What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

রম্য গল্পকথা (1 Viewer)

Joined
Aug 23, 2020
Threads
74
Messages
111
Credits
7,054
ভয়ে রাজু রাস্তোগি আর ফারহান কোরাইশির অবস্থা খারাপ হয়ে গেল।ভয়ে ভয়ে ওরা তাকালো রাঞ্ছোর দিকে। রাঞ্ছোই এখন ভরসা।



তবে রাঞ্ছোরদাস শামালদাস ছাচাড় একটুও ভয় পেলো না। স্যারের চোখে চোখ রেখে বললো, আপনি আমাদের চেনেন? আমরা কোন বিভাগের ছাত্র, কত রোল জানেন?



গণিতের প্রফেসর মফিজুদ্দিন ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলেন। বললেন, বাবারে এখন কী আর সেই দিন আছে? ঐ যে দেখছো না, সিসি ক্যামেরা?

সব ভিডিও আছে!! খাতা এলোমেলো করার ফন্দি আইটা লাভ নাই। ভিডিও দেখে বাপ-চাচা-দাদার নাম, হাতের ছাপ, পায়ের ছাপ সব বের করে ফেলবো!!!

এবার রাঞ্ছোর চোখেও আতঙ্কের ছাপ!! এইখানে সিসি ক্যামেরাও আছে? জানতো না তো?



স্যার কয়েকবার বলেছিলেন, টাইম আপ!!

তবে ওদিকে ওদের ভ্রুক্ষেপ নাই, ওদের লেখা শেষ না হলে খাতা দিবে কীভাবে? নির্ধারিত সময়ের এক ঘন্টা পর ওরা খাতা দিতে গেল স্যারের কাছে। স্যারের সোজা কথা, খাতা তিনি নিবেননা।



শিস বাজাতে বাজাতে পরীক্ষার হল থেকে বের হলেন মফিজ স্যার।



২.

নিশ্চিত ফেল । অনিশ্চিত ভবিষ্যত।

এখান থেকে বাঁচার উপায় কী? মিটিঙে বসেছে থ্রি ইডিয়টস। ঠিক হলো, রাজু ডিনের সাথে দেখা করতে গিয়ে সাততলা থেকে লাফ দেবে।

তবে সেখানে আগে থেকেই ফোম রাখা থাকবে।

হালকা পাতলা আহত হলেও মিছিল করে ক্যাম্পাস গরম করে ফেলা হবে। ডিন হবে অবরুদ্ধ । পরীক্ষা হবে বাতিল!! উফফ, কী আইডিয়া!! ওরা সবাই লাফাতে লাগলো খুশির চোটে, চতুর রামালিঙ্গম তখন ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে নিবিড় লেখাপড়ায় ব্যস্ত । সামনে বিসিএস। ফরেন ক্যাডার না পেলে জীবন বৃথা।



ডিন ভিরু সাহাস্ত্রাবুদ্দে সেভ করতে লেগেছেন।

এমন সময় উনার জানালার সেফটি নেটের শব্দ পেলেন। পেছনে না তাকিয়েই বললেন, স্টুপিড কোথাকার, লাফ দিতে হলে নিজের জানালা দিয়ে লাফ দাও, আমার জানালায় অদৃশ্য নেট লাগানো আছে। জানতাম তুমি এরকম কিছু করবে। তাই আগে থেকেই সাবধান হয়ে গেছি।

এখনই তোমার মা বাবাকে ফোন করবো, দাঁড়াও ।

রাজু হতভম্ব হয়ে নেটের দিকে তাকিয়ে রইলো।



৩.

নিশ্চিত ফেল জেনে ফারহান ওর বাবার কাছে ছবি তোলার প্যাশনের কথা বললো।(আসলে ছবি তোলার উপর ওর বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিলো না)

দুই গালে দুই চড় খাওয়ার পর ওর ছবি তোলার আর কোনো ইচ্ছে ছিলো না।

ফারহানের বাবা আরেকটা চড় মারতে গিয়েও মারলেন না। সামনে বিসিএস । এখনই সব চড় মেরে হাত ব্যাথা করে ফেললে বিসিএস এ ফেল করার পরে কী মারবেন?



৪.

রাঞ্ছো ফেসবুক খুলেই হতভম্ব ।

পিয়া চতুরের ফটোতে কমেন্ট করে লিখেছে, এত্তগুলা কিউততত চতুর ভাইয়াআআআ!!

