What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

রূপান্তরিতা (4 Viewers)

debasree

Exclusive Writer
Story Writer
Joined
Apr 1, 2018
Threads
7
Messages
127
Credits
12,848
জীবনে অনেক খারাপ অবস্থার মধ্যে পড়লেও এখন কার মত খারাপ অবস্থায় মনে হয় না কোনদিন পরেছে বলে মনে পড়ছে না বৃন্ত থুড়ি বৃন্তার। তার জন্ম হয়েছিল আজ থেকে ৩১ বছর আগে। বাবা মায়ের অত্যন্ত আদরে ছেলে ছিল সে। খুব ই মেধাবি ছাত্র ছিল সে। সেই জন্য সরকার ও তাকে সরকারি খরচে ডাক্তারি পড়াতে দ্বিধা করে নি। সে নিজে ডাক্তার। তাই আজকে সব থেকে বেশি মানসিক যন্ত্রণার ব্যাপার। তার জন্ম ২০৮৩ সালে। এখন ২১১৪ সাল। সে কলেজে ভর্তি হয়েছিল তখন সে ১৬ বছরের মাত্র। প্রচণ্ড মেধাবী ছাত্র ছিল সে। আর ছিল বজ্র কঠিন মানসিকতা। সে মাত্র ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি। কিন্তু ওই টুকু শরিরেই তার ব্যাক্তিত্ব ছাপিয়ে পড়ত। ছাত্র রাজনীতির অনেক বড় জায়গায় ছিল ও। ওর ব্যক্তিত্বের সামনে মেয়েরা কেন ছেলেরাও ঝুঁকে সম্মান করত ওকে। কারন ওর ছিল যুক্তিবাদী মস্তিস্ক। তার কোন কথার ওপরে কথা বলার সাহস কোন ছাত্র কেন শিক্ষক রাও পেতেন না। সাত বছরের ছাত্র জীবনে মেডিকেল কলেজে পাঁচ বছর ই ছিল ছাত্র সভার সভাপতি। এখন হাসপাতালেও সকলে ওকে খুব মান্য করে। সে খুব ভাল একজন ডাক্তার ও। কিন্তু সেটাই সব না। মানুষ সমাজ বদ্ধ জীব। তাই ইচ্ছে না থাকলেও অনেক কিছুই মেনে নিতে হয় সময় ওর সমাজের প্রয়োজনে। সময়ের নিয়মে দেশের আভ্যন্তরীণ এবং শিক্ষা ব্যবস্থা ও সামাজিক ব্যবস্থার আমুল পরিবরতন ঘটেছে। তার কারন ও আছে প্রভূত। নির্বিচারে নারী ভ্রুন হত্যা সমাজ কে প্রায় নারী বর্জিত করে ফেলেছে বললেই চলে। পুরুষে পুরুষে বিবাহ অনেক দিন পূর্বেই চালু হলেও, তাতে নারী সমস্যার সমাধান হয় নি। জনসংখ্যা কমলেও নারী সংখ্যা এখন প্রতি ১০০ পুরুষে ৪০ জন মাত্র। ভীতিজনক ভাবে কম। যেখানে সংখ্যা টি ১০০ জন পুরুষে ১১০ থেকে ১২০ জন হওয়া বাঞ্ছনীয়। বাধ্য হয়ে সরকারের টনক নড়ে। সরকার কিছু খুব ই অত্যন্ত আপত্তিকর এবং যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়। যদিও উপায় ছিল না সেই টি ছাড়া। সেটা হল পুরুষ ভ্রুন ও নারী ভ্রুনের অনুপাত , প্রতি তিনটি নারী সন্তান জন্ম দিলে একটি পুরুষ সন্তান জন্ম দিতে পারবে এমন করে বানান হয়েছিল। বা পুরুষ সন্তানের জন্ম যত সংখ্যক কম করতে সরকার বদ্ধ পরিকর হয়েছিল। প্রয়োজনে পুরুষ ভ্রুন মেরে ফেলাও হত মাতৃ গহ্বরে। যতদিন না পুরুষ নারীর আনুপাত একটা সম্মান জনক জায়গায় আসে। কারন আজ থেকে বিশ বছর আগেও পরিস্থিতি এমন ছিল একজন নারীর সাথে তিন বা চার পুরুষের বিবাহ আইন সিদ্ধ ঘোষণা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তাতে দেখা দিল বিশৃঙ্খল। সমাজে বাস করার মুল স্তম্ভ, শান্তি, সেটাই নষ্ট হতে বসেছিল। অশান্তি বিগ্রহ লেগেই থাকত সমাজের প্রতিটা তলার মানুষের ঘরে। সরকারি ও বেসরকারি চাকুরে দের কাজ করবার ক্ষমতা ও ইচ্ছে দুটোর ই অভাব দেখা দিয়েছিল চূড়ান্ত মাত্রায়। কারন নারী না থাকলে সমাজের মেজাজ টাই বিগরে যায়। নারী তো শুধু সন্তান উতপাদন করে তাই না। নারী মা, নারী বোন, নারী প্রেমিকা, নারী অনুপ্রেরনা, নারী ভালবাসা । স্বাভাবিক ভাবেই এই মানসিক কারনে দেশে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে এতে বিচিত্র কি। দেশের সামগ্রিক আয় কমে গেছিল গত সরকারের তিন গুন। বাধ্য হয়ে দেশের মানুষ সরকার বদলাল। ততদিনে দেশের ডাক্তারি শাস্ত্র ধন্বন্তরি পর্যায়ে পৌঁছে গেছিল। মানুষের মৃত্যু রোগ জনিত কারনে এখন আর হয় না বললেই চলে। জনসংখ্যা কমে যাবার জন্য সরকার শিক্ষা ব্যাপার টাকে আকাশ ছোঁয়া উচ্চতায় নিয়ে গেছিল। দেশের সব কিছুই ছিল বিনা পয়সায়। সেটা শিক্ষা হোক বা চিকিৎসা। মদ খাওয়া হোক বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ফুর্তি। মানুষের মনে কোন দুঃখ ছিল না । ছিল একটাই সমস্যা সেটা ছিল নারী অনুপাত অস্বাভাবিক হ্রাস। মনুষ্য জাতির অবলুপ্তির প্রথম ধাপ। বৃন্ত তখন ছোট। সবে ক্লাস ১০ এ পড়ে। নতুন সরকার এল। গোপনে শেষ ও বিদেশের কিছু বিজ্ঞানি ও ডাক্তার এবং গবেষণাকারী দের নিয়ে একটি বিশেষ সমিতি তৈরি করে পুরুষ কে নারী তে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা শুরু হল। কৃত্রিম উপায় , তাও দেশের বিশিষ্ট মহলের ধারনা হয়ে ছিল যে এতে নারী সমস্যার সমাধান হবে। সরকার আসার তিন বছরের মধ্যেই সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হল পরীক্ষার সফলতা। প্রথম পাঁচ বছর সেই বিজ্ঞানির দল কে সন্তান সম্ভবা নারী রুপান্তরনে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। কিন্তু আজকের দিনে সেটা জল ভাত। সরকার প্রান খুলে ডাক দিয়েছিল সেই সব পুরুশদের যারা পুরুষ সঙ্গী পছন্দ করে। তাদের মধ্যে ৯৯ ভাগ ই রূপান্তরিত হয়েছিল নারী তে। এবং তাদের পুরুষ রাও খুশি হয়েছিল। কিন্তু এই রকম পুরুশদের সংখ্যা ছিল নগন্য। যারা সেই সময়ে নারী তে রূপান্তরিত হয়েছিল তাদের প্রায় সবাই পড়ে অস্ত্রপ্রচার করে সন্তান সম্ভবা হয়েছিল। পরের বছরের গননায় দেখা গেল ৪২ জন নারী হয়েছে প্রতি ১০০ জন পুরুষে। সরকার সামান্য সাফল্য পেয়ে, বেশ মনোযোগ দিল এই রুপান্তরনের ব্যাপার টায়। সংসদে একটা বিল পাস করান হল যেটা সমাজের পক্ষে শুভ হল না অশুভ সেটা বিচারের সময় এখনও আসে নি। বিল টা ছিল অনেক বড়। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হল।
 
