সিনেমার প্রচারে বাহারি পোস্টার প্রকাশের প্রচলন অনেক দিন আগের। তবে টেলিভিশন নাটক, ওয়েব ফিল্ম কিংবা ওয়েব সিরিজের প্রচারে পোস্টারের ব্যবহার ছিল না বললেই চলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আসার পর বছর দুয়েক হলো নাটক, ওয়েব ফিল্ম ও ওয়েব সিরিজ প্রচারে পোস্টারের ব্যবহার বেড়েছে। কখনো কখনো এসব পোস্টার অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। পাশাপাশি পোস্টার ডিজাইনকেন্দ্রিক কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।
নাটক নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত কনটেন্ট প্রচারের জন্যই এখন পোস্টারের প্রচলন বেড়েছে। প্রচারের আগে পোস্টার দর্শককে নাটক দেখতে আগ্রহী করে তোলে। ‘হ্যাকার’, ‘শিশির বিন্দু’, ‘বুক ভরা ভালোবাসা’, ‘ইনায়েত’, ‘রোমিও জুলিয়েট’ ইত্যাদি কনটেন্টের পোস্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কনটেন্টগুলোর পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আগে ছোট পর্দার কনটেন্টের পোস্টার নিয়ে তেমন একটা গুরুত্ব ছিল না। এখন এই প্রচলন তৈরি হয়েছে। পোস্টার দেখে অনেকেই কনটেন্ট দেখতে আগ্রহী হন। তবে গল্প অনুযায়ী পোস্টার বানানো হলে কনটেন্টের আকর্ষণ বাড়ে।’
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকের পোস্টার, সংগৃহীত
‘গেম ওভার’, ‘অপরূপা’, ‘শিফ্ট’, ‘পলিটিকস’, ‘যে শহরে টাকা উড়ে’, ‘ট্রল’, ‘শিকল’ ইত্যাদি কনটেন্টের পোস্টার তৈরি করে প্রকাশ করা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এর পরিচালক সঞ্জয় সমদ্দার বলেন, ‘কনটেন্ট দেখতে দর্শকদের আগ্রহী করে তুলতে পোস্টারের প্রচলন বেড়েছে। এটি প্রচারের একটি কৌশল। প্রচারের আগেই আলোচনা তৈরি করতে পারলে কনটেন্ট দেখতে কৌতূহলী হন দর্শক। এ ব্যাপারে পোস্টার বড় ভূমিকা রাখছে।’
পরিচালক মহিদুল মহিম জানান, কনটেন্টের বৈচিত্র্য পোস্টারে তুলে ধরতে পারলে দর্শকের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়। বিপণন সহজ হয়। তিনি বলেন, ‘একসময় সিনেমায় পোস্টারের প্রচলন ছিল। এখন ছোট পর্দার কনটেন্টের জন্যও পোস্টার করা হচ্ছে।’
মহিদুল মহিমের ‘শিল্পী’, ‘ফটো ফ্রেম’, ‘মন বদল’, ‘টিপু সুলতান’, ‘গোলাপি কামিজ’ ইত্যাদি কনটেন্টের পোস্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
‘ফ্যামিলি এক্সপ্রেস’ এর পোস্টার, সংগৃহীত
পরিচালক কাজল আরেফিনের ‘স্টেডিয়াম’, ‘ফিমেল’ ও ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর বিভিন্ন মৌসুমের পোস্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, ‘একটা সময় ট্রেলার, টিজার তৈরি করে কনটেন্টের প্রচার করা হতো। এখন যুক্ত হয়েছে পোস্টার। কোনো কনটেন্টের একটি পোস্টার দেখে দর্শকের ভালো লাগলে, পরবর্তীকালে ওই কনটেন্ট দেখতে আগ্রহী হন দর্শক। বিষয়টি আমাদের ছোট পর্দার কনটেন্টকে এগিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখছে।’
পোস্টার ডিজাইন করার মধ্য দিয়ে নতুন কর্মক্ষেত্রও তৈরি হয়েছে। একটি কনটেন্টের পোস্টার ডিজাইন থেকে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করছেন সংশ্লিষ্টরা। ‘শিফট’, ‘পলিটিকস’, ‘যে শহরে টাকা উড়ে’, ‘ট্রল’, ‘শিকল’, ‘ফিমেল’, ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর পোস্টারসহ প্রায় দুই শ পোস্টার ডিজাইন করেছেন সাজ্জাদুল সায়েম। তিনি বলেন, ‘পোস্টারের মাধ্যমে কনটেন্ট বিপণন শক্তিশালী হয়েছে। পাশাপাশি এই ডিজাইনের সঙ্গে যুক্ত মানুষের কর্মসংস্থান বেড়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই সময়ে প্রচার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ছোট পর্দার কনটেন্ট প্রচারে পোস্টার শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে।
‘হ্যাকার’ নাটকের পোস্টার, সংগৃহীত