি। জানেন আমার সব ফ্রেন্ডরা রিলেশন করতো। কিন্তু আমি করতাম না।
বরঃ কেনো?
কনেঃ কারণ, আমি আমার বরের দুষ্ট মিষ্টি বউ হতে চাইছি সব সময়।
বরঃ কি রকম?
কনেঃ আমি সব সময় চাইছি... আমার সব ভালোবাসা আমি আমার বরকে দিব। আর ওকে খুব জ্বালাব।
বরঃ কি রকম?
কনেঃ জানেন, আমার চাহিদা গুলো খুব সামান্য। আমার বাড়ি, গাড়ি, ভালো পোশাক, দামি ফার্নিচার কিছুই চাইনা।
বরঃ তাহলে কি চাই?
কনেঃ রোজ সকালে আপনি যখন অফিসে যাবেন, তখন আমার কপালে একটা চুমু দিবেন।
বরঃ আর?
কনেঃ দুপুরে খাবার আগে যেখানেই থাকেন, আমাকে একটা কল দিবেন। না হলে আমি না খেয়েই থাকব।
বরঃ ওকে দিবো। আর?
কনেঃ অফিস থেকে ফেরার সময় আমার জন্য চকলেট, আইসক্রিম, ফুসকা, কিছু না কিছু আনতে হবে।
বরঃ আর?
কনেঃ যদি কখনো ভুলে যান তবে আবার বাইরে পাঠাই দিব।
বরঃ ওকে আনবো। আর?
কনেঃ ভালবাসা দিবস, মেরেজ ডে সহ সব ভালো ভালো দিনে আমায় নতুন করে প্রপোজ করতে হবে। কিন্তু কোন ফুল দেওয়া যাবে না।
বরঃ এটা কেমন কথা!
কনেঃ জী এমনি কথা!
বরঃ আর?
কনেঃ আমার কুয়াশা, চাঁদনী রাত, ঠান্ডা খুব ভালো লাগে। তাই মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে। ব্যস্ত থাকলে বলব না।
বরঃ ওকে।
কনেঃ মাঝে মাঝে চাঁদনী রাতে, বেলকোনিতে বসে এক কাপে দুজন কফি খাব।
বরঃ এক কাপে কেন?
কনেঃ হুম এক কাপেই খাব।
বরঃ ওকে, আর?
কনেঃ মাঝে মাঝে বৃষ্টির রাতে ছাদে গিয়ে দুজন ভিজবো। আর আপনি কদম ফুল দিয়ে আমায় প্রপোজ করবেন।
বরঃ এই শহরে কদম ফুল কই পাবো?
কনেঃ আমি জানি না। আর রাগ করলেও কদম ফুল দিয়ে রাগ ভাঙ্গাতে হবে।
বরঃ এটাতো রিতিমত টর্চার! সারা বছর কদম ফুল কই পাব?
কনেঃ তা আমি জানি না।
বরঃ আচ্ছা অন্য ফুলের কথা বলো।
কনেঃ না। কদম ফুল না দিতে পারলে আমায় কোলে নিতে হবে। যতক্ষন মন ভালো হবেনা, ততক্ষন কোলে নিয়ে থাকতে হবে।
বরঃ এই ৪৮ কেজির বস্তা কোলে নিলে আমি বাঁচব?
কনেঃ আমি জানি না। কদিন পর আরো মোটা হবো। তবুও কোলে নিতে হবে।
বরঃ বলেকি। প্রথমের গুলাইতো ভালো ছিল।
কনেঃ সব গুলাই ভালো, কোলে নিবেন কিনা বলেন?
বরঃ ওকে বাবা নিব।
কনেঃ শোনেন।
বরঃ হুম বলো।
কনেঃ আপনার এই বোকা বোকা চশমাটা একটু খুলবেন?
বরঃ কেনো।
কনেঃ আপনাকে দেখবো। এত মোটা ফ্রেমের চশমা পরেন, এখনো ভালো করে আপনাকে দেখিই নাই।
বরঃ আচ্ছা আমি ঘুমাবো,,,, কাল কথা হবে গুড নাইট।
কনেঃ এই যে শোনেন, এখানে তো একটা বালিশ, আমি কোথায় ঘুমাবো?
বরঃ আমার বুকের উপর।
কনেঃ মানে..?
বরঃ তোমার যেমন আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন। ঠিক তেমনি তোমাকে নিয়ে আমারও একটা স্বপ্ন। আমার বউ সব সময় আমার বুকে মাথা দিয়ে ঘুমাবে। সারাদিন যত রাগ ঝগড়াই হোক , রাতের বেলা যেন কেউ কখনো অন্যজনকে ছাড়া না ঘুমাতে পারে!!
