What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পহেলা বৈশাখ, বাঙ্গালীদের সার্বজনীন উৎসব: কিভাবে এলো এই পহেলা বৈশাখ? (2 Viewers)

Starling

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 7, 2018
Threads
775
Messages
12,016
Credits
220,387
Recipe wine
Kaaba
Profile Music
Birthday Cake
4jWpPhg.jpg


পহেলা বৈশাখ! বাঙ্গালীর এক অবিচ্ছেদ আবেগ ও ভালবাসার নাম। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে সমগ্র বাঙ্গালী জাতি এক কাতারে চলে আসে। লাল-সাদা পোশাক, পান্তা ইলিশ, মঙ্গল শোভা যাত্রা, রমনার বটমূলের ছায়ানটের সঙ্গীতানুষ্ঠান পহেলা বৈশাখকে নতুন রূপদান করেছে। শুধু শহর সমাজেই নয় গ্রাম সমাজেও ঘটা করে পহেলা বৈশাখকে বরন করে নেয়া হয়। একে কেন্দ্র করে জমে মেলা যা বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত। ফলে এটি এখন অন্যতম একটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। কিন্ত আমরা অনেকেই জানি না এই পহেলা বৈশাখের পেছনের ইতিহাস। কিভাবে আজকের দিনের এই পহেলা বৈশাখের উত্থান? পহেলা বৈশাখের পিছনের সব ইতিহাস নিয়ে আজকের পর্ব…

ভারতীয় অঞ্চলে মোগলদের শাসন চালু হওয়ার পর থেকে তারা জমির খাজনা হিজরি সনের হিসাব অনুযায়ী উত্তোলন করতে থাকে। কিন্ত কখনো কখনো বন্য-খরার সময় খাজনা আদায়ের সময় নির্ধারিত হত। ফলে কৃষকরা সময়মত খাজনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হত। কারণ সৌর বছর যেখানে ৩৬৫ দিনে চন্দ্র (হিজরি) বছর সেখানে ৩৫৪ দিন ফলে এ অঞ্চলের আবহাওয়ার সাথে হিজরি সনের মিল থাকার পরিবর্তে দূরত্ব ক্রমশ বাড়ত। ফলে এ সমস্যা দীর্ঘদিন চলার পর সম্রাট আকবর তা সমাধানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এজন্য তিনি তার বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী “ফতেহ উল্লাহ সিরাজি” কে সৌর সন ও হিজরি সনের মিশ্রণ করে খাজনা বান্ধব নতুন পঞ্জিকা তৈরি করার নির্দেশ দেন। ১৫৮৪ সালে ফতেহ উল্লাহ একটি নতুন পঞ্জিকা তৈরি করেন যা সৌর দিনের হিসেবে হিসেব করা হয়।

0bsl8iV.jpg


রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান - Source: Age Fotostock

আকবরের শাসন ক্ষমতা গ্রহণের সময় হতে এই সনের (১৫৫৬) গণনা কার্যকর করা হয়। তখন হিজরি সন ছিল ৯৯২, কিন্ত তার ক্ষমতা গ্রহণের সন ছিল তার ২৯ বছর পূর্ব অর্থাৎ ৯৬৩। আর ৯৬৩ হিজরির মুহররম মাসে ছিল বৈশাখ মাস তাই হিজরি প্রথম মাস মুহররম মাসের সাথে বৈশাখ মাসকে প্রথম মাস ধরা হয় ও বার মাসের ক্রম তৈরি করে পঞ্জিকা করা হয়। প্রথমে এর নাম ফসলী সন থাকলেও পরবর্তীতে তা পরিবর্তন করে “বঙ্গাব্দ” সন নামে নামকরণ করা হয়। ফলে খাজনা উত্তোলন সহজ হয়, এবং চৈত্র মাসের মধ্যে খাজনা পরিশোধের জন্য নিয়ম জারী করনে। এর ফলে চৈত্রমাসের মধ্যেই সকল ধরনের কর পরিশোধ হত ও বৈশাখের প্রথম দিন জমির মালিকরা কৃষকদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করত যা একটি উৎসবের পরিবেশ তৈরি করত।