১) প্রত্যেক পুরুষ কেই বিয়ে করতেই হবে ২৪ বছরের মধ্যে সরকারি তত্ত্বাবধানে। সমস্ত সম্ভাব্য খুঁটিনাটি জানিয়ে। বয়স, উচ্চতা, ওজন, শিশ্ন এর আকার এবং খুঁটিনাটি। নারীর বয়স যেমন ইচ্ছে হতে পারে। সেটা নিরভর করবে পুরুষ এবং নারীর ওপরে।
২) দু বছরের মধ্যে প্রথম বাচ্চা নিতেই হবে। এবং সেটা হবে মেয়ে। এই ভাবে আগামি ৮ বছরের মধ্যে তিনটি কন্যা ও সব থেকে বেশি একটি পুত্রের জন্ম দিতে পারবে। কন্যা যত খুশি নিতে পাড়া যাবে। সেখানে সরকার সেই দম্পতি কে পুরস্কৃত করবে যদি পাঁচের বেশি কন্যা সন্তানের জন্ম দিতে পাড়া যায়।
৩) যদি দু বছরের মধ্যে বাচ্চা না আসে তবে পুরুষ ও নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা হবে। যদি এখানে নারী সমস্যা যুক্ত হয় তবে কোন সমস্যা নেই। সেই নারী কে ডাক্তারি পরিক্ষায় সন্তান সম্ভবা বানানো হবে সেই পুরুষের বীর্য নিয়েই। কিন্তু যদি পুরুষ সমস্যা যুক্ত হয় তবে সরকার বাধ্য থাকবে সেই বিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে নারীকে অন্য পুরুষের সাথে সহবাস করাতে, সেই সব পুরুষদের সাথে যাদের প্রজনন ক্ষমতা প্রমানিত। এবং উপরোক্ত ২ নম্বর নিয়ম বহাল থাকবে সন্তান উৎপাদনের জন্য।
এর পরের যে নিয়ম টি সেটা বড়ই মর্মন্তুদ এবং ভয়াবহ।
৪) যে পুরুষ সন্তান উৎপাদনে অক্ষম, সেই সমস্ত পুরুষদের একটা লিস্ট বানানো হবে ও ডাক্তারি পরীক্ষা দ্বারা দেখা হবে নারী গুন কার মধ্যে কত খানি বিদ্যমান। যাদের শরীরে নারী গুন ৩০ শতাংশ বিদ্যমান সেই সব পুরুষ দের রূপান্তরিত করা হবে পুরনাংগ নারী তে। এবং এক বছরের মধ্যেই সমস্ত নারী গুন তার মধ্যে বিদ্যমান করিয়ে বিশেষ একটু পদ্ধতির মাধ্যমে বিয়ে দেওয়া হবে পুরুষ দের সাথে, সেই নারীর সামাজিক অবস্থার কোন পরিবরতন না ঘটিয়ে। মানে যে স্কুলে পড়াত সেই পড়াবে। বা যে ডাক্তার ছিল সে সেই হাসপাতালেই কাজ করবে সেই একী জায়গায়।
উপরোক্ত চারটি প্রধান নিয়ম ছিল সেই ভয়ঙ্কর বিলে। গত পাঁচ বছরে সকার বিশের লাভ পেয়েছে ওই চারটি নিয়মের জন্য। নারী পুরুষের অনুপাত বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি ১০০ জন পুরুষে ৫৫ জন নারী। খুশি অখুশিতে দোদুল্যমান জাতি আবার ফিরে আসছে সাধারন সামাজিক নিয়মে। মানুষ মেনেই নিয়েছে এই বিধান সরকারের। এতে ফল ও পাওয়া গেছে। বৃন্ত ও ভাবত এটা ভাল নিয়ম। কারন সে ভাবতেও পারে নি যে সে নিজে সন্তান উৎপাদনে অক্ষম এক পুরুষ। এখানে এই জাতি টিকে মানে যারা সন্তান উৎপাদনে অক্ষম পুরুষ তাদের বিশেষ ভাল চোখে দেখা হয় না। কিন্তু ভগবানের ওপরে হাত কার চলে। তাই তার প্রানাধিক প্রিয়া মলির কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পশুর মত হাত পা বেঁধে। মলির তাতে কোন হেলদোল দেখে নি নিল। আর সেটাই বৃন্তকে খুব কষ্ট দেয়। মাঝে মাঝে ভাবে মলি তাকে কোনদিন ভালই বাসে নি। হ্যাঁ অবশ্যই সে যৌন ক্রীড়ায় পারদর্শী নয়। সে বিশেষ লম্বা ও নয়। পাঁচ ফুট ৩ ইঞ্চি মাত্র। কিন্তু ছোটোখাটো চেহারার মলির সাথে তার সাজন্ত ভালই হয়েছিল। কিন্তু সে সন্তান উৎপাদনে অক্ষম হবে ব্যাপার টা তার কাছে খুব অসম্ভব মনে হয়েছিল। এখন কৃত্রিম উপায়ে বীর্য তৈরি করা যায় যেটা সন্তান উৎপাদনে সক্ষন। কিন্তু সরকারের উদ্দেশ্য তো সেটা নয়। এই রকম বাঁজা পুরুষ গুলোর সমাজে সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার টাই কেরে নিয়েছে সরকার। সরকারের নারী প্রয়োজন। তাই নিলের ও ভাগ্যে জুটেছে এই সাজা।
 
