What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ ও বিধান (1 Viewer)

F1Moi6z.jpg


রোজা ও ঈদের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো সদকাতুল ফিতর। হতদরিদ্র মানুষও যেন ঈদের আনন্দে শামিল হতে পারেন, তার জন্য আল্লাহ ফিতরা বা সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যা ঈদের নামাজের আগে প্রদান করতে হয়। একে জাকাতুল ফিতরও বলা হয়। ঈদের দিন সকালবেলা যিনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ ও ব্যবসাপণ্য) মালিক থাকবেন, তাঁর নিজের ও পরিবারের সবার পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা তাঁর প্রতি ওয়াজিব। একে অন্যের ফিতরা আদায় করতে পারেন। নিসাব রুপার হিসাবে বর্তমান বাজারমূল্যে সর্বনিম্ন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা প্রায়।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, ‘নবী (সা.)-এর জমানায় আমরা সদকাতুল ফিতর প্রদান করতাম “এক সা” (তিন কেজি তিন শ গ্রাম প্রায়) খাদ্যবস্তু।’ তিনি বলেন, ‘তখন আমাদের খাদ্য ছিল যব, কিশমিশ, পনির ও খেজুর।’ (বুখারি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২০৪)। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক সা খাদ্যবস্তু, যেমন এক সা যব, এক সা খেজুর, এক সা পনির, এক সা কিশমিশ।’ (বুখারি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২০৫)।

যেহেতু ফিতরা একটি ইবাদত, তাই যাঁরা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নন, তাঁদেরও ফিতরা আদায় করা সুন্নত ও নফল। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন আমাদের মাঝে ছিলেন, তখন আমরা ছোট, বড়, মুক্ত, ক্রীতদাস সবার পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক সা খাদ্য অর্থাৎ এক সা পনির বা এক সা যব বা এক সা খেজুর অথবা এক সা কিশমিশ দিয়ে। আমরা এভাবেই আদায় করতে ছিলাম।’ একবার হজরত মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.) হজ বা ওমরাহ উপলক্ষে মদিনায় এলেন, তিনি জনগণের উদ্দেশে মিম্বরে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিলেন। তখন তিনি আলোচনা করলেন সে বিষয়ে, যে (ফিতরা) বিষয়ে মানুষ প্রশ্ন করেছে। তিনি বললেন, ‘আমি দেখছি শামের দুই মুদ (নিসফ সা বা পৌনে দুই কেজি) আটা সমান হয় (মূল্যমান হিসাবে) এক সা (তিন কেজি তিন শ গ্রাম) খেজুরের। অতঃপর মানুষ (সাহাবায়ে কিরাম ও তাবিয়িগণ) এই মতও গ্রহণ করলেন।’ (মুসলিম, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৩১৭-৩১৮)।

গম বা আটাও এক সা (তিন কেজি তিন শ গ্রাম) দেওয়া উত্তম। হাসান বসরি (র.) বর্ণনা করেন, আলী (রা.) বললেন, ‘আল্লাহ যখন তোমাদের প্রাচুর্য দিয়েছেন তোমরাও উদার হও, গমও এক সা দাও।’ (নাসায়ি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২৬৮-২৭০)।

হজরত ইমাম আজম আবুহানিফা (র.)-এর মতে, অধিক মূল্যের দ্রব্য দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম; অর্থাৎ যা দ্বারা আদায় করলে গরিবদের বেশি উপকার হয়, সেটাই উত্তম ফিতরা। ইমাম মালিক (র.)-এর মতে, খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম এবং খেজুরের মধ্যে সবচেয়ে উন্নত ‘আজওয়া’ খেজুর দ্বারাই আদায় করা উত্তম। ইমাম শাফিঈ (র.)-এর মতে, হাদিসে উল্লিখিত বস্তুর মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বোচ্চ মূল্যের দ্রব্য দ্বারা সদকা আদায় করা উত্তম। অন্য সব ইমামের মতও অনুরূপ। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (র.)-এর মতে, সাহাবায়ে কিরাম (রা.)-এর অনুসরণ হিসেবে খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করা উত্তম। এ ছাড়া সদকার ক্ষেত্রে সব ফকিহর ঐকমত্য হলো, ‘যা গরিবদের জন্য বেশি উপকারী।’ (আল মুগনি, খণ্ড: ৪, পৃষ্ঠা: ২১৯; আওজাজুল মাসালিক শরহে মুআত্তা মালিক, খণ্ড: ৬, পৃষ্ঠা: ১২৮)।

বিভিন্ন দামের খাদ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যের খেজুর বা উন্নত মানের চাল অথবা তৎমূল্যে ফিতরা আদায় করা উত্তম। ধনীরা সর্বোচ্চ এবং সাধারণেরা মাঝামাঝি মূল্যে আদায় করাই শ্রেয়। ইনসাফ হলো, যাঁরা যে চালের ভাত খান বা যাঁরা যে খেজুর দ্বারা ইফতার করেন, তাঁরা সে সমমানের বা সমমূল্যে ফিতরা আদায় করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তা-ই উত্তম, দাতার নিকট যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি’

বিভিন্ন দামের খাদ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যের খেজুর বা উন্নত মানের চাল অথবা তৎমূল্যে ফিতরা আদায় করা উত্তম। ধনীরা সর্বোচ্চ এবং সাধারণেরা মাঝামাঝি মূল্যে আদায় করাই শ্রেয়। ইনসাফ হলো, যাঁরা যে চালের ভাত খান বা যাঁরা যে খেজুর দ্বারা ইফতার করেন, তাঁরা সে সমমানের বা সমমূল্যে ফিতরা আদায় করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তা-ই উত্তম, দাতার নিকট যা সর্বোৎকৃষ্ট এবং যার মূল্যমান সবচেয়ে বেশি।’ (বুখারি, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ১৮৮)। বর্তমানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বেফাকুল মাদারিস, হাইআতুল উলইয়া ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ২০১০ সাল থেকে এ নিয়মই অনুসরণ করছে।

ফিতরা নির্ধারিত খাদ্যদ্রব্য, পণ্যসামগ্রী বা তার

মূল্যে টাকায়ও আদায় করা যায় এবং অন্য কোনো বস্তু (যেমন পোশাক-আশাক, ঈদের বাজার প্রভৃতি) কিনেও দেওয়া যায়।

মাতাপিতা ও ঊর্ধ্বতন এবং ছেলেমেয়ে ও অধস্তন এবং যাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে (যেমন স্ত্রী ও পোষ্য), তাদের ওয়াজিব ফিতরা ও জাকাত প্রদান করা যায় না।

* মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী | যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
 

Users who are viewing this thread

Back
Top