পাশ -ফেইলের পুরস্কার
অপুর বাবা সচিবালয়ে চাকরী করেন। চাকরী সুবাদে মন্ত্রী-সচিবদের সাথে ওনার ইঠা-বসা নিত্য দিনের অভ্যাস। কথায় আছে, অভ্যাস মানুষের দাস। আর সে কারনেই অপুর বাবা এখন আর আগের মতো কথা বলতে পারেন না। সব কথাতেই একটা ডিপ্লোম্যাটিক প্যাঁচ থাকে। সহজ কথাটাও সহজ ভাবে বলতে পারেন না। সেদিন অপু মাধ্যমিকের শেষ পরীক্ষা দিয়ে বাসায় আসার পর অপুর বাবা তাকে ডেকে পাঠালেন। অপু তার বাবার সামনে বসতেই অপুর বাবা জিজ্ঞেস করলেন,
"পরীক্ষা কেমন দিলে ?"
অপু ছোট্ট করে জবাব দিলো। "ভালো"
অপুর বাবা ছেলের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে মাথা ঝাকিয়ে নিয়ে বললেন, "পরীক্ষা যেমন দিবে ফলাফলও তেমনই আশা করো। পরীক্ষা খারাপ দিলে ভালো ফল কখনো আশা করো না।"
তারপর কিছুক্ষন চুপ থেকে তিনি আবারো বললেন, "পরীক্ষায় পাশ করো কিংবা ফেইল যাই করো, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার রেজাল্ট বেরনোর পর তোমাকে একটা সাইকেল কিনে দেবো"
সাইকেলের কথা শুনে অপু খুশীতে বলে উঠলো, "বাবা, তুমি অনেক ভালো। তা কোন সাইকেল কিনে দিবে, বাবা ?"
ছেলের কথায় অপুর বাবার তেমন কোনো ভাবান্তর হলো না।
ওনি ছেলের চোখের তাকিয়ে বললেন, "যদি পাশ করো, তবে তোমার জন্য একটা নতুন রেঞ্জার সাইকেল কিনে দেবো। যেটা দিয়ে তুমি প্রতিদিন কলেজে যাবে।"
অপুর বাবার কথায় এমন কিছু একটা ছিলো যেটা শুনে অপুর মুখ শুকিয়ে গেলো। সে ভয়ে ভয়ে বাবাকে প্রশ্ন করলো, "আর যদি ফেইল করি ?"
বাবা খুব নির্লিপ্ত ভাবেই বললো, "আর যদি ফেইল করো, তবে তোমাকে একটা পুরাতন ভাঙ্গা-চোরা সাইকেল কিনে দিবো। "
অপু বেশ কিছু অবাক হয়ে মাথা নিচু করে বাবাকে ছোট্ট করে বললো, "কেনো ?"
অপুর বাবা বিষয়টা ব্যাখ্যা করছে এমনভাবে বললো, "যাতে তুমি বাজারে ঘুরে ঘুরে দুধ বিক্রী করতে পারো..."