প্রথম একমাস ও অজ্ঞান অবস্থাতেই ছিল। যেদিন ওর জ্ঞান ফিরল সেদিন ওর মত অনেকের ই জ্ঞান ফিরেছিল। চারিদিকে কান্না কাটি হাউ মাউ শব্দে কান পাতা দায় হয়েছিল। ও একটা শব্দ ও করে নি। কাদেও নি। মা বাবা এসেছিল ওর কাছে। অপারেশানের সময়ে সাড়া ক্ষন ই ছিল ওর মা। ওর মায়ের দিকে চেয়ে ওর লজ্জায় অপমানে কোন কথা বলতে পারে নি। ওর মা ওকে জড়িয়ে ডুকরে কেঁদে উঠেছিল। বৃন্ত অন্য দিকে ফিরে নিজের ওপরে ঘেন্নায় লজ্জায় অপমানে নিজেকে শেষ করে দেবার সঙ্কল্প করে নিয়েছিল। ঠিক করে চলতে পারছিল না ও। একটা সাদা গাউন পড়িয়ে রাখা হয়েছিল ওকে। ও কোন রকমে উঠে বাথরুম গেছিল। মা সাহায্য করতে এলেও ও জোরে সরিয়ে দিয়েছিল তখন। কিন্তু উল্লেখজনক ভাবে ওর দৈহিক শক্তির ও অনেক রুপান্তর ঘটেছিল। ওর দৈহিক শক্তি এম্নি ই কম ছিল কিন্তু এখন যেন আরও কম অনুভব করল। বাথ রুমের বিশাল আয়নায় নিজেকে দেখে ও চিন্তেই পারে নি। তার সাড়া গায়ে ছোট ছোট পুরুষ সুলভ যে লোম গুলো ছিল সেগুলর অনুপস্থিতি তার সমগ্র শরীর টা কে যেন আকর্ষণীও করে দিয়েছে একটি সুন্দরী মেয়ের মতই। ও জানে হাতে আর পায়ে কোনদিন তার লোম বেরবে না আর। গালে হালকা দারি ছিল তার। সেই জায়গায় এখন অদ্ভুত মসৃণ নরম তুলতুলে একটা গাল। ঠোঁট দুটো যেন পাতলা হয়ে গেছে কত। আর লাল টুসটুস করছে। মাথার চুল আগের মতই আছে যেমন তার ছিল। ছোট করে কাটা । হাতের আঙ্গুল যেন একটু লম্বা হয়েছে। আর নরম। নিজেই নিজের হাত অনুভব করে পুরনো অনুভুতির সাথে মিলিয়ে দেখছিল বৃন্ত। চোখ আর ভ্রু যেন নিখুত ভাবে আঁকা। গ্রীবা যেন একটু লম্বা। মুখটা গোল ছিল গোল ই আছে । একজন সুন্দরী নারীর যা যা লক্ষন থাকা উচিৎ ডাক্তার দের নিপুন হাতের কাজে বৃন্ত এখন একটি সুন্দরী নারী। বুকের কোন অপারেশান এখনও করে নি সেটা বোঝাই যাচ্ছে। নিপিল এখনও ছোট ছোট। সে এম্নিতেই ফর্সা। কিন্তু নারী শরীর যেন তার গায়ের রঙ টা কে আরও জেল্লা দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে। সব থেকে বড় ধাক্কা টা খেল হিসি করতে যাবার সময়ে। বসে কোন রকমে হিসি করে নিজেকে দেওয়ালে ধরে রেখে দেওয়ালে মাথা দিয়ে কাঁদতে লাগলো অঝোর ঝোড়ে। কান্নার আওয়াজে এমন চমকে গেল সে। একটি সুমিষ্ট স্বরের নারী কান্নার আওয়াজ যেন বাথরুমের নিস্তব্ধতা কে খান খান করে দিল। ও চোখে মুখে জল দিয়ে কোন রকমে এসে শুয়ে পড়ল বিছানায়। সেইদিন বিকালে একদল ডাক্তার এল তার কাছে। মা বাবা চলে গেছিল তখন। কারন বিকালের পড়ে কারোর থাকবার উপায় নেই। ওকে চাকা লাগান বিছানায় নিয়ে গেল অপারেশান ঘরে। একজন প্রবিন ডাক্তার এগিয়ে এলেন। হাসলেন মিষ্টি করে। গা জ্বলে গেল বৃন্তর। অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে বৃন্ত সে।
 
