মানুষ মানুষের জন্য। ভূপেন হাজারিকার গানের কথাটাকে সত্যি করে বাংলাদেশের স্থানীয় ফ্যাশনশিল্প খাতের সঙ্গে জড়িত কুশীলবদের পাশে দাঁড়ালেন জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী জয়া আহসান।
করোনকালে কঠিন সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের স্থানীয় ফ্যাশনশিল্প খাত। গত বছর বৈশাখ এবং ঈদে বিক্রি না হওয়ায় উদ্যোক্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই কঠিন সময় পার করেছে। এবারের পরিস্থিতি এখনো আশাবাদী হওয়ার মতো নয়। এই অবস্থায় এই শিল্প খাতের সুহৃদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন নন্দিত অভিনয়শিল্পী জয়া আহসান।
ফ্যাশন হাউস বিশ্বরঙের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তায় এই শিল্প খাতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য সবাইকে সমব্যথী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
করোনাকালে সংক্রমণের আশঙ্কা আছেই। অনেকে সে জন্য সশরীর মার্কেট বা মলে গিয়ে শপিংকে নিরুৎসাহিত করছেন। এর যৌক্তিকতা অস্বীকার করা হয়তো যাচ্ছে না। তবে এই ঈদই হলো বাংলাদেশের রিটেইল ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় আয়ের উপলক্ষ। বিশেষ করেন ফ্যাশনশিল্প। অসংখ্য পরিবার এই শিল্প খাতের সঙ্গে জড়িত। তাই একটি পোশাক কেনা মানে অনেক পরিবারকে সাহায্য করা। তাদের পাশে দাঁড়ানো।
এ জন্যই জয়া আহসান বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন অন্তত একটি পোশাক কিনে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি তিনি এবারের শপিংকে আনন্দের নয়; বরং দায়িত্ববোধের শপিং হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
একটি পোশাক তৈরির প্রতিটি পর্যায়েই রয়েছে বিভিন্ন পেশাদার মানুষের সম্পৃক্ততা, গত বছর যাঁদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন। অনেকে বাধ্য হয়ে পেশা বদল করেছেন। এই শিল্প খাত হারিয়েছে দক্ষ শ্রমিক। এবার যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য সবার প্রতি একান্ত অনুরোধও করেছেন তিনি।
আসলে ঈদে পোশাক বিক্রি হলে উদ্যোক্তারা লাভবান হবেন না, অনেক মানুষ বেঁচে যাবেন। অনেক পরিবারের মুখে খাবার উঠবে। ঈদটা কিছুটা হলেও তাদের আনন্দের হবে, যেটা গত বছর হয়নি।
অসমর্থিত সূত্রের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সারা বছরের আয় ১০ হাজার কোটি টাকা। এর অন্তত ৫০ শতাংশ আসে ঈদে। এই টাকায় চলে সারা বছর। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাই মূলত নির্ভর করে থাকে ঈদের বেচাকেনার ওপর।
গত বছর ঈদ ছিল নিরানন্দ। তাই যাঁদের সামর্থ্য আছে, তাঁরা একটি করে পোশাক এবার কিনলেও এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত মানুষগুলো কিছুটা হলেও সামলে উঠতে পারবেন।
আসলে শপিং সব সময়ই আনন্দের। পরিবারের সবাই মিলে গিয়ে পছন্দের পণ্য কেনা। কিন্তু সেই পরিস্থিতি এবার নেই। তাই নিজেদের তাগিদ থেকে শপে না গিয়ে, বাসায় বসে অনলাইনেও কিছু না কিছু কেনা সম্ভব। তাহলেই বাংলাদেশের ফ্যাশনশিল্পের সঙ্গে জড়িত সবার মুখে হাসি ফুটবে বলে মনে করেন জয়া আহসান।