কীভাবে পড়েন আপনি বলেন তো? চেহারাটাই কেমন গুলু গুলু!! লাবিউ চতুর ভাইয়া!!

রাঞ্ছো প্রিয়াকে মেসেজ করে। মেসেজ সিন হয়। কিন্তু রিপ্লাই আসে না।প্রিয়ার নামের পাশে তখনও সবুজ বাতি জ্বলছেই।



এবার রাঞ্ছোর মাথায় আগুন জ্বলে উঠলো। খারাপ ছাত্র হলেই কি মেসেজ সিন করে রেখে দিতে হবে? তিনজন মিলে সিদ্ধান্ত নিলো আজ ডিন তথা ভাইরাসের বাড়ি হিসু করে ভাসিয়ে দেবে। তিনজন চললো ভিরু সাহাস্ত্রাবুদ্দের বাড়ির দিকে। ওরা জানতো না, ডিনের বাড়ির গেটে ইলেকট্রিক তার লাগানো আছে।

তাই তিনজনই হিসু করতে গিয়ে কারেন্টের শক খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকলো। সকালে ভিরু সাহাস্ত্রাবুদ্দে ওদেরকে হাতেনাতে আটক করলেন। এবার ওদেরকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হলো।



৫.

আজ বিদায়ের দিন।

আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামছে।

ওরা কাঁথা বালিশ মাথায় নিয়ে বাইরে বের হয়ে আসলো। রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে।

হঠাৎ দেখে ভিরু সাহাস্ত্রাবুদ্দে তাঁর বড় মেয়েকে নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন।মোনার প্রসব বেদনা উঠেছে, অথচ অ্যাম্বুলেন্স আসতে পারছে না ডুবে যাওয়া রাস্তার জন্য ।



রাঞ্ছোর মাথায় বুদ্ধির বাত্তি জ্বলে উঠলো। ও টুকটাক ডাক্তারি পারতো। ভাবলো, এই সময় মোনার জন্য কিছু করতে পারলে ওদের বহিস্কারাদেশটা অন্ততঃ স্থগিত হতে পারে, ওরা বিসিএসটা দিতে পারবে।

কিন্তু একী? এখানে হেলিকপ্টার কোথ্থেকে এলো? কাহিনী কী?



কাহিনী আর কিছু না। ভিরু সাহাস্ত্রাবুদ্দে "উড়াও" অ্যাপস দিয়ে হেলিকপ্টার ডেকে নিয়েছেন।এখন আর সেই আগের থ্রি ইডিয়টস এর যুগ নাই। এখন ডিজিটাল যুগ। উড়াও অ্যাপসের সাহায্যে যখন তখন হেলিকপ্টার এমনকী জেট প্লেনও ভাড়া করা যায় ।মোনাকে ভিরু সাহাস্ত্রাবুদ্দে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালের দিকে উড়াল দিলেন।



পুনশ্চঃ

চতুর ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছে,ওদিকে বিসিএসেও ফার্স্ট হয়ে গেছে । কিছুদিনের মধ্যেই টিচার হিসেবে যোগ দিয়ে দিলো। মহা ধুমধামে পিয়ার সাথে ওর বিয়ে হয়ে গেলো।

চতুর-পিয়ার ছবিতে ফেসবুক সয়লাব।

রাঞ্ছো এখন সেখানে নিয়মিত স্যাড ইমো দেয়।



রাঞ্ছো পাড়ার মোড়ে একটা মেকারের দোকান দিয়েছে। কাজকর্ম ভালোই পারে, ইনকামও মোটামুটি ভালোই হয়। ওর দোকানে অনেক ছাত্র যখন সাইকেল ঠিক করতে আসে, তখন ও সবাইকে এখন থেকেই বিসিএস এর প্রিপারেশন নিতে বলে।



রাজু এক অফিসে পিয়নের চাকরি করে, ওদিকে ফারহান একটা চারপাতার স্থানীয় পত্রিকায় ফটোগ্রাফি করে।



ওদের বন্ধুত্ব কিন্তু এখনও অটুট। মাঝেমধ্যেই ওরা পদ্মার পাড়ে বসে থেকে গুনগুনিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর একটা কবিতা আবৃত্তি করে।



পাঠক বলুনতো, ওরা সুনীলের কোন কবিতাটা আবৃত্তি করে??



"কেউ কথা রাখে নি"
 

Users who are viewing this thread

Back
Top