-হ্যালো মিস!! কি নাম তোমার?
-বৃন্ত না মানে বৃন্তা। একটু থতমত হয়ে জবাব টা দিল বৃন্ত।
-হুম্মম ।। এখানে লেখা আছে বৃন্ত দত্ত। বৃন্ত চুপ করে রইল। কোন কথা বলল না ।
-শোন এখন তোমাকে আমরা দুটো ইঞ্জেকশন দেব। একটা তোমার শরীরে নারী সুলভ চর্বির বৃদ্ধি ঘটাবে,স্তনের বৃদ্ধি, পাছা ও অন্যান্য অংশ। অন্য টা তোমার মাথার চুল।। বৃন্ত তাকিয়ে রইল নিস্পলকে। প্রবীণ ডাক্তার টি বলেই চললেন- কিন্তু কত টা বাড়বে এতে আমাদের কোন হাত নেই। এই দুটো ইঞ্জেকশন তোমার নারী হরমোন কে কত টা চাঙ্গা করতে পারবে তার ওপরে নিরভর করবে সব কিছুই। তার মানে এই নয় ভবিষ্যতে এই গুলি আর বাড়বে না। বারতেই পারে স্বাভাবিক নিয়মে। কিন্তু প্রথমে যেটা হবে সেটার ওপরে কারোর কোন হাত নেই। আর হ্যাঁ স্তন বৃদ্ধির সময়ে ব্যাথা হবে। হয়ত রাতে ঠিক করে ঘুমতেও পারবে না। সেটা বলে রাখছি।। বৃন্ত চমকে উঠল। আর তার সাথে সাথেই দুজন ডাক্তার নিখুত হাতে দুই দিকে দাঁড়িয়ে তার দুটো হাতে সূচ ফুটিয়ে দিল কোন কথা না বলে। বৃন্তের সুন্দর মুখ টা যন্ত্রণায় কুঁচকে গেল।
-এই টুকুতেই মুখ টা কুঁচকে গেল। তোমাকে মেয়ে বানিয়ে ঠিক ই করেছি। প্রবীণ ডাক্তারের কথা শুনে বাকি ডাক্তারের দল আর জোগাড়ে গুলো ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে উঠল। চলে যাবার সময়ে একজন জুনিয়ার ডাক্তার একজন জোগাড়ে কে বলতে বলতে গেল
-কি রে অতও কি দেখছিলি মাগী টাকে?
-উফফফফ কি বানিয়েছেন গুরু। মাগী টার মাই হয়ে গেলে যা লাগবে না!!!!!!!
-হা হা। লাইনে আছিস নাকি তুই?
-থাকব না? এখানে কাউকে আমি ছারি না।
-সাবধান। স্যারের ও নজর আছে মাগী টার দিকে।। তখন জোগাড়ে টা এত্ত বড় জীব বের করে বলল
-ইসসস তাহলে আমি নেই লাইনে। আপনাদের খাবার আমি খাব তাই হয় নাকি? বলতে বলতে চলে গেল জানোয়ার গুলো। আর দুজন নার্স বৃন্ত কে পউছে দিল ওর কেবিনে। ওই জানয়ার গুলোর কথা শুনে বৃন্তের হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছিল। কি করতে পারে ওরা রাতে? ধর্ষণ? ও খুব ই ভয়ে ভয়ে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়ল। একজন নার্স রয়ে গেল ওর ঘরে। কখন ঘুমিয়েছে ও নিজেই জানে না।
 
ঘুম ভাঙ্গল বুকে অসহ্য যন্ত্রণায়। উঠে বসে পড়ল সে। আর পেরে উঠছে না সে। মনে হচ্ছে প্রান বেরিয়ে যাবে যেন। সে ককিয়ে উঠল মাআআআআ বলে। ততখনার উঠে এল নার্স টি, একটি মলম বের করে গাউন টা নামিয়ে ওকে জোর করে শুইয়ে মালিশ করতে লাগলো দ্রুত নিপুন হাতে। বুকের ব্যাথা টা যেন কমে এল। ধীরে ধীরে কমেই গেল। ঘুমিয়ে পড়ল রে। সাড়া রাতে কম করে দশ বার সে প্রচণ্ড ব্যাথায় উঠে বসে পরেছিল। সেই নার্স টি পরম মমতায় তাকে যত্ন করে মালিশ করে দিল বুকে প্রতিবার ই। সকালে উঠে ও বাথরুম যেতে গিয়ে টের পেল ওর বুক দুটো যেন একটু ভারী। বাথরুমে ফিয়ে গাউন না নীচে নামাতেই দেখল ছোট ছোট স্তন তার নির্লোম বুকের শোভা যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ও ফ্রেশ হয়ে এল বাইরে এসে দেখল মা এসে গেছে। বৃন্তের মা বৃন্ত দেখে মনে করলেন যেন না নজর লাগে ছেলের আমার। থুড়ি মেয়ের আমার। অবিন্যস্ত ঘাড় অব্দি চুল আর হালকা গজিয়ে ওঠা বুকের দিকে চেয়ে বৃন্ত কে সবাই ১৭ ১৮ বছরের মেয়ের মতই মনে করল। দেখতে দেখতে সাত দিন কেটে গেল আরও। বৃন্তের বুক এখন ৩৬ ডি তে এসে থেমেছে। গত দু দিন বাড়েনি বলে ডাক্তার রা তার ভি এস এ ৩৬ ডি ই লিখে নিয়ে গেছে। ভাব্লেও হাসি পায় আজ থেকে এক মাস আগেই যে পুরুষ ছিল সে এখন ৩৬ ডি ৩০ ৩৯ এর এখন পুরনাঙ্গ প্রজননে সক্ষম একটি নারী। এই বুক আর এখন পাছা ছুয়ে যাওয়া এই ঘন চুল তাকে খুব এ বেগ দিচ্ছে। সে ঠিক করে নিয়েছে চুল সে কেটে ফেলবে। এ সাম্লান তার করম নয়। মা খাবার এনে ছিল , বৃন্ত বসে বসে খাচ্ছিল। কখন নিজে চামচ দিয়ে কখন মা ই খাইয়ে দিচ্ছিল তাকে। সেই সময়ে একজন বয়স্ক মাহিলা এলেন।
-পেশেনট ন ২১১৩বি১২৩০ এর বাড়ির লোক আপনি? বৃন্তের মা তখনি উঠে বলল
- হ্যাঁ হ্যাঁ আমি ওর মা।
- শুনুন। ওর ছুটি হয়ে যাবে কালকেই। আপনি নিয়ে যেতে চাইলে নিয়ে যাবেন। আর যদি মনে করেন যে নিয়ে যাবেন না তবে এখানেই আমাদের হোমে থাকবে। কারন অনেকেই এই সমাজের কলঙ্ক গুলো কে বাড়ি নিয়ে যেতে চায় না। এক বছর পড়ে ওকে যেকোনো পুরুষের হাতে সহবাসের জন্য তুলে দেওয়া হবে।। বৃন্ত আঁতকে উঠল কথা টা শুনে। কিছু বলল না উল্টো দিকে মুখ ফিরিয়ে রইল। দেখতে চাইল মা কি বলে। বৃন্তের মা আতঙ্কিত হয়ে উঠে এসে বৃন্ত কে জড়িয়ে ধরে বলল
- না না ওকে আমি নিয়ে যাব। বৃন্ত মাকে জড়িয়ে ধরল। বুঝল মা বাবার থেকে আপন কেউ হয় না পৃথিবীতে।
- তবে শুনুন। ডাক্তারেরা চার্ট লিখে দেবে সেই মত ওকে এখানে আনবেন আগামি এক বছর। কোন গাফিলতি যেন না হয়
- না না আমরা আনব। বৃন্তের মা তড়িঘড়ি জবাব দিল।
- বেশ। মিস বৃন্ত গুপ্ত। আপনার ডিউটি শুরু হবে আপনার পুরনো হাসপাতালেই ঠিক পনেরো দিন বাদ থেকে। বৃন্ত একটু ইতস্তত করে বলল
- অন্য হাস্পাতালে দিলে হয় না ম্যাদাম?
- কেন?
- না মামে সবাই তো জানে আমি ছেলে ছিলাম। বৃন্ত আমতা আমতা করা জবাব দিতেই ওই দশাসই মহিলা বৃন্তের পাছা অব্দি চুল ঘাড়ের কাছে মুঠি করে ধরে টেনে বলল
-উহহহহ লজ্জা????? লজ্জা ঘুচিয়ে দব এক বছর পরে। শোন তোকে মাগী করে বানানো হয়েছে। যতক্ষণ ডাক্তারি করবি ততক্ষন তুই সম্মানীয়। তার পরে তুই একটা মাগী। অনেক খরছা করে তোকে বানানো। সন্তান উতপাদন না করতে পারলে তোর ফাঁসি হবে এটা জেনে রাখিস মাগী। বলে হনহন করে চলে গেল মহিলা টি। বৃন্ত মাকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেটে উঠল।
 