কিন্ত মোগলদের পতনের পর ইংরেজরা ক্ষমতায় আসলে এই ব্যবস্থার বিলুপ্ত করা হয়। ফলে ইংরেজদের আমলে আর পহেলা বৈশাখ সম্বন্ধে কোন তথ্য পাওয়া যায় না। তার দীর্ঘকাল পর ১৯১৭ সালে ১ম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের জয় কামনায় পহেলা বৈশাখে কীর্তন ও পূজার আয়োজন করা হয়। এরপর আবার ১৯৩৮ সালে আবার অনুরূপভাবে উদযাপনের প্রমাণ পাওয়া যায়। সর্বশেষ ১৯৬৭ সালে তা মুল আলোচনায় আসে এ সময় পাকিস্তান সরকার বাঙ্গালী সংস্কৃতির উপর বিভিন্নভাবে আঘাত হানে, এর অংশ হিসেবে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধ করে। তার প্রতিবাদ স্বরূপ ছায়ানট রমনার বটমূলে রবীন্দ্র সঙ্গীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।

১৯৮৩ সাল থেকে রমনার বটমূলে প্রচলন করা বাঙ্গালীর এক ঐতিহ্যবাহী পান্তা-ইলিশ, এর পর থেকে প্রতিবছর রমনার বটমূল থেকেই বৈশাখের অনুষ্ঠান সূচি শুরু হয়। ১৯৮৮ সালে বাংলা একাডেমী ১৪ই এপ্রিলকে পহেলা বৈশাখ হিসেবে নির্ধারণ করে বাংলা পঞ্জিকা বের করেন। তার পর ১৯৮৯ সালে সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালীর চেতনার প্রতীক হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে। যা ক্রমে জনপ্রিয়তা লাভ করে। ২০১৫ সালে এই মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ইউনেস্কো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অধরা বা ইনট্যানজিবল (Intangible) সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।

PJt1lIo.jpg


মঙ্গোল শোভা যাত্রা

এখন প্রতি বছর পহেলা বৈশাখকে সারা দেশে অত্যন্ত আরম্বরপূর্ণভাবে পালন করা হয়। তার পাশাপাশি সোনার গায়ে ঈসা খাঁর আমলে প্রবর্তিত বউমেলার নাম শোনা যায়, যদিও তা সনাতন ধর্মের একটি প্রাচীন কাহিনীকে ধারণ করে প্রতিষ্ঠিত, এছাড়াও সোনার গায়ে আরেকটি মেলার নাম পাওয়া ঘোড়ামেলা এটিও একটি সনাতনী কাহিনী অবলম্বনে গঠিত, কথিত আছে যামিনী নামে এক সাধক এখানে ঘোড়ায় করে এসে সাধারণ মানুষদের মধ্যে প্রসাদ বিতর করতেন তার মৃত্যুর পর থেকে পহেলা বৈশাখে এখানে মেলার আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রামেও পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়, এখানকার মূল কেন্দ্র হল ডিসি হিল পার্ক। সম্মেলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে এখানে পুরাতন বছরকে বিধায় দিয়ে নতুন বছরকে বরন করে নেয়া হয়। তাছাড়াও বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক জেলা উপজেলায় স্থানীয়ভাবে মেলার আয়োজন করা হয়। কোন কোন স্থানে আবার তা দীর্ঘদিন ধরেও চলে থাকে।

7H04gBI.jpg


পান্তা ইলিশ

এই বর্ষবরণ উৎসবকে বাঙ্গালীরা অসাম্প্রদায়িক বাংলার প্রতীক বলে মনে করেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে পহেলা বৈশাখ কে ছুটির দিন ঘোষণা দেয়াসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে উৎসব বোনাসের ঘোষণা দিয়েছেন যা পহেলা বৈশাখ কে ঈদ/পূজার মত মর্যাদা দেয়া হয়েছে।

পহেলা বৈশাখ নিয়ে নানা বিতর্ক থাকলেও তা ক্রমেই বাঙ্গালীদের নিকট জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের মনে পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতিচ্ছবি।
 
অনেক তথ্যসমৃদ্ধ একটা পোস্ট।ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য।
 
Very informative article. But as per my knowledge, pohela boishak was not celebrated this way in my childhood also. It was mainly HAL KHATA, to collected the money of the busniessman and opening a new balance.
 

Users who are viewing this thread

Back
Top