বৃন্ত এতক্ষণ ভাবছিল তার জিবনের এই মর্মন্তুদ কাহিনী নিজের বাড়ির ছাদে আরাম কেদারায় বসে। নারী শরীর নিয়ে তার আর কোন অভিযোগ নেই। বরং হাসপাতাল থেকে যেদিন ওর বাবা মা ওকে নিয়ে এসেছিল বাড়িতে সেদিনই ও ঠিক করে নিয়েছিল বেশি ভাববে না। যা আছে কপালে। ওর মাই ওকে শিখিয়েছে, ব্রা পড়তে। শাড়ি পড়তে ঠিক করে। অন্যান্য মেয়েলি পোশাক পড়তে। গয়না পড়তে। লিপস্টিক লাগাতে। নেল পালিশ লাগাতে। নিজের শরীরের পরিচর্যা করতে। কিন্তু সে যেহেতু স্বাভাবিক মেয়ে নয় টাই এই ব্যাপার গুলতে তার উতসাহ বেশ কম। প্রথম প্রথম তো মাকে জিগ্যাসা করতেই পারত না। মা নিজে থেকে এগিয়ে না আসলে সে কোন ভাবেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারত না। বৃন্ত নিজেকে নিয়ে ভাবে না বললেই চলে। তাই সেদিন বাথরুমে ঢুকে চুল কেটে ঘাড় অব্দি করে দেবে ভেবেছিল। কিন্তু কাটতে পারল না নিজের নগ্ন শরীরে পুরু কালো চাদরের মত ঘন চুল পাছা অব্দি ছড়ান দেখে। নিজের পুরুষ সত্তা ভাল বেসে ফেলল নিজের ই নারী শরীর টা কে। তাই সে গত এক বছর ভাল করেই দেখভাল করে নিজের চুলের। শরীরের জন্য বেশি মেহনত করতে হয় না কারন সে আগেও শরীরের জত্ন নিত। কিন্তু ওই লিপস্টিক পড়া বা নেল পালিশ লাগান পারে না একদম ই। মানে ওর ভাল লাগে না। আর মেন্স এর দিন কতক ও প্রচণ্ড গুটিয়ে থাকে। ঘেন্নায় যেন জীবন বেরিয়ে যায় ওর।
-বৃন্ত খাবি আয়। মায়ের ডাকে নীচে এল বৃন্ত । কথা না বলে ওড়না টা বিছানায় রেখে দিয়ে খেতে বসে পরল বাবার পাশে।
-ফোন এসেছিল ওদের অখান থেকে। বৃন্তের মা বৃন্ত কে জানাল।
-কি বলছিল? কখন যেতে হবে আমাকে?
-কালকে বিকাল ছটার পরে। বলতে বলতে কেঁদে ফেলল বৃন্তের মা।
-কাদছ কেন? যেটা হবার তো হবে বল। বৃন্তের বাবা নিস্ফল হতাশ হয়ে উঠে চলে গেল খাবার ছেড়ে। বৃন্ত কোন রকম উত্তেজনা ছাড়াই খেতে লাগল মায়ের হাতের রান্না।
পাঁচটার মধ্যে হাসপাতালে পরের ডাক্তার কে সব বুঝিয়ে দিয়ে বৃন্ত বেরিয়ে পড়ল বিবাহ অফিসের উদ্দেশ্যে। হাস্পাতালের মেট্রো তে নিজের কার্ড টা প্রেস করতেই গন্তব্যের টিকিট বেরিয়ে এল। ও প্লাটফর্মে দাঁড়িয়েছিল। ট্রেন আসতেই ও টিকিটে লেখা ২১ নম্বর বগি তে চড়ে বসল। মিনিট পনেরোর মধ্যেই ও চলে এল বিবাহ অফিসে। ওর সাথে ছাড়া পাওয়া কয়েক জন কে দেখল ও। মনে হল ওর মত সবাই মেনে নিয়েছে এই জীবন টা কে। ঢুকেই নিজের কার্ড দেখাতেই একজন মহিলা ওকে নিয়ে গেল বিভাগ নির্বাচনে। ও এ বিভাগে ঢুকে পড়ল। এক জন নিয়ে গেল ড্রেসিং রুমে। ভাল করে সাজাতে বেগ পেতে হল না বৃন্ত কে। বৃন্ত ঠিক করেছে ও হ্যাঁ না কিছুই বলবে না। যে পারবে ওকে বিয়ে করুক। পাঁচটা সন্তান তো ওকে দিতেই হবে। পুরো সময় টা চুপ করে রইল। শুধু শুনতে পেল একবার নিলাঞ্জন ওয়েডস বৃন্ত। ও কিছু না বলে বেরিয়ে এল অখান থেকে। বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগল বরের জন্য। কি করে যে সে মেনে নেবে সেই জানে? সে মনে মনে এখনও পুরুষ ই রয়ে গেছে। ঠিক সেই সময়ে ফোন টা বেজে উঠল
 
-হ্যালো?
-কোথায় তুমি?
-আপনি কে?
-হা হা আমি সেই যে তোমাকে বিয়ে করল।
-অহহহ সরি। আমি বাইরেই দাঁড়িয়ে আছি আপনার জন্য।
-আচ্ছা আসছি।। মিনিট পনেরো পরে একজন বিশাল দেহী ছেলে স্যুট পরে, আর একটি মেয়ে বেরিয়ে এল অফিস থেকে। ছেলেটি প্রথমে কথা বলল।
-সরি ডিয়ার। টাকা মেটাতে দেরি হল। সেই সময়ে ওই মহিলা টি এগিয়ে এল বৃন্তের কাছে।
-হ্যালো আমি তোমার ননদ। আমি নিলাঞ্জনা।
-হ্যালো। খুব শুকনো ভাবে বৃন্ত জবাব দিল। নিলাঞ্জনা দাদার পেটে কনুই দিয়ে একটা গুঁতো দিয়ে বলল,
-যা মাল পেয়েছিস না!!!!!!! দেখিস যেন আবার পরের দিন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
-চুপ কর। ভয় পাবে না ও?
-বাবাহ কত চিন্তা এখন থেকেই। বৃন্ত এসব কথা গ্রাহ্য করল না । ও জানে ওকে কিসের জন্য তৈরি করা হয়েছে। ও চেষ্টা করবে মানিয়ে নিতে না পারলে আত্মহত্যা ছাড়া পথ নেই। ভাল করে দেখল ওর বর কে। খুব বেশি হলে ২৭ বছরের হবে নিলাঞ্জন। খুব ব্রাইট লাগছে চশমার পিছনে চোখ দুটো । অসম্ভব ফিট শরির দেখেই মনে হচ্ছে। এটা ওর দ্বিতীয় বিয়ে। আগের স্ত্রী সন্তান উৎপাদনে অক্ষম ছিল মনে হয়। ব্যাবসা দার। আজকের দিনে বিশেষ করে এই রাজনৈতিক জুগে ব্যাবসাদার মানে ভালই জগ সাজশ আছে সমাজের প্রতিটা উঁচু তলার ব্যক্তির সাথে। সে নিজের কার্ড টা ভাল করে দেখল, সেখানে তার সামাজিক অবস্থা “ ডাক্তার- সিঙ্গল” থেকে বদলে “ ডাক্তার- বিবাহিত” হয়ে গেছে। “ ওয়াইফ অফ মিঃ নীলাঞ্জন সেন”। ও দেখে কার্ড টা ঢুকিয়ে রেখে দিল নিজের ভ্যানিটি ব্যাগে। একটু ইতস্তত করে ডাকল তার স্বামী কে।
-একটু শুনবেন প্লিস।
-হ্যাঁ বল। নীলাঞ্জন উত্তর দিল একটু কৌতূহলী হয়ে। বৃন্ত আমতা আমতা করে বলল
-জানি এখন থেকে আমি আপনার স্ত্রী। কিন্তু আমার বাবা মা অপেক্ষা করে আছে। বাড়িতে। আপনি কি বিয়ে টা সামাজিক ভাবে করতে পারবেন? তাহলে আমার বাবা মা একটু খুশি হতেন।
-নিশ্চয়ই। ইনফ্যাকট আমিও পরিবারের সাথেই থাকি। আমার ও বাবা মা আছেন।
-ওয়াও তবে বিয়ে টা হোক আমাদের গ্রাম থেকে। নিলাঞ্জনা উত্তর দিল খুব ই খুশি হয়ে। বৃন্ত বুঝতে পেরেছে নীলাঞ্জন সেই ধনী ব্যাক্তিদের মধ্যে পড়ে যাদের শহরে বাড়ি ছাড়াও গ্রামে বাড়ি আছে। বৃন্ত কিছু না বলে বিদায় দিয়ে এগিয়ে গেল মেট্রোর দিকে। নীলাঞ্জন তাকিয়ে রইল সদ্য বিয়ে করা বউ এর চলে যাবার দিকে। টাইট সবুজ সালওয়ার পড়ে এগিয়ে যেতে থাকা বৃন্তের ভরাট পাছার ওপরে ঘন কালো সাপের মত বেণীর দুলুনি দেখে অজান্তেই নীলাঞ্জন যেন কেমন হয়ে গেল। ভাগ্যিস ব্লেজার টা চাপিয়ে আছে গায়ে। না হলে নিলি বুঝতে পেরে যেত তার অবস্থা।
 
-দাদাভাই, যা তোর বউ কি মেট্রো করে বাড়ি যাবে নাকি?
-ও হ্যাঁ। বৃন্ত......।। বৃন্ত পিছনে ফিরে দেখল দৌড়তে দৌড়তে আসছে নীলাঞ্জন। ও দাঁড়িয়ে পড়ল।
-চল তোমাকে পৌঁছে দিয়ে আসি।
-কিন্তু আপনার বোন?
-ওর গারি আছে।। বৃন্ত কোন কথা না বলে বিশাল পারকিং লাউঞ্জে এসে একটা ঝাঁ চকচকে স্পোর্টস কারে চড়ে বসল। বিদ্যুৎ গতিতে নীলাঞ্জন ছুটিয়ে দিল গাড়ি। কোন কথা না বলে চলেছে দুজনেই। নীলাঞ্জন ভেবে পাচ্ছে না আর দু এক দিন পরেই এই সুন্দরী মেয়ে টা কে সে ভোগ করবে ইচ্ছে মত। সে এমন একটা মেয়ে পাবে বলেই এই বিশেষ বিবাহ তে এসেছিল। এখানে রুপান্তরনের অর্ধেক খরচ নীলাঞ্জন কেই বহন করতে হয়েছে। সেটা কম না। আজকের বাজারে প্রায় তিন কোটি টাকা। সেই মেয়েকে যদি সে ইচ্ছে মত ভোগ করতে না পারে সেটা তো অন্যায়। তার টাকার অভাব নেই। চারটে কেন এই মাগির পেটে দশ টা বাচ্চা দিলেও ওর শান্তি হবে না। ২৭ বছরের জীবনে ও এত উত্তেজিত কোনদিন ই হয় নি আগে।
-তুমি তো বেশ সুন্দরী। তোমার চুল আর মুখ টা তোমাকে সব থেকে আলাদা করে চিনিয়ে দেয়।। কথা টা শুনে বৃন্ত একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানালার বাইরে তাকিয়ে রইল। মনে হল রুপান্তর তো তার শরীরের হয়েছে কিন্তু মনের রুপান্তর টা করার খুব প্রয়োজন ছিল। সেখানে এখনও সে পুরুষ রয়ে গেছে। এমন নয় যে তার শরীর সাড়া দেয় না। দেয়। সে নিজেও খেলে তার যৌনাঙ্গ নিয়ে রাতে বা বাথরুমে। আরাম ও পায়। কিন্তু সেটা নিতান্তই একা। এবারে একজন পুরুষ তাকে ভোগ করবে। তার গর্ভে বাচ্চা দেবে ভাবতেই সে কেমন সিটিয়ে গেল ঘেন্নায় দুঃখে রাগে।
-কি হল? উত্তর দিছছ না যে?
-না কই আর তেমন? একটা শুষ্ক হাসি হেসে বলল বৃন্ত নীলাঞ্জন কে। নীলাঞ্জন বৃন্তের উত্তর দেবার ভঙ্গী দেখে একটু বিরক্তই বলা যেতে পারে। নীলাঞ্জনের যেন আর তর সইছে না। পাগল হয়ে যাচ্ছে কবে এই মাগী টাকে বিছানায় পাবে সেই ভেবে।
-ব্যস ব্যস এই খানে। এখান থেকে কিছু দূর গেলেই আমার বাড়ি।
-তাই হয় নাকি। চল আমিও দেখা করে আসি আমার শ্বশুর শাশুড়ির সাথে।
 
-কি রে তুই? হয় নি অনুষ্ঠান। বৃন্তের মা বেশ অবাক হয়ে জিগ্যাসা করল বৃন্ত কে। কারন তিনি ভাবেন ও নি যে সে আবার তার মেয়েকে দেখতে পাবে। কারন বিয়ে করে সরাসরি বউ কে নিয়ে চলে যাবার নিয়ম।

-হ্যাঁ হয়েছে। তারপরে পিছন ফিরে তাকিয়ে নীলাঞ্জন কে অভ্যর্থনা করল সে।“ আসুন” । নীলাঞ্জন ঢুকে এল। নমস্কার করল বৃন্তের মা কে। বৃন্তের মা তড়িঘড়ি করে নীলাঞ্জন কে ঘরে ঢুকিয়ে বস্তে বলল।

অনেক্ষন থাকার পড়ে নীলাঞ্জন চলে গেছিল সেদিন। ঠিক হল আগামি রবিবার ওদের গ্রামের বাড়িতে মস্ত পার্টির আয়োজন হবে। অখানেই সামাজিক ভাবে মন্ত্র পড়ে বিয়েও হবে। বৃন্তের বাড়ির লোক জন কে বেশ লাগল নীলাঞ্জনের। যদিও সামাজিক মর্যাদায় নীলাঞ্জনের ধারে কাছেও নেই বৃন্তের বাড়ির লোক জন। তাতে অসুবিধা নেই। এমন সহজ সরল লোক ই তার পছন্দ। কিন্তু বৃন্ত কে দেখে মনে হল বৃন্ত ঠিক তৈরি নয় ব্যাপার তার জন্য। নীলাঞ্জনের তাতে কিছু যায় আসে না। সে আর থাকতে পারছে না। যেহেতু রুপান্তরনের খরচ সেই বহন করেছে অর্ধেক টা তাই বৃন্তের নারিত্বে তার ই অধিকার। সে ভোগ করবে ইচ্ছে মত। দু বছরের মধ্যে বাচ্চা দিতে না পারলে সরকার কেড়ে নেবে এই মাগী টাকে তার কাছ থেকে। পয়াসাও ফেরত দেবে না। সে জানে তার পুরুষত্বের অভাব নেই, কিন্তু এই মাগী টা কে ঠিক মনে হচ্ছে না তার। সে ঠিক করল সে রকম হলে জোর করেই ভোগ করলে বৃন্ত কে। এখানে রূপান্তরিত নারী কে জোর করে ভোগ করে বাচ্চা উতপাদন করা বৈধ।

বৃন্ত আয়নার সামনে বসে চুল আঁচড়াচ্ছিল। নীলাঞ্জনের পছন্দ হয়েছে তার এই চুল। ভাবতেই একমন একটা ঘেন্নায় সিটিয়ে গেল সে। কাটতেও পারবে না। কারন এতক্ষনে বউএর কোন জিনিস টা ভাল লেগেছে লিস্ট এ ও দাগ দিয়ে দিয়েছে। সেটা আপডেট হয়েও গেছে সরকারের খাতায়। এখন চুল কেটে দিলে সরকার তাকে শাস্তি ও দিতে পারে। কারন রূপান্তরিত নারী দের পুরুষের ইচ্ছে তেই বাঁচতে হয়। তাই বলে মন বলে জিনিস টা গুরুত্ব দেবে না? সে ভাবেও নি তার থেকে বয়সে ছোট কোন ছেলের সাথে সে বিয়ে করবে। সে একতিরিশ এ পরেছে এ বছরেই। আর সরকারি ডেটা বেসে নীলাঞ্জনের বয়েস ২৭ মাত্র। কি ভাবে মানিয়ে নেবে সে কে জানে। সে চুপ চাপ ভাবতে লাগলো এই সব বসে বসে
-ছেলেটা বেশ বল?? বৃন্তের মা জিগ্যাসা করল।
-ছেলে?? ছোট ছেলে বল। বৃন্ত উত্তর দিল বিরক্তি তে
-কই আমার তো মনে হল বেশ পরিনত।আর তোকে ওর বেশ পছন্দ ও। বৃন্তের মা বৃন্ত কে বলে মুচকি হেসেনিল।
-চুপ কর তো। বড় লোক বাপের বখে যাওয়া ছেলে। বৃন্ত বেশ বিরক্ত সহকারে জবাব দিল। নেহাত আগে বিয়ে হয়েছে তাই আর কোন প্রাকৃতিক মেয়ে কে বিয়ে করতে পারবে না।তাই আমাকে বিয়ে। ছাড় মা। এই ধরনের ছেলেরা চূড়ান্ত বখে যাওয়া হয় মা
-তোকে বলতে গেছে। নীলাঞ্জন সেন , যত দূর মনে পড়ছে এই শহরের খুব নাম করা ব্যাবসাদার। বৃন্তের মা বলল
-তাহলে ওকে মনে মনে জপ কর। বলে এক রাশ বিরক্তি তে সে বেরিয়ে এল ব্যাল্কনি তে। সামনে দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্র। তার খুব ভাল লাগে এই রাতে খোলা সমুদ্রের দিকে চেয়ে থাকতে। কি বিশাল। শুধু মানুষ ই কূপমণ্ডূক হয়ে পড়ে আছে।
বৃন্তের ঘুম আসছে না। বিছানায় শুয়ে আছে চুপচাপ। পুরুষ থাকা কালিন ও একটা কালো শর্টস পড়ে ঘুমত। সেই অভ্যেস টা এখনও রয়ে গেছে। এখন শুধু একটা হালকা টপ পড়ে নেয় বুক টা ঢাকা দেবার জন্য। চুল টা বেশ শক্ত করে বিনিয়ে নেয় শোবার আগে। না হলে বড় জ্বালাতন করে চুল গুলো। একটা আওয়াজে ঘুরে দেখল ফোন টা ভাইব্রেট করছে রীতিমত। নম্বর টা দেখল। তার বরের। সে ধরল না ফোন টা। ইচ্ছে করছে না। “কেন রে বাবা আর কিছুদিন পর থেকেই তো পাবি। এই বয়সে আবার রাতে ফোন করার সখ হল কেন” । ফোন টা বালিশের নীচে রেখে চোখ বুজল। কখন ঘুমিয়েছে সে নিজেই জানে না।
 
সকালে হাসপাতালে যাবার সময়ে ফোন টা হাতে নিয়ে দেখল ১৮ টা মিসকল। সে মেট্রো তে উঠে ফোন লাগাল। না করলে বড় খারাপ হবে। ওপার থেকে কোন সাড়া নেই দেখে, আর দ্বিতীয় বার করল না ফোন। হাসপাতালে ঢুকে ফোন টা বেজে উঠল ঝংকার দিয়ে। সে কমন রুমে গিয়ে রিসিভ করল ফোনে টা।
হ্যালো?
-কি ব্যাপার অতও বার কালকে ফোন করলাম। ধরলে না।
-সরি। আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম।। ওপারে খানিকক্ষণ নিস্তব্ধতা। সে আবার বলল” সরি”
-ইটস ওকে। খানিকক্ষণ এদিক সেদিক কথা বলে রেখে দিল ফোন তা নীলাঞ্জন। বৃন্ত চলে এল ওয়ার্ডে।


শনিবার বিকালে বৃন্ত কে নিয়ে বৃন্তের বাবা মা চলে এল নীলাঞ্জন দের গ্রামের বাড়িতে। বাড়ি ভর্তি লোক। বৃন্ত নীলাঞ্জনের বাবা মা জ্যাঠা জ্যেঠই সকল কে হ্যান্ড শেক করতে যেতেই ওর মা ওকে এক দাবড়ানি দিল। ও বাধ্য হয়ে মায়ের ইশারা মত সকলকেই প্রনাম করল। ব্যাপার টা বিরক্তিকর রীতিমত বৃন্তের কাছে। খুব ই নিজেকে ছোট মনে হল তার। প্রনাম করতে অসুবিধা নেই তার। কিন্তু বরের আত্মীয় বলেই প্রনাম করতে হবে এটা কেমন কথা। ওর মনে পড়ে গেল মিলি ও এমনি ভাবে প্রনাম করেছিল ওর পরিবারের সকলকেই। বৃন্ত খুশি হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতি তার জীবনে এই ভাবে ঘুরে আসবে সে নিজেও ভাবতে পারে নি। যাই হোক ভেবে তো আর লাভ নেই, ও যথাসাধ্য চেষ্টা করবে ভাল লাগেতে। না পারলে আত্মহত্যা তো খোলা আছেই। কালকে বিয়ের অনুষ্ঠান।ওর খারাপ লাগল না পরিবার টি কে। ওর চার চারটে ননদ। সব থেকে ছোট টি যে সে বৃন্তের থেকে প্রায় তিন বছরের ছোট।হাসিখুশি খুব। কাউকেই খারাপ লাগলো না তার। কিন্তু সবার মনেই একটা ব্যাপার রয়েছে জে সে রূপান্তরিত নারী। সাধারন নারীর জে সম্মান তার সেই সম্মান নেই। জাকেই প্রনাম করছে সেই বলছে “ বেঁচে থাক মা, স্বামী কে অনেক সন্তান দিও” । ও এক জায়গায় আর থাকতে না পেরে বলেই ফেলল “হ্যাঁ সেই জন্যেই তো এসেছি” । বলে চলে এল ওপরে ওর জন্য জে ঘরটি নির্দিষ্ট আছে সেইখানে। দেখল একটি বছর তিনেকের ছোট মেয়ে বসে আছে।
-কি নাম তোমার। বৃন্ত জিজ্ঞাসা করল মেয়েটি কে। মেয়েটি বিশেষ ভ্রুক্ষেপ না দিয়ে জিগ্যাসা করল
-তুমি আমার নতুন মা? চমকে উঠল বৃন্ত। মা!!
-আমি কি করে তোমার মা হব?
-তুমি যে বিয়ে করেছ আমার বাবা কে? বৃন্তের কাছে পরিস্কার হল না ব্যাপার টা। মনে মনে বলল “আমি কি আর বিয়ে করেছি? আমাকে বিয়ে করা হয়েছে”।সে জিগ্যাসা করল মেয়ে টিকে
-তোমার মা কোথায়?
-আমার মা তো নেই। সেই তারা হয়ে গেছে আকাশে। ধক করে উঠল বৃন্তের বুক টা। ভিজে গেল মন টা এক পলকেই। চোখের কোন টা ভিজল কি? কি জানি। এমন নয় যে নারী বলে ব্যাপার টা ঘটল। বৃন্তের এই ব্যাপারে অনুভুতি গুল বড়ই প্রবল ছোট থেকেই। সে জিগ্যাসা করল।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top